বগুড়ার শেরপুর পৌরসভায় কাগজে-কলমে বাস-ট্রাক ও অটোরিকসা রাখার কেন্দ্রীয় টার্মিনাল থাকলেও বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই। তবুও পৌর কর্তৃপক্ষ টার্মিনাল ইজারা দিতে দরপত্র আহবান করেছে। স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকার মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পৌর কর্তৃপক্ষের দাবি, শহরের ধুনটমোড় এলাকায় নিজস্ব জায়গায় টার্মিনাল রয়েছে। সেটি প্রতিবছরই ইজারা দিয়ে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো উল্টো চিত্র।
জানা যায়, শেরপুর শহরের ধুনটমোড় নামক স্থানে পৌরসভার মোট তিন একর জায়গা রয়েছে। এরমধ্যে মহাসড়ক প্রশস্তকরণের জন্য কিছু অংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। আর সিংহভাগ জমিতে মার্কেটের দোকানঘর রয়েছে। কেবল মাত্র পনের শতক জায়গার ওপরে ঝুলছে দুটি সাইনবোর্ড। একটিতে লেখা রয়েছে ‘ট্রাক টার্মিনাল’, অপরটিতে ‘বাস টার্মিনাল’। কিন্তু সেখানে গাড়ি রাখার মতো পর্যাপ্ত কোনো জায়গা নেই। এছাড়া সিএনজি চালিত ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকসা রাখার কোনো জায়গা না থাকায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক সংলগ্ন শেরপুর-কাজীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ধুনটমোড়ে রাখা হয়েছে। আর টাউন সার্ভিস খ্যাত করতোয়া গেটলক বাসগুলো শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকাস্থ পশ্চিমপাশে মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে রেখে যাত্রী তোলা হচ্ছিল। মূলত মহাসড়কটিকেই টার্মিনাল হিসেবে ইজারা দেখিয়ে অবৈধভাবে টাকা তোলা হয় বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, মহাসড়ক এলাকায় পরিবহন থেকে টাকা তোলা বন্ধের নির্দেশ থাকলেও শেরপুর পৌর কর্তৃপক্ষের টার্মিনাল ইজারা দেওয়ার মাধ্যমে অবৈধ টাকা আদায়ের বৈধতা পাচ্ছেন ইজারাদাররা। পৌর পরিষদের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী মাসের ৫ নভেম্বর দরপত্র বিক্রি করা হবে। পরদিন দরপত্র দাখিল ও উন্মুক্ত করা হবে। সে অনুযায়ী ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এক বছর টোল আদায় করা হবে।
একাধিক পরিবহন মালিক অভিযোগ করে বলেন, ইজারাদারের লোকজন জোর করেই মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর থেকে প্রতিদিন টোল আদায় করে থাকেন। এতে ব্যস্ততম ধুনট মোড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এমনকি ঘটছে ছোট-বড় সব দুর্ঘটনাও। এরপরও বন্ধ হয় না ইজারার নামে টোল আদায়। অথচ স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে টার্মিনাল ছাড়া কোনো সড়ক বা মহাসড়ক থেকে টোল উত্তোলন না করার নির্দেশনা রয়েছে। মালিক সমিতির নেতা সেলিম রেজা বলেন, শেরপুর পৌরসভায় প্রকৃতপক্ষে কোনো টার্মিনাল নেই। তাই তারা ব্যক্তিমালিকানাধীন তিনটি জায়গা টার্মিনাল হিসেবে ভাড়া নিয়ে বাস-ট্রাক রেখে থাকেন। এছাড়া মহাসড়কের পাশেও রাখা হয় রকমারি যানবাহন। তবুও পৌর কর্তৃপক্ষ টার্মিনাল ইজারার নামে মহাসড়ক থেকে প্রতিটি গাড়ির বিপরীতে টোল আদায় করছে। এটা এক ধরনের চাঁদাবাজি হিসেবে বলা চলে বলে মন্তব্য করেন তিনি। জানতে চাইলে শেরপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম শামিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই পৌরসভার বিভিন্ন টার্মিনাল ইজারা হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় এবারো ২০২৬ সালের জন্য ইজারা দিতে দরপত্র আহবান করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও শেরপুর পৌরসভার প্রশাসক মো. মনজুরুল আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, সদ্য এই উপজেলায় যোগদান করেছি। তাই অনেক কিছুই এখনো অজানা। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে জানাতে পারবো। এছাড়া কেউ অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে ইজারার নামে টাকা আদায় করলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে দাবি করেন তিনি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
বগুড়ার শেরপুর পৌরসভায় কাগজে-কলমে বাস-ট্রাক ও অটোরিকসা রাখার কেন্দ্রীয় টার্মিনাল থাকলেও বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব নেই। তবুও পৌর কর্তৃপক্ষ টার্মিনাল ইজারা দিতে দরপত্র আহবান করেছে। স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকার মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পৌর কর্তৃপক্ষের দাবি, শহরের ধুনটমোড় এলাকায় নিজস্ব জায়গায় টার্মিনাল রয়েছে। সেটি প্রতিবছরই ইজারা দিয়ে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো উল্টো চিত্র।
জানা যায়, শেরপুর শহরের ধুনটমোড় নামক স্থানে পৌরসভার মোট তিন একর জায়গা রয়েছে। এরমধ্যে মহাসড়ক প্রশস্তকরণের জন্য কিছু অংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। আর সিংহভাগ জমিতে মার্কেটের দোকানঘর রয়েছে। কেবল মাত্র পনের শতক জায়গার ওপরে ঝুলছে দুটি সাইনবোর্ড। একটিতে লেখা রয়েছে ‘ট্রাক টার্মিনাল’, অপরটিতে ‘বাস টার্মিনাল’। কিন্তু সেখানে গাড়ি রাখার মতো পর্যাপ্ত কোনো জায়গা নেই। এছাড়া সিএনজি চালিত ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকসা রাখার কোনো জায়গা না থাকায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক সংলগ্ন শেরপুর-কাজীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ধুনটমোড়ে রাখা হয়েছে। আর টাউন সার্ভিস খ্যাত করতোয়া গেটলক বাসগুলো শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকাস্থ পশ্চিমপাশে মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে রেখে যাত্রী তোলা হচ্ছিল। মূলত মহাসড়কটিকেই টার্মিনাল হিসেবে ইজারা দেখিয়ে অবৈধভাবে টাকা তোলা হয় বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, মহাসড়ক এলাকায় পরিবহন থেকে টাকা তোলা বন্ধের নির্দেশ থাকলেও শেরপুর পৌর কর্তৃপক্ষের টার্মিনাল ইজারা দেওয়ার মাধ্যমে অবৈধ টাকা আদায়ের বৈধতা পাচ্ছেন ইজারাদাররা। পৌর পরিষদের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী মাসের ৫ নভেম্বর দরপত্র বিক্রি করা হবে। পরদিন দরপত্র দাখিল ও উন্মুক্ত করা হবে। সে অনুযায়ী ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এক বছর টোল আদায় করা হবে।
একাধিক পরিবহন মালিক অভিযোগ করে বলেন, ইজারাদারের লোকজন জোর করেই মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর থেকে প্রতিদিন টোল আদায় করে থাকেন। এতে ব্যস্ততম ধুনট মোড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এমনকি ঘটছে ছোট-বড় সব দুর্ঘটনাও। এরপরও বন্ধ হয় না ইজারার নামে টোল আদায়। অথচ স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে টার্মিনাল ছাড়া কোনো সড়ক বা মহাসড়ক থেকে টোল উত্তোলন না করার নির্দেশনা রয়েছে। মালিক সমিতির নেতা সেলিম রেজা বলেন, শেরপুর পৌরসভায় প্রকৃতপক্ষে কোনো টার্মিনাল নেই। তাই তারা ব্যক্তিমালিকানাধীন তিনটি জায়গা টার্মিনাল হিসেবে ভাড়া নিয়ে বাস-ট্রাক রেখে থাকেন। এছাড়া মহাসড়কের পাশেও রাখা হয় রকমারি যানবাহন। তবুও পৌর কর্তৃপক্ষ টার্মিনাল ইজারার নামে মহাসড়ক থেকে প্রতিটি গাড়ির বিপরীতে টোল আদায় করছে। এটা এক ধরনের চাঁদাবাজি হিসেবে বলা চলে বলে মন্তব্য করেন তিনি। জানতে চাইলে শেরপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম শামিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই পৌরসভার বিভিন্ন টার্মিনাল ইজারা হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় এবারো ২০২৬ সালের জন্য ইজারা দিতে দরপত্র আহবান করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও শেরপুর পৌরসভার প্রশাসক মো. মনজুরুল আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, সদ্য এই উপজেলায় যোগদান করেছি। তাই অনেক কিছুই এখনো অজানা। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে জানাতে পারবো। এছাড়া কেউ অবৈধ পন্থা অবলম্বন করে ইজারার নামে টাকা আদায় করলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে দাবি করেন তিনি।