শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত রংপুরে এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকা ও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে জমিতে অতিরিক্ত সেচের প্রয়োজন হয়নি, ফলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে।
জেলার খাদ্যের চাহিদা মিটিয়েও অতিরিক্ত ৩ লাখ মেট্রিক টন চাল দেশের বিভিন্ন জেলার খাদ্যের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে
কৃষকদের অভিযোগ, সরকার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার কথা বললেও কোনো চালই কেনে না, ফলে তারা ন্যায্যমূল্য কখনই পায়না
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, জেলায় মানুষের বাৎসরিক চালের চাহিদা প্রায় আড়াই লাখ টন, আর উৎপাদন হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টন। এতে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্য জেলায় অতিরিক্ত প্রায় ৩ লাখ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৬৬ হাজার ৭২৩ হেক্টর জমি, আর চাষ হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯১৫ হেক্টরে।
ইতোমধ্যে জেলার ৮ উপজেলায় শতকরা ৭০ ভাগ জমির ধান কাটা-মাড়াই শেষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি উৎপাদন ৩ মেট্রিক টনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৩ দশমিক ২৫ মেট্রিক টনে পৌঁছেছে।
কৃষকদের ক্ষোভ: ন্যায্য
মূল্য পাচ্ছেন না
মাঠ পর্যায়ে কৃষক ও বর্গাচাষিরা জানান, রাসায়নিক সার, কীটনাশক, ডিজেল ও শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় বিঘাপ্রতি উৎপাদন খরচ আগের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১,২০০ টাকা, যা দিয়ে খরচই ওঠে না।
কৃষকদের দাবি, অন্তত ১,৫০০-১,৬০০ টাকা মণ মূল্য না হলে তারা লাভবান হতে পারবেন না। বেশ কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করেন, খাদ্য বিভাগ কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান না কিনে মিল মালিক ও বড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাল কেনে। ফলে দাদন ব্যবসায়ীদের উচ্চসুদের ঋণ শোধ করতে কৃষকরা বাধ্য হয়ে কম দামে ধান বিক্রি করেন। ক্ষুদ্র ও বর্গাচাষিদের নাম তালিকাভুক্ত না হওয়ায় তারা সরকারি ধান বিক্রয় কর্মসূচির সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হন।
কৃষি কর্মকর্তাদের মন্তব্য
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ধান কাটার সময়ই যদি সরকার সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতো, তাহলে তারা ন্যায্য মূল্য পেতেন। এখনো ধান কেনা না হওয়ায় বড় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছাকৃতভাবে কমদামে ধান কিনতে বাজারে মন্থরতা তৈরি করছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সাইফুল আলম বলেন, ‘এ বছর রংপুরে আমন ধানের ফলন অত্যন্ত ভালো হয়েছে। উৎপাদিত প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন চালের মধ্যে স্থানীয় চাহিদা বাদ দিয়ে অতিরিক্ত ৩ লাখ মেট্রিক টন দেশের খাদ্য চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত রংপুরে এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকা ও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে জমিতে অতিরিক্ত সেচের প্রয়োজন হয়নি, ফলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে।
জেলার খাদ্যের চাহিদা মিটিয়েও অতিরিক্ত ৩ লাখ মেট্রিক টন চাল দেশের বিভিন্ন জেলার খাদ্যের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে
কৃষকদের অভিযোগ, সরকার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার কথা বললেও কোনো চালই কেনে না, ফলে তারা ন্যায্যমূল্য কখনই পায়না
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, জেলায় মানুষের বাৎসরিক চালের চাহিদা প্রায় আড়াই লাখ টন, আর উৎপাদন হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টন। এতে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্য জেলায় অতিরিক্ত প্রায় ৩ লাখ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৬৬ হাজার ৭২৩ হেক্টর জমি, আর চাষ হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯১৫ হেক্টরে।
ইতোমধ্যে জেলার ৮ উপজেলায় শতকরা ৭০ ভাগ জমির ধান কাটা-মাড়াই শেষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি উৎপাদন ৩ মেট্রিক টনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৩ দশমিক ২৫ মেট্রিক টনে পৌঁছেছে।
কৃষকদের ক্ষোভ: ন্যায্য
মূল্য পাচ্ছেন না
মাঠ পর্যায়ে কৃষক ও বর্গাচাষিরা জানান, রাসায়নিক সার, কীটনাশক, ডিজেল ও শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় বিঘাপ্রতি উৎপাদন খরচ আগের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১,২০০ টাকা, যা দিয়ে খরচই ওঠে না।
কৃষকদের দাবি, অন্তত ১,৫০০-১,৬০০ টাকা মণ মূল্য না হলে তারা লাভবান হতে পারবেন না। বেশ কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করেন, খাদ্য বিভাগ কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান না কিনে মিল মালিক ও বড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাল কেনে। ফলে দাদন ব্যবসায়ীদের উচ্চসুদের ঋণ শোধ করতে কৃষকরা বাধ্য হয়ে কম দামে ধান বিক্রি করেন। ক্ষুদ্র ও বর্গাচাষিদের নাম তালিকাভুক্ত না হওয়ায় তারা সরকারি ধান বিক্রয় কর্মসূচির সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হন।
কৃষি কর্মকর্তাদের মন্তব্য
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ধান কাটার সময়ই যদি সরকার সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতো, তাহলে তারা ন্যায্য মূল্য পেতেন। এখনো ধান কেনা না হওয়ায় বড় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছাকৃতভাবে কমদামে ধান কিনতে বাজারে মন্থরতা তৈরি করছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সাইফুল আলম বলেন, ‘এ বছর রংপুরে আমন ধানের ফলন অত্যন্ত ভালো হয়েছে। উৎপাদিত প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন চালের মধ্যে স্থানীয় চাহিদা বাদ দিয়ে অতিরিক্ত ৩ লাখ মেট্রিক টন দেশের খাদ্য চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে।’