alt

শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে ডিএসইর একগুচ্ছ পদক্ষেপ

ফ্লোর প্রাইসের প্রভাব ও কাঠামোগত সংস্কারের উদ্যোগ জোরদার

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫

দেশের শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরানোর লক্ষ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) নতুন পরিকল্পনা ও নীতি গ্রহণ করেছে। শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরে চলমান আস্থাহীনতা, ফ্লোর প্রাইসের প্রভাব, এবং আর্থিক অনিয়মের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে হতাশা তৈরি হয়েছে, তা কাটাতে ডিএসইর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।

শেয়ারবাজারে বিদ্যমান সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলতে শনিবার সকালে রাজধানীর পল্টনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’-এ বক্তব্য রাখেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানি ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবু আলীও উপস্থিত ছিলেন।

ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, “শেয়ারবাজারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ দীর্ঘমেয়াদে বাজারের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীসহ বড় দেশীয় বিনিয়োগকারীরা এখনো এই নীতির কারণে বাজারে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন। ফলে শেয়ারবাজারে কাঙ্ক্ষিত বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। এটি একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে।”

তিনি আরও বলেন, “দেশের অর্থনীতিতে প্রকৃত বিনিয়োগ বাড়াতে না পারলে শেয়ারবাজারেও গতি ফিরে আসবে না। উচ্চ সুদহার, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, এবং অন্যান্য আর্থিক খাতের চাপ শেয়ারবাজারের স্থবিরতার অন্যতম কারণ।”

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ চারটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

১. কর প্রণোদনা: শেয়ারবাজারের জন্য আলাদা করসুবিধা দিতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করা হচ্ছে, আসন্ন বাজেটে এই প্রস্তাবের প্রতিফলন দেখা যাবে।

২. ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্তি: দেশি ও বিদেশি কিছু ভালো মানের কোম্পানিকে দ্রুত তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

৩. নেগেটিভ ইকুইটি সমাধান: ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণাত্মক ঋণহিসাবের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কাজ চলছে।

৪. কারসাজি রোধ: শেয়ারবাজারে সুবিধাভোগী লেনদেন এবং কারসাজি বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।

ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম শেয়ারবাজারের কাঠামোগত সংস্কারের উপর জোর দিয়ে বলেন, “বাজারের নীতিমালা এবং আইনি কাঠামোতে অনেক গলদ রয়েছে। আমরা এসব গলদ চিহ্নিত করে সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছি। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনের মান বৃদ্ধি এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “ডিএসইর ভূমিকা গত ১৫ বছরে সংকুচিত হয়ে গেছে। আমরা এই ভূমিকাকে পুনরুদ্ধার করতে চাই। স্টক এক্সচেঞ্জকে বাজার উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে আনতে চাই। এর জন্য স্টক এক্সচেঞ্জের আইনি ক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে। বিশেষ করে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিদর্শন এবং তদন্তে সরাসরি ক্ষমতা পেতে আমরা কাজ করছি।”

অনিয়মকারী কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে ডিএসই ডিলিস্টিং নীতিমালার সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। চেয়ারম্যান বলেন, “যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার পর যৌক্তিক কারণ ছাড়া আর্থিক দুরবস্থায় পড়ে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর বিধান আরোপ করা হবে। এ ধরনের কোম্পানিগুলো যাতে সরকারি সুবিধা না পায় এবং নতুন করে ব্যবসার সুযোগ না পায়, সে জন্য সংশোধিত নীতিমালা তৈরি হচ্ছে।”

মমিনুল ইসলাম শেয়ারবাজারের কারসাজি এবং সুবিধাভোগী লেনদেনকে সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, “ডিএসইর অবস্থান এ ক্ষেত্রে শূন্য সহনশীলতা। বাজারে কারসাজির ঘটনায় যদি ডিএসইর কেউ জড়িত থাকে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারসাজি রোধে প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কারেও কাজ চলছে।”

ডিএসই নতুন ও ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে আর্থিক প্রণোদনার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। কর সুবিধা এবং অন্যান্য আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে আসতে উৎসাহিত করার চেষ্টা চলছে।

তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনের মান নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতার বিষয়টি উল্লেখ করে ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, “কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্তির আগে বেশি লাভজনক দেখানো হয়, কিন্তু পরে তা রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। এটি রোধে আর্থিক প্রতিবেদনের মান উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় ব্রোকারেজ হাউসগুলোর ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে ডিএসই সমন্বিত ব্যাকঅফিস সফটওয়্যার চালুর পরিকল্পনা করেছে। এ ছাড়া বিনিয়োগকারী সহায়তা তহবিলের আকার বাড়ানোর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা হবে।

ডিএসই চেয়ারম্যান আশাবাদী যে, নতুন উদ্যোগগুলো সফল হলে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং বাজারে গতি ফিরে আসবে। তিনি বলেন, “আগামী জুনের মধ্যে শেয়ারবাজারে দৃশ্যমান কিছু পরিবর্তন আশা করছি। ভালো কোম্পানির তালিকাভুক্তি বাজারে গতি সঞ্চার করবে।”

ছবি

২ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ

ছবি

অধিকাংশ শেয়ারের দরপতন, সামান্য বেড়েছে লেনদেন

ছবি

অক্টোবরে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের প্রস্তুতি জাতিসংঘকে জানাতে হবে

ছবি

শ্রমিকের পাওনা পরিশোধে নাসা গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রির সিদ্ধান্ত

ছবি

একনেকে ৮৩৩৩ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন

ছবি

ঢাকায় নিরাপত্তা প্রযুক্তির সর্বশেষ উদ্ভাবন নিয়ে শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী

ছবি

পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক মুখপাত্র মেজবাউল

ছবি

প্রথম চালানে ভারতে গেল সাড়ে ৩৭ টন ইলিশ

ছবি

তাপমাত্রা বাড়ায় বাংলাদেশের ক্ষতি ২১ হাজার কোটি টাকা: বিশ্বব্যাংক

ছবি

পাঁচ বেসরকারি শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করার প্রথম ধাপে প্রশাসক বসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ পেছানোর বিরোধিতা করছে

ছবি

শেয়ারবাজারে লেনদেন নামলো ৬শ’ কোটি টাকার ঘরে

ছবি

ব্যবসা মাঝে মন্থর ছিল, এখন একটু ভালো: অর্থ উপদেষ্টা.

ছবি

অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরে আশাবাদী জাপানি রাষ্ট্রদূত

ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকে সভা: একীভূত হচ্ছে পাঁচ ব্যাংক, বসছে প্রশাসক

ছবি

বিজিএমইএ–মার্কিন প্রতিনিধিদল বৈঠক: শুল্ক কমাতে আহ্বান

ছবি

জুলাই-আগস্টে এডিপি বাস্তবায়ন ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ

ছবি

বিবিএসের নাম পরিবর্তন ও তদারক পরিষদ রাখার সুপারিশ

ছবি

শ্রম আইন সংশোধন দ্রুত শেষ করার তাগিদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের

ছবি

নগদ অর্থের ব্যবহার কমাতে আসছে একীভূত পেমেন্ট সিস্টেম: গভর্নর

ছবি

আড়াই মাসে ১৩৯ কোটি ডলার কিনলো বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

ডিজিটাল ব্যাংক খুলতে আবেদনের সময় বাড়লো ২ নভেম্বর পর্যন্ত

ছবি

পুঁজিবাজারে সূচকের নামমাত্র উত্থান, লেনদেন আরও তলানিতে

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে গড়ে খরচ বাড়লো ৪১ শতাংশ

ছবি

বাংলাদেশের বাজারে লেনোভো ভি সিরিজের নতুন ল্যাপটপ

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরও কমতে পারে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

বাজারে গিগাবাইট এআই টপ ১০০ জেড৮৯০ পিসি

ছবি

কর্মসংস্থানের জরুরি পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা

ছবি

শেয়ারবাজারে বড় পতন, এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন

ছবি

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমার সফটওয়্যার চালু করলো এনবিআর

ছবি

ট্রাস্ট ব্যাংকের এটিএম ও ডেবিট কার্ডসেবা সাময়িক বন্ধ থাকবে

ছবি

বেপজার ইপিজেডগুলোতে শ্রমিকদের দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণ প্রদান শুরু

ছবি

বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিসে আরও ৫ সেবা যুক্ত

ছবি

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পেছাতে ব্যবসায়ীদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান

ছবি

আড়াইগুণ প্রতিষ্ঠানের দরপতনে বাজার মূলধন কমলো ৩ হাজার কোটি টাকা

ছবি

পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে রোববার ঢাকায় আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল

tab

শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে ডিএসইর একগুচ্ছ পদক্ষেপ

ফ্লোর প্রাইসের প্রভাব ও কাঠামোগত সংস্কারের উদ্যোগ জোরদার

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫

দেশের শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরানোর লক্ষ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) নতুন পরিকল্পনা ও নীতি গ্রহণ করেছে। শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরে চলমান আস্থাহীনতা, ফ্লোর প্রাইসের প্রভাব, এবং আর্থিক অনিয়মের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে হতাশা তৈরি হয়েছে, তা কাটাতে ডিএসইর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।

শেয়ারবাজারে বিদ্যমান সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলতে শনিবার সকালে রাজধানীর পল্টনে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’-এ বক্তব্য রাখেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানি ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবু আলীও উপস্থিত ছিলেন।

ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, “শেয়ারবাজারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ দীর্ঘমেয়াদে বাজারের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীসহ বড় দেশীয় বিনিয়োগকারীরা এখনো এই নীতির কারণে বাজারে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন। ফলে শেয়ারবাজারে কাঙ্ক্ষিত বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। এটি একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে।”

তিনি আরও বলেন, “দেশের অর্থনীতিতে প্রকৃত বিনিয়োগ বাড়াতে না পারলে শেয়ারবাজারেও গতি ফিরে আসবে না। উচ্চ সুদহার, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, এবং অন্যান্য আর্থিক খাতের চাপ শেয়ারবাজারের স্থবিরতার অন্যতম কারণ।”

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ চারটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

১. কর প্রণোদনা: শেয়ারবাজারের জন্য আলাদা করসুবিধা দিতে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করা হচ্ছে, আসন্ন বাজেটে এই প্রস্তাবের প্রতিফলন দেখা যাবে।

২. ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্তি: দেশি ও বিদেশি কিছু ভালো মানের কোম্পানিকে দ্রুত তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

৩. নেগেটিভ ইকুইটি সমাধান: ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণাত্মক ঋণহিসাবের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কাজ চলছে।

৪. কারসাজি রোধ: শেয়ারবাজারে সুবিধাভোগী লেনদেন এবং কারসাজি বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।

ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম শেয়ারবাজারের কাঠামোগত সংস্কারের উপর জোর দিয়ে বলেন, “বাজারের নীতিমালা এবং আইনি কাঠামোতে অনেক গলদ রয়েছে। আমরা এসব গলদ চিহ্নিত করে সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছি। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনের মান বৃদ্ধি এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “ডিএসইর ভূমিকা গত ১৫ বছরে সংকুচিত হয়ে গেছে। আমরা এই ভূমিকাকে পুনরুদ্ধার করতে চাই। স্টক এক্সচেঞ্জকে বাজার উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে আনতে চাই। এর জন্য স্টক এক্সচেঞ্জের আইনি ক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে। বিশেষ করে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিদর্শন এবং তদন্তে সরাসরি ক্ষমতা পেতে আমরা কাজ করছি।”

অনিয়মকারী কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে ডিএসই ডিলিস্টিং নীতিমালার সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। চেয়ারম্যান বলেন, “যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার পর যৌক্তিক কারণ ছাড়া আর্থিক দুরবস্থায় পড়ে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর বিধান আরোপ করা হবে। এ ধরনের কোম্পানিগুলো যাতে সরকারি সুবিধা না পায় এবং নতুন করে ব্যবসার সুযোগ না পায়, সে জন্য সংশোধিত নীতিমালা তৈরি হচ্ছে।”

মমিনুল ইসলাম শেয়ারবাজারের কারসাজি এবং সুবিধাভোগী লেনদেনকে সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, “ডিএসইর অবস্থান এ ক্ষেত্রে শূন্য সহনশীলতা। বাজারে কারসাজির ঘটনায় যদি ডিএসইর কেউ জড়িত থাকে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারসাজি রোধে প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কারেও কাজ চলছে।”

ডিএসই নতুন ও ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে আর্থিক প্রণোদনার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। কর সুবিধা এবং অন্যান্য আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে আসতে উৎসাহিত করার চেষ্টা চলছে।

তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনের মান নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতার বিষয়টি উল্লেখ করে ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, “কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্তির আগে বেশি লাভজনক দেখানো হয়, কিন্তু পরে তা রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। এটি রোধে আর্থিক প্রতিবেদনের মান উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় ব্রোকারেজ হাউসগুলোর ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে ডিএসই সমন্বিত ব্যাকঅফিস সফটওয়্যার চালুর পরিকল্পনা করেছে। এ ছাড়া বিনিয়োগকারী সহায়তা তহবিলের আকার বাড়ানোর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা হবে।

ডিএসই চেয়ারম্যান আশাবাদী যে, নতুন উদ্যোগগুলো সফল হলে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং বাজারে গতি ফিরে আসবে। তিনি বলেন, “আগামী জুনের মধ্যে শেয়ারবাজারে দৃশ্যমান কিছু পরিবর্তন আশা করছি। ভালো কোম্পানির তালিকাভুক্তি বাজারে গতি সঞ্চার করবে।”

back to top