তদারকির ব্যর্থতায় দায় এড়ানোর প্রবণতা নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষক সমাজ
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় পর পর শিক্ষক লাঞ্ছিত ও মারধরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক সমাজ। প্রথমে একটি মাদ্রাসায় প্রভাষক দম্পতির হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত ও নারী শিক্ষক আহত হওয়ার ঘটনায় দ্রুত তদারকি ও সিদ্ধান্ত না আসায় শিক্ষক মহলে ক্ষোভ দানা বাঁধে।
এর মধ্যেই প্রকাশ্যে আসে আরেক অভিযোগ। একই অঞ্চলের মাধুপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী, অফিস সহকারী ও অফিস সহায়কের হাতে সহকারী শিক্ষক পঙ্কজ চন্দ্র মহন্ত মারধর ও অপমানের শিকার হয়েছেন বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
বছর বছর একই অফিস, একই তদারকি কাঠামো, কিন্তু শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের ধীরগতি ও উদাসীনতা শিক্ষকদের মধ্যে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।
প্রথম ঘটনায় চাঁদপুর ফাজিল (স্নাতক) মাদ্রাসায় প্রকাশ্যে শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার পর পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় শিক্ষক সমাজ প্রশ্ন তুলেছে- প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ শুধু উপস্থিতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ কেন?
দ্বিতীয় ঘটনায় সহকারী শিক্ষক পঙ্কজ চন্দ্র মহন্ত অভিযোগ করেন, তাকে শিক্ষক কমনরুমে ঢুকে চেয়ার, কিল-ঘুষি দিয়ে মারধর করা হয় এবং ধর্ম অবমাননাকর গালিগালাজসহ হত্যার হুমকি দেয়া হয়। অভিযোগে আরও বলা হয়, পরবর্তীতে মীমাংসার নামে জোরপূর্বক এক কাগজে সই করিয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়। তিনি পরে চিকিৎসা নেন এবং ন্যায়বিচারের আবেদন করেন।
তবে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হচ্ছে, ‘ঘটনার বাস্তবতা ভিন্ন। তদন্ত হলে প্রকৃত চিত্র বের হয়ে আসবে।’
শিক্ষক সমাজ বলছে, বিদ্যালয়-মাদ্রাসা নৈতিকতার পাঠশালা। সেখানে যদি শিক্ষক-স্টাফদের দ্বারা শিক্ষক লাঞ্ছিত হন এবং প্রশাসনিক তদারকি দ্রুত ও কার্যকর না হয় তাহলে এর দায় কে নেবে? এ অস্থিরতা পুরো শিক্ষা পরিবেশকে হুমকির মুখে ফেলছে।
এদিকে স্থানীয় শিক্ষক মহল অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি, নিরপেক্ষ তদন্ত ও জবাবদিহিমূলক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বলেন, যাদের হাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা তাদের নীরবতা বা ধীরগতি নতুন ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। দৃষ্টান্ত না হলে এ অসংস্কৃতি থামবে না।
এ বিষয়ে বিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শমসের আলী মন্ডল বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনীম আওন এর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, মাধুপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষককে মারধর করার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শমসের আলী মন্ডলকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
তদারকির ব্যর্থতায় দায় এড়ানোর প্রবণতা নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষক সমাজ
সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় পর পর শিক্ষক লাঞ্ছিত ও মারধরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক সমাজ। প্রথমে একটি মাদ্রাসায় প্রভাষক দম্পতির হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত ও নারী শিক্ষক আহত হওয়ার ঘটনায় দ্রুত তদারকি ও সিদ্ধান্ত না আসায় শিক্ষক মহলে ক্ষোভ দানা বাঁধে।
এর মধ্যেই প্রকাশ্যে আসে আরেক অভিযোগ। একই অঞ্চলের মাধুপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মী, অফিস সহকারী ও অফিস সহায়কের হাতে সহকারী শিক্ষক পঙ্কজ চন্দ্র মহন্ত মারধর ও অপমানের শিকার হয়েছেন বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
বছর বছর একই অফিস, একই তদারকি কাঠামো, কিন্তু শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের ধীরগতি ও উদাসীনতা শিক্ষকদের মধ্যে নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।
প্রথম ঘটনায় চাঁদপুর ফাজিল (স্নাতক) মাদ্রাসায় প্রকাশ্যে শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার পর পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় শিক্ষক সমাজ প্রশ্ন তুলেছে- প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ শুধু উপস্থিতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ কেন?
দ্বিতীয় ঘটনায় সহকারী শিক্ষক পঙ্কজ চন্দ্র মহন্ত অভিযোগ করেন, তাকে শিক্ষক কমনরুমে ঢুকে চেয়ার, কিল-ঘুষি দিয়ে মারধর করা হয় এবং ধর্ম অবমাননাকর গালিগালাজসহ হত্যার হুমকি দেয়া হয়। অভিযোগে আরও বলা হয়, পরবর্তীতে মীমাংসার নামে জোরপূর্বক এক কাগজে সই করিয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়। তিনি পরে চিকিৎসা নেন এবং ন্যায়বিচারের আবেদন করেন।
তবে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হচ্ছে, ‘ঘটনার বাস্তবতা ভিন্ন। তদন্ত হলে প্রকৃত চিত্র বের হয়ে আসবে।’
শিক্ষক সমাজ বলছে, বিদ্যালয়-মাদ্রাসা নৈতিকতার পাঠশালা। সেখানে যদি শিক্ষক-স্টাফদের দ্বারা শিক্ষক লাঞ্ছিত হন এবং প্রশাসনিক তদারকি দ্রুত ও কার্যকর না হয় তাহলে এর দায় কে নেবে? এ অস্থিরতা পুরো শিক্ষা পরিবেশকে হুমকির মুখে ফেলছে।
এদিকে স্থানীয় শিক্ষক মহল অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি, নিরপেক্ষ তদন্ত ও জবাবদিহিমূলক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বলেন, যাদের হাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা তাদের নীরবতা বা ধীরগতি নতুন ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। দৃষ্টান্ত না হলে এ অসংস্কৃতি থামবে না।
এ বিষয়ে বিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শমসের আলী মন্ডল বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনীম আওন এর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, মাধুপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষককে মারধর করার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শমসের আলী মন্ডলকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।