নীলফামারী ডিমলার তিস্তা নদী থেকে পাথর তুলে নিয়ে যাচ্ছে -সংবাদ
দেশের বৃহত্তম তিস্তা ব্যারেজ ও সেচ প্রকল্পকে নস্যাৎ ও অকার্যকর করতে তিস্তা নদীর বুক থেকে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে বেপরোয়াভাবে। ফলে তিস্তা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো ভাঙনের কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে। শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকায় লোহার তৈরি যন্ত্র দিয়ে নদীর তলদেশে গভীর গর্ত করে পাথর উত্তোলন করছে একাধিক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, তিস্তা নদীর পাথর উত্তোলন বন্ধের দায়-দায়িত্ব পাউবোর না
আর এ অবৈধ কাজের বৈধতা দিচ্ছে নীলফামারীর ডালিয়া পাউবো, এমনটাই অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তারা বলছে, নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরীর ছত্রছায়ায় চলছে তিস্তার বুক চিরে পাথর তোলা।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রভাবশালী মহলসহ দুই শক্তির যৌথ ক্ষমতা বলে বেপরোয়া হয়ে পড়েছে তিস্তা নদীর তলদেশ থেকে পাথর উত্তোলনকারী সিন্ডিকেট চক্র।
ইতোপূর্বে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার অভিযান চালালেও তাতে তেমন একটা প্রভাব পড়ছে না এই অবৈধ পাথর উত্তোলনকারী চক্রের ওপর। মাঝে মধ্যে দু-এক দিন পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখার পর আবারও তিস্তা নদী হতে পাথর তোলার মহাযজ্ঞ চলে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে তিস্তাপাড়ের মানুষদের।
প্রভাবশালী চক্রগুলো অবৈধভাবে নদী থেকে পাথর তুলে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করছে, পক্ষান্তরে জীবন-জীবিকায় দুর্বিষহ অন্ধকার নেমে আসছে তিস্তার তীরবর্তী ও তিস্তাপাড় অববাহিকা বাসিন্দাদের। নির্বিচারে পাথর উত্তোলনের ফলে নদীভাঙনে বর্ষাকালে আকস্মিক বন্যা এবং ফসলি জমি, ঘরবাড়ি নদী গর্ভে চলে গিয়ে প্রতিবছর সর্বস্বান্ত হচ্ছে তিস্তাপাড়বাসীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন যাবৎ তিস্তা নদী ও সংলগ্ন এলাকায় মহোৎসবে চলছে পাথর উত্তোলন। অবৈধভাবে তিস্তা হতে পাথর উত্তোলন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় ইতোমধ্যে পাথর উত্তোলনকারী সিন্ডিকেট চক্রের হাতে প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন অনেকেই। এ অবৈধ কর্মকাণ্ডে প্রতিবাদ করে সর্বদাই নিরাপত্তাহীনতায় ও ভয়ে ভয়ে থাকতে হয় তাদের। তাই প্রতিবাদ করা একেবারেই ছেড়ে দিয়েছেন এখানকার লোকজন। প্রশাসনকে জানিয়েও তেমন একটা লাভ হচ্ছে না বলে জানান স্থানীয়রা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তিস্তা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো ভাঙনের কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে। ভাঙন এলাকাগুলোতে নৌকায় শ্যালো ইঞ্জিন চালিত লোহার তৈরি যন্ত্র দিয়ে নদীর তলদেশে গভীর গর্ত করে পাথর উত্তোলন করছে একাধিক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্রের শত শত ইঞ্জিন চালিত নৌকা।
নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা জানান, তিস্তা ব্যারাজের আশপাশে তিস্তা বাজার, তেলির বাজার, দোহল পাড়া, চরখড়িবাড়ি, বাইশপুকুর, কালিগঞ্জ, ভেন্ডাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় পাথর উত্তোলনের আগের তুলনায় বেড়ে গিয়ে অসংখ্য প্রভাবশালী চক্র জড়িয়ে পড়েছে এই অবৈধ কাজে।
তিস্তা ব্যারেজের উজানে তেলির বাজার, তিস্তা বাজার, ছোটখাতা ও ভাটিতে ডালিয়া, বাইশপুকুর ভেন্ডাবাড়ি, ছাতুনামা এলাকায় দেখা যায়, বেলচা, কোদাল ও শাবল ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন করে অন্তত প্রতিটি পয়েন্টে প্রায় শতাধিক নৌকায় বোঝাই করেছেন। এ সব পাথর বিক্রির জন্য ট্রাক্টরে করে নিয়ে যাওয়া হয় ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংরক্ষিত নাকের ডগায় তিস্তা সেচ নালার ধারসহ শুটিবাড়ি বাজার, ছোটখাতার গাইড বাঁধ ও ডালিয়া ২নং বাজারের মূল সেচ নালা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার পশ্চিমধারে পাউবোর ফাঁকা জায়গায় স্তূপ করে রাখা হয়; যা ডালিয়া পাউবোর অফিস কার্যালয়ের ৫শ’ গজের মধ্যে সংরক্ষিত এলাকাগুলোতে। সেখান থেকে বাজারজাত করে বিক্রি করা হচ্ছে এসব পাথর।
পাথর উত্তোলনকারীরা জানান, নৌকায় শ্যালো ইঞ্জিনচালিত পাখা দিয়ে চলন্ত অবস্থায় নদীর তলদেশের বালু সরিয়ে পাথর তুলে পানির ওপরে নিয়ে আসা হয়। এভাবেই নদীর বিভিন্ন স্থানে শতাধিক সক্রিয় টিম পাথর উত্তোলন করছে। উত্তোলিত পাথরপ্রতি সেফটি ৪৫ টাকা দরে ক্রয় করে প্রতি সেফটি ১শ’ হতে দেড়শ’ দরে বিক্রি করে আসছেন সিন্ডিকেট চক্র। যা বর্তমান বাজারমূল্যের অর্ধেক।
তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা বলছেন, অবৈধভাবে পাথর-বালু উত্তোলন করে অনেক পাথর ব্যবসায়ী রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। আর আমরা তিস্তার ভাঙনের শিকার হয়ে দিন দিন সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসেছি। তিস্তা হতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের কারণে আমাদের বসতভিটা ও আবাদি জমি বিলীন হয়েছে নদীতে চলে যাচ্ছে। অথচ ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ নীরব ও অসহায় দর্শকের ভূমিকায় দাড়িয়ে চুপচাপ দেখছেন। তিস্তা নদী হতে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে কোনো প্রকার কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছেন না তিস্তা নদীসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী। সামগ্রিকভাবে দায়িত্বে থাকা এ দপ্তরটি সর্বদাই নিজ দায়-দায়িত্ব এড়িয়ে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারীদের সার্বিক সহায়তা করে চলছেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন ভাঙনকবলিত তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা।
যদিও উপজেলা প্রশাসন একাধিকবার যৌথ অভিযান চালিয়ে তিস্তায় ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাঙচুরসহ বিপুল পরিমাণ পাথর জব্দ করা হয়। কিন্তু অভিযানে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি।
এ অভিযোগের বিষয়ে অমিতাভ চৌধুরী বলেন, তিস্তা নদীর পাথর উত্তোলন বন্ধের দায়-দায়িত্ব পাউবোর না। পাথর উত্তোলন বন্ধ বা উত্তোলনকারীদের শাস্তি দেয়ার দায়-দায়িত্ব জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান বলেন, শুধু জেলা-উপজেলা প্রশাসনের ওপর দায় চাপিয়ে যাচ্ছে পাউবো। তিস্তা ভাঙন রোধ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষাসহ তিস্তা ব্যারেজের সেচ কার্যক্রম চলমান ও টিকিয়ে রাখতে সর্বোপরি তিস্তা ব্যারেজ রক্ষায় তিস্তানদী থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে পাউবো কর্তৃপক্ষকে দায় না এড়িয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
মো. ইমরানুজ্জামান আরও বলেন, তিস্তা নদী থেকে পাথর উত্তোলনের আইনগত কোনো সুযোগ নেই। আইন অমান্য করে তিস্তা নদী হতে পাথর উত্তোলন করা হলে কঠোর হস্তে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ করা হবে। এ ব্যাপারে কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, এ পরিষ্কার বার্তা ইতোপূর্বে দিয়েছি, আবারও দিতে চাই, তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী সংশ্লিষ্ট চক্রকে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
নীলফামারী ডিমলার তিস্তা নদী থেকে পাথর তুলে নিয়ে যাচ্ছে -সংবাদ
রোববার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
দেশের বৃহত্তম তিস্তা ব্যারেজ ও সেচ প্রকল্পকে নস্যাৎ ও অকার্যকর করতে তিস্তা নদীর বুক থেকে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে বেপরোয়াভাবে। ফলে তিস্তা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো ভাঙনের কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে। শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকায় লোহার তৈরি যন্ত্র দিয়ে নদীর তলদেশে গভীর গর্ত করে পাথর উত্তোলন করছে একাধিক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, তিস্তা নদীর পাথর উত্তোলন বন্ধের দায়-দায়িত্ব পাউবোর না
আর এ অবৈধ কাজের বৈধতা দিচ্ছে নীলফামারীর ডালিয়া পাউবো, এমনটাই অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তারা বলছে, নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরীর ছত্রছায়ায় চলছে তিস্তার বুক চিরে পাথর তোলা।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রভাবশালী মহলসহ দুই শক্তির যৌথ ক্ষমতা বলে বেপরোয়া হয়ে পড়েছে তিস্তা নদীর তলদেশ থেকে পাথর উত্তোলনকারী সিন্ডিকেট চক্র।
ইতোপূর্বে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার অভিযান চালালেও তাতে তেমন একটা প্রভাব পড়ছে না এই অবৈধ পাথর উত্তোলনকারী চক্রের ওপর। মাঝে মধ্যে দু-এক দিন পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখার পর আবারও তিস্তা নদী হতে পাথর তোলার মহাযজ্ঞ চলে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে তিস্তাপাড়ের মানুষদের।
প্রভাবশালী চক্রগুলো অবৈধভাবে নদী থেকে পাথর তুলে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করছে, পক্ষান্তরে জীবন-জীবিকায় দুর্বিষহ অন্ধকার নেমে আসছে তিস্তার তীরবর্তী ও তিস্তাপাড় অববাহিকা বাসিন্দাদের। নির্বিচারে পাথর উত্তোলনের ফলে নদীভাঙনে বর্ষাকালে আকস্মিক বন্যা এবং ফসলি জমি, ঘরবাড়ি নদী গর্ভে চলে গিয়ে প্রতিবছর সর্বস্বান্ত হচ্ছে তিস্তাপাড়বাসীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন যাবৎ তিস্তা নদী ও সংলগ্ন এলাকায় মহোৎসবে চলছে পাথর উত্তোলন। অবৈধভাবে তিস্তা হতে পাথর উত্তোলন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় ইতোমধ্যে পাথর উত্তোলনকারী সিন্ডিকেট চক্রের হাতে প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন অনেকেই। এ অবৈধ কর্মকাণ্ডে প্রতিবাদ করে সর্বদাই নিরাপত্তাহীনতায় ও ভয়ে ভয়ে থাকতে হয় তাদের। তাই প্রতিবাদ করা একেবারেই ছেড়ে দিয়েছেন এখানকার লোকজন। প্রশাসনকে জানিয়েও তেমন একটা লাভ হচ্ছে না বলে জানান স্থানীয়রা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, তিস্তা নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো ভাঙনের কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে। ভাঙন এলাকাগুলোতে নৌকায় শ্যালো ইঞ্জিন চালিত লোহার তৈরি যন্ত্র দিয়ে নদীর তলদেশে গভীর গর্ত করে পাথর উত্তোলন করছে একাধিক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্রের শত শত ইঞ্জিন চালিত নৌকা।
নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা জানান, তিস্তা ব্যারাজের আশপাশে তিস্তা বাজার, তেলির বাজার, দোহল পাড়া, চরখড়িবাড়ি, বাইশপুকুর, কালিগঞ্জ, ভেন্ডাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় পাথর উত্তোলনের আগের তুলনায় বেড়ে গিয়ে অসংখ্য প্রভাবশালী চক্র জড়িয়ে পড়েছে এই অবৈধ কাজে।
তিস্তা ব্যারেজের উজানে তেলির বাজার, তিস্তা বাজার, ছোটখাতা ও ভাটিতে ডালিয়া, বাইশপুকুর ভেন্ডাবাড়ি, ছাতুনামা এলাকায় দেখা যায়, বেলচা, কোদাল ও শাবল ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন করে অন্তত প্রতিটি পয়েন্টে প্রায় শতাধিক নৌকায় বোঝাই করেছেন। এ সব পাথর বিক্রির জন্য ট্রাক্টরে করে নিয়ে যাওয়া হয় ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংরক্ষিত নাকের ডগায় তিস্তা সেচ নালার ধারসহ শুটিবাড়ি বাজার, ছোটখাতার গাইড বাঁধ ও ডালিয়া ২নং বাজারের মূল সেচ নালা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার পশ্চিমধারে পাউবোর ফাঁকা জায়গায় স্তূপ করে রাখা হয়; যা ডালিয়া পাউবোর অফিস কার্যালয়ের ৫শ’ গজের মধ্যে সংরক্ষিত এলাকাগুলোতে। সেখান থেকে বাজারজাত করে বিক্রি করা হচ্ছে এসব পাথর।
পাথর উত্তোলনকারীরা জানান, নৌকায় শ্যালো ইঞ্জিনচালিত পাখা দিয়ে চলন্ত অবস্থায় নদীর তলদেশের বালু সরিয়ে পাথর তুলে পানির ওপরে নিয়ে আসা হয়। এভাবেই নদীর বিভিন্ন স্থানে শতাধিক সক্রিয় টিম পাথর উত্তোলন করছে। উত্তোলিত পাথরপ্রতি সেফটি ৪৫ টাকা দরে ক্রয় করে প্রতি সেফটি ১শ’ হতে দেড়শ’ দরে বিক্রি করে আসছেন সিন্ডিকেট চক্র। যা বর্তমান বাজারমূল্যের অর্ধেক।
তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা বলছেন, অবৈধভাবে পাথর-বালু উত্তোলন করে অনেক পাথর ব্যবসায়ী রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। আর আমরা তিস্তার ভাঙনের শিকার হয়ে দিন দিন সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসেছি। তিস্তা হতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের কারণে আমাদের বসতভিটা ও আবাদি জমি বিলীন হয়েছে নদীতে চলে যাচ্ছে। অথচ ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ নীরব ও অসহায় দর্শকের ভূমিকায় দাড়িয়ে চুপচাপ দেখছেন। তিস্তা নদী হতে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে কোনো প্রকার কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছেন না তিস্তা নদীসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী। সামগ্রিকভাবে দায়িত্বে থাকা এ দপ্তরটি সর্বদাই নিজ দায়-দায়িত্ব এড়িয়ে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারীদের সার্বিক সহায়তা করে চলছেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন ভাঙনকবলিত তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা।
যদিও উপজেলা প্রশাসন একাধিকবার যৌথ অভিযান চালিয়ে তিস্তায় ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাঙচুরসহ বিপুল পরিমাণ পাথর জব্দ করা হয়। কিন্তু অভিযানে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি।
এ অভিযোগের বিষয়ে অমিতাভ চৌধুরী বলেন, তিস্তা নদীর পাথর উত্তোলন বন্ধের দায়-দায়িত্ব পাউবোর না। পাথর উত্তোলন বন্ধ বা উত্তোলনকারীদের শাস্তি দেয়ার দায়-দায়িত্ব জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরানুজ্জামান বলেন, শুধু জেলা-উপজেলা প্রশাসনের ওপর দায় চাপিয়ে যাচ্ছে পাউবো। তিস্তা ভাঙন রোধ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষাসহ তিস্তা ব্যারেজের সেচ কার্যক্রম চলমান ও টিকিয়ে রাখতে সর্বোপরি তিস্তা ব্যারেজ রক্ষায় তিস্তানদী থেকে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে পাউবো কর্তৃপক্ষকে দায় না এড়িয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
মো. ইমরানুজ্জামান আরও বলেন, তিস্তা নদী থেকে পাথর উত্তোলনের আইনগত কোনো সুযোগ নেই। আইন অমান্য করে তিস্তা নদী হতে পাথর উত্তোলন করা হলে কঠোর হস্তে অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধ করা হবে। এ ব্যাপারে কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, এ পরিষ্কার বার্তা ইতোপূর্বে দিয়েছি, আবারও দিতে চাই, তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারী সংশ্লিষ্ট চক্রকে।