‘আমরা জীবন পুনর্গঠন প্রচেষ্টার জন্য একটি বাস্তব সুযোগের অপেক্ষায় আছি। যুদ্ধের পর প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে আবার সবকিছু ঠিকঠাক করতে শুরু করেছিলাম। তারপরও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘিত হয়। সৌভাগ্যক্রমে এটি দ্রুত শেষ হয়ে যায়। কিন্তু বারবার ইসরায়েলের হামলায় মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়ার ফুরসত আমাদের মিলছে না। ভয়ে আছি, কখন আবার হামলা হয়!’ গাজার বাসিন্দা মাজেন শাহীন আলজাজিরাকে এসব কথা বলেন। ইসরায়েলের ক্রমাগত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের কারণে অনেক ফিলিস্তিনি আশা হারিয়ে ফেলছেন।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের বারবার হামলায় গাজার বাসিন্দাদের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দখলদার বাহিনী যে কোনো সময় হামলা চালাতে পারে– এই শঙ্কায় দিন কাটছে তাদের। বাস্তুচ্যুত মানুষ ঘরে ফিরে জীবন গোছাতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাদের রাত কাটছে নির্ঘুম।
গাজা শহরের বাসিন্দা হাসান লুব্বাদ বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজাজুড়ে নতুন হামলার পরে ভেবেছিলাম, কিছুটা নিরাপত্তা ও শান্তি আসবে জনপদে। নতুন আশায় বুক বেঁধেছিলাম। যারা বিশ্বাস করেছিলেন, যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে; হামলার শঙ্কায় তারা আবারও ভয়ের মধ্যে বাস করছেন।’
এ অবস্থায় বাসিন্দাদের মনে প্রশ্ন– এই যুদ্ধবিরতি দিয়ে কী হলো। এর মাধ্যমে শান্তি তো আসেনি। বরং প্রতিনিয়ত কখন হামলার মুখে পড়বে নিষ্পাপ শিশুরা– সেই শঙ্কা কাজ করছে। চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হয়। প্রথম দিকে গাজায় কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বারবার ইসরায়েলি লঙ্ঘনের ফলে ফিলিস্তিনিরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। দুই বছর আগের যে জীবন ছিল তাদের, সেই জীবন আর ফিরে পাওয়ার আশা নেই।
গত বুধবার এক দিনের হামলায় ১০৪ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েল। দক্ষিণ গাজায় বেশ কয়েকটি বিমান হামলায় আহত হন ২৫৩ জন, যা এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির সবচেয়ে বড় লঙ্ঘন। তবে হামলা থেমে নেই।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ১০টি বিমান হামলা হয়েছে। যুদ্ধবিরতি ‘পুনরায় শুরু’র ঘোষণা দিয়ে তারা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে হামলায় ২১১ জন নিহত এবং ৫৯৭ জন আহত হয়েছেন। গত দুই বছরে ৬৮ হাজার ৫২৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৯৫ জন আহত হয়েছেন। গত ১০ অক্টোবর গাজায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার অধীনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। প্রথম পর্যায়ে প্রায় ২০০০ ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি দেয় হামাস। দ্বিতীয় দফার পরিকল্পনায় গাজার পুনর্গঠন ও হামাস ছাড়াই একটি নতুন শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বলা আছে।
ফিলিস্তিনিদের প্রশ্ন, আন্তর্জাতিক গ্যারান্টি কোথায়? কোথায় সেই মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো, যারা শান্তির ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল? বুধবারের হামলায় শাহীনের এক বন্ধু গুরুতর আহত হন। গাজা শহরের বাসিন্দা সুহা আওয়াদ বলছেন, ‘আমরা যুদ্ধের সম্পূর্ণ অবসান ও সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি চাই। আমরা কেবল নিরাপদে থাকতে চাই। যুদ্ধবিরতির প্রতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতি চাই; কেবল এক বা দুই সপ্তাহের জন্য হবে না।’
 
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                        ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                           	                                            শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
‘আমরা জীবন পুনর্গঠন প্রচেষ্টার জন্য একটি বাস্তব সুযোগের অপেক্ষায় আছি। যুদ্ধের পর প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে আবার সবকিছু ঠিকঠাক করতে শুরু করেছিলাম। তারপরও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘিত হয়। সৌভাগ্যক্রমে এটি দ্রুত শেষ হয়ে যায়। কিন্তু বারবার ইসরায়েলের হামলায় মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়ার ফুরসত আমাদের মিলছে না। ভয়ে আছি, কখন আবার হামলা হয়!’ গাজার বাসিন্দা মাজেন শাহীন আলজাজিরাকে এসব কথা বলেন। ইসরায়েলের ক্রমাগত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের কারণে অনেক ফিলিস্তিনি আশা হারিয়ে ফেলছেন।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের বারবার হামলায় গাজার বাসিন্দাদের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দখলদার বাহিনী যে কোনো সময় হামলা চালাতে পারে– এই শঙ্কায় দিন কাটছে তাদের। বাস্তুচ্যুত মানুষ ঘরে ফিরে জীবন গোছাতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাদের রাত কাটছে নির্ঘুম।
গাজা শহরের বাসিন্দা হাসান লুব্বাদ বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজাজুড়ে নতুন হামলার পরে ভেবেছিলাম, কিছুটা নিরাপত্তা ও শান্তি আসবে জনপদে। নতুন আশায় বুক বেঁধেছিলাম। যারা বিশ্বাস করেছিলেন, যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে; হামলার শঙ্কায় তারা আবারও ভয়ের মধ্যে বাস করছেন।’
এ অবস্থায় বাসিন্দাদের মনে প্রশ্ন– এই যুদ্ধবিরতি দিয়ে কী হলো। এর মাধ্যমে শান্তি তো আসেনি। বরং প্রতিনিয়ত কখন হামলার মুখে পড়বে নিষ্পাপ শিশুরা– সেই শঙ্কা কাজ করছে। চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হয়। প্রথম দিকে গাজায় কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বারবার ইসরায়েলি লঙ্ঘনের ফলে ফিলিস্তিনিরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। দুই বছর আগের যে জীবন ছিল তাদের, সেই জীবন আর ফিরে পাওয়ার আশা নেই।
গত বুধবার এক দিনের হামলায় ১০৪ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েল। দক্ষিণ গাজায় বেশ কয়েকটি বিমান হামলায় আহত হন ২৫৩ জন, যা এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির সবচেয়ে বড় লঙ্ঘন। তবে হামলা থেমে নেই।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ১০টি বিমান হামলা হয়েছে। যুদ্ধবিরতি ‘পুনরায় শুরু’র ঘোষণা দিয়ে তারা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে হামলায় ২১১ জন নিহত এবং ৫৯৭ জন আহত হয়েছেন। গত দুই বছরে ৬৮ হাজার ৫২৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৯৫ জন আহত হয়েছেন। গত ১০ অক্টোবর গাজায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার অধীনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। প্রথম পর্যায়ে প্রায় ২০০০ ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি দেয় হামাস। দ্বিতীয় দফার পরিকল্পনায় গাজার পুনর্গঠন ও হামাস ছাড়াই একটি নতুন শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বলা আছে।
ফিলিস্তিনিদের প্রশ্ন, আন্তর্জাতিক গ্যারান্টি কোথায়? কোথায় সেই মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো, যারা শান্তির ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল? বুধবারের হামলায় শাহীনের এক বন্ধু গুরুতর আহত হন। গাজা শহরের বাসিন্দা সুহা আওয়াদ বলছেন, ‘আমরা যুদ্ধের সম্পূর্ণ অবসান ও সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি চাই। আমরা কেবল নিরাপদে থাকতে চাই। যুদ্ধবিরতির প্রতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতি চাই; কেবল এক বা দুই সপ্তাহের জন্য হবে না।’
