মহেশপুর (ঝিনাইদহ) : ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স -সংবাদ
ঝিনাইদহ জেলার সীমান্তঘেঁষা মহেশপুর উপজেলার প্রায় চার লাখ মানুষের একমাত্র ভরসা মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটি উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার জনগণের স্বাস্থ্যসেবার কেন্দ্র হলেও বর্তমানে তীব্র জনবল সংকট ও নানাবিধ সমস্যায় কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা প্রত্যাশিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। সামান্য জটিল রোগী এলেই চিকিৎসকরা অসহায়ভাবে যশোর সদর হাসপাতাল বা জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে সাধারণ মানুষকে একদিকে চিকিৎসার জন্য দূরপাল্লার পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে, অন্যদিকে বাড়ছে ভোগান্তি ও চিকিৎসা ব্যয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২১ জন ডাক্তারের বিপরীতে সেবা দিচ্ছেন মাত্র তিন জন চিকিৎসক। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তো নেই বললেই চলে। নার্সের ৩২টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ৩১ জন, তবে পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অবস্থা আরও শোচনীয় পাঁচ জন পরিচ্ছন্ন কর্মীর জায়গায় একজনও নেই, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর তিন জনের মধ্যে একজন, পরিদর্শক তিন জনের মধ্যে একজন এবং আয়া দুই জনের মধ্যে মাত্র একজন কর্মরত। এসব শূন্যপদের কারণে হাসপাতালে দৈনন্দিন কার্যক্রম ও পরিচ্ছন্নতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হেলেনা আক্তার নিপা বলেন, আমি সদ্য এখানে যোগদান করেছি। তিন জন ডাক্তার দিয়ে আমরা অনেক কষ্টে সেবা চালিয়ে যাচ্ছি। কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর অভাবও ভয়াবহ। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় জনবল ও ডাক্তার চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, হাসপাতালের পাশ দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদ খননকালে মাটি পড়ে ড্রেনগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে নোংরা পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ না থাকায় রোগীদের সম্পূর্ণ চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. মো. কামরুজ্জামান বলেন, মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রয়োজনীয় চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। আশা করছি খুব শিগগিরই নতুন ডাক্তার ও কর্মচারী নিয়োগের মাধ্যমে এই সংকট নিরসন হবে।স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, সীমান্তবর্তী এ অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। তাদের দাবি, জনবল সংকট নিরসন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার এবং ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করে মহেশপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে পুনরায় প্রাণবন্ত করতে হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মহেশপুর (ঝিনাইদহ) : ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স -সংবাদ
বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
ঝিনাইদহ জেলার সীমান্তঘেঁষা মহেশপুর উপজেলার প্রায় চার লাখ মানুষের একমাত্র ভরসা মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটি উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার জনগণের স্বাস্থ্যসেবার কেন্দ্র হলেও বর্তমানে তীব্র জনবল সংকট ও নানাবিধ সমস্যায় কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা প্রত্যাশিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। সামান্য জটিল রোগী এলেই চিকিৎসকরা অসহায়ভাবে যশোর সদর হাসপাতাল বা জেলা হাসপাতালে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে সাধারণ মানুষকে একদিকে চিকিৎসার জন্য দূরপাল্লার পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে, অন্যদিকে বাড়ছে ভোগান্তি ও চিকিৎসা ব্যয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২১ জন ডাক্তারের বিপরীতে সেবা দিচ্ছেন মাত্র তিন জন চিকিৎসক। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তো নেই বললেই চলে। নার্সের ৩২টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ৩১ জন, তবে পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অবস্থা আরও শোচনীয় পাঁচ জন পরিচ্ছন্ন কর্মীর জায়গায় একজনও নেই, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর তিন জনের মধ্যে একজন, পরিদর্শক তিন জনের মধ্যে একজন এবং আয়া দুই জনের মধ্যে মাত্র একজন কর্মরত। এসব শূন্যপদের কারণে হাসপাতালে দৈনন্দিন কার্যক্রম ও পরিচ্ছন্নতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হেলেনা আক্তার নিপা বলেন, আমি সদ্য এখানে যোগদান করেছি। তিন জন ডাক্তার দিয়ে আমরা অনেক কষ্টে সেবা চালিয়ে যাচ্ছি। কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর অভাবও ভয়াবহ। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় জনবল ও ডাক্তার চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, হাসপাতালের পাশ দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদ খননকালে মাটি পড়ে ড্রেনগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে নোংরা পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ না থাকায় রোগীদের সম্পূর্ণ চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. মো. কামরুজ্জামান বলেন, মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রয়োজনীয় চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। আশা করছি খুব শিগগিরই নতুন ডাক্তার ও কর্মচারী নিয়োগের মাধ্যমে এই সংকট নিরসন হবে।স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, সীমান্তবর্তী এ অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। তাদের দাবি, জনবল সংকট নিরসন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার এবং ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করে মহেশপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে পুনরায় প্রাণবন্ত করতে হবে।