alt

সুরমা চা বাগানে ৩ কোটি টাকার ব্রিজ ব্যবহারে অনুপযোগী

দুই বছর ধরে চলাচল বন্ধ, বিপাকে ১০ হাজার শ্রমিক ও বাসিন্দা

প্রতিনিধি, মাধবপুর (হবিগঞ্জ) : শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ চা বাগান হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সুরমা চা বাগানে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটি এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দুই বছর ধরে ব্রিজটির দুইপাশের মাটি ভেঙে পড়ে থাকায় প্রায় দশ হাজার বাসিন্দা ও চা শ্রমিক চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। প্রতিদিন শতশত চা শ্রমিক ও স্কুল শিক্ষার্থী ঝুঁকি নিয়ে ছড়া নদী পারাপার করে কর্মস্থল ও বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাবেক সংসদ সদস্য বিমান প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মাহবুব আলীর সময়ে সুরমা চা বাগানের ছড়া নদীর ওপর প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মিত হয়। নির্মাণের অল্প কিছুদিন পরই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও নিম্নমানের কাজের কারণে ব্রিজটির দু’পাশের সংযোগ মাটি বৃষ্টির পানিতে সরে যায়। এরপর চলাচল অনুপযোগী হয়ে যায়। বর্তমানে সেতুটির পাশে ছড়া নদীর তলদেশে পানি জমে যাওয়ায় পারাপার আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

বাগানের ২০ নম্বর সেকশন এলাকায় বসবাসরত চা শ্রমিকরা জানান, ব্রিজটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বর্ষার সময় ছড়ায় পানি বৃদ্ধি পেলে কেউ এই পথে চলাচল করতে পারেন না। বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা বিকল্প ঝুঁকিপূর্ণ পথ ব্যবহার করছেন। স্থানীয় শ্রমিক নির্মলা দেবী বলেন, দুই বছর ধরে এই ভাঙা ব্রিজের কারণে আমরা প্রচ- কষ্টে আছি। বৃষ্টি নামলে ছড়া পার হতে ভয় লাগে, অনেক সময় পিছলে পড়ে যাই। শ্রমিক সুনিতা তেপা বলেন, এত টাকা খরচ করে ব্রিজটা বানানো হলো, কিন্তু এখন সেটি মৃত্যুর ফাঁদ হয়ে আছে। কেউ এসে দেখেও যায় না। বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক কমল সরকার বলেন, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে আমরা উপজেলা প্রশাসন ও এলজিইডি দপ্তরে একাধিকবার লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শ্রমিকরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে, এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় শিক্ষক নয়ন চৌধুরী বলেন, স্কুলের শিশুরা এই ব্রিজ পার হয়ে আসে। একটু অসতর্ক হলেই বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ব্রিজটি দ্রুত মেরামত না করলে যে কোনো সময় প্রাণহানি ঘটতে পারে।

মাধবপুর উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল নবী বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সেতুটির বেহাল অবস্থা লক্ষ্য করেছি। দু’পাশের মাটি সরে যাওয়ায় এটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে।সংস্কারের জন্য নতুন বাজেট প্রয়োজন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তিন কোটি টাকার এই প্রকল্পটি নির্মাণের পরপরই ধসে পড়লেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দীর্ঘদিন অবহেলিত অবস্থায় পড়ে থাকায় ব্রিজটি এখন সম্পূর্ণ ভেঙে যাওয়ার পথে। ফলে বাগানের শ্রমিক ও বাসিন্দাদের পণ্য পরিবহন, স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও রোগী পরিবহনে মারাত্মক সমস্যা তৈরি হয়েছে।

তারা বলেন, সরকারের অর্থে নির্মিত অবকাঠামো যদি জনগণের কাজে না আসে, তবে তা শুধু অপচয় নয়, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। স্থানীয়রা দ্রুত ব্রিজটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, এটি সংস্কার হলে বাগানের শ্রমিক ও বাসিন্দাদের যাতায়াত সহজ হবে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমে আসবে।

ছবি

পিরোজপুরে জুলাই-অগাস্ট ছাত্র আন্দোলনের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে অগ্নিসংযোগ

মহেশপুরে গাছ ফেলে পথ আটকিয়ে ডাকাতি

ছবি

টেকনাফে পলাতক দুই আসামি গ্রেপ্তার

দৌলতপুরে সবজির বীজ বিতরণ

ছবি

মুন্সীগঞ্জে মেট্রোরেল সংযোগের দাবিতে মানববন্ধন

চাটখিলে স্কুল ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু

ছবি

বছরের পর বছর প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ!

ছবি

চৌমুহনীতে ভোক্তা অধিকারের অভিযান, অর্থদণ্ড

ছবি

গজারিয়ায় পরিবেশ বিধ্বংসী পলিথিনে সয়লাব

ছবি

চট্টগ্রামে আলোচিত ‘সন্ত্রাসী’ রায়হানের নতুন হুমকি: ব্যবসায়ীকে বিদেশি নম্বর থেকে ‘ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার’ ভয় দেখানো

ছবি

উল্লাপাড়ায় প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মশাল মিছিল

মহেশপুর সীমান্তে পৃথক অভিযানে ভারতীয় মাদকদ্রব্যসহ নারী আটক

ছবি

দশমিনায় কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ

ছবি

কিশোরগঞ্জে আ.লীগের সাত নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

ছবি

নাসিরনগরে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার

মা-বাবার পাশে কবরে দাফন হলো ইতালি প্রবাসী ডা. ঈসমাইলের

ছবি

বোয়ালখালীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ

দেবীদ্বারে ট্রাক চাপায় শিশুর মৃত্যু

ছবি

জামালপুরে কারাগার নির্মাণে মুক্তিযোদ্ধার জমি দখলের অভিযোগ

ছবি

পীরগাছায় বিদ্যালয়ে রাতে-দিনে উড়ে জাতীয় পতাকা, কর্তৃপক্ষ নিরব

ছবি

হবিগঞ্জে আখ চাষ চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে লাভবান

ছবি

দশমিনায় পলিনেট পদ্ধতিতে বেগুন চাষে সবুজের সাফল্য

ছবি

ঝিনাইদহে হাঁটা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

ছবি

টিকে আছে সৈয়দপুরের ঝুট শিল্প, স্থলবন্দর বন্ধ থাকায় চাপে রপ্তানি

ছবি

দশমিনা থেকে হারিয়ে গেছে তাল-পিঠার উৎসব

ছবি

বাপ দাদার ঘোলের ঐতিহ্য আঁকড়ে ৩২ বছর ধরে সংগ্রামী গোপাল

ছবি

রায়গঞ্জে প্রতিবন্ধী কৃষকের জমির ধান লুটের অভিযোগ

ছবি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মিনিবাসে আগুন

ছবি

ডিমলায় বুড়ি তিস্তার ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি

ছবি

মোহনগঞ্জে আমন ধান কাটা শুরু

ছবি

শাহজাদপুরে ঋণের দায়ে ব্যবসায়ীরআত্মহত্যা

ছবি

দেবহাটায় নিম্ন আয়ের মানুষের ভরসা ফুটপাতের শীতবস্ত্রের দোকান

ছবি

উখিয়ায় ৩৫ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার ১

ছবি

খেজুর রসের ঘ্রাণে শীতের বার্তা

ছবি

আত্রাইয়ে সুতি জালে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে রবিশস্যের আবাদ

ছবি

ফকিরহাটের সড়ক দুর্ঘটনায় মটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু

tab

সুরমা চা বাগানে ৩ কোটি টাকার ব্রিজ ব্যবহারে অনুপযোগী

দুই বছর ধরে চলাচল বন্ধ, বিপাকে ১০ হাজার শ্রমিক ও বাসিন্দা

প্রতিনিধি, মাধবপুর (হবিগঞ্জ)

শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ চা বাগান হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সুরমা চা বাগানে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রিজটি এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দুই বছর ধরে ব্রিজটির দুইপাশের মাটি ভেঙে পড়ে থাকায় প্রায় দশ হাজার বাসিন্দা ও চা শ্রমিক চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। প্রতিদিন শতশত চা শ্রমিক ও স্কুল শিক্ষার্থী ঝুঁকি নিয়ে ছড়া নদী পারাপার করে কর্মস্থল ও বিদ্যালয়ে যাতায়াত করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাবেক সংসদ সদস্য বিমান প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মাহবুব আলীর সময়ে সুরমা চা বাগানের ছড়া নদীর ওপর প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মিত হয়। নির্মাণের অল্প কিছুদিন পরই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও নিম্নমানের কাজের কারণে ব্রিজটির দু’পাশের সংযোগ মাটি বৃষ্টির পানিতে সরে যায়। এরপর চলাচল অনুপযোগী হয়ে যায়। বর্তমানে সেতুটির পাশে ছড়া নদীর তলদেশে পানি জমে যাওয়ায় পারাপার আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

বাগানের ২০ নম্বর সেকশন এলাকায় বসবাসরত চা শ্রমিকরা জানান, ব্রিজটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বর্ষার সময় ছড়ায় পানি বৃদ্ধি পেলে কেউ এই পথে চলাচল করতে পারেন না। বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা বিকল্প ঝুঁকিপূর্ণ পথ ব্যবহার করছেন। স্থানীয় শ্রমিক নির্মলা দেবী বলেন, দুই বছর ধরে এই ভাঙা ব্রিজের কারণে আমরা প্রচ- কষ্টে আছি। বৃষ্টি নামলে ছড়া পার হতে ভয় লাগে, অনেক সময় পিছলে পড়ে যাই। শ্রমিক সুনিতা তেপা বলেন, এত টাকা খরচ করে ব্রিজটা বানানো হলো, কিন্তু এখন সেটি মৃত্যুর ফাঁদ হয়ে আছে। কেউ এসে দেখেও যায় না। বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক কমল সরকার বলেন, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে আমরা উপজেলা প্রশাসন ও এলজিইডি দপ্তরে একাধিকবার লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শ্রমিকরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে, এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় শিক্ষক নয়ন চৌধুরী বলেন, স্কুলের শিশুরা এই ব্রিজ পার হয়ে আসে। একটু অসতর্ক হলেই বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ব্রিজটি দ্রুত মেরামত না করলে যে কোনো সময় প্রাণহানি ঘটতে পারে।

মাধবপুর উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল নবী বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সেতুটির বেহাল অবস্থা লক্ষ্য করেছি। দু’পাশের মাটি সরে যাওয়ায় এটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে।সংস্কারের জন্য নতুন বাজেট প্রয়োজন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তিন কোটি টাকার এই প্রকল্পটি নির্মাণের পরপরই ধসে পড়লেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দীর্ঘদিন অবহেলিত অবস্থায় পড়ে থাকায় ব্রিজটি এখন সম্পূর্ণ ভেঙে যাওয়ার পথে। ফলে বাগানের শ্রমিক ও বাসিন্দাদের পণ্য পরিবহন, স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও রোগী পরিবহনে মারাত্মক সমস্যা তৈরি হয়েছে।

তারা বলেন, সরকারের অর্থে নির্মিত অবকাঠামো যদি জনগণের কাজে না আসে, তবে তা শুধু অপচয় নয়, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। স্থানীয়রা দ্রুত ব্রিজটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, এটি সংস্কার হলে বাগানের শ্রমিক ও বাসিন্দাদের যাতায়াত সহজ হবে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমে আসবে।

back to top