লালমোহন (ভোলা) : নিখোঁজ জেলে খোকনের অপেক্ষায় স্ত্রী-সন্তানসহ বাবা-মা -সংবাদ
ভোলার লালমোহন উপজেলা থেকে সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে নিখোঁজ রয়েছেন ১৩ জেলে। উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফারুক মাঝির মা-বাবার দোয়া নামে একটি ট্রলিংবোর্টে করে ওইসব জেলেরা গত ১৬ দিন আগে সাগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। যাত্রার ৬ দিনের মধ্যে তাদের আবার তীরে ফেরার কথা থাকলেও ১৬ দিন অতিবাহিত হলেও তাদের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনরা। এতে করে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে ওইসব জেলে পরিবারে।
জানা গেছে, গত ১০ নভেম্বর দুপুরে লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দলিল মাস্টার বাজার এলাকা ও বাতিরখাল মৎস্যঘাট এলাকা থেকে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে একটি ট্রলিংবোর্টে করে রওয়ানা দেন ১৩ জেলে। ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফারুক মাঝির মা-বাবার দোয়া নামের ওই ট্রলিংবোর্টে করে ১১ নভেম্বর চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ মৎস্যঘাটে পৌঁছে সেখান থেকে বোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে সাগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন ওইসব জেলেরা। যাত্রার ৬ দিনের মধ্যে তাদের আবার তীরে ফেরার কথা থাকলেও ১৬ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি। কোনোভাবে ওইসব জেলেদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছেন না স্বজনরা। এতে করে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে ওইসব জেলে পরিবারে।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন- লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দলিল মাস্টার বাজার এলাকার মো. মাকসুদুর রহমান, মো. খোকন, মো. হেলাল, মো. শামিম, মো. সাব্বির, মো. সজিব, মো. জাহাঙ্গীর, মো. নাছির মাঝি এবং একই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাতিরখাল এলাকার আব্দুল মালেক, মো. ফারুক, মো. মাকসুদ, মো. আলম মাঝি ও মো. ফারুকসহ মোট ১৩ জেলে।
ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দলিল মাস্টার বাজার এলাকার নিখোঁজ জেলে মো. খোকনের স্ত্রী মোসা. রিপা বেগম জানান, তিনি বলেন, আমার স্বামী নদী-সাগরে মাছ শিকার করে টাকা উপার্জন করতেন। তা দিয়ে দুই সন্তান এবং আমার শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে সুন্দরভাবে সংসার চালাতেন তিনি। কিন্তু সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে এখন আমার স্বামীর কোনো খোঁজ নেই। তিনি একা নন, তার সঙ্গে ছিল আরো ১২ জন। তাদের কারওই কোনো খোঁজ নেই। তাদের সঙ্গে কি হয়েছে তা-ই জানি না। এখন কেবল দোয়া করি সবাই যেন নিরাপদে থাকেন এবং আমাদের মাঝে ফিরে আসেন।
নিখোঁজ আরেক জেলে হেলালের স্ত্রী মিতু বেগম বলেন, স্বামী বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বলেছিলেন আমি যেন নিজের এবং সন্তানের খেয়াল রাখি। তাকে বলেছিলাম আমি বাবার বাড়ি যাবো। তিনি বলেছেন সাগর থেকে ফিরে তিনিসহ একসঙ্গে যাবেন। এখন তারই কোনো খোঁজ নেই। তাকে ছাড়া সন্তানসহ আমার এবং বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়ির কি হবে? কিভাবে চলবো আমরা। আমার স্বামীকে ফিরে পেতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।
মাকসুদুর রহমান নামে নিখোঁজ আরেক জেলের ছেলে মো. নয়ন জানান, সাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার পর সর্বোচ্চ ৬ দিনের মধ্যে সবার ফেরার কথা। তবে এখন ১৬ দিন হয়ে গেছে, এখনো কেউ ফেরেনি। যার জন্য তাদের খুঁজতে শনিবার একটি ট্রলারে করে সাগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন আত্মীয়-স্বজনরা। আমার বাবাসহ বাকি জেলেদের সন্ধান না পাওয়ার বিষয়টি ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। তবে তারা এখন কি অবস্থায় রয়েছেন বা তাদের সঙ্গে কি-ই বা ঘটেছে তা আমাদের কারওই জানা নেই। তাই আমরা চাই প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতায় আমার বাবাসহ অন্যান্য জেলেরা শিগগিরই ফিরে আসবেন।
লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আজিজ বলেন, জেলেদের নিখোঁজের সংবাদটি আমরা পেয়েছি। বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা ওইসব জেলেদের সন্ধান চালাচ্ছি। এছাড়া পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
লালমোহন (ভোলা) : নিখোঁজ জেলে খোকনের অপেক্ষায় স্ত্রী-সন্তানসহ বাবা-মা -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
ভোলার লালমোহন উপজেলা থেকে সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে নিখোঁজ রয়েছেন ১৩ জেলে। উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফারুক মাঝির মা-বাবার দোয়া নামে একটি ট্রলিংবোর্টে করে ওইসব জেলেরা গত ১৬ দিন আগে সাগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। যাত্রার ৬ দিনের মধ্যে তাদের আবার তীরে ফেরার কথা থাকলেও ১৬ দিন অতিবাহিত হলেও তাদের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনরা। এতে করে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে ওইসব জেলে পরিবারে।
জানা গেছে, গত ১০ নভেম্বর দুপুরে লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দলিল মাস্টার বাজার এলাকা ও বাতিরখাল মৎস্যঘাট এলাকা থেকে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে একটি ট্রলিংবোর্টে করে রওয়ানা দেন ১৩ জেলে। ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফারুক মাঝির মা-বাবার দোয়া নামের ওই ট্রলিংবোর্টে করে ১১ নভেম্বর চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ মৎস্যঘাটে পৌঁছে সেখান থেকে বোর্টের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে সাগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন ওইসব জেলেরা। যাত্রার ৬ দিনের মধ্যে তাদের আবার তীরে ফেরার কথা থাকলেও ১৬ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি। কোনোভাবে ওইসব জেলেদের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছেন না স্বজনরা। এতে করে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে ওইসব জেলে পরিবারে।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন- লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দলিল মাস্টার বাজার এলাকার মো. মাকসুদুর রহমান, মো. খোকন, মো. হেলাল, মো. শামিম, মো. সাব্বির, মো. সজিব, মো. জাহাঙ্গীর, মো. নাছির মাঝি এবং একই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাতিরখাল এলাকার আব্দুল মালেক, মো. ফারুক, মো. মাকসুদ, মো. আলম মাঝি ও মো. ফারুকসহ মোট ১৩ জেলে।
ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দলিল মাস্টার বাজার এলাকার নিখোঁজ জেলে মো. খোকনের স্ত্রী মোসা. রিপা বেগম জানান, তিনি বলেন, আমার স্বামী নদী-সাগরে মাছ শিকার করে টাকা উপার্জন করতেন। তা দিয়ে দুই সন্তান এবং আমার শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে সুন্দরভাবে সংসার চালাতেন তিনি। কিন্তু সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে এখন আমার স্বামীর কোনো খোঁজ নেই। তিনি একা নন, তার সঙ্গে ছিল আরো ১২ জন। তাদের কারওই কোনো খোঁজ নেই। তাদের সঙ্গে কি হয়েছে তা-ই জানি না। এখন কেবল দোয়া করি সবাই যেন নিরাপদে থাকেন এবং আমাদের মাঝে ফিরে আসেন।
নিখোঁজ আরেক জেলে হেলালের স্ত্রী মিতু বেগম বলেন, স্বামী বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বলেছিলেন আমি যেন নিজের এবং সন্তানের খেয়াল রাখি। তাকে বলেছিলাম আমি বাবার বাড়ি যাবো। তিনি বলেছেন সাগর থেকে ফিরে তিনিসহ একসঙ্গে যাবেন। এখন তারই কোনো খোঁজ নেই। তাকে ছাড়া সন্তানসহ আমার এবং বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়ির কি হবে? কিভাবে চলবো আমরা। আমার স্বামীকে ফিরে পেতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।
মাকসুদুর রহমান নামে নিখোঁজ আরেক জেলের ছেলে মো. নয়ন জানান, সাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার পর সর্বোচ্চ ৬ দিনের মধ্যে সবার ফেরার কথা। তবে এখন ১৬ দিন হয়ে গেছে, এখনো কেউ ফেরেনি। যার জন্য তাদের খুঁজতে শনিবার একটি ট্রলারে করে সাগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন আত্মীয়-স্বজনরা। আমার বাবাসহ বাকি জেলেদের সন্ধান না পাওয়ার বিষয়টি ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। তবে তারা এখন কি অবস্থায় রয়েছেন বা তাদের সঙ্গে কি-ই বা ঘটেছে তা আমাদের কারওই জানা নেই। তাই আমরা চাই প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতায় আমার বাবাসহ অন্যান্য জেলেরা শিগগিরই ফিরে আসবেন।
লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহ আজিজ বলেন, জেলেদের নিখোঁজের সংবাদটি আমরা পেয়েছি। বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা ওইসব জেলেদের সন্ধান চালাচ্ছি। এছাড়া পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।