শস্য ভান্ডারখ্যাত চলনবিল জুড়ে চলছে সাদা সোনা খেত বিনা চাষে রসুন চাষ। বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় এখন এই এলাকার চাষীরা স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন রসুন চাষে। তাদের যেন দম ফেলার সময় নেই। কোন রকম হালচাষ ছাড়াই রসুন রোপণ করছেন তারা। জানা গেছে, এই অঞ্চলে প্রতিবছরই বন্যায় আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে বিল থেকে পানি নেমে গেলে এই ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতেই জমিতে বিনাচাষে রসুন রোপণের ধুম পড়েছে নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া, পাবনার, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, তাড়াশ উপজেলার মাগুড়া বিনোদ, নাদৌসৈয়দপুর, হামকুরিয়া, সগুনাসহ বিভিন্ন এলাকায়।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ মৌসুমে বিনাচাষে ৪৭৫ হেক্টর আর চাষের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জানা যায়, ভেজা মাটিতে নারী-পুরুষ মিলে নরম মাটিতে রসুনের কোয়া রোপণ করছে।
ইতিমধ্যেই তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের কাটাবাড়ি, নওখাদা, হেমনগর, চরখোকশাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় রসুন লাগানো শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১০ হেক্টর জমিতে রসুন লাগানো হয়েছে। কাটাবাড়ি গ্রামের গ্রামের কৃষক আবু সাইদ বলেন, বর্তমানে বীজ রসুন ২২০ টাকা কেজি দরে কিনে পলি জমা ভেজা মাটিতে বিনা চাষে সারিবদ্ধভাবে রসুনের কোয়া রোপণ করা হচ্ছে। এতে একজন শ্রমিক দিন হাজিরা ৫০০/৫৫০ টাকা করে নিয়ে থাকেন। রোপনকৃত রসুনের ওপর দিয়ে ধানের নাড়া (খড়) বিছিয়ে দেওয়া হয়। রোপণের প্রায় ১২৫ দিন পর রসুন তোলা যায়।
হেমনগর গ্রামের কৃষক আবু বক্কার জানান, প্রতি বছরই এই বিলে বন্যায় ধানের ক্ষতি হয় আর এই ক্ষতির কিছুটা পুষিয়ে নিতে আমরা কম খরচে রসুন আবাদ করি। এ বছর ১০ বিঘা জমিতে রসুনের আবাদ করবো। সবকিছু ঠিক থাকলে আশা করছি ভালো ফলন ও ভালো দাম পাব। কুন্দইল গ্রামের আরেক কৃষক হামিদ আলী বলেন, অর্থকরী ফসল রসুনের ভালো ফলনের কারণে প্রতি বছরই এ অঞ্চলের কৃষকরা রসুনের রোপণ করে থাকেন। আর প্রতি বিঘা জমিতে চাষ করতে ২৩/২৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার বিঘা প্রতি প্রায় ৩৮/৪০ মণ রসুন পাওয়া যাবে। যার বাজারমূল্য প্রায় ৬০/৭০ হাজার টাকা। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদি শর্মিষ্ঠা সেন গুপ্ত জানান, চলনবিল অঞ্চলে সর্বোচ্চ অর্থকরী ফসলের মধ্যে বিনা চাষে রসুন অন্যতম। এবছর তাড়াশে রসুন রোপনের লক্ষমাএা ৪৭৫ হেক্টর জমিতে নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই কাটাবড়ি, নওখাদা, হেমনগর, খোকশাবাড়ি এলাকায় ১০হেক্টর জমিতে রসুন লাগানো হয়েছে। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রতি বছরই রসুনের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। কৃষি বিভাগ থেকে তাদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া সহ রসুন চাষে তাদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ কে এম মঞ্জুরে মওলা বলেন, চলনবিলের বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিনাচাষে রসুন বোপন হয়েছে। বিল এলাকার বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে ভোজা মাটিতে এ রসুন রোপণ করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারো রসুনের বাম্পার ফলন হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫
শস্য ভান্ডারখ্যাত চলনবিল জুড়ে চলছে সাদা সোনা খেত বিনা চাষে রসুন চাষ। বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় এখন এই এলাকার চাষীরা স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন রসুন চাষে। তাদের যেন দম ফেলার সময় নেই। কোন রকম হালচাষ ছাড়াই রসুন রোপণ করছেন তারা। জানা গেছে, এই অঞ্চলে প্রতিবছরই বন্যায় আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে বিল থেকে পানি নেমে গেলে এই ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতেই জমিতে বিনাচাষে রসুন রোপণের ধুম পড়েছে নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া, পাবনার, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, তাড়াশ উপজেলার মাগুড়া বিনোদ, নাদৌসৈয়দপুর, হামকুরিয়া, সগুনাসহ বিভিন্ন এলাকায়।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ মৌসুমে বিনাচাষে ৪৭৫ হেক্টর আর চাষের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জানা যায়, ভেজা মাটিতে নারী-পুরুষ মিলে নরম মাটিতে রসুনের কোয়া রোপণ করছে।
ইতিমধ্যেই তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের কাটাবাড়ি, নওখাদা, হেমনগর, চরখোকশাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় রসুন লাগানো শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১০ হেক্টর জমিতে রসুন লাগানো হয়েছে। কাটাবাড়ি গ্রামের গ্রামের কৃষক আবু সাইদ বলেন, বর্তমানে বীজ রসুন ২২০ টাকা কেজি দরে কিনে পলি জমা ভেজা মাটিতে বিনা চাষে সারিবদ্ধভাবে রসুনের কোয়া রোপণ করা হচ্ছে। এতে একজন শ্রমিক দিন হাজিরা ৫০০/৫৫০ টাকা করে নিয়ে থাকেন। রোপনকৃত রসুনের ওপর দিয়ে ধানের নাড়া (খড়) বিছিয়ে দেওয়া হয়। রোপণের প্রায় ১২৫ দিন পর রসুন তোলা যায়।
হেমনগর গ্রামের কৃষক আবু বক্কার জানান, প্রতি বছরই এই বিলে বন্যায় ধানের ক্ষতি হয় আর এই ক্ষতির কিছুটা পুষিয়ে নিতে আমরা কম খরচে রসুন আবাদ করি। এ বছর ১০ বিঘা জমিতে রসুনের আবাদ করবো। সবকিছু ঠিক থাকলে আশা করছি ভালো ফলন ও ভালো দাম পাব। কুন্দইল গ্রামের আরেক কৃষক হামিদ আলী বলেন, অর্থকরী ফসল রসুনের ভালো ফলনের কারণে প্রতি বছরই এ অঞ্চলের কৃষকরা রসুনের রোপণ করে থাকেন। আর প্রতি বিঘা জমিতে চাষ করতে ২৩/২৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার বিঘা প্রতি প্রায় ৩৮/৪০ মণ রসুন পাওয়া যাবে। যার বাজারমূল্য প্রায় ৬০/৭০ হাজার টাকা। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদি শর্মিষ্ঠা সেন গুপ্ত জানান, চলনবিল অঞ্চলে সর্বোচ্চ অর্থকরী ফসলের মধ্যে বিনা চাষে রসুন অন্যতম। এবছর তাড়াশে রসুন রোপনের লক্ষমাএা ৪৭৫ হেক্টর জমিতে নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই কাটাবড়ি, নওখাদা, হেমনগর, খোকশাবাড়ি এলাকায় ১০হেক্টর জমিতে রসুন লাগানো হয়েছে। বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রতি বছরই রসুনের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। কৃষি বিভাগ থেকে তাদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া সহ রসুন চাষে তাদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ কে এম মঞ্জুরে মওলা বলেন, চলনবিলের বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিনাচাষে রসুন বোপন হয়েছে। বিল এলাকার বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে ভোজা মাটিতে এ রসুন রোপণ করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারো রসুনের বাম্পার ফলন হবে।