লালমনিরহাটে অসময়ে বৃষ্টির কারনে চলতি বছর ধনিয়া পাতার ফলনে বড় ধরনের সঙ্কট তৈরি করেছে। ফলন কম হলেও বাজারে অস্বাভাবিক উচ্চমূল্য থাকার কারণে কৃষকরা আগের যেকোনো বছরের তুলনায় বেশি লাভবান হচ্ছেন। বিপরীতে উচ্চ দামে ধনিয়া পাতা কিনতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ ক্রেতাদের। গত বছর এসময় প্রতি কেজি ধনিয়া পাতা বিক্রি হয়েছিল ২০-২৫ টাকায়। এবছর সেই দাম লাফিয়ে পৌঁছেছে ১০০ থেকে ২০০ টাকায়। যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ছয় গুণ বেশি। বাজারে ধনিয়া পাতার চাহিদাও রয়েছে প্রচুর।
কৃষকরা জানান, অসময়ের বৃষ্টিতে অনেক জমির ধনিয়া গাছ নষ্ট হয়েছে, আবার যেগুলো বেঁচে আছে সেগুলোর ফলনও কমেছে। গত বছর এক শতাংশ জমিতে তারা পেয়েছিলেন ৪০ থেকে ৫০ কেজি ধনিয়া পাতা। এবছর তা নেমে এসেছে ২০ থেকে ৩০ কেজিতে। প্রতি শতাংশ জমির উৎপাদন খরচ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।
আদিতমারী নামুড়ি গ্রামের কৃষক হারুন ৫০শতক জমিতে এ বছর জমিতে ধনিয়া চাষ করেছেন। তিনি বলেন, গত বছর প্রতি শতাংশে পেয়েছিলাম ৪৫ কেজি। এবছর পেয়েছি ২৫ কেজি। যদিও ফলন কম, কিন্তু বাজারদর বেশি হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এবার বেশি লাভ হচ্ছে। গত বছর প্রতিকেজি ধনিয়া বিক্রি করেছেন ২০ থেকে ২৫ টাকায় এবছর বিক্রি করছেন ৯০-১২০ টাকায়। কালীগঞ্জের কাকিনা এলাকার কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, এবছর ১০ শতাংশ জমিতে ধনিয়া চাষ করেছিলেন। এতে খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টাকা। এরমধ্যে আধা শতাংশ জমির ধনিয়া সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। অবশিষ্ট জমি থেকে ধনিয়া পেয়েছেন ১৮ -২০ কেজি। তিন শতাংশ জমির ধনিয়া বিক্রি করেছি ৭০ কেজি, পেয়েছি প্রায় সাড়ে ৭ হাজার টাকা বলেন তিনি। অবশিষ্ট ধনিয়াও বিক্রি করছেন আশানুরূপ দামে।
লালমনিরহাটের গোশালা বাজারের সবজি বিক্রেতা রহমান মিয়া জানান আমরা কৃষকদের কাছ থেকে প্রতিকেজি ধনিয়া কিনছি ৯০-৮০ টাকায়, বাজারে বিক্রি করছি ১২০-১৩০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে কেজি ছিল ২০০ টাকা পর্যন্ত। ধীরে ধীরে দাম কমছে। এক সপ্তাহ পরে দাম ৪০-৫০ টাকায় নামার সম্ভাবনা আছে।
সবজি ক্রেতা স্কুল শিক্ষক গোলজার আজম জানান, বাজারে শুধু ধনিয়া পাতা নয় সকল ধরনের শাক-সবজির অধিক মূল্য। শুধু আলুর দাম কম। প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক ধনিয়া পাতা কিনছেন। শীতকালে ধনিয়া পাতার ব্যবহার বেড়ে যায়। ধনিয়া পাতা ছাড়া তরকারি রান্না হয়না শীত কালে। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড.শাইখুল আরেফিন বলেন, এবছর অসময়ের বৃষ্টির প্রভাবে সব ধরনের শাকসবজির উৎপাদনই কম। ধনিয়া পাতার চাহিদা বেশি হওয়ায় কৃষকরা এটির ভালো দাম পাচ্ছেন। আলু ছাড়া সব ধরনের সবজির দামই এখন তুলনামূলক বেশি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
লালমনিরহাটে অসময়ে বৃষ্টির কারনে চলতি বছর ধনিয়া পাতার ফলনে বড় ধরনের সঙ্কট তৈরি করেছে। ফলন কম হলেও বাজারে অস্বাভাবিক উচ্চমূল্য থাকার কারণে কৃষকরা আগের যেকোনো বছরের তুলনায় বেশি লাভবান হচ্ছেন। বিপরীতে উচ্চ দামে ধনিয়া পাতা কিনতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ ক্রেতাদের। গত বছর এসময় প্রতি কেজি ধনিয়া পাতা বিক্রি হয়েছিল ২০-২৫ টাকায়। এবছর সেই দাম লাফিয়ে পৌঁছেছে ১০০ থেকে ২০০ টাকায়। যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ছয় গুণ বেশি। বাজারে ধনিয়া পাতার চাহিদাও রয়েছে প্রচুর।
কৃষকরা জানান, অসময়ের বৃষ্টিতে অনেক জমির ধনিয়া গাছ নষ্ট হয়েছে, আবার যেগুলো বেঁচে আছে সেগুলোর ফলনও কমেছে। গত বছর এক শতাংশ জমিতে তারা পেয়েছিলেন ৪০ থেকে ৫০ কেজি ধনিয়া পাতা। এবছর তা নেমে এসেছে ২০ থেকে ৩০ কেজিতে। প্রতি শতাংশ জমির উৎপাদন খরচ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।
আদিতমারী নামুড়ি গ্রামের কৃষক হারুন ৫০শতক জমিতে এ বছর জমিতে ধনিয়া চাষ করেছেন। তিনি বলেন, গত বছর প্রতি শতাংশে পেয়েছিলাম ৪৫ কেজি। এবছর পেয়েছি ২৫ কেজি। যদিও ফলন কম, কিন্তু বাজারদর বেশি হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এবার বেশি লাভ হচ্ছে। গত বছর প্রতিকেজি ধনিয়া বিক্রি করেছেন ২০ থেকে ২৫ টাকায় এবছর বিক্রি করছেন ৯০-১২০ টাকায়। কালীগঞ্জের কাকিনা এলাকার কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, এবছর ১০ শতাংশ জমিতে ধনিয়া চাষ করেছিলেন। এতে খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টাকা। এরমধ্যে আধা শতাংশ জমির ধনিয়া সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। অবশিষ্ট জমি থেকে ধনিয়া পেয়েছেন ১৮ -২০ কেজি। তিন শতাংশ জমির ধনিয়া বিক্রি করেছি ৭০ কেজি, পেয়েছি প্রায় সাড়ে ৭ হাজার টাকা বলেন তিনি। অবশিষ্ট ধনিয়াও বিক্রি করছেন আশানুরূপ দামে।
লালমনিরহাটের গোশালা বাজারের সবজি বিক্রেতা রহমান মিয়া জানান আমরা কৃষকদের কাছ থেকে প্রতিকেজি ধনিয়া কিনছি ৯০-৮০ টাকায়, বাজারে বিক্রি করছি ১২০-১৩০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে কেজি ছিল ২০০ টাকা পর্যন্ত। ধীরে ধীরে দাম কমছে। এক সপ্তাহ পরে দাম ৪০-৫০ টাকায় নামার সম্ভাবনা আছে।
সবজি ক্রেতা স্কুল শিক্ষক গোলজার আজম জানান, বাজারে শুধু ধনিয়া পাতা নয় সকল ধরনের শাক-সবজির অধিক মূল্য। শুধু আলুর দাম কম। প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক ধনিয়া পাতা কিনছেন। শীতকালে ধনিয়া পাতার ব্যবহার বেড়ে যায়। ধনিয়া পাতা ছাড়া তরকারি রান্না হয়না শীত কালে। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড.শাইখুল আরেফিন বলেন, এবছর অসময়ের বৃষ্টির প্রভাবে সব ধরনের শাকসবজির উৎপাদনই কম। ধনিয়া পাতার চাহিদা বেশি হওয়ায় কৃষকরা এটির ভালো দাম পাচ্ছেন। আলু ছাড়া সব ধরনের সবজির দামই এখন তুলনামূলক বেশি।