অগ্ন্যাশয়ের ব্যথা নিরাময়ে সফল ইন্টারভেনশন
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ক্যান্সার ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ১৫০ জন রোগী রেডিওথেরাপি নেন। কেমোথেরাপি নেন প্রতিদিন গড়ে ৬০ জন রোগী। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে গড়ে ১৫ জন নারী জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসার ব্রেকিথেরাপি নেন। চিকিৎসকরা বলছেন, বেশিরভাগ ক্যান্সারই চিকিৎসাযোগ্য এবং যেসব রোগী খুব মারাত্মক পর্যায়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আগে চিকিৎসা করানোর সুযোগ পান তারাও ভালো ফল পান। প্রতিদিন পেইন মেডিসিন আউটডোরে ক্যান্সার আক্রান্তদের দীর্ঘমেয়াদি ব্যাথার পরামর্শ ও ইন্টারভেনশন করা হয়। এ আধুনিক ইন্টারভেনশনে রোগীর নিডেল কেনা বাবদ ১ হাজার ৫০০ টাকা আর ওষুধের জন্য সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়। বেসরকারি পর্যায়ে খরচ হয় ২৫-৩০ হাজার টাকা।
এদিকে চমেক হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়া, পেইন, প্যালিয়েটিভ অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার বিভাগের অধীনে গত ১৪ অক্টোবর থেকে পেইন মেডিসিন আউটডোর সেবা চালু হয়। দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, ক্যান্সার রোগীর ব্যথা এবং জটিল নিরাময় অযোগ্য ব্যাথার ইন্টারভেনশন সেবা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কর্তৃক এখন এ বিভাগ থেকে দেয়া হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো ‘ফ্লোরোস্কপি গাইডেড সিলিয়াক প্লেক্সাস নিউরোলাইসিস’ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে চমেক হাসপাতালের পেইন মেডিসিন বিভাগে। অধ্যাপক ডা. কে এম বাকি বিল্লাহ ও কনসালটেন্ট ডা. মো. মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী এই মিনিমাল ইনভেসিভ ইন্টারভেনশন করেন।
ডা. মো. মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী বলেন, পটিয়ার সমীর দাশ নামের ৪৬ বছরের এক রোগী অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের তীব্র ব্যথায় আক্রান্ত ছিলেন। হাসপাতালের ক্যান্সার ওয়ার্ড থেকে পেইন মেডিসিন বিভাগে দুই সপ্তাহ আগে রেফার করা ওই রোগীর প্রথম সফল ইন্টারভেনশন করা হয়। প্রাথমিকপর্যায়ে ক্যান্সারের ব্যথা নিরাময়ে এ ধরনের আধুনিক ইন্টারভেনশন চট্টগ্রামে সরকারিপর্যায়ে এটাই ছিল প্রথম। বর্তমানে রোগী ব্যথামুক্ত।
ডা. মো. মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী জানান, অনেক সময় আমরা ছোটখাটো উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে চাই না বা সেগুলোকে পর্যাপ্ত গুরুত্ব দেই না। ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সবচেয়ে সাধারণ একটি উপসর্গ হচ্ছে জ্বর। যে স্থানে ক্যান্সার উৎপন্ন হয়েছে সেখান থেকে দেহের অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়া শুরু হলে প্রায়ই জ্বর দেখা দেয়। যদি ক্যান্সার বা এর চিকিৎসা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলে তাহলে জ্বর বেশি হয়। আমাদের দেশে ব্যথার চিকিৎসা গ্রহণ করে দশমিক ৫ শতাংশ। অথচ ভারতে ২ শতাংশ সময়মতো চিকিৎসা নেয়। পেইন কিলার ওষুধেও যেখানে ব্যথা কমানো যায় না, সেখানে অ্যাডভান্সড স্টেজে ক্যান্সারের ব্যথা নিরাময়ে এ পদ্ধতি বেশ কার্যকর।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রাথমিকপর্যায়ের ক্যান্সার একেবারে নিরাময় করার জন্য কেমোথেরাপি দেয়া হয়। এছাড়া ২য় ও ৩য় পর্যায়ের রোগীর ক্ষেত্রে ক্যান্সার কোষের বিস্তার রোধ করার জন্য এবং ৪র্থ পর্যায়ের রোগীর ব্যথা ও শারীরিক জটিলতা হ্রাস করার জন্য দেয়া হয় কেমো। এ অবস্থায়ও রোগী ব্যাথামুক্ত হন না।
ফ্লোরোস্কপি গাইডেড সিলিয়াক প্লেক্সাস নিউরোলাইসিস পদ্ধতিতে ফ্লোরোস্কপি (এক ধরনের এক্স-রে) ব্যবহার করে পেটের ওপরের অংশে অবস্থিত সিলিয়াক প্লেক্সাস নামক স্নায়ু গুচ্ছকে ধ্বংস করা হয়, যা প্রায়শই অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার বা দীর্ঘস্থায়ী প্যানক্রিয়াটাইটিসের মতো রোগের কারণে হওয়া অসহ্য ব্যথা উপশমের জন্য কার্যকরী। এ পদ্ধতিতে একটি সুইয়ের মাধ্যমে নিউরোলাইটিক এজেন্ট (যেমন: ইথানল) ইনজেকশন দেয়া হয়, যা স্নায়ুর সংকেত প্রেরণ বন্ধ করে ব্যথা কমায়। এতে কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানালেন ইন্টারভেনশনাল পেইন মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
অগ্ন্যাশয়ের ব্যথা নিরাময়ে সফল ইন্টারভেনশন
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ক্যান্সার ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ১৫০ জন রোগী রেডিওথেরাপি নেন। কেমোথেরাপি নেন প্রতিদিন গড়ে ৬০ জন রোগী। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে গড়ে ১৫ জন নারী জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসার ব্রেকিথেরাপি নেন। চিকিৎসকরা বলছেন, বেশিরভাগ ক্যান্সারই চিকিৎসাযোগ্য এবং যেসব রোগী খুব মারাত্মক পর্যায়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আগে চিকিৎসা করানোর সুযোগ পান তারাও ভালো ফল পান। প্রতিদিন পেইন মেডিসিন আউটডোরে ক্যান্সার আক্রান্তদের দীর্ঘমেয়াদি ব্যাথার পরামর্শ ও ইন্টারভেনশন করা হয়। এ আধুনিক ইন্টারভেনশনে রোগীর নিডেল কেনা বাবদ ১ হাজার ৫০০ টাকা আর ওষুধের জন্য সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়। বেসরকারি পর্যায়ে খরচ হয় ২৫-৩০ হাজার টাকা।
এদিকে চমেক হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়া, পেইন, প্যালিয়েটিভ অ্যান্ড ইনটেনসিভ কেয়ার বিভাগের অধীনে গত ১৪ অক্টোবর থেকে পেইন মেডিসিন আউটডোর সেবা চালু হয়। দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, ক্যান্সার রোগীর ব্যথা এবং জটিল নিরাময় অযোগ্য ব্যাথার ইন্টারভেনশন সেবা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কর্তৃক এখন এ বিভাগ থেকে দেয়া হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো ‘ফ্লোরোস্কপি গাইডেড সিলিয়াক প্লেক্সাস নিউরোলাইসিস’ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে চমেক হাসপাতালের পেইন মেডিসিন বিভাগে। অধ্যাপক ডা. কে এম বাকি বিল্লাহ ও কনসালটেন্ট ডা. মো. মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী এই মিনিমাল ইনভেসিভ ইন্টারভেনশন করেন।
ডা. মো. মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী বলেন, পটিয়ার সমীর দাশ নামের ৪৬ বছরের এক রোগী অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের তীব্র ব্যথায় আক্রান্ত ছিলেন। হাসপাতালের ক্যান্সার ওয়ার্ড থেকে পেইন মেডিসিন বিভাগে দুই সপ্তাহ আগে রেফার করা ওই রোগীর প্রথম সফল ইন্টারভেনশন করা হয়। প্রাথমিকপর্যায়ে ক্যান্সারের ব্যথা নিরাময়ে এ ধরনের আধুনিক ইন্টারভেনশন চট্টগ্রামে সরকারিপর্যায়ে এটাই ছিল প্রথম। বর্তমানে রোগী ব্যথামুক্ত।
ডা. মো. মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী জানান, অনেক সময় আমরা ছোটখাটো উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে চাই না বা সেগুলোকে পর্যাপ্ত গুরুত্ব দেই না। ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সবচেয়ে সাধারণ একটি উপসর্গ হচ্ছে জ্বর। যে স্থানে ক্যান্সার উৎপন্ন হয়েছে সেখান থেকে দেহের অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়া শুরু হলে প্রায়ই জ্বর দেখা দেয়। যদি ক্যান্সার বা এর চিকিৎসা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলে তাহলে জ্বর বেশি হয়। আমাদের দেশে ব্যথার চিকিৎসা গ্রহণ করে দশমিক ৫ শতাংশ। অথচ ভারতে ২ শতাংশ সময়মতো চিকিৎসা নেয়। পেইন কিলার ওষুধেও যেখানে ব্যথা কমানো যায় না, সেখানে অ্যাডভান্সড স্টেজে ক্যান্সারের ব্যথা নিরাময়ে এ পদ্ধতি বেশ কার্যকর।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রাথমিকপর্যায়ের ক্যান্সার একেবারে নিরাময় করার জন্য কেমোথেরাপি দেয়া হয়। এছাড়া ২য় ও ৩য় পর্যায়ের রোগীর ক্ষেত্রে ক্যান্সার কোষের বিস্তার রোধ করার জন্য এবং ৪র্থ পর্যায়ের রোগীর ব্যথা ও শারীরিক জটিলতা হ্রাস করার জন্য দেয়া হয় কেমো। এ অবস্থায়ও রোগী ব্যাথামুক্ত হন না।
ফ্লোরোস্কপি গাইডেড সিলিয়াক প্লেক্সাস নিউরোলাইসিস পদ্ধতিতে ফ্লোরোস্কপি (এক ধরনের এক্স-রে) ব্যবহার করে পেটের ওপরের অংশে অবস্থিত সিলিয়াক প্লেক্সাস নামক স্নায়ু গুচ্ছকে ধ্বংস করা হয়, যা প্রায়শই অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার বা দীর্ঘস্থায়ী প্যানক্রিয়াটাইটিসের মতো রোগের কারণে হওয়া অসহ্য ব্যথা উপশমের জন্য কার্যকরী। এ পদ্ধতিতে একটি সুইয়ের মাধ্যমে নিউরোলাইটিক এজেন্ট (যেমন: ইথানল) ইনজেকশন দেয়া হয়, যা স্নায়ুর সংকেত প্রেরণ বন্ধ করে ব্যথা কমায়। এতে কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানালেন ইন্টারভেনশনাল পেইন মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা।