ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চল থেকে ১১টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়ে র্যাব বলছে, ‘আধিপত্য বিস্তারের’ জন্য অস্ত্রগুলো নিজেদের জিম্মায় রেখে ছিলেন তারা। আর অস্ত্রগুলো আনা হয়েছিল পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে নদীপথে, এর বাইরে কক্সবাজারের মহেশখালী থেকেও তারা অস্ত্র সংগ্রহ করত বলেও দাবি করেছে র্যাব।
নরসিংদীর রায়পুরা থানার সায়েদাবাদ এলাকায় গতকাল শুক্রবার রাতভর ‘সাঁড়াশি অভিযানে’ অস্ত্রসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ৮ জন হলেন- মো. শফিক মিয়া (৩২), মো. মোস্তফা (৩৮), আয়নাল (৩৮), মহিউদ্দিন হৃদয় (২২), মো. বাচ্চু মিয়া (৬২), কালু মিয়া (৬৯), মো. বাছেদ (৪০) ও ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর। উদ্ধার করা আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে রয়েছে, ২টি বিদেশি পিস্তল, ৫টি একনলা বন্দুক, ১টি দোনলা বন্দুক, ২টি এলজি ও ১টি পাইপগান। এছাড়া ৩টি ম্যাগাজিন ও ৩৫ রাউন্ড গুলিও উদ্ধার করার তথ্য দিয়েছে র্যাব।
শনিবার, (০১ নভেম্বর ২০২৫) রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসে র্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এই অস্ত্রগুলো পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে সীমান্ত পার হয়ে নদীপথে নিয়ে আসা হতো। ‘কক্সবাজারের মহেশখালী পাহাড়ী এলাকায় কিছু কারিগর রয়েছে, সেখান থেকেও অস্ত্রগুলো সংগ্রহ করতো। কখনো কখনো সেখান থেকে কারিগর নিয়ে এসে বানাতো বলেও আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।’
নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায়শই বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এদিন দুপুরেও রায়পুরার দুর্গম চর সুবুদ্ধি এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় দুই ভাই নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক নারী।
এছাড়া উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে র্যাব জানায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর নরসিংদীর চরাঞ্চলে সংঘর্ষে গুলিতে একজন নিহত হয়, ৯ সেপ্টেম্বর রায়পুরে দুইপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত এবং একজন আহত হওয়া, ২০ জুলাই রায়পুরায় চরাঞ্চলে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নারী নিহত হয় এবং ২২ এপ্রিল নরসিংদীর সদর উপজেলার চরাঞ্চল আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের গুলিতে একজন নিহতের ঘটনা ঘটে।
এসব সংঘর্ষের পেছনে আধিপত্য বিস্তার, বালুমহল, চর, ঘাট, বাজার দখলকে ঘিরে এলাকাভিত্তিক গ্রুপগুলোর জড়িত থাকার কথা বলেছে র্যাব। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর ধারাবাহিকতায় সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার রাতভর অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলেছেন র্যাব-১১ অধিনায়ক।
তিনি বলেন, ‘অভিযানের সময় তারা আমাদের ওপরেও হামলা করার চেষ্টা করেছে, ককটেল বিস্ফোরণসহ শটগানের গুলি। তবে সেফলি আমরা অভিযানটা শেষ করতে পেরেছি।’ এক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘যে অপরাধ করে সে কোন দলের, আমাদের দেখার বিষয় না। ‘অস্ত্র যদি দুস্কৃতকারীর কাছে থাকে, বিভিন্ন অরাজকতা সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করতেই পারে। এরমধ্যে দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বলেন আর রাজনৈতিক প্রভাবই বলেন। এজন্য আমরা যেটা করছি অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করছি, অভিযান চলমান রয়েছে।’
অস্ত্রগুলো কার মাধ্যমে তাদের হাতে আসছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা ব্যবহার করে থাকে, তাদের বিভিন্ন গ্রুপ আছে এলাকাভিত্তিক। তারা বলেছে, আবার বর্ডারকেন্দ্রিক কিছু গ্রুপ থাকে, আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। ‘নৌপথটা একটু অসুরক্ষিত থাকে। অস্ত্রগুলো নিয়ে আসতে তারা নৌপথ ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু অভিযান চলমান আছে, চলমান থাকার কারণেই কিন্তু অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫
নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চল থেকে ১১টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়ে র্যাব বলছে, ‘আধিপত্য বিস্তারের’ জন্য অস্ত্রগুলো নিজেদের জিম্মায় রেখে ছিলেন তারা। আর অস্ত্রগুলো আনা হয়েছিল পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে নদীপথে, এর বাইরে কক্সবাজারের মহেশখালী থেকেও তারা অস্ত্র সংগ্রহ করত বলেও দাবি করেছে র্যাব।
নরসিংদীর রায়পুরা থানার সায়েদাবাদ এলাকায় গতকাল শুক্রবার রাতভর ‘সাঁড়াশি অভিযানে’ অস্ত্রসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ৮ জন হলেন- মো. শফিক মিয়া (৩২), মো. মোস্তফা (৩৮), আয়নাল (৩৮), মহিউদ্দিন হৃদয় (২২), মো. বাচ্চু মিয়া (৬২), কালু মিয়া (৬৯), মো. বাছেদ (৪০) ও ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর। উদ্ধার করা আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে রয়েছে, ২টি বিদেশি পিস্তল, ৫টি একনলা বন্দুক, ১টি দোনলা বন্দুক, ২টি এলজি ও ১টি পাইপগান। এছাড়া ৩টি ম্যাগাজিন ও ৩৫ রাউন্ড গুলিও উদ্ধার করার তথ্য দিয়েছে র্যাব।
শনিবার, (০১ নভেম্বর ২০২৫) রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসে র্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এই অস্ত্রগুলো পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে সীমান্ত পার হয়ে নদীপথে নিয়ে আসা হতো। ‘কক্সবাজারের মহেশখালী পাহাড়ী এলাকায় কিছু কারিগর রয়েছে, সেখান থেকেও অস্ত্রগুলো সংগ্রহ করতো। কখনো কখনো সেখান থেকে কারিগর নিয়ে এসে বানাতো বলেও আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।’
নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায়শই বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এদিন দুপুরেও রায়পুরার দুর্গম চর সুবুদ্ধি এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় দুই ভাই নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক নারী।
এছাড়া উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে র্যাব জানায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর নরসিংদীর চরাঞ্চলে সংঘর্ষে গুলিতে একজন নিহত হয়, ৯ সেপ্টেম্বর রায়পুরে দুইপক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত এবং একজন আহত হওয়া, ২০ জুলাই রায়পুরায় চরাঞ্চলে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নারী নিহত হয় এবং ২২ এপ্রিল নরসিংদীর সদর উপজেলার চরাঞ্চল আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের গুলিতে একজন নিহতের ঘটনা ঘটে।
এসব সংঘর্ষের পেছনে আধিপত্য বিস্তার, বালুমহল, চর, ঘাট, বাজার দখলকে ঘিরে এলাকাভিত্তিক গ্রুপগুলোর জড়িত থাকার কথা বলেছে র্যাব। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর ধারাবাহিকতায় সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার রাতভর অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলেছেন র্যাব-১১ অধিনায়ক।
তিনি বলেন, ‘অভিযানের সময় তারা আমাদের ওপরেও হামলা করার চেষ্টা করেছে, ককটেল বিস্ফোরণসহ শটগানের গুলি। তবে সেফলি আমরা অভিযানটা শেষ করতে পেরেছি।’ এক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘যে অপরাধ করে সে কোন দলের, আমাদের দেখার বিষয় না। ‘অস্ত্র যদি দুস্কৃতকারীর কাছে থাকে, বিভিন্ন অরাজকতা সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করতেই পারে। এরমধ্যে দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বলেন আর রাজনৈতিক প্রভাবই বলেন। এজন্য আমরা যেটা করছি অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করছি, অভিযান চলমান রয়েছে।’
অস্ত্রগুলো কার মাধ্যমে তাদের হাতে আসছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা ব্যবহার করে থাকে, তাদের বিভিন্ন গ্রুপ আছে এলাকাভিত্তিক। তারা বলেছে, আবার বর্ডারকেন্দ্রিক কিছু গ্রুপ থাকে, আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। ‘নৌপথটা একটু অসুরক্ষিত থাকে। অস্ত্রগুলো নিয়ে আসতে তারা নৌপথ ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু অভিযান চলমান আছে, চলমান থাকার কারণেই কিন্তু অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে।’