অধিগ্রহণে জটিলতার কারনে
ঢাকা-শরীয়তপুর মহাসড়কের শরীয়তপুর-পদ্মা সেতু অ্যাপ্রোচ সড়ক (ভায়া জাজিরা) চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। সড়কটির উন্নয়ন প্রকল্পে দুটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এ জন্য জমিও অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি সেতুর জন্য অধিগ্রহণ করা ব্যক্তি মালিকানার ৪ একর ৭৬ শতাংশ জমির শ্রেণি শিকস্তি (নদীশ্রেণি) হওয়ায় অধিগ্রহণ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
ওই জমিতে বসবাস করা ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া যাচ্ছে না। আর জমি বুঝে না পাওয়ায় জাজিরার ডুবিসায়বর এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কাজ প্রায় অর্ধ বছর যাবৎ বন্ধ রয়েছে। ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার প্রস্থের সেতু নির্মাণের মেয়াদের প্রথম দফা গত সেপ্টেম্বরে শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ছয় মাস বৃদ্ধি করার পর সেই মেয়াদও আগামী মার্চে শেষ হবে।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন সূত্র বলছে, ২১টি এলএ কেসের মাধ্যমে ২৭ কিলোমিটার সড়কের জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে, যার মধ্যে দুটি সেতু রয়েছে। একটি সেতুর কিছু জমি শিকস্তি শ্রেণির হওয়ায় আইনগত বাধার কারণে মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া যাচ্ছে না। আর টাকা ছাড়া মানুষ জমি ছাড়তে চাচ্ছে না। বিষয়টি সমাধানের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
শরীয়তপুর জেলা শহর থেকে জাজিরার নাওডোবা পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব ২৭ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর শরীয়তপুর থেকে সরাসরি ঢাকা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল করছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্র জানায়, সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার লক্ষে ২০২০ সালে ১ হাজার ৬৮২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে সরকার। ওই প্রকল্পের আওতায় প্রেমতলা এলাকায় ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্ত সেতু এবং ডুবিসায়বর বন্দর এলাকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্ত সেতু নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ৫৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই ২টি সেতু নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের ১ এপ্রিল কার্যাদেশ দেওয়া হয় জামিল ইকবাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে।
সেতু ২টি ও ২৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করছে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা। ডুবিসায়বর মৌজার ৪ দশমিক ৭৬ একর জমির মালিকানা স্থানীয় ৫৮ ব্যক্তির। তাঁদের নামে পর্চা রয়েছে। বিভিন্ন সময় তাঁরা ভূমি উন্নয়ন কর দিয়েছেন। কিন্তু পর্চায় ওই জমিগুলোর শ্রেণি শিকস্তি, যা নদী শ্রেণি হিসেবে ধরা হয়। ভূমি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী শিকস্তি শ্রেণির জমির ক্ষতিপূরণ কেউ পাবে না, তা সরকারি হিসেবে গণ্য হয়।
অধিগ্রহণে থাকা ওই ৪ একর ৭৬ শতাংশ জমির শ্রেণি পরিবর্তন করার অনুরোধ জানিয়ে গত বছর ১৩ অক্টোবর ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চিঠি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান। এতেও কোনো সমাধান মেলেনি।
ডুবিসায়বর বন্দর এলাকার সুলতান মাদবরের বসতবাড়ি এসএ ৪৯৪ নম্বর দাগের ওপরে। বাড়ির একটি অংশের ৩৭ শতাংশ জমি সেতু ও সড়কের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছে। তাঁকে ৪ ধারা ও ৭ ধারার নোটিশ দেয়া হয়েছে। জমির শ্রেণি শিকস্তি হওয়ায় ক্ষতিপূরণ পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন।
সুলতান মাদবর বলেন, ৪০ বছর আগে এই জমি কিনে বাড়ি করেছি। দলিল, পর্চা সবই আছে। বিভিন্ন সময় খাজনা দিছি। কিন্তু পর্চায় শিকস্তি লেখা থাকায় অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা আছি।
শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, জমির শ্রেণি জটিলতায় অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যার ফলে সেতুর নির্মাণকাজ আটকে আছে। এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
অধিগ্রহণে জটিলতার কারনে
বুধবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৩
ঢাকা-শরীয়তপুর মহাসড়কের শরীয়তপুর-পদ্মা সেতু অ্যাপ্রোচ সড়ক (ভায়া জাজিরা) চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। সড়কটির উন্নয়ন প্রকল্পে দুটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এ জন্য জমিও অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি সেতুর জন্য অধিগ্রহণ করা ব্যক্তি মালিকানার ৪ একর ৭৬ শতাংশ জমির শ্রেণি শিকস্তি (নদীশ্রেণি) হওয়ায় অধিগ্রহণ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
ওই জমিতে বসবাস করা ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া যাচ্ছে না। আর জমি বুঝে না পাওয়ায় জাজিরার ডুবিসায়বর এলাকায় কীর্তিনাশা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কাজ প্রায় অর্ধ বছর যাবৎ বন্ধ রয়েছে। ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ মিটার প্রস্থের সেতু নির্মাণের মেয়াদের প্রথম দফা গত সেপ্টেম্বরে শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ছয় মাস বৃদ্ধি করার পর সেই মেয়াদও আগামী মার্চে শেষ হবে।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন সূত্র বলছে, ২১টি এলএ কেসের মাধ্যমে ২৭ কিলোমিটার সড়কের জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে, যার মধ্যে দুটি সেতু রয়েছে। একটি সেতুর কিছু জমি শিকস্তি শ্রেণির হওয়ায় আইনগত বাধার কারণে মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া যাচ্ছে না। আর টাকা ছাড়া মানুষ জমি ছাড়তে চাচ্ছে না। বিষয়টি সমাধানের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
শরীয়তপুর জেলা শহর থেকে জাজিরার নাওডোবা পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব ২৭ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর শরীয়তপুর থেকে সরাসরি ঢাকা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল করছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্র জানায়, সড়কটি চার লেনে উন্নীত করার লক্ষে ২০২০ সালে ১ হাজার ৬৮২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে সরকার। ওই প্রকল্পের আওতায় প্রেমতলা এলাকায় ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্ত সেতু এবং ডুবিসায়বর বন্দর এলাকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ৩ মিটার প্রশস্ত সেতু নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ৫৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই ২টি সেতু নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের ১ এপ্রিল কার্যাদেশ দেওয়া হয় জামিল ইকবাল নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে।
সেতু ২টি ও ২৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করছে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা। ডুবিসায়বর মৌজার ৪ দশমিক ৭৬ একর জমির মালিকানা স্থানীয় ৫৮ ব্যক্তির। তাঁদের নামে পর্চা রয়েছে। বিভিন্ন সময় তাঁরা ভূমি উন্নয়ন কর দিয়েছেন। কিন্তু পর্চায় ওই জমিগুলোর শ্রেণি শিকস্তি, যা নদী শ্রেণি হিসেবে ধরা হয়। ভূমি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী শিকস্তি শ্রেণির জমির ক্ষতিপূরণ কেউ পাবে না, তা সরকারি হিসেবে গণ্য হয়।
অধিগ্রহণে থাকা ওই ৪ একর ৭৬ শতাংশ জমির শ্রেণি পরিবর্তন করার অনুরোধ জানিয়ে গত বছর ১৩ অক্টোবর ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চিঠি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান। এতেও কোনো সমাধান মেলেনি।
ডুবিসায়বর বন্দর এলাকার সুলতান মাদবরের বসতবাড়ি এসএ ৪৯৪ নম্বর দাগের ওপরে। বাড়ির একটি অংশের ৩৭ শতাংশ জমি সেতু ও সড়কের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছে। তাঁকে ৪ ধারা ও ৭ ধারার নোটিশ দেয়া হয়েছে। জমির শ্রেণি শিকস্তি হওয়ায় ক্ষতিপূরণ পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন।
সুলতান মাদবর বলেন, ৪০ বছর আগে এই জমি কিনে বাড়ি করেছি। দলিল, পর্চা সবই আছে। বিভিন্ন সময় খাজনা দিছি। কিন্তু পর্চায় শিকস্তি লেখা থাকায় অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা আছি।
শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, জমির শ্রেণি জটিলতায় অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যার ফলে সেতুর নির্মাণকাজ আটকে আছে। এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।