alt

সিলেটে ভূমি জটিলতায় আটকে আছে বধ্যভূমি সংরক্ষণ কাজ

প্রতিনিধি, সিলেট : রোববার, ২৬ মার্চ ২০২৩

সিলেট নগরীর অদুরে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালমাটিয়া এলাকায় রয়েছে সিলেটের সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি। এখানে রয়েছে অর্ধ শতাধিক গণকবর। যদিও সংরক্ষণের অভাবে ও ভূমি জটিলতার কারণে এখানে কোন স্মৃতিচিহ্ন না থাকায় বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জানেন না এই এলাকার গণহত্যার ইতিহাস।

জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় এ এলাকা দিয়ে চলে যাওয়া রেললাইনের ঠিক পাশ ঘেঁষেই তৈরি করা হয়েছিল অন্তত ৫০ থেকে ৬০টি গণকবর। একেকটিতে গড়ে ২৫ থেকে ৪০ জনকে মাটিচাপা দেওয়া হয়। এর বাইরেও অনেককে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছিল। তবে স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দি পরও পাকিস্তানি সেনাদের হাতে শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে এখানে এখন পর্যন্ত কোনো স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়নি।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ও দক্ষিণ সুরমার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র পাল বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও লালমাটিয়া এলাকায় কোনো স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও হতাশার। অথচ এটাই সিলেটের সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত। এখানে কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বধ্যভূমির স্থানটিতে লাউগাছসহ বিভিন্ন সবজির চারা রোপণ করা আছে। রয়েছে আগাছাজাতীয় কিছু গাছও। স্থানটিতে কোনো ধরনের স্মৃতিফলক কিংবা স্মৃতিসৌধ নেই। এ স্থান যে সিলেটের সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি, এ সম্পর্কেও আশপাশের পথচলতি মানুষেরা কিছু বলতে পারেননি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বধ্যভূমির পাশে পাকিস্তানি সেনারা ছয়টি বাংকার তৈরি করেছিল। সেখানে নারী নির্যাতনের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এ ছাড়া প্রতিদিনই সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলের নিরীহ বাঙালিদের ধরে এনে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হতো। জীবন্ত কবর দেয়ার পাশাপাশি অনেক মানুষকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে গণকবরও দেয়া হয়। এ ছাড়া পাশের কিছু ডোবাতেও অনেকের লাশ ফেলে দিয়েছিল পাকিস্তানি সেনারা।

একই সূত্রের তথ্যানুযায়ী, স্বাধীনতার পর লালমাটিয়া বধ্যভূমির গণকবরে অসংখ্য মানুষের কঙ্কাল, মাথার খুলি ও হাড় পাওয়া গিয়েছিল। তবে সরকারি কিংবা বেসরকারি উদ্যোগে এখানে শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের কোনো তালিকা প্রস্তুত করা হয়নি। এমনকি স্থানটি সংরক্ষণেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে লালমাটিয়া বধ্যভূমি এলাকাটি এখনো অরক্ষিত অবস্থায় আছে।

এ বিষয়ে জেলা গণপূর্ত কার্যালয় সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিপন কুমার রায় বলেন, ১৯৭১ সালের বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিসৌধ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সিলেট জেলার পাঁচটি বধ্যভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর একটি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। এরপর ঠিকাদারও নিযুক্ত করা হয়। তবে চারটি বধ্যভূমির কাজ শেষ হলেও জমি-সংক্রান্ত জটিলতায় লালমাটিয়া বধ্যভূমির কাজ ঠিকাদার শুরুই করতে পারেননি।

তিনি আরও বলেন, ১১ শতক জায়গার মধ্যে ৬৪ লাখ ৮২ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করার কথা ছিল। তবে বধ্যভূমির কিছু জায়গা পড়েছে রেলের জায়গায়। এ জায়গা এখনো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা হস্তান্তর করেননি। ফলে ভূমিসংক্রান্ত জটিলতায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি। এ জটিলতা শেষ হলে দ্রুতই কাজ শুরু করে শেষ করা হবে।

ছবি

পটুয়াখালীতে যুবদল-ছাত্রদলের সঙ্গে গণঅধিকারের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে আহত ২০

ছবি

কচুয়ায় অর্ধেকের বেশি আলু অবিক্রীত, লোকসানে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা

ছবি

কোস্ট গার্ডের পৃথক অভিযানে সাড়ে ৩ হাজার কেজি জাটকা জব্দ

ছবি

পাকিস্তানে যুদ্ধ করতে গিয়ে নিহত গোপালগঞ্জের রতন, পরিবারে নেই শোকের ছায়া

ছবি

সাভারে দুই হত্যার বিচার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

ছবি

রংপুরে ‘ভুল চিকিৎসায়’ রোগীর মৃত্যু নিয়ে তুলকালাম

ছবি

অনুমোদনহীন ওষুধ কারখানা: ঝুঁকি বাড়ছে ভোক্তাদের, দরকার প্রশাসনের তোড়জোর

ছবি

ফরিদপুরে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ: আহত ২৩

ছবি

চট্টগ্রামে নির্বাচনী প্রচারণায় প্রার্থী খুন, বিএনপি নেতাসহ গ্রেপ্তার ২

ছবি

শনিবার থেকে লাগাতার অবস্থানের ডাক প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের

ইসলামপুরে দশআনী নদী থেকে অজ্ঞাত পুরুষের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

দশমিনায় আমন ধান রক্ষায় কৃষি দপ্তরের নানা কৌশল

ছবি

মধুপুরে সেনাবাহিনীর চক্ষু চিকিৎসাসেবা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

ছবি

তালতলীতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

ছবি

সুন্দরবনে রাস উৎসবের আড়ালে হরিণ শিকার, ৪২ জন আটক

ছবি

সৈয়দপুরে মাদকদ্রব্যসহ গ্রেপ্তার১

ছবি

বাগদাফার্মে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচার দাবি আদিবাসী পরিষদের

ছবি

খোকসায় হামলা পাল্টা হামলা, বাড়িঘর ভাংচুর

ছবি

রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের আগুন নিয়ন্ত্রণে

ছবি

কুমিল্লা-৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় হতাশায় বিএনপি নেতাকর্মীরা

ছবি

গজারিয়ায় চুরি-ডাকাতি প্রতিরোধে উপজেলা ব্যাপী গ্রামে গ্রামে পাহারা

ছবি

মাদারগঞ্জে জোনাইল বাজার মোসলেমাবাদ সড়কে ব্রীজ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

ট্রাক চাপায় নিহত ২

ছবি

আক্কেলপুরে রাস পূর্ণিমা অনুষ্ঠিত

ছবি

মোরেলগঞ্জে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে র‌্যালী ও আলোচনা

ছবি

সিলেটে শাহ আরেফিন টিলায় পাথর লুটের মহোৎসব

ছবি

কচুয়ায় মাছের ঘের থেকে যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার

ছবি

ঝিনাইগাতীতে বিনামূল্যে শাক-সবজির বীজ বিতরণ

ছবি

জয়দেবপুর রেলক্রসিং দখলমুক্ত সমন্বিত অভিযানে স্বস্তির নিঃশ্বাস

ছবি

সোনারগাঁয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ

ছবি

আড়াইহাজারে ইয়াবাসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

ছবি

দেশের প্রথম কেবল-স্টেইড সেতু হচ্ছে মতলব-গজারিয়ায়

ছবি

পলাশে ডেভিল হান্ট অভিযানে গ্রেপ্তার ৪

ছবি

চারঘাট সীমান্ত থেকে ভারতীয় ফেন্সিডিল জব্দ

ছবি

মোবাইল ছেড়ে হাতে খুন্তি-কোদাল, মহিষমারা কলেজে ব্যতিক্রমী শিক্ষা

ছবি

চকরিয়া রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতির দাবিতে উপদেষ্টার কাছে চিঠি

tab

সিলেটে ভূমি জটিলতায় আটকে আছে বধ্যভূমি সংরক্ষণ কাজ

প্রতিনিধি, সিলেট

রোববার, ২৬ মার্চ ২০২৩

সিলেট নগরীর অদুরে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালমাটিয়া এলাকায় রয়েছে সিলেটের সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি। এখানে রয়েছে অর্ধ শতাধিক গণকবর। যদিও সংরক্ষণের অভাবে ও ভূমি জটিলতার কারণে এখানে কোন স্মৃতিচিহ্ন না থাকায় বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জানেন না এই এলাকার গণহত্যার ইতিহাস।

জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় এ এলাকা দিয়ে চলে যাওয়া রেললাইনের ঠিক পাশ ঘেঁষেই তৈরি করা হয়েছিল অন্তত ৫০ থেকে ৬০টি গণকবর। একেকটিতে গড়ে ২৫ থেকে ৪০ জনকে মাটিচাপা দেওয়া হয়। এর বাইরেও অনেককে জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছিল। তবে স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দি পরও পাকিস্তানি সেনাদের হাতে শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে এখানে এখন পর্যন্ত কোনো স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়নি।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ও দক্ষিণ সুরমার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র পাল বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও লালমাটিয়া এলাকায় কোনো স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও হতাশার। অথচ এটাই সিলেটের সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত। এখানে কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বধ্যভূমির স্থানটিতে লাউগাছসহ বিভিন্ন সবজির চারা রোপণ করা আছে। রয়েছে আগাছাজাতীয় কিছু গাছও। স্থানটিতে কোনো ধরনের স্মৃতিফলক কিংবা স্মৃতিসৌধ নেই। এ স্থান যে সিলেটের সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি, এ সম্পর্কেও আশপাশের পথচলতি মানুষেরা কিছু বলতে পারেননি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বধ্যভূমির পাশে পাকিস্তানি সেনারা ছয়টি বাংকার তৈরি করেছিল। সেখানে নারী নির্যাতনের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এ ছাড়া প্রতিদিনই সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলের নিরীহ বাঙালিদের ধরে এনে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হতো। জীবন্ত কবর দেয়ার পাশাপাশি অনেক মানুষকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে গণকবরও দেয়া হয়। এ ছাড়া পাশের কিছু ডোবাতেও অনেকের লাশ ফেলে দিয়েছিল পাকিস্তানি সেনারা।

একই সূত্রের তথ্যানুযায়ী, স্বাধীনতার পর লালমাটিয়া বধ্যভূমির গণকবরে অসংখ্য মানুষের কঙ্কাল, মাথার খুলি ও হাড় পাওয়া গিয়েছিল। তবে সরকারি কিংবা বেসরকারি উদ্যোগে এখানে শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের কোনো তালিকা প্রস্তুত করা হয়নি। এমনকি স্থানটি সংরক্ষণেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে লালমাটিয়া বধ্যভূমি এলাকাটি এখনো অরক্ষিত অবস্থায় আছে।

এ বিষয়ে জেলা গণপূর্ত কার্যালয় সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিপন কুমার রায় বলেন, ১৯৭১ সালের বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিসৌধ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সিলেট জেলার পাঁচটি বধ্যভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর একটি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। এরপর ঠিকাদারও নিযুক্ত করা হয়। তবে চারটি বধ্যভূমির কাজ শেষ হলেও জমি-সংক্রান্ত জটিলতায় লালমাটিয়া বধ্যভূমির কাজ ঠিকাদার শুরুই করতে পারেননি।

তিনি আরও বলেন, ১১ শতক জায়গার মধ্যে ৬৪ লাখ ৮২ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করার কথা ছিল। তবে বধ্যভূমির কিছু জায়গা পড়েছে রেলের জায়গায়। এ জায়গা এখনো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা হস্তান্তর করেননি। ফলে ভূমিসংক্রান্ত জটিলতায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি। এ জটিলতা শেষ হলে দ্রুতই কাজ শুরু করে শেষ করা হবে।

back to top