দশমিনা (পটুয়াখালী) : পানির প্রবাহ না থাকায় অর্ধশতাধিক খালে কচুরিপানাসহ নানা প্রজাতির আগাছা জন্মে গেছে -সংবাদ
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রায় অর্ধ শতাধিক খালে পানির প্রবাহ না থাকায় যৌবন হারিয়ে শীর্ণ খালে পরিনত হয়ে যাচ্ছে। খালে পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় কচুরিপানাসহ বিভিন্ন প্রজাতির আগাছা জন্মে গেছে। নাব্যতা ফিরাতে খাল খনন ও কচুরিপানা পরিস্কার করা হয় না। একই সঙ্গে নদী ও খালের সংযোগস্থল এবং উৎস মুখ ভরাট হয়ে যাবার কারনে নৌপথে চরম সংকটাপন্ন অবস্থা দেখা দিয়েছে। খালে পানি না থাকার কারনে কোন নৌযানই চলাচল করতে পারে না। ব্যবসা বানিজ্যের জন্য পন্য বহনকারী নৌযানগুলোকে জোয়ারের পানির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। খালগুলোতে নাব্যতা ফেরাতে খনন কাজ করা প্রয়োজন। বিগত বছর শুষ্ক মৌসুমে পানি উন্নয়র বোর্ড সেচ কাজের সুবিধার্থে খালের প্রায় ৪২ কিলোমিটার খননের কাজ করে ছিল।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে প্রবাহমান খালগুলোর অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে পরিবেশের ইকোসিষ্টেমের উপর চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
পরিবেশের এই বিরূপ প্রভাবে মাছের উৎপাদন কমে গেছে, সেচ কার্য ব্যাহত হওয়াসহ জীব বৈচিত্র বিলীন হচ্ছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া খালগুলো এক সময়ে নৌ যোগাযোগের ও সেচ কাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখলেও এখন আর কোন মূল্য নেই। ফসলি জমিতে পলি মাটি বয়ে আনার জন্য খালের অবদান থাকলেও বর্তমানে সেই অবদান চীরদিনের জন্য স্থবির হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খালে প্রয়োজন ছাড়াই যত্রতত্র বাঁধ তৈরি এবং খাল দখল করে দোকানপাট নির্মান করায় পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অধিকাংশ খাল তাদের যৌবন হারিয়ে শীর্ণ খালে পরিনত হয়েছে। অপরদিকে অনেক খাল ভরাট হয়ে যাবার কারনে নৌযানের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এক সময়ে নদী পথে দশমিনা উপজেলার সাথে জেলা সদর পটুয়াখালী, বাউফল ও গলাচিপা উপজেলার সাথে নৌপথই ছিল যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। অত্র নৌপথে নৌকা, ট্রলারসহ ছোট-বড় নৌযান চলাচল করায় ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ছিল। নদী পথে পন্য সামগ্রী পরিবহনে খরচ কম থাকায় এই পথেই ব্যবসায়ীরা পন্য আনা-নেয়া করতো। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে খালগুলো ভরাট হয়ে নাব্যতা হারিয়ে ফেলায় এখন আর কেউ নৌপথে মালামাল পরিবহন করতে চায় না।
সরেজমিনে উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত বালিকা বিদ্যালয় সংলগ্ন খালে দেখা গেছে,খালের উপর নির্মিত কালভার্টটি কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। খালটিতে কোন পানি প্রবাহ নেই। এই খালটি বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি কবুলিয়ত নিয়ে দখল করে রেখেছে। খালের দুই পাশ কেটে মাটি ভরাট করে চাষযোগ্য জমি তৈরি করা হয়েছে। এই খাল দিয়ে প্রায় দুই হাজার একর ফসলি জমির পানি উঠানামা করতো। বর্তমানে এই অঞ্চলে তেমন কোন ফসল উৎপাদন হয় না। উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চর হোসনাবাদ এলাকার খালটি বন্দোবস্ত দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এই খাল দিয়ে প্রায় ৫ হাজার একর জমির পানি উঠানামা করে। এছাড়া সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের নিবারন কবিরাজের নামের বিশাল খালটি ১০/১৫ হাত পানি থাকা অবস্থায় বন্দোবস্ত দিয়েছে। বন্দোবস্তকারী ব্যক্তিরা খালটি ভরাট করে চাষাবাদ করছে। সদরের দক্ষিণ আরজবেগী গ্রামের আজগুরিয়া খালটি স্থানীয় প্রভাবশালীরা বন্দোবস্ত নিয়েছে। এই খালটিতে শুস্ক মৌসুমে পানি থাকলেও এটি বাঁধ দিয়ে মাছের চাষাবাদ করা হচ্ছে। ফলে এই খাল দিয়ে পানি উঠানামা করতে পারে না। উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের খলিশাখালীর কেয়ার খাল, ইঞ্জিনারায়ন খাল,শিংবাড়িয়া খাল, রণগোপালদী ইউনিয়নের কাটা খাল, আউলিয়াপুর গ্রামের নাপ্তার খাল,তালতলার হোতা খাল স্থানীয় প্রভাবশালীরা বন্দোবস্ত নিয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
দশমিনা (পটুয়াখালী) : পানির প্রবাহ না থাকায় অর্ধশতাধিক খালে কচুরিপানাসহ নানা প্রজাতির আগাছা জন্মে গেছে -সংবাদ
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রায় অর্ধ শতাধিক খালে পানির প্রবাহ না থাকায় যৌবন হারিয়ে শীর্ণ খালে পরিনত হয়ে যাচ্ছে। খালে পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় কচুরিপানাসহ বিভিন্ন প্রজাতির আগাছা জন্মে গেছে। নাব্যতা ফিরাতে খাল খনন ও কচুরিপানা পরিস্কার করা হয় না। একই সঙ্গে নদী ও খালের সংযোগস্থল এবং উৎস মুখ ভরাট হয়ে যাবার কারনে নৌপথে চরম সংকটাপন্ন অবস্থা দেখা দিয়েছে। খালে পানি না থাকার কারনে কোন নৌযানই চলাচল করতে পারে না। ব্যবসা বানিজ্যের জন্য পন্য বহনকারী নৌযানগুলোকে জোয়ারের পানির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। খালগুলোতে নাব্যতা ফেরাতে খনন কাজ করা প্রয়োজন। বিগত বছর শুষ্ক মৌসুমে পানি উন্নয়র বোর্ড সেচ কাজের সুবিধার্থে খালের প্রায় ৪২ কিলোমিটার খননের কাজ করে ছিল।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে প্রবাহমান খালগুলোর অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে পরিবেশের ইকোসিষ্টেমের উপর চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
পরিবেশের এই বিরূপ প্রভাবে মাছের উৎপাদন কমে গেছে, সেচ কার্য ব্যাহত হওয়াসহ জীব বৈচিত্র বিলীন হচ্ছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া খালগুলো এক সময়ে নৌ যোগাযোগের ও সেচ কাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখলেও এখন আর কোন মূল্য নেই। ফসলি জমিতে পলি মাটি বয়ে আনার জন্য খালের অবদান থাকলেও বর্তমানে সেই অবদান চীরদিনের জন্য স্থবির হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে খালে প্রয়োজন ছাড়াই যত্রতত্র বাঁধ তৈরি এবং খাল দখল করে দোকানপাট নির্মান করায় পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অধিকাংশ খাল তাদের যৌবন হারিয়ে শীর্ণ খালে পরিনত হয়েছে। অপরদিকে অনেক খাল ভরাট হয়ে যাবার কারনে নৌযানের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এক সময়ে নদী পথে দশমিনা উপজেলার সাথে জেলা সদর পটুয়াখালী, বাউফল ও গলাচিপা উপজেলার সাথে নৌপথই ছিল যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। অত্র নৌপথে নৌকা, ট্রলারসহ ছোট-বড় নৌযান চলাচল করায় ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ছিল। নদী পথে পন্য সামগ্রী পরিবহনে খরচ কম থাকায় এই পথেই ব্যবসায়ীরা পন্য আনা-নেয়া করতো। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে খালগুলো ভরাট হয়ে নাব্যতা হারিয়ে ফেলায় এখন আর কেউ নৌপথে মালামাল পরিবহন করতে চায় না।
সরেজমিনে উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত বালিকা বিদ্যালয় সংলগ্ন খালে দেখা গেছে,খালের উপর নির্মিত কালভার্টটি কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। খালটিতে কোন পানি প্রবাহ নেই। এই খালটি বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি কবুলিয়ত নিয়ে দখল করে রেখেছে। খালের দুই পাশ কেটে মাটি ভরাট করে চাষযোগ্য জমি তৈরি করা হয়েছে। এই খাল দিয়ে প্রায় দুই হাজার একর ফসলি জমির পানি উঠানামা করতো। বর্তমানে এই অঞ্চলে তেমন কোন ফসল উৎপাদন হয় না। উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চর হোসনাবাদ এলাকার খালটি বন্দোবস্ত দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এই খাল দিয়ে প্রায় ৫ হাজার একর জমির পানি উঠানামা করে। এছাড়া সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের নিবারন কবিরাজের নামের বিশাল খালটি ১০/১৫ হাত পানি থাকা অবস্থায় বন্দোবস্ত দিয়েছে। বন্দোবস্তকারী ব্যক্তিরা খালটি ভরাট করে চাষাবাদ করছে। সদরের দক্ষিণ আরজবেগী গ্রামের আজগুরিয়া খালটি স্থানীয় প্রভাবশালীরা বন্দোবস্ত নিয়েছে। এই খালটিতে শুস্ক মৌসুমে পানি থাকলেও এটি বাঁধ দিয়ে মাছের চাষাবাদ করা হচ্ছে। ফলে এই খাল দিয়ে পানি উঠানামা করতে পারে না। উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের খলিশাখালীর কেয়ার খাল, ইঞ্জিনারায়ন খাল,শিংবাড়িয়া খাল, রণগোপালদী ইউনিয়নের কাটা খাল, আউলিয়াপুর গ্রামের নাপ্তার খাল,তালতলার হোতা খাল স্থানীয় প্রভাবশালীরা বন্দোবস্ত নিয়েছে।