সমগ্র খামার জুড়ে নানা বর্ণের হাঁসের পদচারণায় মুখর। নিজেদের স্বভাব জাত ডাকাডাকি আর মনের আনন্দে ছুটাছুটি পুরো পরিবেশকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। কখনো ডাঙায় আবার কখনও পানিতে সরব বিচরণ দেখতে বেশ ভালো লাগে। সকালে পুরো খামারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সাদা ও বাদামী রঙের ডিম সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন খামারি মশিউর ও তার লোকজন। ভোরে খামারের মধ্যে হাঁসের কোলাহল আর ডাকাডাকি পরিবেশকে আকর্ষণীয় করে তোলে।
পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার দক্ষিণ মুরাদিয়ায় হাঁস পালনে সাফল্যের সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখছেন মশিউর রহমান মাঝি ও তার পরিবারের সদস্যরা। মাত্র এক বছর পূর্বে নিজের বাড়ির আঙিনায় পতিত অনাবাদি জমি ও মজা পুকুর বেস্টিত ৭৮ শতাংশ জমির উপর গড়ে তোলেন হাঁসের খামার। গত নভেম্বর মাসের শুরুতে ২মাস বয়সের প্রতিটি ২শ টাকা হিসেবে মোট ১৩শ খাকি ক্যাম্বল ও চিংডিং জাতের হাঁসের বাচ্চা ক্রয় করে লালন পালন শুরু করেন। ছয় মাসের শুরুতে প্রতিদিন গড়ে ৭ শতাধিক ডিম সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে আরো পাঁচ হাজার বাচ্চা ক্রয় করে লালনপালন শুরু করে। সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিপিচ ছয়শত টাকা দরে তিন হাজার হাঁস বিক্রি করেছেন। অবশিষ্ট হাস থেকে বর্তমানে গড়ে দেড় হাজার ডিম সংগ্রহ করেন।খামারের মালিক মশিউর রহমান জানান, আগে ঢাকায় বিভিন্ন কাজকর্ম করে দিন যাপন করতাম। কিন্তু নিয়মিত কাজ না থাকায় বাড়ি এসে নিজের পৌত্রিক পরিত্যাক্ত জমিতে হাঁস খামার করি। পাঁচ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে সর্ব প্রথম পুকুর খনন, ফার্মের ঘর নির্মাণ করে ১৩শ হাঁসের বাচ্চা ক্রয় করে লালন পালন শুরু করি।
গত এক বছরে আমার হাঁসের ফার্ম থেকে ডিম ও হাঁস বিক্রি করে খরচা বাদে দশ লক্ষাধিক টাকা আয় হয়েছে।মশিউরের ছোট ভাই তুহিন বলেন, বর্তমানে গড়ে দেড় হাজার ডিম পাই। হাঁসের খাবার বাবদ প্রতি দিন সাত হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিটি ডিম ১৫ টাকায় পাইকারি দিচ্ছি। পটুয়াখালী ও দুমকি থেকে পাইকাররা এসে ডিম নেয়। স্থানীয় লোকজনও বাড়ি থেকে ডিম কিনে নেয়। খরচ বাদে প্রতিদিন গড়ে ১৫/১৬ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। এছাড়াও গড়ে ৭’শ টাকা হিসেবে খামারে ১২লক্ষাধিক টাকার হাঁস রয়েছে এবং প্রতিদিনের ডিম বিক্রির টাকা বাড়তি লাভ।মশিউরের বাবা মোশারেফ মাঝি বলেন,শুটকি, ভুট্টা, চালের কুঁড়া, ঝিনুক, শামুকের গুঁড়া, ডালের গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে মেশিনে ভাঙ্গিয়ে হাঁসের খাবার তৈরি করে খাওয়ানো হচ্ছে।
রোগ প্রতিরোধে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ভেকসিন প্রয়োগ করছি। এ ব্যাপারে ছেলে মশিউর রহমান জানান, খামারে ডিমের পাশাপাশি মাংসের জন্য অন্য জাতের হাঁস পালনের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও আমাদের হাঁসের খামারের পাশাপাশি বর্তমানে ৫০টি ব্লাক বেঙ্গল জাতের ছাগল ও বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক কবুতরও পালন করি। তা থেকেও মাসে ৩৫/৪০ জোড়া বাচ্চা বিক্রি করা হচ্ছে। পাশ্ববর্তী বায়তুল আমান দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা রুহুল আমিন বলেন, মশিউরের খামার থেকে আমিসহ অনেকেই প্রায়ই পাইকারি মূল্যে ডিম ও হাঁস ক্রয় করি। এছাড়াও হাঁসের খামারের দৃশ্য দেখে খুব ভালো লাগে। প্রতিদিন ছোট ছোট শিক্ষার্থী ও পথচারীরা ভিড় জমায়। দুমকি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.আশিক হাজরা জানান, বর্তমানে দুমকি উপজেলায় সবচেয়ে বড় হাঁসের খামার মশিউর রহমানের। আমরা প্রায়?ই তার খামার পরিদর্শন করি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
সমগ্র খামার জুড়ে নানা বর্ণের হাঁসের পদচারণায় মুখর। নিজেদের স্বভাব জাত ডাকাডাকি আর মনের আনন্দে ছুটাছুটি পুরো পরিবেশকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। কখনো ডাঙায় আবার কখনও পানিতে সরব বিচরণ দেখতে বেশ ভালো লাগে। সকালে পুরো খামারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সাদা ও বাদামী রঙের ডিম সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন খামারি মশিউর ও তার লোকজন। ভোরে খামারের মধ্যে হাঁসের কোলাহল আর ডাকাডাকি পরিবেশকে আকর্ষণীয় করে তোলে।
পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার দক্ষিণ মুরাদিয়ায় হাঁস পালনে সাফল্যের সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখছেন মশিউর রহমান মাঝি ও তার পরিবারের সদস্যরা। মাত্র এক বছর পূর্বে নিজের বাড়ির আঙিনায় পতিত অনাবাদি জমি ও মজা পুকুর বেস্টিত ৭৮ শতাংশ জমির উপর গড়ে তোলেন হাঁসের খামার। গত নভেম্বর মাসের শুরুতে ২মাস বয়সের প্রতিটি ২শ টাকা হিসেবে মোট ১৩শ খাকি ক্যাম্বল ও চিংডিং জাতের হাঁসের বাচ্চা ক্রয় করে লালন পালন শুরু করেন। ছয় মাসের শুরুতে প্রতিদিন গড়ে ৭ শতাধিক ডিম সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে আরো পাঁচ হাজার বাচ্চা ক্রয় করে লালনপালন শুরু করে। সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিপিচ ছয়শত টাকা দরে তিন হাজার হাঁস বিক্রি করেছেন। অবশিষ্ট হাস থেকে বর্তমানে গড়ে দেড় হাজার ডিম সংগ্রহ করেন।খামারের মালিক মশিউর রহমান জানান, আগে ঢাকায় বিভিন্ন কাজকর্ম করে দিন যাপন করতাম। কিন্তু নিয়মিত কাজ না থাকায় বাড়ি এসে নিজের পৌত্রিক পরিত্যাক্ত জমিতে হাঁস খামার করি। পাঁচ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে সর্ব প্রথম পুকুর খনন, ফার্মের ঘর নির্মাণ করে ১৩শ হাঁসের বাচ্চা ক্রয় করে লালন পালন শুরু করি।
গত এক বছরে আমার হাঁসের ফার্ম থেকে ডিম ও হাঁস বিক্রি করে খরচা বাদে দশ লক্ষাধিক টাকা আয় হয়েছে।মশিউরের ছোট ভাই তুহিন বলেন, বর্তমানে গড়ে দেড় হাজার ডিম পাই। হাঁসের খাবার বাবদ প্রতি দিন সাত হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিটি ডিম ১৫ টাকায় পাইকারি দিচ্ছি। পটুয়াখালী ও দুমকি থেকে পাইকাররা এসে ডিম নেয়। স্থানীয় লোকজনও বাড়ি থেকে ডিম কিনে নেয়। খরচ বাদে প্রতিদিন গড়ে ১৫/১৬ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। এছাড়াও গড়ে ৭’শ টাকা হিসেবে খামারে ১২লক্ষাধিক টাকার হাঁস রয়েছে এবং প্রতিদিনের ডিম বিক্রির টাকা বাড়তি লাভ।মশিউরের বাবা মোশারেফ মাঝি বলেন,শুটকি, ভুট্টা, চালের কুঁড়া, ঝিনুক, শামুকের গুঁড়া, ডালের গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে মেশিনে ভাঙ্গিয়ে হাঁসের খাবার তৈরি করে খাওয়ানো হচ্ছে।
রোগ প্রতিরোধে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ভেকসিন প্রয়োগ করছি। এ ব্যাপারে ছেলে মশিউর রহমান জানান, খামারে ডিমের পাশাপাশি মাংসের জন্য অন্য জাতের হাঁস পালনের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও আমাদের হাঁসের খামারের পাশাপাশি বর্তমানে ৫০টি ব্লাক বেঙ্গল জাতের ছাগল ও বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক কবুতরও পালন করি। তা থেকেও মাসে ৩৫/৪০ জোড়া বাচ্চা বিক্রি করা হচ্ছে। পাশ্ববর্তী বায়তুল আমান দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা রুহুল আমিন বলেন, মশিউরের খামার থেকে আমিসহ অনেকেই প্রায়ই পাইকারি মূল্যে ডিম ও হাঁস ক্রয় করি। এছাড়াও হাঁসের খামারের দৃশ্য দেখে খুব ভালো লাগে। প্রতিদিন ছোট ছোট শিক্ষার্থী ও পথচারীরা ভিড় জমায়। দুমকি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.আশিক হাজরা জানান, বর্তমানে দুমকি উপজেলায় সবচেয়ে বড় হাঁসের খামার মশিউর রহমানের। আমরা প্রায়?ই তার খামার পরিদর্শন করি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি।