মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকলেও জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়েই রাজধানীর পথে রওনা হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। ঢাকাসহ আশপাশের পোশাক কারখানাগুলোতে যোগ দিতে ঈদের পরদিন থেকেই পাটুরিয়া ঘাট হয়ে ঢাকায় ফিরছেন হাজারো শ্রমিক। ফিরছেন অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি অফিসে কাজ করা লোকজনও। এর ফলে মানুষের চাপ বেড়েছে ফেরিঘাটে।
দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া ঘাটে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিতেই যাত্রী ও যানবাহনের ভিড় দেখা গেছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পোশাক কারখানায় তিন দিনের বেশি ছুটি দেওয়া হয়নি। এই তিন তিন শিল্প কলকারখানা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অফিস আদালত বন্ধ থাকে। কিন্তু এর মধ্যে করোনার ঝুঁকি সত্ত্বেও হাজার হাজার মানুষ পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়িতে ছুটে যান। ঈদ শেষে একই ঝুঁকি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তারা। ঈদের পরদিন থেকেই পাটুরিয়া ঘাটে ঢাকা ফেরত মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। গত দুই দিনের মতো আজও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ঢাকামুখী শ্রমজীবী মানুষের ঢল লক্ষ্য করা গেছে।
পাটুরিয়া থেকে রওনা হওয়া প্রতিটি ফেরিতে গাদাগাদি করে নদী পার হচ্ছে হাজারো মানুষ।
পাটুরিয়া ঘাট পার হয়েই ঢাকাগামী যাত্রীরা সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়াই মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক, পিকআপ, হাইয়েজ, রিকশাভ্যান ও পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। সরকারি নির্দেশে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে এসব যানবাহন যোগে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে তাদের।
ফরিদপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়া পোশাককর্মী রাহাত জানান, অফিস খোলায় আমরা ঢাকা যাচ্ছি। অনুপস্থিত থাকলে চাকরি থাকবে না। তাই বাধ্য হয়েই যেতে হচ্ছে। পেটের ক্ষুধার কাছে করোনাভাইরাস কিছুই না। জীবনের ঝুঁকি থাকলেও আমাকে কর্মস্থলে যেতে হবে।
ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঘাটে এসেই ফেরি পাওয়ায় পার হতে কোনো তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ফেরি চলাচলও স্বাভাবিক থাকলেও বন্ধ রয়েছে লঞ্চ চলাচল।
সড়ক-মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস চলাচল না করায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। জেলার অভ্যন্তরীণ গণপরিবহন, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে যোগে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ভেঙে ভেঙে যেতে হচ্ছে কর্মস্থলে।
পরিবহন সংকটের কারণে উপায় না থাকায় বাধ্য হয়েই বাড়তি ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীরা। একই অবস্থা ঢাকামুখী প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল চালকদের।
কুষ্টিয়া থেকে আগত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সুমন হাসান নামে একজন জানান, গতকাল আমার অফিস খোলা ছিল। একদিন ছুটি বাড়িয়ে বাড়িতে ছিলাম। আমি অফিস করবো বলে সাতসকালে রওনা হয়েছি। ভোরে কুষ্টিয়া থেকে ৭৫০ টাকা দিয়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এসেছি। যার ভাড়া ছিল মূলত ১৫০ টাকা। ফেরি চলাচল করায় ফেরি ঘাটে আসা মাত্রই পাটুরিয়ায় আসতে বেশি সময় লাগেনি। পাটুরিয়া থেকে মোটর সাইকেলে ১৫০ টাকা দিয়ে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে আসলাম। এখন নবীনগর যাব তারপর ঢাকা। অথচ কুষ্টিয়া থেকে দূরপাল্লার বাসে ঢাকা যেতে খরচ হয় মাত্র ৫৫০/৬০০ টাকা।
বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জিল্লুর রহমান জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফেরি চলাচল করছে। ছুটি শেষে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়লেও পারাপারে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ১৭ মে ২০২১
মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকলেও জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়েই রাজধানীর পথে রওনা হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। ঢাকাসহ আশপাশের পোশাক কারখানাগুলোতে যোগ দিতে ঈদের পরদিন থেকেই পাটুরিয়া ঘাট হয়ে ঢাকায় ফিরছেন হাজারো শ্রমিক। ফিরছেন অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি অফিসে কাজ করা লোকজনও। এর ফলে মানুষের চাপ বেড়েছে ফেরিঘাটে।
দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া ঘাটে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিতেই যাত্রী ও যানবাহনের ভিড় দেখা গেছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পোশাক কারখানায় তিন দিনের বেশি ছুটি দেওয়া হয়নি। এই তিন তিন শিল্প কলকারখানা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অফিস আদালত বন্ধ থাকে। কিন্তু এর মধ্যে করোনার ঝুঁকি সত্ত্বেও হাজার হাজার মানুষ পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়িতে ছুটে যান। ঈদ শেষে একই ঝুঁকি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তারা। ঈদের পরদিন থেকেই পাটুরিয়া ঘাটে ঢাকা ফেরত মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। গত দুই দিনের মতো আজও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ঢাকামুখী শ্রমজীবী মানুষের ঢল লক্ষ্য করা গেছে।
পাটুরিয়া থেকে রওনা হওয়া প্রতিটি ফেরিতে গাদাগাদি করে নদী পার হচ্ছে হাজারো মানুষ।
পাটুরিয়া ঘাট পার হয়েই ঢাকাগামী যাত্রীরা সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়াই মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক, পিকআপ, হাইয়েজ, রিকশাভ্যান ও পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। সরকারি নির্দেশে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে এসব যানবাহন যোগে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে তাদের।
ফরিদপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়া পোশাককর্মী রাহাত জানান, অফিস খোলায় আমরা ঢাকা যাচ্ছি। অনুপস্থিত থাকলে চাকরি থাকবে না। তাই বাধ্য হয়েই যেতে হচ্ছে। পেটের ক্ষুধার কাছে করোনাভাইরাস কিছুই না। জীবনের ঝুঁকি থাকলেও আমাকে কর্মস্থলে যেতে হবে।
ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঘাটে এসেই ফেরি পাওয়ায় পার হতে কোনো তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ফেরি চলাচলও স্বাভাবিক থাকলেও বন্ধ রয়েছে লঞ্চ চলাচল।
সড়ক-মহাসড়কে দূরপাল্লার বাস চলাচল না করায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। জেলার অভ্যন্তরীণ গণপরিবহন, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে যোগে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ভেঙে ভেঙে যেতে হচ্ছে কর্মস্থলে।
পরিবহন সংকটের কারণে উপায় না থাকায় বাধ্য হয়েই বাড়তি ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীরা। একই অবস্থা ঢাকামুখী প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল চালকদের।
কুষ্টিয়া থেকে আগত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সুমন হাসান নামে একজন জানান, গতকাল আমার অফিস খোলা ছিল। একদিন ছুটি বাড়িয়ে বাড়িতে ছিলাম। আমি অফিস করবো বলে সাতসকালে রওনা হয়েছি। ভোরে কুষ্টিয়া থেকে ৭৫০ টাকা দিয়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এসেছি। যার ভাড়া ছিল মূলত ১৫০ টাকা। ফেরি চলাচল করায় ফেরি ঘাটে আসা মাত্রই পাটুরিয়ায় আসতে বেশি সময় লাগেনি। পাটুরিয়া থেকে মোটর সাইকেলে ১৫০ টাকা দিয়ে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে আসলাম। এখন নবীনগর যাব তারপর ঢাকা। অথচ কুষ্টিয়া থেকে দূরপাল্লার বাসে ঢাকা যেতে খরচ হয় মাত্র ৫৫০/৬০০ টাকা।
বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জিল্লুর রহমান জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফেরি চলাচল করছে। ছুটি শেষে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়লেও পারাপারে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।