ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
অর্থনৈতিক চাপ আর আবহাওয়ার অনিশ্চয়তার মধ্যে এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে সার সংকট। সকল জমি প্রস্তুত না হলেও কিছু জমি প্রস্তুত তবে প্রয়োজনীয় সার না পেয়ে দিশেহারা কৃষকরা। স্থানীয় বাজারে ইউরিয়া, টিএসপি মজুদ থাকলেও ডিএপি (ড্যাপ)-সারেরই ঘাটতি বেশি। জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে পৌর শহরের সদর রাস্তায় আবু তালেব সরদার (নান্নু) সারের দোকানে দেখা মিলেছে কৃষকদের দীর্ঘ লাইন। বস্তা, ব্যাগ ও কারো হাতে রয়েছে জাতীয়পরিচয়পত্র। শুধুমাত্র সোনামুখী ইউনিয়নের কৃষকদের সার প্রদান করা হবে বলে জানা গেছে। কেউ কেউ দূর থেকেও এসে সার কেনার জন্য রয়েছে লম্বা লাইনে। কি পরিমান সার আসল কিংবা ডিলারের দোকান সার পৌঁছালো কিনা তা কৃষি অফিস খতিয়ে দেখে অনুমতি প্রদান করলে তবেই সার পাবে বলে জানিয়েছে ডিলার ও কৃষি অফিস।
সোনামুখী ইউনিয়নের গুনিপুর গ্রামের কৃষক হাফিজুল ইসলাম বলেন, জাফর বাসস্ট্যান্ডের কাছে মো. সিরাজুল মৃধা নামে এক ডিলারের দোকানে পাঁচ দিন ঘুরেও আমি মাত্র দুই বস্তা ড্যাপ ও দুই বস্তা পটাশ পেয়েছেন, যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। তিনি বলেন, আমাদের পরিবারের সাত বিঘা আলু, এক বিঘা পেঁয়াজ, তিন বিঘা সরিষা এবং এক বিঘা জমিতে শস্যা আবাদ করার প্রস্তুতি নিয়েছি। যথাসময়ে প্রয়োজনীয় সার না পেলে এসব আবাদ করা সম্ভব হবে না। এমনকি উপজেলা কৃষি অফিসেও সারের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য বার বার ধরনা দিয়েছি।
সোনামুখী ইউনিয়নের কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু অনুমতি না আসায় সার দিচ্ছে না। কতটুকু সার পাবো এবং তা দিয়ে জমির চাহিদা পূরণ হবে কি না—তা নিয়েও অনিশ্চয়তায় আছি।
সাবিনা হক আক্ষেপ করে বলেন, অন্যান্য জায়গায় ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে সার মজুত তা বেশি দামে বিক্রিও করছেন। এ জন্যই আমরা এসেছি সার নেওয়ার জন্য । পরে যদি সার না পাই। বড় কৃষকেরা কোনোভাবে টিকে থাকলেও ক্ষুদ্র কৃষকরা চরম বিপাকে পড়বে।
সার ডিলার আবু তালেব সরদার (নান্নু) বলেন, এমাসে ৮২৬ বস্তা ডিএপি (ড্যাপ) সার শুধু সোনামুখী ইউনিয়নে দেওয়া হয়েছে এখনো যত লোক সারের চাহিদা রয়েছে মজুদ না থাকায় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতি বিঘায় দেওয়ার নিয়ম ডিএপি (ড্যাপ) সার সরকারি হিসেবে ২৭ কেজি, সেখানে দেওয়া হচ্ছে ৫০ কেজি করে। আমারা জমি হিসাব করেই বরাদ্দ পাই। ঘাটতিটি পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি সঠিক নিয়মে সার ব্যবহার করুন এবং মাটি বেধে দেওয়ার সময় আবার সার দিন। উপজেলার প্রায় অনেকাংশ জমি এখনও প্রস্তুত হয়নি। কৃষকদের ভিতরে একটা অস্থিরতা কাজ করছে কোথাও কোথাও এখন ধান কাটা শেষ হলেও জমি প্রস্তুত নয়। তবে তারা পরে সার পাবে কি নাহ এমনটা ভেবে সার নেওয়ার জন্য ছুটছে নিকটস্থ সার ডিলারদের কাছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবীদ মো. ইমরান হোসেন বলেন, নভেম্বর মাসে ডিএপি (ড্যাপ) সারের জন্য মোট ৫শ ৩৩ মে. টন বরাদ্দ থাকলেও ইতোমধ্যে বরাদ্দকৃত সব সার শেষ হয়ে গেছে। আমরা ডিসেম্বর মাসে ৩শ ৭৭ মে. টন সার বরাদ্দ নিশ্চিত করেছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি নভেম্বরের মধ্যে সার বরাদ্দপত্র ঘোষনা যেন পাই। ইতোমধ্যে আমরা সব সার ডিলারকে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি। বরাদ্দপত্র পাওয়া মাত্রই ডিলাররা টাকা জমা দিলে ডিসেম্বরের ১ তারিখে পয়েন্টে সার মজুদ হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
অর্থনৈতিক চাপ আর আবহাওয়ার অনিশ্চয়তার মধ্যে এবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে সার সংকট। সকল জমি প্রস্তুত না হলেও কিছু জমি প্রস্তুত তবে প্রয়োজনীয় সার না পেয়ে দিশেহারা কৃষকরা। স্থানীয় বাজারে ইউরিয়া, টিএসপি মজুদ থাকলেও ডিএপি (ড্যাপ)-সারেরই ঘাটতি বেশি। জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে পৌর শহরের সদর রাস্তায় আবু তালেব সরদার (নান্নু) সারের দোকানে দেখা মিলেছে কৃষকদের দীর্ঘ লাইন। বস্তা, ব্যাগ ও কারো হাতে রয়েছে জাতীয়পরিচয়পত্র। শুধুমাত্র সোনামুখী ইউনিয়নের কৃষকদের সার প্রদান করা হবে বলে জানা গেছে। কেউ কেউ দূর থেকেও এসে সার কেনার জন্য রয়েছে লম্বা লাইনে। কি পরিমান সার আসল কিংবা ডিলারের দোকান সার পৌঁছালো কিনা তা কৃষি অফিস খতিয়ে দেখে অনুমতি প্রদান করলে তবেই সার পাবে বলে জানিয়েছে ডিলার ও কৃষি অফিস।
সোনামুখী ইউনিয়নের গুনিপুর গ্রামের কৃষক হাফিজুল ইসলাম বলেন, জাফর বাসস্ট্যান্ডের কাছে মো. সিরাজুল মৃধা নামে এক ডিলারের দোকানে পাঁচ দিন ঘুরেও আমি মাত্র দুই বস্তা ড্যাপ ও দুই বস্তা পটাশ পেয়েছেন, যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। তিনি বলেন, আমাদের পরিবারের সাত বিঘা আলু, এক বিঘা পেঁয়াজ, তিন বিঘা সরিষা এবং এক বিঘা জমিতে শস্যা আবাদ করার প্রস্তুতি নিয়েছি। যথাসময়ে প্রয়োজনীয় সার না পেলে এসব আবাদ করা সম্ভব হবে না। এমনকি উপজেলা কৃষি অফিসেও সারের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য বার বার ধরনা দিয়েছি।
সোনামুখী ইউনিয়নের কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু অনুমতি না আসায় সার দিচ্ছে না। কতটুকু সার পাবো এবং তা দিয়ে জমির চাহিদা পূরণ হবে কি না—তা নিয়েও অনিশ্চয়তায় আছি।
সাবিনা হক আক্ষেপ করে বলেন, অন্যান্য জায়গায় ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে সার মজুত তা বেশি দামে বিক্রিও করছেন। এ জন্যই আমরা এসেছি সার নেওয়ার জন্য । পরে যদি সার না পাই। বড় কৃষকেরা কোনোভাবে টিকে থাকলেও ক্ষুদ্র কৃষকরা চরম বিপাকে পড়বে।
সার ডিলার আবু তালেব সরদার (নান্নু) বলেন, এমাসে ৮২৬ বস্তা ডিএপি (ড্যাপ) সার শুধু সোনামুখী ইউনিয়নে দেওয়া হয়েছে এখনো যত লোক সারের চাহিদা রয়েছে মজুদ না থাকায় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতি বিঘায় দেওয়ার নিয়ম ডিএপি (ড্যাপ) সার সরকারি হিসেবে ২৭ কেজি, সেখানে দেওয়া হচ্ছে ৫০ কেজি করে। আমারা জমি হিসাব করেই বরাদ্দ পাই। ঘাটতিটি পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি সঠিক নিয়মে সার ব্যবহার করুন এবং মাটি বেধে দেওয়ার সময় আবার সার দিন। উপজেলার প্রায় অনেকাংশ জমি এখনও প্রস্তুত হয়নি। কৃষকদের ভিতরে একটা অস্থিরতা কাজ করছে কোথাও কোথাও এখন ধান কাটা শেষ হলেও জমি প্রস্তুত নয়। তবে তারা পরে সার পাবে কি নাহ এমনটা ভেবে সার নেওয়ার জন্য ছুটছে নিকটস্থ সার ডিলারদের কাছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবীদ মো. ইমরান হোসেন বলেন, নভেম্বর মাসে ডিএপি (ড্যাপ) সারের জন্য মোট ৫শ ৩৩ মে. টন বরাদ্দ থাকলেও ইতোমধ্যে বরাদ্দকৃত সব সার শেষ হয়ে গেছে। আমরা ডিসেম্বর মাসে ৩শ ৭৭ মে. টন সার বরাদ্দ নিশ্চিত করেছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি নভেম্বরের মধ্যে সার বরাদ্দপত্র ঘোষনা যেন পাই। ইতোমধ্যে আমরা সব সার ডিলারকে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি। বরাদ্দপত্র পাওয়া মাত্রই ডিলাররা টাকা জমা দিলে ডিসেম্বরের ১ তারিখে পয়েন্টে সার মজুদ হবে।