alt

সবকিছু থেমে গেছে আমাদের জীবনে প্রতিবন্ধী স্বামীকে নিয়ে মানবেতর দিন কাটছে কমলার

প্রতিনিধি, চরফ্যাসন (ভোলা) : বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন দ্বীপ মুজিবনগরের বাসিন্দা কমলা বেগম। ভোরের আলো ফোটার আগেই দিনের শুরু হয় তার। বয়স পঁয়ত্রিশের কোঠায়, কিন্তু মুখের বলিরেখা বলে দেয় জীবন কতটা কঠিন ছিল তার জন্য। প্রতিবন্ধী স্বামী মনির হোসেন ও দুই সন্তানকে নিয়ে টিকে থাকার লড়াই যেন প্রতিদিনই নতুন করে শুরু হয় তার।

স্বামী অসুস্থ হওয়ায় কমলা অন্যের ঘরবাড়ির কাজ, ধানের জমিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন। গ্রামের কিছু মানুষ মাঝে মাঝে সাহায্য করেন। কেউ চাল দেয়, কেউ পুরোনো কাপড় দিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু তা নিয়মিত নয়। স্বামী মনিরের নামে প্রতিবন্ধী ভাতা হয়েছে। তবে যে টাকা পায় তা দিয়ে স্বামীর ওষুধের খরচও চলে না।

জানা যায়, মনির এক সময় রিকশা চালাতেন। প্রায় ৩০ বছর আগে টাইফয়েট জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তার দু’পা পঙ্গু হয়ে যায়। এর পর ধীরে ধীরে বাক প্রতিবন্ধী হয়ে যান তিনি। সেই থেকে শয্যাশায়ী মনিরের সমস্ত দায়িত্ব এসে পড়ে কমলার কাঁধে। দরিদ্র পরিবারে হঠাৎ করেই উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে যাওয়ায় ঘন কালো অন্ধকার নেমে আসে তাদের জীবনে।

কমলা বলেন, আগে আমার স্বামী মনির রিকশা চালিয়ে যা রোজগার করত তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলত। আমার ছেলেটা জন্ম হওয়ার পর থেকে মনিরের দু’পা পঙ্গু হয়ে একেবারেই অচল হয়ে যায়। তারপর সবকিছু থেমে গেছে আমাদের জীবনে। কারও কাছে হাত পাততে ইচ্ছে করে না, কিন্তু না চাইলে তো বাচ্চাদের মুখে খাবার তোলা যায় না। দুই সন্তানই স্কুলে যায়, কিন্তু নিয়মিত যেতে পারে না। কারন ছেলেটা অন্যের কাজ করতে হয়। যেদিন ছেলেটা কাজ না করে সেইদিন আর সংসার চলেনা। কখনও বই-খাতা নেই, কখনও খাওয়ার অভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। কমলা আরো বলেন, সংসারটা চালাতে অনেক কষ্ট হয়। স্বামীর প্রতিমাসে ৩ হাজার টাকা করে চিকিৎসার খরচ চালাতে হয়। মেয়েটাও পড়ছে, তার পিছনে খরচ চালাতে হয়। স্বামীর নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতা আছে। ৬ মাস পর আড়াই হাজার টাকা পাই, তা দিয়ে কিছুই হয়না। সরকারি ডাল, চাল যা আসে আমরা কিছুই পাই না। স্থানীয় মনির মাষ্টার বলেন, প্রতিবন্ধী মনির আমার পাশ্ববর্তী এলাকার লোক। সে শুধু একটি প্রতিবন্ধী ভাতা পায়। এছাড়া বিকল্প কিছু পায় না। খুবই কষ্টে তাদের সংসার চলে। মনিরকে এমন একটি ভাতা করে দেয়া হোক, যাতে তার ছেলে সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে ভালোভাবে জীবন কাটাতে পারে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মামুন হোসাইন জানান, মুজিবনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা মনিরকে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। জেনেছি তার স্ত্রী অন্যথায় কাজ করে। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সেই পরিবারটিকে পূর্ণবাসনের আওতায় এনে স্বচ্চল করা যায় কিনা, এ ক্ষেত্রে সমাজ কল্যাণ পরিষদের তহবিল থেকে সহযোগিতা করা হবে।

ছবি

আত্মসম্মান তাকে আজও ধরে রেখেছে নিজের কাজে, নিজের উপার্জনে

ছবি

দশমিনায় দেশীয় প্রজাতির কামরাঙ্গা শিম বিলুপ্তির পথে

ছবি

মীরসরাইয়ে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতি পালন

ছবি

ভিনদেশি বরই চাষে ভাগ্যের চাকা ঘুরল গিয়াসের

ছবি

সৈয়দপুরে লোকসানের মুখে হিমাগারে আলু সংরক্ষণকারীরা

ছবি

ঈশ্বরদীতে ৮ কুকুরছানা হত্যার ঘটনায় সেই নারী গ্রেপ্তার

ছবি

মোরেলগঞ্জে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে র‌্যালি

ছবি

রায়গঞ্জে উন্নতজাতের ক্রসব্রীড বকনাহ উপকরণ বিতরণ

ছবি

শিবগঞ্জে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতি

ছবি

নীলফামারী-রংপুর রুটে বাস চলাচল শুরু

ছবি

পলাশে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের অর্ধদিবস কর্মবিরতি।

গজারিয়ায় অগ্নিকাণ্ডে ৪ বসতঘর ভস্মীভূত

ছবি

হাটহাজারীতে ইটভাটায় অভিযান গুঁড়িয়ে দেয়া হলো কিলন-চিমনি

চাটখিলে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ স্কুল ছাত্রের মৃত্যু

মহেশপুরে ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার, ৪ বাংলাদেশি আটক

মোহনগঞ্জে পিঠার ব্যবসা জমজমাট

ছবি

চার মাসে ভারত থেকে এলো ১৮ হাজার মেট্রিক টন চাল

ছবি

সিদ্ধিরগঞ্জে পাঁচ মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা

ছবি

ভালুকায় খেজুর গাছ কাটায় ব্যস্ত গাছিরা

ছবি

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় রূপগঞ্জের মহিউদ্দিন নিহত

ছবি

সলঙ্গায় গৃহবধূ লাবনী হত্যার রহস্য উন্মোচন

ছবি

সিরাজগঞ্জে নারী ইউপি সদস্য হত্যার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

ছবি

মানিকগঞ্জে কবরস্থান থেকে পাঁচটি কঙ্কাল চুরি

ছবি

পূর্বধলায় শিক্ষকদের কর্মবিরতি, বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন

ছবি

নাগেশ্বরীতে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করলেন এসিল্যান্ড

পদ্মা থেকে রাতের আঁধারে বালু লুটের অভিযোগ

ছবি

মহাদেবপুরে বণিক সমিতির দাপট নারী উদ্যোক্তার দোকানে তালা

ছবি

পীরগঞ্জের করতোয়া নদীর জয়ন্তীপুর ঘাটে সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন নিয়ে সংশয়

ছবি

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় লাবনী হত্যা-চাঞ্চল্যকর রহস্যউদ্ঘাটন

ছবি

আইনজিবীর সদস্য পদ স্থগিত মোহরারের লাইসেন্স বাতিল

ছবি

শীতের আগমনে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

ছবি

শ্রীপুরে অগ্নিকাণ্ডে অটোরিকশা গ্যারেজসহ ১৫টি অটো পুড়ে ছাই

ছবি

লালপুরে ট্রাকচাপায় শিশুর করুণ মৃত্যু

ছবি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক: বিভাজনের গ্রিল ভেঙে মহাসড়ক পারাপার

ছবি

বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ৪ মাসে পাসপোর্টধারী যাতায়াত কমেছে ৪ লাখ ২ হাজার

ছবি

দামুড়হুদায় পুঁইশাকের মেঁচুড়ি চাষে চমক ফেলেছে আব্দুল হাকিম

tab

সবকিছু থেমে গেছে আমাদের জীবনে প্রতিবন্ধী স্বামীকে নিয়ে মানবেতর দিন কাটছে কমলার

প্রতিনিধি, চরফ্যাসন (ভোলা)

বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন দ্বীপ মুজিবনগরের বাসিন্দা কমলা বেগম। ভোরের আলো ফোটার আগেই দিনের শুরু হয় তার। বয়স পঁয়ত্রিশের কোঠায়, কিন্তু মুখের বলিরেখা বলে দেয় জীবন কতটা কঠিন ছিল তার জন্য। প্রতিবন্ধী স্বামী মনির হোসেন ও দুই সন্তানকে নিয়ে টিকে থাকার লড়াই যেন প্রতিদিনই নতুন করে শুরু হয় তার।

স্বামী অসুস্থ হওয়ায় কমলা অন্যের ঘরবাড়ির কাজ, ধানের জমিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন। গ্রামের কিছু মানুষ মাঝে মাঝে সাহায্য করেন। কেউ চাল দেয়, কেউ পুরোনো কাপড় দিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু তা নিয়মিত নয়। স্বামী মনিরের নামে প্রতিবন্ধী ভাতা হয়েছে। তবে যে টাকা পায় তা দিয়ে স্বামীর ওষুধের খরচও চলে না।

জানা যায়, মনির এক সময় রিকশা চালাতেন। প্রায় ৩০ বছর আগে টাইফয়েট জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তার দু’পা পঙ্গু হয়ে যায়। এর পর ধীরে ধীরে বাক প্রতিবন্ধী হয়ে যান তিনি। সেই থেকে শয্যাশায়ী মনিরের সমস্ত দায়িত্ব এসে পড়ে কমলার কাঁধে। দরিদ্র পরিবারে হঠাৎ করেই উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে যাওয়ায় ঘন কালো অন্ধকার নেমে আসে তাদের জীবনে।

কমলা বলেন, আগে আমার স্বামী মনির রিকশা চালিয়ে যা রোজগার করত তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলত। আমার ছেলেটা জন্ম হওয়ার পর থেকে মনিরের দু’পা পঙ্গু হয়ে একেবারেই অচল হয়ে যায়। তারপর সবকিছু থেমে গেছে আমাদের জীবনে। কারও কাছে হাত পাততে ইচ্ছে করে না, কিন্তু না চাইলে তো বাচ্চাদের মুখে খাবার তোলা যায় না। দুই সন্তানই স্কুলে যায়, কিন্তু নিয়মিত যেতে পারে না। কারন ছেলেটা অন্যের কাজ করতে হয়। যেদিন ছেলেটা কাজ না করে সেইদিন আর সংসার চলেনা। কখনও বই-খাতা নেই, কখনও খাওয়ার অভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। কমলা আরো বলেন, সংসারটা চালাতে অনেক কষ্ট হয়। স্বামীর প্রতিমাসে ৩ হাজার টাকা করে চিকিৎসার খরচ চালাতে হয়। মেয়েটাও পড়ছে, তার পিছনে খরচ চালাতে হয়। স্বামীর নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতা আছে। ৬ মাস পর আড়াই হাজার টাকা পাই, তা দিয়ে কিছুই হয়না। সরকারি ডাল, চাল যা আসে আমরা কিছুই পাই না। স্থানীয় মনির মাষ্টার বলেন, প্রতিবন্ধী মনির আমার পাশ্ববর্তী এলাকার লোক। সে শুধু একটি প্রতিবন্ধী ভাতা পায়। এছাড়া বিকল্প কিছু পায় না। খুবই কষ্টে তাদের সংসার চলে। মনিরকে এমন একটি ভাতা করে দেয়া হোক, যাতে তার ছেলে সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে ভালোভাবে জীবন কাটাতে পারে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মামুন হোসাইন জানান, মুজিবনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা মনিরকে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। জেনেছি তার স্ত্রী অন্যথায় কাজ করে। তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সেই পরিবারটিকে পূর্ণবাসনের আওতায় এনে স্বচ্চল করা যায় কিনা, এ ক্ষেত্রে সমাজ কল্যাণ পরিষদের তহবিল থেকে সহযোগিতা করা হবে।

back to top