প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিব পদ মর্যাদার কোনো কর্মকর্তা না থাকায় রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রায় ২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী চলতি নভেম্বর মাসের বেতন পাননি। সেই সঙ্গে দাপ্তরিকসহ জরুরি সব ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে গেছে অর্থের অভাবে। এদিকে মাসিক বেতন ৭ দিন অতিবাহিত হবার পরেও না পাওয়ায় নিম্ন বেতন ভুক্ত শত শত কর্মচারী পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ব্যাংকের চেকে প্রশাসক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষর লাগে কিন্তু তিনি প্রশাসক থাকলেও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বদলিজনিত কারণে না থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাসিক বেতন দেয়া সম্ভব হয়নি বলে স্বীকার করেন তিনি।
রংপুর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশনে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতেমাকে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অনত্র বদলি করা হয়েছে। তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগদানও করেছেন। অন্যদিকে সচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তার পদটিও বেশকিছু দিন থেকে শূন্য রয়েছে। বদলিজনিত কারণে সেই পদটিও শূন্য রয়েছে।
এদিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের যে কোনো আর্থিক বিষয়ে প্রশাসক ও প্রধানর নির্বাহী কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে চেক প্রদান ও উত্তোলন করতে হয়। কিন্তু প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অনত্র বদলি হওয়ায় ব্যাংকের চেকে এবং আদেশ নামায় যৌথ স্বাক্ষর করা সম্ভব না হওয়ায় সিটি করপোরেশনের প্রায় ২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর চলতি নভেম্বর মাসের মাসিক বেতন দেয়া সম্ভব হয়নি বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক শাখার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বর্তমানে সিটি করপোরেশনে আড়াইশ’ জন স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন ৮শ’ জন দৈনিক হাজিরাভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ৮শ’ জন ক্লিনার পদে নারী ও পুরুষ কর্মরত আছেন। প্রতি মাসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাসিক বেতন বাবদ প্রায় ৫০ কোটি টাকার প্রয়োজন হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতি মাসের ১ তারিখের মধ্যে তাদের মাসিক বেতন পেতেন। কিন্তু এবার চেকে স্বাক্ষরজনিত জটিলতার কারণে তাদের কারও মাসিক বেতন দেয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে দৈনিক হাজিরাভিত্তিক অস্থায়ী কর্মচারী বিশেষ করে যারা নগরীর পয় প্রণালী ও সড়ক পরিষ্কার হিসেবে ঝাড়–দার হিসেবে কর্মরত আছেন এমন ৮শ’ ক্লিনার যাদের মাসিক বেতরন ৩/৪ হাজার টাকা তারা মাসিক বেতন না পাওয়ায় মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।
আকলিমা বেগম, মনওয়ারা বেগম দুই ক্লিনার পদে কর্মরত কর্মচারী এ প্রতিনিধিকে জানান, আমাদের মাসিক বেতন এমনিতেই অনেক কম তার পরেও চলতি মাসের ৮ তারিখ হবার পরেও তাদের মাসিক বেতন দেয়া হয়নি ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে দিন কাটছে তাদের। কবে বেতন পাবে তাও কোনো কর্মকর্তাই বলতে পারছেন না।
একইভাবে দৈনিক হাজিরাভিত্তিক সহ্রারাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীও যাদের বেতন সর্বনিম্ন ৯ -১৮ হাজার টাকা তাদের অনেকেই জানিয়েছেন মাসিক বেতন না পাওয়ায় মানবেতর দিন কাটছে তাদের।
এদিকে অর্থের অভাবে রংপুর সিটি করপোরেশনের দাপ্তরিকসহ জরুরি সব ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে গেছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। ফলে দৃশ্যত সিটি করপোরেশনের সব ধরনের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে শনিবার, (০৮ নভেম্বর ২০২৫) বিকেলে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করে জানান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে যিনি দায়িত্বরত ছিলেন বদলিজনিত কারণে ওই পদে এখনও কাউকে পদায়ন করা হয়নি। এছাড়াও সচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তাও নেই। ফলে ফাইল নোট ও চেকে যৌথ স্বাক্ষরকারী আর একজন কর্মকর্তা না থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি সুরাহা করা সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিব পদ মর্যাদার কোনো কর্মকর্তা না থাকায় রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রায় ২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী চলতি নভেম্বর মাসের বেতন পাননি। সেই সঙ্গে দাপ্তরিকসহ জরুরি সব ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে গেছে অর্থের অভাবে। এদিকে মাসিক বেতন ৭ দিন অতিবাহিত হবার পরেও না পাওয়ায় নিম্ন বেতন ভুক্ত শত শত কর্মচারী পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ব্যাংকের চেকে প্রশাসক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষর লাগে কিন্তু তিনি প্রশাসক থাকলেও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বদলিজনিত কারণে না থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাসিক বেতন দেয়া সম্ভব হয়নি বলে স্বীকার করেন তিনি।
রংপুর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশনে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতেমাকে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অনত্র বদলি করা হয়েছে। তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগদানও করেছেন। অন্যদিকে সচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তার পদটিও বেশকিছু দিন থেকে শূন্য রয়েছে। বদলিজনিত কারণে সেই পদটিও শূন্য রয়েছে।
এদিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের যে কোনো আর্থিক বিষয়ে প্রশাসক ও প্রধানর নির্বাহী কর্মকর্তার যৌথ স্বাক্ষরে চেক প্রদান ও উত্তোলন করতে হয়। কিন্তু প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অনত্র বদলি হওয়ায় ব্যাংকের চেকে এবং আদেশ নামায় যৌথ স্বাক্ষর করা সম্ভব না হওয়ায় সিটি করপোরেশনের প্রায় ২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর চলতি নভেম্বর মাসের মাসিক বেতন দেয়া সম্ভব হয়নি বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক শাখার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বর্তমানে সিটি করপোরেশনে আড়াইশ’ জন স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন ৮শ’ জন দৈনিক হাজিরাভিত্তিক কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ৮শ’ জন ক্লিনার পদে নারী ও পুরুষ কর্মরত আছেন। প্রতি মাসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাসিক বেতন বাবদ প্রায় ৫০ কোটি টাকার প্রয়োজন হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতি মাসের ১ তারিখের মধ্যে তাদের মাসিক বেতন পেতেন। কিন্তু এবার চেকে স্বাক্ষরজনিত জটিলতার কারণে তাদের কারও মাসিক বেতন দেয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে দৈনিক হাজিরাভিত্তিক অস্থায়ী কর্মচারী বিশেষ করে যারা নগরীর পয় প্রণালী ও সড়ক পরিষ্কার হিসেবে ঝাড়–দার হিসেবে কর্মরত আছেন এমন ৮শ’ ক্লিনার যাদের মাসিক বেতরন ৩/৪ হাজার টাকা তারা মাসিক বেতন না পাওয়ায় মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।
আকলিমা বেগম, মনওয়ারা বেগম দুই ক্লিনার পদে কর্মরত কর্মচারী এ প্রতিনিধিকে জানান, আমাদের মাসিক বেতন এমনিতেই অনেক কম তার পরেও চলতি মাসের ৮ তারিখ হবার পরেও তাদের মাসিক বেতন দেয়া হয়নি ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনাহারে দিন কাটছে তাদের। কবে বেতন পাবে তাও কোনো কর্মকর্তাই বলতে পারছেন না।
একইভাবে দৈনিক হাজিরাভিত্তিক সহ্রারাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীও যাদের বেতন সর্বনিম্ন ৯ -১৮ হাজার টাকা তাদের অনেকেই জানিয়েছেন মাসিক বেতন না পাওয়ায় মানবেতর দিন কাটছে তাদের।
এদিকে অর্থের অভাবে রংপুর সিটি করপোরেশনের দাপ্তরিকসহ জরুরি সব ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে গেছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। ফলে দৃশ্যত সিটি করপোরেশনের সব ধরনের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে শনিবার, (০৮ নভেম্বর ২০২৫) বিকেলে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করে জানান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে যিনি দায়িত্বরত ছিলেন বদলিজনিত কারণে ওই পদে এখনও কাউকে পদায়ন করা হয়নি। এছাড়াও সচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তাও নেই। ফলে ফাইল নোট ও চেকে যৌথ স্বাক্ষরকারী আর একজন কর্মকর্তা না থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি সুরাহা করা সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।