ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
চট্টগ্রামের পটিয়ায় ট্রাফিক পুলিশের টিআই ফারুক ও সার্জেন্ট রফিকের নেতৃত্বে বিভিন্ন সড়কে নিজস্ব ক্যাশিয়ার নিয়োগ দিয়ে প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করা হচ্ছে বলে পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও সাধারণ শ্রমিকদের অভিযোগ। ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে পরিবহণ শ্রমিকদের ওপর সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মারধর, শারীরিক নির্যাতন এবং মামলা দিয়ে হয়রানির ঘটনাও ঘটছে বলে একাধিক শ্রমিক ও শ্রমিক নেতার অভিযোগ।
জানা গেছে, পটিয়া অটো-টেম্পো, ট্যাক্সি, সিএনজি, রাভী, টাটা এইচ ও মাহিন্দ্রা পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ সমবায় সমিতি সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-পটিয়া মহাসড়কে ছোট-বড় প্রায় ৫ হাজার পরিবহন রয়েছে। এর মধ্যে সিএনজি, টেম্পো, লেগুনা, মাহিন্দ্রাসহ প্রায় সাড়ে ৪ হাজার অবৈধ পরিবহণ রয়েছে। এসব গাড়ি টিআই ফারুক ও সার্জেন্ট মোহাম্মদ রফিককে মাসোহারা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলাচল করছে। মাসোহারা আদায়ের জন্য বিভিন্ন পয়েন্টে বেতনভুক্ত ক্যাশিয়ার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর অল্প কিছুদিন চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে ট্রাফিক পুলিশের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে যায়। পটিয়া অটো-টেম্পো, ট্যাক্সি, সিএনজি, রাভী, টাটা এইচ ও মাহিন্দ্রা পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ সমবায় সমিতির নবনির্বাচিত কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাফিক পুলিশের অন্যায় নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধ না হলে সংগঠনের পক্ষ থেকে কর্মসূচি দেওয়া হবে, যাতে কোনো পরিবহন শ্রমিক অন্যায়ভাবে হয়রানি বা নির্যাতনের শিকার না হয়।
গত শুক্রবার থানার মোড়ের ট্রাফিক পুলিশের ক্যাশিয়ার জমিরের সঙ্গে এক চায়ের দোকানে কথা হলে তিনি জানান, যে টাকাগুলো আদায় করা হয়, সেগুলো সরাসরি টিআই ফারুক স্যারকে বুঝিয়ে দিতে হয়। তিনি আমাকে একটি অংশ দেন। মাসে কম-বেশি হলে আবার কৈফিয়ত দিতে হয়। টিআই স্যার সাংবাদিকদের জন্যও টাকা দেন এটা সবাই জানে।
পটিয়া ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি ও মামলা দিয়ে হয়রানির বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পরিবহন শ্রমিক দল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মফিজ বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিবহন শ্রমিক হয়রানির শিকার হচ্ছে পটিয়ার ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের কাছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা জেলা পুলিশ সুপারকে একাধিকবার জানিয়েছি। আশা করি নতুন পুলিশ সুপার চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।
পরিবহন শ্রমিক নেতা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে পরিবহণ শ্রমিক নির্যাতন ও হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। ৫ আগস্টের পর কিছুদিন ভালো থাকলেও পুলিশ আবার হয়রানি ও নির্যাতন শুরু করেছে। পটিয়া ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ অমানবিক নির্যাতন চালাচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে পটিয়া ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট পমাহাম্মদ রফিক বলেন, আমি অফিসের একজন জুনিয়র স্টাফ। ক্যাশিয়ার নিয়োগ দিয়ে টাকা আদায়ের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, সাংবাদিক-পুলিশ ভাই ভাই। আপনি অফিসে এলে চায়ের দাওয়াত রইল। তিনি দাবি করেন, তিনি বর্তমানে ছুটিতে আছেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) শেখ মোহাম্মদ সেলিম জানান, অভিযোগ যদি সঠিক হয়ে থাকে, তবে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
চট্টগ্রামের পটিয়ায় ট্রাফিক পুলিশের টিআই ফারুক ও সার্জেন্ট রফিকের নেতৃত্বে বিভিন্ন সড়কে নিজস্ব ক্যাশিয়ার নিয়োগ দিয়ে প্রতি মাসে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করা হচ্ছে বলে পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও সাধারণ শ্রমিকদের অভিযোগ। ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে পরিবহণ শ্রমিকদের ওপর সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মারধর, শারীরিক নির্যাতন এবং মামলা দিয়ে হয়রানির ঘটনাও ঘটছে বলে একাধিক শ্রমিক ও শ্রমিক নেতার অভিযোগ।
জানা গেছে, পটিয়া অটো-টেম্পো, ট্যাক্সি, সিএনজি, রাভী, টাটা এইচ ও মাহিন্দ্রা পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ সমবায় সমিতি সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-পটিয়া মহাসড়কে ছোট-বড় প্রায় ৫ হাজার পরিবহন রয়েছে। এর মধ্যে সিএনজি, টেম্পো, লেগুনা, মাহিন্দ্রাসহ প্রায় সাড়ে ৪ হাজার অবৈধ পরিবহণ রয়েছে। এসব গাড়ি টিআই ফারুক ও সার্জেন্ট মোহাম্মদ রফিককে মাসোহারা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলাচল করছে। মাসোহারা আদায়ের জন্য বিভিন্ন পয়েন্টে বেতনভুক্ত ক্যাশিয়ার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর অল্প কিছুদিন চাঁদাবাজি বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে ট্রাফিক পুলিশের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে যায়। পটিয়া অটো-টেম্পো, ট্যাক্সি, সিএনজি, রাভী, টাটা এইচ ও মাহিন্দ্রা পরিবহন শ্রমিক কল্যাণ সমবায় সমিতির নবনির্বাচিত কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাফিক পুলিশের অন্যায় নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধ না হলে সংগঠনের পক্ষ থেকে কর্মসূচি দেওয়া হবে, যাতে কোনো পরিবহন শ্রমিক অন্যায়ভাবে হয়রানি বা নির্যাতনের শিকার না হয়।
গত শুক্রবার থানার মোড়ের ট্রাফিক পুলিশের ক্যাশিয়ার জমিরের সঙ্গে এক চায়ের দোকানে কথা হলে তিনি জানান, যে টাকাগুলো আদায় করা হয়, সেগুলো সরাসরি টিআই ফারুক স্যারকে বুঝিয়ে দিতে হয়। তিনি আমাকে একটি অংশ দেন। মাসে কম-বেশি হলে আবার কৈফিয়ত দিতে হয়। টিআই স্যার সাংবাদিকদের জন্যও টাকা দেন এটা সবাই জানে।
পটিয়া ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি ও মামলা দিয়ে হয়রানির বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পরিবহন শ্রমিক দল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মফিজ বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিবহন শ্রমিক হয়রানির শিকার হচ্ছে পটিয়ার ট্রাফিক পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের কাছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা জেলা পুলিশ সুপারকে একাধিকবার জানিয়েছি। আশা করি নতুন পুলিশ সুপার চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।
পরিবহন শ্রমিক নেতা মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে পরিবহণ শ্রমিক নির্যাতন ও হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। ৫ আগস্টের পর কিছুদিন ভালো থাকলেও পুলিশ আবার হয়রানি ও নির্যাতন শুরু করেছে। পটিয়া ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ অমানবিক নির্যাতন চালাচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে পটিয়া ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট পমাহাম্মদ রফিক বলেন, আমি অফিসের একজন জুনিয়র স্টাফ। ক্যাশিয়ার নিয়োগ দিয়ে টাকা আদায়ের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, সাংবাদিক-পুলিশ ভাই ভাই। আপনি অফিসে এলে চায়ের দাওয়াত রইল। তিনি দাবি করেন, তিনি বর্তমানে ছুটিতে আছেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) শেখ মোহাম্মদ সেলিম জানান, অভিযোগ যদি সঠিক হয়ে থাকে, তবে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।