বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় দেশে ও যুক্তরাষ্ট্রে করা মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া। তিনি বলেছেন, ব্যাংকের পক্ষে দেশে করা মামলাটির তদন্ত শেষ পর্যায়ে। তদন্তে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় অবহেলা ও প্রযুক্তিগত দুর্বলতা পেয়েছে সিআইডি। যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে করা মামলা বিচারিক পর্যায়ে আছে, শুনানি শেষ হয়েছে।
সোমবার দুপুরে সিআইডি সদরদপ্তরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ মামলা নিয়ে কথা বলেন মোহাম্মদ আলী মিয়া।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি সুইফট সিস্টেমে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেওয়া হয় ফিলিপিন্সের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকে।
ওই বছরের ১৫ মার্চ রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জুবায়ের বিন হুদা; অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনের ওই মামলায় সরাসরি কাউকে আসামি করা হয়নি।
মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি। কিন্তু ৭৬ বার সময় নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি সংস্থাটি। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে আদালত।
সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, “তদন্ত মোটামুটি বেশ ভালো একটা পজিশনে আছে। বাংলাদেশ সরকারও চেষ্টা করছে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের খোয়া যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপিন্সের স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোতে। এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে ফিলিপিন্স সরকার বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দিলেও বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার আর পাওয়া যায়নি।
রিজার্ভ চুরির তিন বছর পর ২০১৯ সালে ওই অর্থ উদ্ধারের আশায় নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন সাদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে একটি মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই মামলা খারিজে আবেদন করে আরসিবিসি।
২০২২ সালের এপ্রিলে নিউ ইয়র্কের আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলাটি খারিজ করে দেয়। রায়ে বলা হয়, ওই মামলা বিচারের ‘পর্যাপ্ত এখতিয়ার’ ওই আদালতের নেই।
এরপর বাংলাদেশ বাংকের পক্ষ থেকে নিউ ইয়র্কের ‘এখতিয়ারভুক্ত’ আদালতে মামলা করা হয় বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তরফে জানানো হয়েছিল।
সিআইডি প্রধান বলেন, রিজার্ভ চুরি সংক্রান্ত একটি মামলা হয়েছে নিউ ইয়র্কে। সেই মামলার বিচারক ইতোমধ্যে শুনানি শেষ করেছেন।
“আমরা আমাদের মামলার চার্জশিট দিলে কি ওই দেশ থেকে আসামি ধরে আনতে পারব? ইন্টারপোলের সাপোর্ট ছাড়া তো আমরা আসামি ধরে আনতে পারব না।"
মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, “আমরা যেটা চাইব, ফান্ডটা কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায়। মামলা তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে।
“তদন্তে যেটা পেয়েছি যে, এখানে নেগলেজেন্সি (অবহেলা) আছে, টেকনিক্যালি সাউন্ড না (প্রযুক্তিগত জ্ঞানের সল্পতা); আসলে বাস্তবতা হল তাই। তবে এখন আর কোনো ধরনের প্রযুক্তিগত দুর্বলতা নেই বলে গভর্নর স্যার আমাকে জানিয়েছেন।”
মতবিনিময়কালে সিআইডি প্রধান ক্র্যাবের নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “পুলিশ-সাংবাদিক পরস্পর পরস্পরের পরিপূরক। উভয়ের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে যে কোনো অপরাধের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব।”
অনুষ্ঠানে ডিআইজি মাইনুল হাসান, অতিরিক্ত ডিআইজি খোন্দকার রফিকুল ইসলাম, কামরুল আহসান, বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মিনহাজুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আর ক্র্যাবের তরফে উপস্থিত ছিলেন নতুন কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সহ-সভাপতি শাহীন আবুদল বারী, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিপন দেওয়ান, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রাজী, অর্থ সম্পাদক হরলাল রায় সাগর, দপ্তর সম্পাদক কামাল হোসেন তালুকদার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নিহাল হাসনাইন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রশিক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক ইসমাঈল হুসাইন ইমু।
সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় দেশে ও যুক্তরাষ্ট্রে করা মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানিয়েছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া। তিনি বলেছেন, ব্যাংকের পক্ষে দেশে করা মামলাটির তদন্ত শেষ পর্যায়ে। তদন্তে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় অবহেলা ও প্রযুক্তিগত দুর্বলতা পেয়েছে সিআইডি। যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে করা মামলা বিচারিক পর্যায়ে আছে, শুনানি শেষ হয়েছে।
সোমবার দুপুরে সিআইডি সদরদপ্তরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ মামলা নিয়ে কথা বলেন মোহাম্মদ আলী মিয়া।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি সুইফট সিস্টেমে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেওয়া হয় ফিলিপিন্সের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকে।
ওই বছরের ১৫ মার্চ রাজধানীর মতিঝিল থানায় মামলা করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জুবায়ের বিন হুদা; অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনের ওই মামলায় সরাসরি কাউকে আসামি করা হয়নি।
মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি। কিন্তু ৭৬ বার সময় নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি সংস্থাটি। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে আদালত।
সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, “তদন্ত মোটামুটি বেশ ভালো একটা পজিশনে আছে। বাংলাদেশ সরকারও চেষ্টা করছে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের খোয়া যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপিন্সের স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোতে। এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে ফিলিপিন্স সরকার বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দিলেও বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার আর পাওয়া যায়নি।
রিজার্ভ চুরির তিন বছর পর ২০১৯ সালে ওই অর্থ উদ্ধারের আশায় নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন সাদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে একটি মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই মামলা খারিজে আবেদন করে আরসিবিসি।
২০২২ সালের এপ্রিলে নিউ ইয়র্কের আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলাটি খারিজ করে দেয়। রায়ে বলা হয়, ওই মামলা বিচারের ‘পর্যাপ্ত এখতিয়ার’ ওই আদালতের নেই।
এরপর বাংলাদেশ বাংকের পক্ষ থেকে নিউ ইয়র্কের ‘এখতিয়ারভুক্ত’ আদালতে মামলা করা হয় বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তরফে জানানো হয়েছিল।
সিআইডি প্রধান বলেন, রিজার্ভ চুরি সংক্রান্ত একটি মামলা হয়েছে নিউ ইয়র্কে। সেই মামলার বিচারক ইতোমধ্যে শুনানি শেষ করেছেন।
“আমরা আমাদের মামলার চার্জশিট দিলে কি ওই দেশ থেকে আসামি ধরে আনতে পারব? ইন্টারপোলের সাপোর্ট ছাড়া তো আমরা আসামি ধরে আনতে পারব না।"
মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, “আমরা যেটা চাইব, ফান্ডটা কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায়। মামলা তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে।
“তদন্তে যেটা পেয়েছি যে, এখানে নেগলেজেন্সি (অবহেলা) আছে, টেকনিক্যালি সাউন্ড না (প্রযুক্তিগত জ্ঞানের সল্পতা); আসলে বাস্তবতা হল তাই। তবে এখন আর কোনো ধরনের প্রযুক্তিগত দুর্বলতা নেই বলে গভর্নর স্যার আমাকে জানিয়েছেন।”
মতবিনিময়কালে সিআইডি প্রধান ক্র্যাবের নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “পুলিশ-সাংবাদিক পরস্পর পরস্পরের পরিপূরক। উভয়ের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে যে কোনো অপরাধের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব।”
অনুষ্ঠানে ডিআইজি মাইনুল হাসান, অতিরিক্ত ডিআইজি খোন্দকার রফিকুল ইসলাম, কামরুল আহসান, বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মিনহাজুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আর ক্র্যাবের তরফে উপস্থিত ছিলেন নতুন কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সহ-সভাপতি শাহীন আবুদল বারী, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিপন দেওয়ান, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রাজী, অর্থ সম্পাদক হরলাল রায় সাগর, দপ্তর সম্পাদক কামাল হোসেন তালুকদার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নিহাল হাসনাইন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মানিক, প্রশিক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক ইসমাঈল হুসাইন ইমু।