নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভায় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও জনদুর্ভোগ লাঘবে শহরজুড়ে নানামুখী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে পৌর এলাকার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্প। পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, সরকারের উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের অধীন জনদুর্ভোগ কমাতে গ্রহণ করা হয়েছে ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প। ইতোমধ্যে ৩টি প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৯টি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এতে ব্যয় হচ্ছে ৫ কোটি ২২ লাখ টাকারও বেশি অর্থ। চলতি মাসেই এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সম্প্রতি বৃষ্টিপাতের কারণে কাজ শেষ হতে বিলম্ব হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। এসব প্রকল্প পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে নাগরিক সুবিধা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে সূত্রটি জানায়। একই সঙ্গে অবসান হবে বিদ্যমান নাগরিক দুর্ভোগ।
সূত্র মতে, বিগত সময়ে অর্থাভাবে পৌরসভার উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়ে। এতে করে পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে নাগরিক সেবা তলানীতে গিয়ে পৌঁছায়। ফলে ক্ষুব্ধ শহরবাসী এলাকার রাস্তাঘাট উন্নয়নের দাবিতে মিছিল, মানববন্ধন, পৌরসভা ঘেরাও ও সভা-সমাবেশ পর্যন্ত করতে বাধ্য হয়। তারপরও পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোন প্রতিকার মেলেনি। তখন বলা হয়েছিল বাজেট নেই, তাই বাজেট এলেই কাজ শুরু করা হবে।
তবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গেল বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে দৃশ্যপট সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। সরকারি নির্দেশনায় ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সৈয়দপুর পৌরসভার প্রশাসক হিসাবে দাযিত্ব গ্রহণ করেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী। তিনি দায়িত্ব পেয়ে পৌরসভার পুঞ্জিভূত সমস্যার সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে রাজনীতিক, সুধিজন, প্রশাসনের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে একাধিকবার মতবিনিময় করেন। সেসব বৈঠকে উঠে আসে বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা। দেওয়া হয় নানা পরামর্শ। পরবর্তীতে সেসব পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশাসনিক প্রচেষ্টায় পৌর এলাকায় উন্নয়নে কোভিড- ১৯ ও উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের আওতায় শতাধিক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ফলে শহরের ১৫টি ওয়ার্ড জুড়ে শুরু হয় রাস্তা সংস্কার, ড্রেন ও কালভার্ট নির্মাণের মত একগুচ্ছ প্রকল্পের কাজ। এসবের মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে এবং বাকীগুলো খুব শিগগির শেষ হবে বলে জানা গেছে।
এসব কাজের মধ্যে রয়েছে ৫ দশমিক ১৬২ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার এবং ২ দশমিক ৯৩৮ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন নির্মাণ, পৌরসভার সুপার মার্কেটের উন্নয়নের মত উল্লেখযোগ্য প্রকল্প। এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে শহরবাসীর যাতায়াতের ভোগান্তির অবসান হবে। একই সঙ্গে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে সড়কে জলাবদ্ধতা থাকবে না। আর যেসব সড়কে ড্রেন ছিলো না, সেসব সড়কে ড্রেন নির্মাণের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা উন্নত করা হচ্ছে। এদিকে উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের প্রকল্পের সঙ্গে দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে রিজিলিয়েন্ট আরবান টেরিটোরিয়াল ডেভলপমেন্ট প্রজেক্টের (আরইউটিডিপি) আওতায় ২টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ওই প্রকল্পের কাজের জন্য ইতিমধ্যে ই-টেন্ডারের মাধ্যমে দরপত্র খোলা হয়েছে। ওই কাজের জন্য বর্তমানে যাচাই বাছাই চলছে। খুব শিগগির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হবে বলে পৌরসভার প্রকৌশল দপ্তরের সুত্রটি নিশ্চিত করেছে। প্রক্রিয়াধীন এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে রয়েছে শেরেবাংলা ও শহীদ জহুরুল হক সড়কের ৭ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও নির্মাণ। এছাড়া ৭ কিলোমিটার ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও রাস্তায় সড়কবাতি স্থাপন করার মত প্রকল্প অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে, সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল খালেক বলেন, কাজগুলোর গুণগত মান ঠিক রাখতে প্রকল্প এলাকাগুলোতে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। যাতে প্রকল্পের কাজের মান নিয়ে কোন প্রশ্ন না ওঠে।
প্রকল্প সম্পর্কে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, নগরবাসী সড়ক ও ড্রেনের প্রয়োজনীয়তা নিরূপণ করে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে মানুষের যাতায়াত ও পানি নিষ্কাশনের মত সমস্যার নিরসন হবে। আমরা নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি এবং উন্নত পৌরসভা গড়ে তুলতে যা করা দরকার তা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান, সৈয়দপুর পৌরসভার উন্নয়নে যে পরিমাণ কাজ করা দরকার, তা স্বল্প সময়ে করা সম্ভব নয়। তবে উন্নয়ন প্রকল্পের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে তা করা সম্ভব হবে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।
রোববার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভায় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও জনদুর্ভোগ লাঘবে শহরজুড়ে নানামুখী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে পৌর এলাকার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্প। পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, সরকারের উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের অধীন জনদুর্ভোগ কমাতে গ্রহণ করা হয়েছে ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প। ইতোমধ্যে ৩টি প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৯টি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এতে ব্যয় হচ্ছে ৫ কোটি ২২ লাখ টাকারও বেশি অর্থ। চলতি মাসেই এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সম্প্রতি বৃষ্টিপাতের কারণে কাজ শেষ হতে বিলম্ব হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। এসব প্রকল্প পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে নাগরিক সুবিধা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে সূত্রটি জানায়। একই সঙ্গে অবসান হবে বিদ্যমান নাগরিক দুর্ভোগ।
সূত্র মতে, বিগত সময়ে অর্থাভাবে পৌরসভার উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়ে। এতে করে পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে নাগরিক সেবা তলানীতে গিয়ে পৌঁছায়। ফলে ক্ষুব্ধ শহরবাসী এলাকার রাস্তাঘাট উন্নয়নের দাবিতে মিছিল, মানববন্ধন, পৌরসভা ঘেরাও ও সভা-সমাবেশ পর্যন্ত করতে বাধ্য হয়। তারপরও পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোন প্রতিকার মেলেনি। তখন বলা হয়েছিল বাজেট নেই, তাই বাজেট এলেই কাজ শুরু করা হবে।
তবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গেল বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে দৃশ্যপট সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। সরকারি নির্দেশনায় ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সৈয়দপুর পৌরসভার প্রশাসক হিসাবে দাযিত্ব গ্রহণ করেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী। তিনি দায়িত্ব পেয়ে পৌরসভার পুঞ্জিভূত সমস্যার সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে রাজনীতিক, সুধিজন, প্রশাসনের কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে একাধিকবার মতবিনিময় করেন। সেসব বৈঠকে উঠে আসে বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা। দেওয়া হয় নানা পরামর্শ। পরবর্তীতে সেসব পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশাসনিক প্রচেষ্টায় পৌর এলাকায় উন্নয়নে কোভিড- ১৯ ও উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের আওতায় শতাধিক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ফলে শহরের ১৫টি ওয়ার্ড জুড়ে শুরু হয় রাস্তা সংস্কার, ড্রেন ও কালভার্ট নির্মাণের মত একগুচ্ছ প্রকল্পের কাজ। এসবের মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে এবং বাকীগুলো খুব শিগগির শেষ হবে বলে জানা গেছে।
এসব কাজের মধ্যে রয়েছে ৫ দশমিক ১৬২ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার এবং ২ দশমিক ৯৩৮ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন নির্মাণ, পৌরসভার সুপার মার্কেটের উন্নয়নের মত উল্লেখযোগ্য প্রকল্প। এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হলে শহরবাসীর যাতায়াতের ভোগান্তির অবসান হবে। একই সঙ্গে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে সড়কে জলাবদ্ধতা থাকবে না। আর যেসব সড়কে ড্রেন ছিলো না, সেসব সড়কে ড্রেন নির্মাণের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা উন্নত করা হচ্ছে। এদিকে উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের প্রকল্পের সঙ্গে দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে রিজিলিয়েন্ট আরবান টেরিটোরিয়াল ডেভলপমেন্ট প্রজেক্টের (আরইউটিডিপি) আওতায় ২টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ওই প্রকল্পের কাজের জন্য ইতিমধ্যে ই-টেন্ডারের মাধ্যমে দরপত্র খোলা হয়েছে। ওই কাজের জন্য বর্তমানে যাচাই বাছাই চলছে। খুব শিগগির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হবে বলে পৌরসভার প্রকৌশল দপ্তরের সুত্রটি নিশ্চিত করেছে। প্রক্রিয়াধীন এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে রয়েছে শেরেবাংলা ও শহীদ জহুরুল হক সড়কের ৭ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও নির্মাণ। এছাড়া ৭ কিলোমিটার ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও রাস্তায় সড়কবাতি স্থাপন করার মত প্রকল্প অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে, সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল খালেক বলেন, কাজগুলোর গুণগত মান ঠিক রাখতে প্রকল্প এলাকাগুলোতে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। যাতে প্রকল্পের কাজের মান নিয়ে কোন প্রশ্ন না ওঠে।
প্রকল্প সম্পর্কে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, নগরবাসী সড়ক ও ড্রেনের প্রয়োজনীয়তা নিরূপণ করে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে মানুষের যাতায়াত ও পানি নিষ্কাশনের মত সমস্যার নিরসন হবে। আমরা নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি এবং উন্নত পৌরসভা গড়ে তুলতে যা করা দরকার তা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান, সৈয়দপুর পৌরসভার উন্নয়নে যে পরিমাণ কাজ করা দরকার, তা স্বল্প সময়ে করা সম্ভব নয়। তবে উন্নয়ন প্রকল্পের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে তা করা সম্ভব হবে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।