বগুড়ার শেরপুরে ১১ একর ১৬ শতক আয়তনের একটি বিশাল জলাধার বা ‘হাটদীঘি’র দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিনের এই বিরোধের জেরে এবার আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পরিবারগুলো। উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামে গত মঙ্গলবার রাতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলাকারীদের ভয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকতে হয় একাধিক পরিবারকে। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী ও পুকুরের মালিক সুবাস চন্দ্র মাহাতো বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাত ৮ টার দিকে বাগমারা গ্রামের পরিস্থিতি হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ রয়েছে, পুকুরপাড়ের বাসিন্দা দুলাল হোসেনের (৪৫) নেতৃত্বে প্রায় ২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পুকুরের পাহারাদারদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় পাহারাদার মো. লালন (২৪) ও জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) গুরুতর জখম হন। প্রাণভয়ে তারা দৌড়ে পার্শ্ববর্তী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পাড়ায় আশ্রয় নেন। হামলাকারীরা তাদের পিছু নিয়ে সেখানেও চড়াও হয় এবং মানিক চন্দ্র মাহাতোর গোয়ালঘর ভাঙচুর করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী দুর্গাচরণ মাহাতো বলেন, রক্তাক্ত পাহারাদাররা আমাদের বাড়িতে আশ্রয় নিলে হামলাকারীরা আমাদের বাড়িও ঘিরে ফেলে। প্রায় দুই ঘণ্টা আমরা নারী-শিশুরা ঘরের ভেতর অবরুদ্ধ হয়ে ছিলাম। পুলিশ না এলে কী হতো বলা যায় না। পরে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। বাগমারা গ্রামের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এই ‘হাটদীঘি’ পুকুরটির মালিকানা সুবাস চন্দ্র মাহাতোর। তবে পুকুরটির পাড়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ৪০টি ভূমিহীন পরিবার বসবাস করে আসছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে পুকুরটি দখলের চেষ্টা চলছে। গত তিন মাস ধরে এই বিরোধের জেরে গ্রামের প্রায় ৫০টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত পক্ষের দুলাল হোসেন। তিনি দাবি করেন, ঘটনাটি একপাক্ষিক নয়। বরং সুবাস মাহাতোর লোকজনের হামলায় তাদের পক্ষের মো. তৌহিদ (১৬) ও মো. হানিফ (২৪) গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুকুরের মালিক সুবাস চন্দ্র মাহাতো বলেন, আমার পৈত্রিক সম্পত্তি জবরদখল করতেই সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। নিরীহ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষ সত্যের পক্ষে থাকায় তাদের ওপরও নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন বলেন, পুকুর নিয়ে বিরোধ ও হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
বগুড়ার শেরপুরে ১১ একর ১৬ শতক আয়তনের একটি বিশাল জলাধার বা ‘হাটদীঘি’র দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিনের এই বিরোধের জেরে এবার আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়েছে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পরিবারগুলো। উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামে গত মঙ্গলবার রাতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলাকারীদের ভয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকতে হয় একাধিক পরিবারকে। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী ও পুকুরের মালিক সুবাস চন্দ্র মাহাতো বাদী হয়ে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাত ৮ টার দিকে বাগমারা গ্রামের পরিস্থিতি হঠাৎ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ রয়েছে, পুকুরপাড়ের বাসিন্দা দুলাল হোসেনের (৪৫) নেতৃত্বে প্রায় ২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পুকুরের পাহারাদারদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় পাহারাদার মো. লালন (২৪) ও জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) গুরুতর জখম হন। প্রাণভয়ে তারা দৌড়ে পার্শ্ববর্তী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পাড়ায় আশ্রয় নেন। হামলাকারীরা তাদের পিছু নিয়ে সেখানেও চড়াও হয় এবং মানিক চন্দ্র মাহাতোর গোয়ালঘর ভাঙচুর করে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী দুর্গাচরণ মাহাতো বলেন, রক্তাক্ত পাহারাদাররা আমাদের বাড়িতে আশ্রয় নিলে হামলাকারীরা আমাদের বাড়িও ঘিরে ফেলে। প্রায় দুই ঘণ্টা আমরা নারী-শিশুরা ঘরের ভেতর অবরুদ্ধ হয়ে ছিলাম। পুলিশ না এলে কী হতো বলা যায় না। পরে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। বাগমারা গ্রামের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এই ‘হাটদীঘি’ পুকুরটির মালিকানা সুবাস চন্দ্র মাহাতোর। তবে পুকুরটির পাড়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ৪০টি ভূমিহীন পরিবার বসবাস করে আসছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে পুকুরটি দখলের চেষ্টা চলছে। গত তিন মাস ধরে এই বিরোধের জেরে গ্রামের প্রায় ৫০টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত পক্ষের দুলাল হোসেন। তিনি দাবি করেন, ঘটনাটি একপাক্ষিক নয়। বরং সুবাস মাহাতোর লোকজনের হামলায় তাদের পক্ষের মো. তৌহিদ (১৬) ও মো. হানিফ (২৪) গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পুকুরের মালিক সুবাস চন্দ্র মাহাতো বলেন, আমার পৈত্রিক সম্পত্তি জবরদখল করতেই সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। নিরীহ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষ সত্যের পক্ষে থাকায় তাদের ওপরও নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন বলেন, পুকুর নিয়ে বিরোধ ও হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।