দামুড়হুদা : মাঠে “ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল চরছে -সংবাদ
পরিশ্রম সাফল্যের চাবি কাঠি।পরিশ্রম করে মানুষ সৌভাগ্যের স্বর্ণ শিখরে আরোহন করতে পারে। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার নিভ’র্ত পল্লী গ্রামে প্রতিটি ঘরের ঘরে বিশ্ব বিখ্যাত ব্লাক বেঙ্গল জাতের ছাগল পালনের নীরবে হিড়িক পড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা সড়কের পথ ধরে ডুগডুগি হাটে নেমে ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা অফিসের কোল ঘেঁসে খাঁড়া পশ্চিমে পথ ধরে এগিয়ে গেলে মাঠ ছাড়িয়ে প্রথমেই দেখা মেলবে গাং পাড়ার। এখান থেকে রাস্তার দুপাশে তাকালে দেখা মিলতে শুরু করবে বাড়ীর আঙিনায় অথবা রাস্তার ধারে বাঁধা বা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পৃথিবী বিখ্যাত“ ব্ল্যাকবেঙ্গল জাতের ছাগল । গ্রামের মাঝামাঝি পিচ রাস্তার দেখা মেলে দেলোয়ার নামের এক যুবকের। তাকে ছাগলের পাল দেখাতে বললে খুশি মনে নিয়ে যায় গ্রামের এিমোহনীর কোল ঘেঁসে গাংপাড়ার মাঠে। পিচ টালা পথ ধরে খাড়া পশ্চিমে এগোতেই রাস্তার ডানে পরিত্যাক্ত জমিতে একপাল পৃথিবী বিখ্যাত“ ব্ল্যাকবেঙ্গল জাতের ছাগল পালনকারি সুফিয়া নামের (৪০) বছরের দু” সন্তানের জননী। সুফিয়া সহজ ভাবে বলেন, হতদরিদ্র পরিবারের গৃহ বধু মুই । লেখাপড়া বলতে কোন ক্রমে ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত পড়েছি।খোকাদের বাপ ফারুক একজন দিন মুজুর। সংসার জীবনে এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে অভাব অনাটনের মধ্যে দিন কাটছিল। প্রায় ৫ বছর আগে নিজেদেও অভাব ঘুচাতে এ জাতের একটি ধাড়ী (ছাগী) গ্রামের একজনের কাছ তেকে পুসানি নেয় লালন পালন করে। সেই ছাগল থেকে ৫টি খাসি আর ৪টি দাড়ী ছাগল নিজের হয়েছে । ছাগল ঘুরোর দাম ৩০ হাজার টাকা।ছাগল নিয়ে এখন আমি স্বপ্ন দেখি স্বাবলম্বী হওয়ার।প্রতিদিন বেলা ১২ট /১টা পর্যন্ত ছাগল চরিয়ে বাড়ী ফিরি। প্রতিদিন গ্রামের কেই না কেই মাঠে ছাগল চারতে মাঠে নামে । গ্রামের মাঠ জুড়ে ছাগল চরানোর এ দৃশ্য প্রতিদিন চোখে পড়ার মত। গোটা গ্রামের প্রায় প্রত্যেক বাড়ীতে এ জাতের ছাগল পালনের হিড়িক পড়ে গেছে ॥ আমার মত অনেক নারী পুরুষ গৃহ বধূরা নিজ নিজ বাড়ীতে রেখেই ছাগল লালন পালন শুরুকরেছে । বছরে দু’বার বাচ্চা দেয়।রোগ বালাই না হলে খুব সহজে বেড়ে উঠে। গ্রামের ঘরে ঘরে পৃথিবী বিখ্যাত“ ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল লালন পালন নীরব বিপ্লব ঘটিয়ে গ্রাম জুড়ে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে । গ্রামের অনেকে এখন ছাগল লালন পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছে।
উপজেলার দেউলি গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে মশিউর রহমান বলেন., তিনি ২০১৬ সাল থেকে ছাগল পোষা শুরু করেন।প্রথমে তিনি সখের বসে একটি বকরি ছাগল কিনেপালন শুরু করেন। ওই বছরই ওই ছাগল থেকে দুটি বাচ্চা হয়। এর দুই বছর পরপ্রথমটির চারটি ও পরের বাচ্চা দুটির চারটি বাচ্চা হয়। একটি থেকে দুই বছরে ছাগল দাঁড়ায় ১১টি।তখন থেকে তাঁর ছাগল পালনে আরো আগ্রহ বাড়ে। বর্তমানে তার খামারে ৩৮ টি ছাগল রয়েছে। প্রতি দেড় থেকে দুই বছর পর পর তিনি এক লাখ ৫০ হাজারটাকা থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকার ছাগল বিক্রি করে থাকেন। এরই মধ্যে ছাগলের খামারের আয় থেকে সাত লাখ টাকা ব্যয়ে পাকা বাড়িকরেছেন।একমাত্র মেয়েকে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। তাঁর মেয়ে দামুড়হুদাআব্দুল ওদুদ শাহা ডিগ্রি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়াশুনা করছেন। তিনি নিজেই ছাগলগুলোকে সকাল-বিকাল মাঠে নিয়ে খাওয়ান। ছাগলের তেমন রোগবালাই হয় না। শীত মৌসুমে একটুঠান্ডাজনিত রোগ হয়ে থাকে।তবে একটু সাবধানতা অবলম্বন করলেই রোগ এড়ানো যায়।দীর্ঘদিন ধরে ছাগল পালন করলেও প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে কোনো ধরনের সহায়তা পান না বলে দাবি করেন মশিউর।
একাধিক নারী পুরুষ গৃহস্তদের অভিযোগ ছাগলের রোগ বালাই হলে নিজেদের উদ্যেগে ছাগল গরুর পল্লী চিকিৎক ডেকে চিকিৎসার ব্যবস্থ্ করি। রোগ বালাই থেকে কেউ বাঁচে আবার কেউ মরে। উপজেলা প্রানী সম্পদ বিভাগের উদ্যেগে কেউ কখনো ছাগল পালনের পরামর্শ সহ রোগ বালাই প্রতিরোধের করনীয় বিষয়ে সজাগ করতে কখনো গ্রামে দেখা মেলে না। তাদের দাবী চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের নির্দ্দেশে যদি এ বিষয়ে প্রতিটি গ্রামে সপ্তাহে বা মাসে অন্তত একদিন উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ সরে জমিনে এসে রোগ বলাই প্রতিরোধে গৃহস্তদের পরামর্শ ও সজাগ করে তোলারা সহযোগিতা করেন তা হলে অনেক ছাগল অকাল মৃতু ও রোগ বালাইএর কবল থেকে রক্ষা পাবে। পৃথিবী বিখ্যাত“ ব্ল্যাকবেঙ্গল জাতের ছাগল গুলো সঠিক মাএায় ও গ্রোথ নিয়ে বেড়ে উঠবে এমনটিই প্রত্যাশা তাদের।
দামুড়হুদা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিলিমা আক্তার হ্যাপি বলেন, দামুড়হুদা উপজেলায় প্রায় দুই লাখ এই জাতের ছাগল রয়েছে। ব্ল্যাকবেঙ্গল ছাগলের মাংস খুবই সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত। আমাদের এই এলাকার আবহাওয়া এই জাতের ছাগল পালনের জন্য খুবই উপযোগী। এদেররোগবালাই খুবই কম।শীতের সময় একটু রোগবালাই দেখা দিতে পারে।তবে ওই সময় একটু যত্ন নিলে মাচা তৈরি করে ওপরে রাখলে ও ঘর পরিস্কার পরিছন্ন রাখলে রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হয় না। উপজেলায় অধিকাংশ কৃষকের বাড়িতে কম-বেশি এই জাতের ছাগল রয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
দামুড়হুদা : মাঠে “ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল চরছে -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
পরিশ্রম সাফল্যের চাবি কাঠি।পরিশ্রম করে মানুষ সৌভাগ্যের স্বর্ণ শিখরে আরোহন করতে পারে। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার নিভ’র্ত পল্লী গ্রামে প্রতিটি ঘরের ঘরে বিশ্ব বিখ্যাত ব্লাক বেঙ্গল জাতের ছাগল পালনের নীরবে হিড়িক পড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা সড়কের পথ ধরে ডুগডুগি হাটে নেমে ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা অফিসের কোল ঘেঁসে খাঁড়া পশ্চিমে পথ ধরে এগিয়ে গেলে মাঠ ছাড়িয়ে প্রথমেই দেখা মেলবে গাং পাড়ার। এখান থেকে রাস্তার দুপাশে তাকালে দেখা মিলতে শুরু করবে বাড়ীর আঙিনায় অথবা রাস্তার ধারে বাঁধা বা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পৃথিবী বিখ্যাত“ ব্ল্যাকবেঙ্গল জাতের ছাগল । গ্রামের মাঝামাঝি পিচ রাস্তার দেখা মেলে দেলোয়ার নামের এক যুবকের। তাকে ছাগলের পাল দেখাতে বললে খুশি মনে নিয়ে যায় গ্রামের এিমোহনীর কোল ঘেঁসে গাংপাড়ার মাঠে। পিচ টালা পথ ধরে খাড়া পশ্চিমে এগোতেই রাস্তার ডানে পরিত্যাক্ত জমিতে একপাল পৃথিবী বিখ্যাত“ ব্ল্যাকবেঙ্গল জাতের ছাগল পালনকারি সুফিয়া নামের (৪০) বছরের দু” সন্তানের জননী। সুফিয়া সহজ ভাবে বলেন, হতদরিদ্র পরিবারের গৃহ বধু মুই । লেখাপড়া বলতে কোন ক্রমে ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত পড়েছি।খোকাদের বাপ ফারুক একজন দিন মুজুর। সংসার জীবনে এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে অভাব অনাটনের মধ্যে দিন কাটছিল। প্রায় ৫ বছর আগে নিজেদেও অভাব ঘুচাতে এ জাতের একটি ধাড়ী (ছাগী) গ্রামের একজনের কাছ তেকে পুসানি নেয় লালন পালন করে। সেই ছাগল থেকে ৫টি খাসি আর ৪টি দাড়ী ছাগল নিজের হয়েছে । ছাগল ঘুরোর দাম ৩০ হাজার টাকা।ছাগল নিয়ে এখন আমি স্বপ্ন দেখি স্বাবলম্বী হওয়ার।প্রতিদিন বেলা ১২ট /১টা পর্যন্ত ছাগল চরিয়ে বাড়ী ফিরি। প্রতিদিন গ্রামের কেই না কেই মাঠে ছাগল চারতে মাঠে নামে । গ্রামের মাঠ জুড়ে ছাগল চরানোর এ দৃশ্য প্রতিদিন চোখে পড়ার মত। গোটা গ্রামের প্রায় প্রত্যেক বাড়ীতে এ জাতের ছাগল পালনের হিড়িক পড়ে গেছে ॥ আমার মত অনেক নারী পুরুষ গৃহ বধূরা নিজ নিজ বাড়ীতে রেখেই ছাগল লালন পালন শুরুকরেছে । বছরে দু’বার বাচ্চা দেয়।রোগ বালাই না হলে খুব সহজে বেড়ে উঠে। গ্রামের ঘরে ঘরে পৃথিবী বিখ্যাত“ ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল লালন পালন নীরব বিপ্লব ঘটিয়ে গ্রাম জুড়ে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে । গ্রামের অনেকে এখন ছাগল লালন পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছে।
উপজেলার দেউলি গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে মশিউর রহমান বলেন., তিনি ২০১৬ সাল থেকে ছাগল পোষা শুরু করেন।প্রথমে তিনি সখের বসে একটি বকরি ছাগল কিনেপালন শুরু করেন। ওই বছরই ওই ছাগল থেকে দুটি বাচ্চা হয়। এর দুই বছর পরপ্রথমটির চারটি ও পরের বাচ্চা দুটির চারটি বাচ্চা হয়। একটি থেকে দুই বছরে ছাগল দাঁড়ায় ১১টি।তখন থেকে তাঁর ছাগল পালনে আরো আগ্রহ বাড়ে। বর্তমানে তার খামারে ৩৮ টি ছাগল রয়েছে। প্রতি দেড় থেকে দুই বছর পর পর তিনি এক লাখ ৫০ হাজারটাকা থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকার ছাগল বিক্রি করে থাকেন। এরই মধ্যে ছাগলের খামারের আয় থেকে সাত লাখ টাকা ব্যয়ে পাকা বাড়িকরেছেন।একমাত্র মেয়েকে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন। তাঁর মেয়ে দামুড়হুদাআব্দুল ওদুদ শাহা ডিগ্রি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়াশুনা করছেন। তিনি নিজেই ছাগলগুলোকে সকাল-বিকাল মাঠে নিয়ে খাওয়ান। ছাগলের তেমন রোগবালাই হয় না। শীত মৌসুমে একটুঠান্ডাজনিত রোগ হয়ে থাকে।তবে একটু সাবধানতা অবলম্বন করলেই রোগ এড়ানো যায়।দীর্ঘদিন ধরে ছাগল পালন করলেও প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে কোনো ধরনের সহায়তা পান না বলে দাবি করেন মশিউর।
একাধিক নারী পুরুষ গৃহস্তদের অভিযোগ ছাগলের রোগ বালাই হলে নিজেদের উদ্যেগে ছাগল গরুর পল্লী চিকিৎক ডেকে চিকিৎসার ব্যবস্থ্ করি। রোগ বালাই থেকে কেউ বাঁচে আবার কেউ মরে। উপজেলা প্রানী সম্পদ বিভাগের উদ্যেগে কেউ কখনো ছাগল পালনের পরামর্শ সহ রোগ বালাই প্রতিরোধের করনীয় বিষয়ে সজাগ করতে কখনো গ্রামে দেখা মেলে না। তাদের দাবী চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের নির্দ্দেশে যদি এ বিষয়ে প্রতিটি গ্রামে সপ্তাহে বা মাসে অন্তত একদিন উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ সরে জমিনে এসে রোগ বলাই প্রতিরোধে গৃহস্তদের পরামর্শ ও সজাগ করে তোলারা সহযোগিতা করেন তা হলে অনেক ছাগল অকাল মৃতু ও রোগ বালাইএর কবল থেকে রক্ষা পাবে। পৃথিবী বিখ্যাত“ ব্ল্যাকবেঙ্গল জাতের ছাগল গুলো সঠিক মাএায় ও গ্রোথ নিয়ে বেড়ে উঠবে এমনটিই প্রত্যাশা তাদের।
দামুড়হুদা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিলিমা আক্তার হ্যাপি বলেন, দামুড়হুদা উপজেলায় প্রায় দুই লাখ এই জাতের ছাগল রয়েছে। ব্ল্যাকবেঙ্গল ছাগলের মাংস খুবই সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত। আমাদের এই এলাকার আবহাওয়া এই জাতের ছাগল পালনের জন্য খুবই উপযোগী। এদেররোগবালাই খুবই কম।শীতের সময় একটু রোগবালাই দেখা দিতে পারে।তবে ওই সময় একটু যত্ন নিলে মাচা তৈরি করে ওপরে রাখলে ও ঘর পরিস্কার পরিছন্ন রাখলে রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হয় না। উপজেলায় অধিকাংশ কৃষকের বাড়িতে কম-বেশি এই জাতের ছাগল রয়েছে এবং বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।