পটিয়া (চট্টগ্রাম) : অসাধু কর্মচারীদের যোগসাজশে বালু উত্তোলন -সংবাদ
চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসদরের শ্রীমাই খাল থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার কার্যালয়ের অসাধু কিছু কর্মচারী ও ভূমি অফিসের অসাধু কিছু স্টাফ মিলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কাযালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে স্থানীয় এক যুবদল নেতার নেতৃত্বে চলছে অবৈধভাবে কোটি টাকার বালু উত্তোলন করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করলেও রহস্যজনক কারণে কর্তৃপক্ষ কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে সরকার রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি খালের তীর ভাঙন ও শত শতকৃষিজমি চরম ক্ষতির মুখে পড়ে পরিবেশে মারাত্বক বিপর্যয় দেখা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৌরসদরের বাহুলী এলাকায় প্রতিদিন গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে শতশত ট্রাক বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। প্রশাসনের নিরব ভূমিকার সুযোগে তারা দিনরাত ১০/১৫টি ট্রাকে বালি পরিবহন করছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে সড়কের বেহাল দশা, আর স্থানীয়দের নিরাপত্তাও মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, যুবদল নেতা এস. এম. রেজা রিপন বিএনপির দলীয় প্রার্থী এনামুল হক এনামের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ বালু ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় প্রতিদিন খালের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে আশা পাশের কৃষি জমি পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য শ্রীমাই খালের রাবার ড্যাম, বেড়িবাঁধ ও ব্লক স্থাপনসহ ১৩৩ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প এখন মারাত্মক ঝুঁকিতে পগেছে। ১৩৩ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প ঝুঁকিতে শ্রীমাই খালে বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে নির্মিত হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তির হাইড্রোলিক অ্যালিভেটর ড্যাম। পাশাপাশি খালের দুই তীরের ভাঙন রোধে ৪.৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৩৩ কোটি টাকা এবং ইতোমধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পটিয়া পৌরসভা ও হাইদগাঁও, কেলিশহর ও কচুয়াই ইউনিয়নের প্রায় ১,১০৮ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা পাওয়া যাবে। ২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্পটি ২০২৬ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা। সম্পন্ন হলে শুষ্ক মৌসুমে এটি ৩৭ কোটি লিটার পানি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন হবে, যা এলাকার কৃষি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটাতে পারে। কিন্তু অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে খালের দুই তীর ভেঙে পড়েছে, পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে এবং পুরো প্রকল্পের কাঠামো হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয় বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন বলেন, ইজারাবিহীনভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হাইদগাঁও এলাকার কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। সরকার যেখানে শত কোটি টাকা ব্যায়ে উন্নয়ন কাজ করছে, সেখানে অসাধু সিন্ডিকেট খাল ভেঙে কৃষিজমি ধ্বংস করছে। পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আবসার উদ্দিন সোহেল বলেন, এস. এম. রেজা রিপন বর্তমান যুবদলের কমিটির কেউ নন। তবে তিনি ব্যক্তিগতভাবে যুবদলের নাম ব্যবহার করতে পারেন।
রফিক নামের এক কৃষক জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই অসাধু চক্র আমাদের জমি নষ্ট করছে। প্রশাসন জানলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমরা দ্রুত প্রতিকার চাই। অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী এনামুল হক এনাম বলেন, কোনো চোর ডাকাত বা সন্ত্রাসীর স্থান আমার দলে নেই। রিপন অপরাধে জড়িত থাকলে প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নিক। আমার নাম বা দলের নাম ব্যবহার করে কেউ অপরাধ করলে তার দায় আমি বা দল নেবে না প্রশাসনকে অনুরোধ করব যারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এতে দলের কেউ তাদের পক্ষে সুপারিশ করবে না।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য যুবদল নেতা এস এম রেজা রিপনের বক্তব্য জানার চেষ্ঠা করা হলেও মোবাইলে রিসিভি করেনি। পটিয়া উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রয়া ত্রিপুরা বলেন, ওই খালে কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি।
কেউ যদি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে থাকে, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানুর রহমান জানান, কয়েকদিন আগেও আমরা অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করেছিলাম। যদি পুনরায় এমন কাজ হয়ে থাকে, তবে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, আমার অফিসের কোন স্টাফ যদি থাকার প্রমান পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
পটিয়া (চট্টগ্রাম) : অসাধু কর্মচারীদের যোগসাজশে বালু উত্তোলন -সংবাদ
সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসদরের শ্রীমাই খাল থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার কার্যালয়ের অসাধু কিছু কর্মচারী ও ভূমি অফিসের অসাধু কিছু স্টাফ মিলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কাযালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে স্থানীয় এক যুবদল নেতার নেতৃত্বে চলছে অবৈধভাবে কোটি টাকার বালু উত্তোলন করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করলেও রহস্যজনক কারণে কর্তৃপক্ষ কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে সরকার রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি খালের তীর ভাঙন ও শত শতকৃষিজমি চরম ক্ষতির মুখে পড়ে পরিবেশে মারাত্বক বিপর্যয় দেখা গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৌরসদরের বাহুলী এলাকায় প্রতিদিন গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে শতশত ট্রাক বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। প্রশাসনের নিরব ভূমিকার সুযোগে তারা দিনরাত ১০/১৫টি ট্রাকে বালি পরিবহন করছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে সড়কের বেহাল দশা, আর স্থানীয়দের নিরাপত্তাও মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, যুবদল নেতা এস. এম. রেজা রিপন বিএনপির দলীয় প্রার্থী এনামুল হক এনামের প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ বালু ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় প্রতিদিন খালের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে আশা পাশের কৃষি জমি পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য শ্রীমাই খালের রাবার ড্যাম, বেড়িবাঁধ ও ব্লক স্থাপনসহ ১৩৩ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প এখন মারাত্মক ঝুঁকিতে পগেছে। ১৩৩ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প ঝুঁকিতে শ্রীমাই খালে বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে নির্মিত হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তির হাইড্রোলিক অ্যালিভেটর ড্যাম। পাশাপাশি খালের দুই তীরের ভাঙন রোধে ৪.৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৩৩ কোটি টাকা এবং ইতোমধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পটিয়া পৌরসভা ও হাইদগাঁও, কেলিশহর ও কচুয়াই ইউনিয়নের প্রায় ১,১০৮ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা পাওয়া যাবে। ২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্পটি ২০২৬ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা। সম্পন্ন হলে শুষ্ক মৌসুমে এটি ৩৭ কোটি লিটার পানি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন হবে, যা এলাকার কৃষি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটাতে পারে। কিন্তু অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে খালের দুই তীর ভেঙে পড়েছে, পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে এবং পুরো প্রকল্পের কাঠামো হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয় বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন বলেন, ইজারাবিহীনভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হাইদগাঁও এলাকার কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। সরকার যেখানে শত কোটি টাকা ব্যায়ে উন্নয়ন কাজ করছে, সেখানে অসাধু সিন্ডিকেট খাল ভেঙে কৃষিজমি ধ্বংস করছে। পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আবসার উদ্দিন সোহেল বলেন, এস. এম. রেজা রিপন বর্তমান যুবদলের কমিটির কেউ নন। তবে তিনি ব্যক্তিগতভাবে যুবদলের নাম ব্যবহার করতে পারেন।
রফিক নামের এক কৃষক জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই অসাধু চক্র আমাদের জমি নষ্ট করছে। প্রশাসন জানলেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমরা দ্রুত প্রতিকার চাই। অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী এনামুল হক এনাম বলেন, কোনো চোর ডাকাত বা সন্ত্রাসীর স্থান আমার দলে নেই। রিপন অপরাধে জড়িত থাকলে প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নিক। আমার নাম বা দলের নাম ব্যবহার করে কেউ অপরাধ করলে তার দায় আমি বা দল নেবে না প্রশাসনকে অনুরোধ করব যারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এতে দলের কেউ তাদের পক্ষে সুপারিশ করবে না।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য যুবদল নেতা এস এম রেজা রিপনের বক্তব্য জানার চেষ্ঠা করা হলেও মোবাইলে রিসিভি করেনি। পটিয়া উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রয়া ত্রিপুরা বলেন, ওই খালে কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি।
কেউ যদি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে থাকে, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানুর রহমান জানান, কয়েকদিন আগেও আমরা অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করেছিলাম। যদি পুনরায় এমন কাজ হয়ে থাকে, তবে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, আমার অফিসের কোন স্টাফ যদি থাকার প্রমান পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে।