২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার ফলাফলে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ৬টি কলেজে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটেছে। ফলাফল চিত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, এসব কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় ২৪৩৯ জনের মধ্যে ২৪১৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে কৃতকার্য হয়েছে ৭৪৫ জন। ফেল করেছে ১৬৯৪ জন শিক্ষার্থী। পরিসংখ্যান মতে, তিনভাগের একভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে এবং দুইভাগের বেশি শিক্ষার্থীই এবার ফেল করেছে। পাশাপাশি জিপিএ-৫ প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও এ বছর বড় ধরনের ধস নেমেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে চকরিয়া উপজেলার ৬টি কলেজের পাশের হার ৩০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আর দুটি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৯জন শিক্ষার্থী।
চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল চিত্রে দেখা গেছে, উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় চকরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ১০৫৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ১০৪৮ জন। যেখানে পাস করেছে ৩২২ জন। ফেল করেছে ৭৩৪ জন। পাশের হার ৩০ দশমিক৭৩ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ জন।
চকরিয়া মহিলা কলেজ থেকে ৫৫২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ৫৪৪ জন। যেখানে পাস করেছে ১৬৭ জন। ফেল করেছে ৩৮৫ জন। পাশের হার ৩০ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন।
ডুলাহাজরা কলেজ থেকে ৪৫৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ৪৫৬ জন। যেখানে পাস করেছে ১৭১ জন। ফেল করেছে ২৮৭ জন। পাশের হার ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পায়নি কেউ।
বদরখালী কলেজ থেকে ২৪৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ২৪৩ জন। যেখানে পাস করেছে ৫৯ জন। ফেল করেছে ১৯৩ জন। পাশের হার ২৪ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ নেই।
চকরিয়া সিটি কলেজ থেকে ১২৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ১২৩ জন। যেখানে পাস করেছে ২৬ জন। ফেল করেছে ৯৯ জন। পাশের হার ২১ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ নেই।
চকরিয়া কর্মাস কলেজ থেকে মাত্র দুইজন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেন একজন। ফলাফলে পাস কিংবা জিপিএ-৫ একটিও নেই। এ কলেজ থেকে গত বছরও কেউ পাস করেনি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার ৬টি কলেজের মধ্যে একমাত্র সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে চকরিয়া সরকারি কলেজ। এ কলেজ থেকে পরীক্ষায় ১০৪৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৩২২ জন। আর ফেল করেছে ৭৩৪ জন শিক্ষার্থী।
অভিযোগ উঠেছে, ফেল হওয়া শিক্ষার্থীদের অনেকে এইচএসসির নির্বাচনী (কলেজ কর্তৃপক্ষ টেস্ট পরীক্ষা) পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছিলেন। সে সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের বোর্ড পরীক্ষায় সুযোগ দেয়া থেকে বিরত রাখতে সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করে তাদের পরীক্ষায় সুযোগ দেয়ার দাবিতে অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীরা চলতিবছরের ৩ মার্চ তারিখে কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়কে (চকরিয়া কলেজের সামনে) অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ অনেকটা বাধ্য হয়ে এসব শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেন।
জানতে চাইলে চকরিয়া সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুসরাত জাহান বলেন, আমরা কলেজের লেখাপড়ার মানটি ধরতে রাখতে চেষ্টা করেছিলাম। যেহেতু কলেজের ১০৪৮ জন পরীক্ষার্থী নির্বাচনী (টেস্ট পরীক্ষা) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সেখানে ৬৪০ জন শিক্ষার্থী ফেল করছিলো। যা নিয়ে বোর্ড পরীক্ষা দেয়ার মতো তাদের সার্মথ্য ছিল না।
সেজন্য আমরা অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করে আরও পরিপক্ব হয়ে আগামী বছর পরীক্ষা দিতে অনুরোধ করি। কিন্তু তারা আমাদের কথা শুনেনি। পরীক্ষায় সুযোগ দেয়ার দাবিতে আন্দোলনে নামে। এমন পরিস্থিতিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে বাধ্য হয়েছে।
আর এখন ফলাফল বির্পযয়ের ক্ষেত্রে দেখছি, কলেজ কর্তৃপক্ষের নেয়া সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।
অন্যদিকে ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত আলীম পরীক্ষায় চকরিয়া উপজেলার ৭টি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা কলেজগুলোর তুলনায় ভালো ফলাফল করেছে। মাদ্রাসার পাশের হার ৮৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। আর তিনটি মাদরাসার ১৮ জন পেয়েছেন জিপিএ-৫।
ফলাফল চিত্র অনুযায়ী চকরিয়া সাহারবিলের আনোয়ারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা, ছিকলঘাট
আমজাদিয়া রফিকুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসা, বরইতলীর পহরচাঁদা ফাজিল মাদ্রাসা, বদরখালী এমএস ফাজিল মাদ্রাসা, খুটাখালী তমিজিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, বেতুয়াবাজারস্থ হযরত ফাতিমা বালিকা ফাজিল মাদ্রাসা ও ডুলাহাজারা আরবিয়া মারফিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে ৪১৯ জনের মধ্যে ৪১২ জন শিক্ষার্থী আলীম পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৩৫৬ জন।
আর ফেল করেছে ৫৪ জন শিক্ষার্থী।
শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
২০২৫ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার ফলাফলে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ৬টি কলেজে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটেছে। ফলাফল চিত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, এসব কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় ২৪৩৯ জনের মধ্যে ২৪১৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে কৃতকার্য হয়েছে ৭৪৫ জন। ফেল করেছে ১৬৯৪ জন শিক্ষার্থী। পরিসংখ্যান মতে, তিনভাগের একভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে এবং দুইভাগের বেশি শিক্ষার্থীই এবার ফেল করেছে। পাশাপাশি জিপিএ-৫ প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও এ বছর বড় ধরনের ধস নেমেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে চকরিয়া উপজেলার ৬টি কলেজের পাশের হার ৩০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আর দুটি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৯জন শিক্ষার্থী।
চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল চিত্রে দেখা গেছে, উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় চকরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ১০৫৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ১০৪৮ জন। যেখানে পাস করেছে ৩২২ জন। ফেল করেছে ৭৩৪ জন। পাশের হার ৩০ দশমিক৭৩ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ জন।
চকরিয়া মহিলা কলেজ থেকে ৫৫২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ৫৪৪ জন। যেখানে পাস করেছে ১৬৭ জন। ফেল করেছে ৩৮৫ জন। পাশের হার ৩০ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন।
ডুলাহাজরা কলেজ থেকে ৪৫৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ৪৫৬ জন। যেখানে পাস করেছে ১৭১ জন। ফেল করেছে ২৮৭ জন। পাশের হার ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পায়নি কেউ।
বদরখালী কলেজ থেকে ২৪৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ২৪৩ জন। যেখানে পাস করেছে ৫৯ জন। ফেল করেছে ১৯৩ জন। পাশের হার ২৪ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ নেই।
চকরিয়া সিটি কলেজ থেকে ১২৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ১২৩ জন। যেখানে পাস করেছে ২৬ জন। ফেল করেছে ৯৯ জন। পাশের হার ২১ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ নেই।
চকরিয়া কর্মাস কলেজ থেকে মাত্র দুইজন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেন একজন। ফলাফলে পাস কিংবা জিপিএ-৫ একটিও নেই। এ কলেজ থেকে গত বছরও কেউ পাস করেনি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার ৬টি কলেজের মধ্যে একমাত্র সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে চকরিয়া সরকারি কলেজ। এ কলেজ থেকে পরীক্ষায় ১০৪৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৩২২ জন। আর ফেল করেছে ৭৩৪ জন শিক্ষার্থী।
অভিযোগ উঠেছে, ফেল হওয়া শিক্ষার্থীদের অনেকে এইচএসসির নির্বাচনী (কলেজ কর্তৃপক্ষ টেস্ট পরীক্ষা) পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছিলেন। সে সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের বোর্ড পরীক্ষায় সুযোগ দেয়া থেকে বিরত রাখতে সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করে তাদের পরীক্ষায় সুযোগ দেয়ার দাবিতে অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীরা চলতিবছরের ৩ মার্চ তারিখে কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়কে (চকরিয়া কলেজের সামনে) অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ অনেকটা বাধ্য হয়ে এসব শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেন।
জানতে চাইলে চকরিয়া সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুসরাত জাহান বলেন, আমরা কলেজের লেখাপড়ার মানটি ধরতে রাখতে চেষ্টা করেছিলাম। যেহেতু কলেজের ১০৪৮ জন পরীক্ষার্থী নির্বাচনী (টেস্ট পরীক্ষা) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সেখানে ৬৪০ জন শিক্ষার্থী ফেল করছিলো। যা নিয়ে বোর্ড পরীক্ষা দেয়ার মতো তাদের সার্মথ্য ছিল না।
সেজন্য আমরা অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করে আরও পরিপক্ব হয়ে আগামী বছর পরীক্ষা দিতে অনুরোধ করি। কিন্তু তারা আমাদের কথা শুনেনি। পরীক্ষায় সুযোগ দেয়ার দাবিতে আন্দোলনে নামে। এমন পরিস্থিতিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে বাধ্য হয়েছে।
আর এখন ফলাফল বির্পযয়ের ক্ষেত্রে দেখছি, কলেজ কর্তৃপক্ষের নেয়া সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।
অন্যদিকে ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত আলীম পরীক্ষায় চকরিয়া উপজেলার ৭টি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা কলেজগুলোর তুলনায় ভালো ফলাফল করেছে। মাদ্রাসার পাশের হার ৮৬ দশমিক ৪১ শতাংশ। আর তিনটি মাদরাসার ১৮ জন পেয়েছেন জিপিএ-৫।
ফলাফল চিত্র অনুযায়ী চকরিয়া সাহারবিলের আনোয়ারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা, ছিকলঘাট
আমজাদিয়া রফিকুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসা, বরইতলীর পহরচাঁদা ফাজিল মাদ্রাসা, বদরখালী এমএস ফাজিল মাদ্রাসা, খুটাখালী তমিজিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, বেতুয়াবাজারস্থ হযরত ফাতিমা বালিকা ফাজিল মাদ্রাসা ও ডুলাহাজারা আরবিয়া মারফিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে ৪১৯ জনের মধ্যে ৪১২ জন শিক্ষার্থী আলীম পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৩৫৬ জন।
আর ফেল করেছে ৫৪ জন শিক্ষার্থী।