২৪ বছরে এ কমিশন বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য ‘কিছুই করতে পারেনি’
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সভা স্থগিত হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অধিকারকর্মীসহ দেশের ৩৩ নাগরিক। রাঙামাটিতে গতকাল রোববার এ সভা হওয়ার কথা ছিল।
সোমবার,(২০ অক্টোবর ২০২৫) অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদার নামে পাঠানো বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর ক্ষোভ, উদ্বেগ ও বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, পার্বত্য তিন জেলায় ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিষ্পত্তি কমিশন গঠিত হলেও গত ২৪ বছরে এ কমিশন বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য কিছুই করতে পারেনি। ২০১৬ সালে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধনের পর ভূমি কমিশনের কয়েকটি সভা হয় এবং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসে, যেগুলো বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইতোমধ্যে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনে ২৬ হাজারের বেশি ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির আবেদন জমা পড়েছে বলে জানা যায়। কিন্তু এগুলো নিষ্পত্তির জন্য কমিশনকে কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়নি, এমনকি কমিশন পরিচালনার জন্য যথাযথ লোকবল এবং প্রয়োজনীয় বাজেটসহ অন্য আনুষঙ্গিক ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। এর আগের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যানরাও এই সভা করার ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি এবং নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুল হাফিজও সব পরিস্থিতি জানার পরও তথাকথিত নাগরিক পরিষদ ও তার ক্ষমতার পেছনের স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের হাতে জিম্মি হয়ে একই পথে চলে সভা না করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।’
রাঙামাটিতে গত রোববার পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সভার তিন দিন আগে গত বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে এসে সভা স্থগিতের আহ্বান জানায় পাহাড়ের বাঙালিদের সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘সচেতন ছাত্র-জনতা’। সভা স্থগিত না করলে তারা হরতাল-অবরোধের হুমকিও দেয়। সংবাদ সম্মেলনের পর সেদিনই এক চিঠিতে ‘অনিবার্য কারণবশত’ সভা স্থগিতের কথা জানায় কমিশন।
এসব ঘটনার বিষয়ে ৩৩ নাগরিকের বক্তব্য হলো, সরকারের ভেতরের একটি প্রভাবশালী মহল প্রচ্ছন্নভাবে, কখনো কখনো প্রকাশ্যে এ চুক্তি বিরোধীদের ইন্ধন যুগিয়ে আসছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তাদের মদদে এই কথিত নাগারিক পরিষদ সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের নির্ধারিত সভা বাতিলের জন্য রাঙামাটি সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে অবরোধের হুমকি দিয়েছে। আর এই উছিলায় গত ১৯ অক্টোবরের পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের পূর্বনির্ধারিত সভা স্থগিত করা হয়েছে।’
বিবৃতিতে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, নারী পক্ষের সদস্য শিরীন পারভীন হক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, তবারক হোসেন ও পারভেজ হাসেম, বেলার প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম ও বিএনডব্লিউএলএর নির্বাহী পরিচালক সালমা আলীর সই রয়েছে।
বিবৃতিতে সই করেছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, জোবাইদা নাসরিন, খাইরুল চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেরদৌস আজীম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মোশরেকা অদিতি হক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তানজীম তিতিলও।
কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা, কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মনিন্দ্র কুমার নাথ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সাইদুর রহমান, সাংবাদিক সাইফুর রহমান তপন, মানবাধিকার কর্মী মাহাবুবুল হক, কবি ও মানবাধিকার কর্মী শাহেদ কায়েস, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কোষাধ্যক্ষ মেইনথিন প্রমীলা, মানবাধিকার কর্মী দীপায়ন খীসা, সাঈদ আহমেদ, আদিবাসী অধিকার কর্মী হানা শামস আহমেদ এবং সাঙ্গাতের কোর গ্রুপ মেম্বার মুক্তাশ্রী চাকমাও আছেন ৩৩ নাগরিকের তালিকায়।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
২৪ বছরে এ কমিশন বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য ‘কিছুই করতে পারেনি’
সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সভা স্থগিত হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অধিকারকর্মীসহ দেশের ৩৩ নাগরিক। রাঙামাটিতে গতকাল রোববার এ সভা হওয়ার কথা ছিল।
সোমবার,(২০ অক্টোবর ২০২৫) অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদার নামে পাঠানো বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর ক্ষোভ, উদ্বেগ ও বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, পার্বত্য তিন জেলায় ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিষ্পত্তি কমিশন গঠিত হলেও গত ২৪ বছরে এ কমিশন বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য কিছুই করতে পারেনি। ২০১৬ সালে পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধনের পর ভূমি কমিশনের কয়েকটি সভা হয় এবং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসে, যেগুলো বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইতোমধ্যে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনে ২৬ হাজারের বেশি ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির আবেদন জমা পড়েছে বলে জানা যায়। কিন্তু এগুলো নিষ্পত্তির জন্য কমিশনকে কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়নি, এমনকি কমিশন পরিচালনার জন্য যথাযথ লোকবল এবং প্রয়োজনীয় বাজেটসহ অন্য আনুষঙ্গিক ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। এর আগের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের চেয়ারম্যানরাও এই সভা করার ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি এবং নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুল হাফিজও সব পরিস্থিতি জানার পরও তথাকথিত নাগরিক পরিষদ ও তার ক্ষমতার পেছনের স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের হাতে জিম্মি হয়ে একই পথে চলে সভা না করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।’
রাঙামাটিতে গত রোববার পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের সভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সভার তিন দিন আগে গত বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে এসে সভা স্থগিতের আহ্বান জানায় পাহাড়ের বাঙালিদের সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘সচেতন ছাত্র-জনতা’। সভা স্থগিত না করলে তারা হরতাল-অবরোধের হুমকিও দেয়। সংবাদ সম্মেলনের পর সেদিনই এক চিঠিতে ‘অনিবার্য কারণবশত’ সভা স্থগিতের কথা জানায় কমিশন।
এসব ঘটনার বিষয়ে ৩৩ নাগরিকের বক্তব্য হলো, সরকারের ভেতরের একটি প্রভাবশালী মহল প্রচ্ছন্নভাবে, কখনো কখনো প্রকাশ্যে এ চুক্তি বিরোধীদের ইন্ধন যুগিয়ে আসছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তাদের মদদে এই কথিত নাগারিক পরিষদ সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের নির্ধারিত সভা বাতিলের জন্য রাঙামাটি সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে অবরোধের হুমকি দিয়েছে। আর এই উছিলায় গত ১৯ অক্টোবরের পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের পূর্বনির্ধারিত সভা স্থগিত করা হয়েছে।’
বিবৃতিতে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, নারী পক্ষের সদস্য শিরীন পারভীন হক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, তবারক হোসেন ও পারভেজ হাসেম, বেলার প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম ও বিএনডব্লিউএলএর নির্বাহী পরিচালক সালমা আলীর সই রয়েছে।
বিবৃতিতে সই করেছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, জোবাইদা নাসরিন, খাইরুল চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেরদৌস আজীম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মোশরেকা অদিতি হক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তানজীম তিতিলও।
কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা, কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মনিন্দ্র কুমার নাথ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সাইদুর রহমান, সাংবাদিক সাইফুর রহমান তপন, মানবাধিকার কর্মী মাহাবুবুল হক, কবি ও মানবাধিকার কর্মী শাহেদ কায়েস, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কোষাধ্যক্ষ মেইনথিন প্রমীলা, মানবাধিকার কর্মী দীপায়ন খীসা, সাঈদ আহমেদ, আদিবাসী অধিকার কর্মী হানা শামস আহমেদ এবং সাঙ্গাতের কোর গ্রুপ মেম্বার মুক্তাশ্রী চাকমাও আছেন ৩৩ নাগরিকের তালিকায়।