টানা ২২ দিনের অবরোধ শেষে শুক্রবার সাগরে নেমেছে জেলেরা। রূপালী ইলিশ বন্দী জাল টেনে তুলছে তারা -সংগৃহীত
নিষেধাজ্ঞার পর প্রথম সাগরে গিয়েই কপাল খুলেছে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার একদল জেলের। একটানে জালে ১৪০ মণ ইলিশ ধরা পড়েছে, যা বিক্রি হয়েছে ৩১ লাখ টাকায়। কুয়াকাটা সৈকত থেকে ৬০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্রে এসব ইলিশ ধরা পড়ে বলে জানান এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের মাঝি রুবেল।
একটি ট্রলারে জায়গায় সংকুলান না হওয়ায় একই কোম্পানির আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ মাছ ভাগাভাগি করে সাগর থেকে ঘাটে নেয়া হয়। শুক্রবার সকালে পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সাইফ ফিশ আড়তে এসব মাছ বিক্রির জন্য তোলা হয়। সেখানে ডাকের মাধ্যমে মাছগুলো ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
মাঝি রুবেল বলেন, গত বুধবার ১৯ জন জেলে নিয়ে সাগরে যাই। ওইদিন বিকেলে কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে গভীর সমুদ্রে জাল ফেলার পরই রাতে মাছগুলো ধরা পড়ে। রাত ৮টা থেকে জেলেরা জাল টানা শুরু করে পরদিন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত জাল ট্রলারে উঠানো শেষ হয়। তবে জেলেদের দাবি, সব মিলিয়ে ১৭০-১৭৫ মণ ইলিশ ধরা পড়েছে।
সাইফ ফিশিং কোম্পানির ব্যবস্থাপক মনিরুল হক মাসুম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে সাগরে খুব একটা মাছ ধরা পড়ছিল না। ইলিশ মৌসুমে কাক্সিক্ষত মাছ ধরা না পড়ায় আমাদের লোকসান গুণতে হচ্ছিল। ‘তবে সাগরে অবৈধ ট্রলিং বোট বন্ধ করা হলে জেলেদের জালে আগের মতন মাছ ধরা পড়বে। ফিরে আসবে সাধারণ জেলেদের সুদিন।’
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবসায়ী ও আড়তদার মোস্তফা আলম বলেন, ইলিশের প্রকারভেদ অনুযায়ী ২৭ হাজার, ২২ হাজার ও ১২ হাজার টাকা মণ দরে সবমিলিয়ে ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা সাগরে গিয়েই মাছ পেয়েছে, এটা খুশির খবর। তবে দীর্ঘদিন ধরে কাক্সিক্ষত ইলিশের দেখা মিলছে না। হঠাৎ এক ট্রলারে ১৪০ মণ ইলিশ পাওয়ায় আমরাও খুশি।’
আমাদের লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রথমদিনই বঙ্গোপসাগরে এক জেলের জালে আড়াই কেজি ওজনের ইলিশ ধরা পড়েছে। ইলিশটি লক্ষ্মীপুরের মাছঘাটে নিলামে ৯ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। কমলনগরের মতিরহাট মাছঘাট থেকে স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী আমির হোসেন ইলিশটি কেনেন বলে জানিয়েছেন আড়তদার মো. বাবুল। সাদ্দাম হোসেনের ইলিশটি লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মতিরহাট মাছঘাটে ডাকে ৯ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।
আড়তদার মো. বাবুল বলেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ভোলার জেলে সাদ্দাম ১৫ জন সঙ্গী নিয়ে সাগরে মাছ শিকারে যান। গত শনিবার রাতে তাদের জালে অন্যান্য ইলিশের সঙ্গে ওই বড় ইলিশটিও ধরা পড়ে। পরে অনেকগুলো মাছসহ বড় ইলিশটি আড়তে নিয়ে আসেন তিনি। মাছটি আড়তে আনা হলে ডাকে (নিলামে) ৯ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়।
বেশি দামেই মাছটি বিক্রি হয়েছে জানিয়ে আড়তদার বলেন, ‘সচরাচর এতো বড় ইলিশ ধরা পড়ে না, তার ওপর মেঘনা নদীতে মাছ কম পাওয়াতে তিনি এমন চড়া দাম পেয়েছেন।’ ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন, ‘ঢাকার মোকামে বড় ইলিশের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আড়াই কেজি ওজনের মাছটি সেখানে পাঠানো হবে। আশা করছি অন্তত ১১-১২ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবো।’
জানা গেছে, ডিম ছাড়া ও প্রজননের জন্য গত ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা, আনা-নেয়া, বাজারজাত ও মজুদ নিষিদ্ধ করে সরকার। ওই সময়ে ইলিশ রক্ষায় বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছিল বলে জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, ‘মা ইলিশ রক্ষা করতে বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা, বিশেষ করে মৎস্যজীবীদের মতামত অনুযায়ী ওই সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়।’
ফরিদা আখতার বলেন, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম (৪ থেকে ২৫ অক্টোবর)। আশ্বিনী পূর্ণিমার পূর্বের চারদিন এবং অমাবস্যার পরের তিনদিনকে অন্তর্ভুক্ত করে মোট ২২ দিন এই অভিযান চলে। ‘প্রজনন মৌসুমের পূর্ণিমা ও অমাবস্যা উভয় সময়ই ডিম পাড়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায়, দুটি পর্যায় অন্তর্ভুক্ত করে সর্বোচ্চ প্রজনন নিশ্চিত করা হয়েছে। এই কর্মসূচি ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫’ নামে পরিচিত। অভিযান পরিচালনায় মৎস্য কর্মকর্তাদের পাশাপাশি নৌ পুলিশ, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অংশগ্রহণ করেছে।’
ওই সময়ে জেলেদের জন্য সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, ৩৭টি জেলার ১৬৫টি উপজেলার ৬ লাখ ২০ হাজার ১৪০ জেলে পরিবারকে ভিজিএফ (চাল) দেয়া হয়েছে, পরিবার প্রতি বরাদ্দ ২৫ কেজি করে চাল, যা পুরো কার্যক্রমে মোট ১৫ হাজার ৫০৩ দশমিক ৫ টন চালের প্রয়োজন হয়েছে। ‘অভিযানের সময় জলসীমার বাইরে মাছ ধরা ট্রলারের অনুপ্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। নদীতে ড্রেজিং সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। সমুদ্র, উপকূল ও মোহনায়ও প্রধান প্রজনন মৌসুমে ২২ দিন ধরে ইলিশ আহরণ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ছিল।’
ফরিদা আখতার বলেন, ‘বিএফআরআই-এর গবেষণা অনুযায়ী ২০২৪ সালের নিষেধাজ্ঞার ফলে ৫২ দশমিক ৫ শতাংশ মা ইলিশ নিরাপদে ডিম ছেড়েছিল। এর ফলে ৪৪ দশমিক ২৫ হাজার কোটি জাটকা বা রেণু ইলিশ পরিবারে যুক্ত হয়েছে। এই ডিম থেকে উৎপন্ন রেণু বা পোনা (জাটকা) ভবিষ্যতে পরিপক্ক ইলিশে পরিণত হবে।’ গত ৫ বছরে প্রায় ১০ শতাংশ ইলিশ আহরণ কমার তথ্য দিয়ে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, ২০২০-২১ থেকে ২০২৪-২৫ পর্যন্ত ইলিশ আহরণ ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে।
 
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                        ইপেপার
                        
                                                	                            	জাতীয়
                           	                            	সারাদেশ
                           	                            	আন্তর্জাতিক
                           	                            	নগর-মহানগর
                           	                            	খেলা
                           	                            	বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
                           	                            	শিক্ষা
                           	                            	অর্থ-বাণিজ্য
                           	                            	সংস্কৃতি
                           	                            	ক্যাম্পাস
                           	                            	মিডিয়া
                           	                            	অপরাধ ও দুর্নীতি
                           	                            	রাজনীতি
                           	                            	শোক ও স্মরন
                           	                            	প্রবাস
                           	                            নারীর প্রতি সহিংসতা
                            বিনোদন
                                                                        	                            	সম্পাদকীয়
                           	                            	উপ-সম্পাদকীয়
                           	                            	মুক্ত আলোচনা
                           	                            	চিঠিপত্র
                           	                            	পাঠকের চিঠি
                           	                                            টানা ২২ দিনের অবরোধ শেষে শুক্রবার সাগরে নেমেছে জেলেরা। রূপালী ইলিশ বন্দী জাল টেনে তুলছে তারা -সংগৃহীত
শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
নিষেধাজ্ঞার পর প্রথম সাগরে গিয়েই কপাল খুলেছে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার একদল জেলের। একটানে জালে ১৪০ মণ ইলিশ ধরা পড়েছে, যা বিক্রি হয়েছে ৩১ লাখ টাকায়। কুয়াকাটা সৈকত থেকে ৬০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্রে এসব ইলিশ ধরা পড়ে বলে জানান এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের মাঝি রুবেল।
একটি ট্রলারে জায়গায় সংকুলান না হওয়ায় একই কোম্পানির আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ মাছ ভাগাভাগি করে সাগর থেকে ঘাটে নেয়া হয়। শুক্রবার সকালে পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সাইফ ফিশ আড়তে এসব মাছ বিক্রির জন্য তোলা হয়। সেখানে ডাকের মাধ্যমে মাছগুলো ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
মাঝি রুবেল বলেন, গত বুধবার ১৯ জন জেলে নিয়ে সাগরে যাই। ওইদিন বিকেলে কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে গভীর সমুদ্রে জাল ফেলার পরই রাতে মাছগুলো ধরা পড়ে। রাত ৮টা থেকে জেলেরা জাল টানা শুরু করে পরদিন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত জাল ট্রলারে উঠানো শেষ হয়। তবে জেলেদের দাবি, সব মিলিয়ে ১৭০-১৭৫ মণ ইলিশ ধরা পড়েছে।
সাইফ ফিশিং কোম্পানির ব্যবস্থাপক মনিরুল হক মাসুম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে সাগরে খুব একটা মাছ ধরা পড়ছিল না। ইলিশ মৌসুমে কাক্সিক্ষত মাছ ধরা না পড়ায় আমাদের লোকসান গুণতে হচ্ছিল। ‘তবে সাগরে অবৈধ ট্রলিং বোট বন্ধ করা হলে জেলেদের জালে আগের মতন মাছ ধরা পড়বে। ফিরে আসবে সাধারণ জেলেদের সুদিন।’
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবসায়ী ও আড়তদার মোস্তফা আলম বলেন, ইলিশের প্রকারভেদ অনুযায়ী ২৭ হাজার, ২২ হাজার ও ১২ হাজার টাকা মণ দরে সবমিলিয়ে ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা সাগরে গিয়েই মাছ পেয়েছে, এটা খুশির খবর। তবে দীর্ঘদিন ধরে কাক্সিক্ষত ইলিশের দেখা মিলছে না। হঠাৎ এক ট্রলারে ১৪০ মণ ইলিশ পাওয়ায় আমরাও খুশি।’
আমাদের লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রথমদিনই বঙ্গোপসাগরে এক জেলের জালে আড়াই কেজি ওজনের ইলিশ ধরা পড়েছে। ইলিশটি লক্ষ্মীপুরের মাছঘাটে নিলামে ৯ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। কমলনগরের মতিরহাট মাছঘাট থেকে স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী আমির হোসেন ইলিশটি কেনেন বলে জানিয়েছেন আড়তদার মো. বাবুল। সাদ্দাম হোসেনের ইলিশটি লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মতিরহাট মাছঘাটে ডাকে ৯ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।
আড়তদার মো. বাবুল বলেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ভোলার জেলে সাদ্দাম ১৫ জন সঙ্গী নিয়ে সাগরে মাছ শিকারে যান। গত শনিবার রাতে তাদের জালে অন্যান্য ইলিশের সঙ্গে ওই বড় ইলিশটিও ধরা পড়ে। পরে অনেকগুলো মাছসহ বড় ইলিশটি আড়তে নিয়ে আসেন তিনি। মাছটি আড়তে আনা হলে ডাকে (নিলামে) ৯ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়।
বেশি দামেই মাছটি বিক্রি হয়েছে জানিয়ে আড়তদার বলেন, ‘সচরাচর এতো বড় ইলিশ ধরা পড়ে না, তার ওপর মেঘনা নদীতে মাছ কম পাওয়াতে তিনি এমন চড়া দাম পেয়েছেন।’ ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন, ‘ঢাকার মোকামে বড় ইলিশের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আড়াই কেজি ওজনের মাছটি সেখানে পাঠানো হবে। আশা করছি অন্তত ১১-১২ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবো।’
জানা গেছে, ডিম ছাড়া ও প্রজননের জন্য গত ৪ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা, আনা-নেয়া, বাজারজাত ও মজুদ নিষিদ্ধ করে সরকার। ওই সময়ে ইলিশ রক্ষায় বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছিল বলে জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, ‘মা ইলিশ রক্ষা করতে বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা, বিশেষ করে মৎস্যজীবীদের মতামত অনুযায়ী ওই সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়।’
ফরিদা আখতার বলেন, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম (৪ থেকে ২৫ অক্টোবর)। আশ্বিনী পূর্ণিমার পূর্বের চারদিন এবং অমাবস্যার পরের তিনদিনকে অন্তর্ভুক্ত করে মোট ২২ দিন এই অভিযান চলে। ‘প্রজনন মৌসুমের পূর্ণিমা ও অমাবস্যা উভয় সময়ই ডিম পাড়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায়, দুটি পর্যায় অন্তর্ভুক্ত করে সর্বোচ্চ প্রজনন নিশ্চিত করা হয়েছে। এই কর্মসূচি ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫’ নামে পরিচিত। অভিযান পরিচালনায় মৎস্য কর্মকর্তাদের পাশাপাশি নৌ পুলিশ, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অংশগ্রহণ করেছে।’
ওই সময়ে জেলেদের জন্য সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, ৩৭টি জেলার ১৬৫টি উপজেলার ৬ লাখ ২০ হাজার ১৪০ জেলে পরিবারকে ভিজিএফ (চাল) দেয়া হয়েছে, পরিবার প্রতি বরাদ্দ ২৫ কেজি করে চাল, যা পুরো কার্যক্রমে মোট ১৫ হাজার ৫০৩ দশমিক ৫ টন চালের প্রয়োজন হয়েছে। ‘অভিযানের সময় জলসীমার বাইরে মাছ ধরা ট্রলারের অনুপ্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। নদীতে ড্রেজিং সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। সমুদ্র, উপকূল ও মোহনায়ও প্রধান প্রজনন মৌসুমে ২২ দিন ধরে ইলিশ আহরণ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ছিল।’
ফরিদা আখতার বলেন, ‘বিএফআরআই-এর গবেষণা অনুযায়ী ২০২৪ সালের নিষেধাজ্ঞার ফলে ৫২ দশমিক ৫ শতাংশ মা ইলিশ নিরাপদে ডিম ছেড়েছিল। এর ফলে ৪৪ দশমিক ২৫ হাজার কোটি জাটকা বা রেণু ইলিশ পরিবারে যুক্ত হয়েছে। এই ডিম থেকে উৎপন্ন রেণু বা পোনা (জাটকা) ভবিষ্যতে পরিপক্ক ইলিশে পরিণত হবে।’ গত ৫ বছরে প্রায় ১০ শতাংশ ইলিশ আহরণ কমার তথ্য দিয়ে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, ২০২০-২১ থেকে ২০২৪-২৫ পর্যন্ত ইলিশ আহরণ ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে।
