বিতরণ করা মোট ঋণের ৩০ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এটি ব্যাংক খাতের গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে
প্রশাসনিক দুর্বলতা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়া নজরদারির অভাবে ব্যাংকিং খাত দুর্বল হয়ে পড়েছে বলেও মনে করছে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। সোমবার চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের প্রকাশিত মুদ্রানীতিতে খেলাপি ঋণ ও ব্যাংক খাত নিয়ে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে। সবশেষ প্রকাশিত সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের তথ্য বলছে, বতর্মানে বিতরণ করা মোট ঋণের সাড়ে ১২ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।
এদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর তার আমলের প্রথম মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত সময়ের এ মুদ্রানীতিতে চড়তে থাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার ১০ শতাংশ রাখা ঘোষণা দেওয়া হয়।
প্রকাশিত মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ব্যাংকিং খাতে এত পরিমাণে খেলাপি ঋণ গভীর উদ্বেগের কারণে হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া অনেক ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগছে। এসব ব্যাংকে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমেছে এবং ঋণ আদায়ের গতিও তেমন নেই। তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে প্রথমে আন্তঃব্যাংক ও পরে সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
সবশেষ হালনাগাদ সেপ্টেম্বর প্রান্তিক পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত তথ্য বলছে, ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা। এটি বিতরণ করা ঋণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিক জুন শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। তখন দেশের ব্যাংকগুলো থেকে বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ ছিল খেলাপি। তবে বিপুল এ খেলাপি ঋণ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ শ্রেণিবিভাগ ও আদায়ের জন্য আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলনের সঙ্গে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ বিস্তৃত ব্যবস্থা’ চালু করার কথা মুদ্রানীতিতে তুলে ধরেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ‘সুশাসন উন্নত করতে আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কঠোর নিয়মকানুন প্রয়োগ করতেও প্রস্তুত। দেশের ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা এবং জনসাধারণের আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য নিয়ন্ত্রক তদারকি জোরদার করা এবং এই সংস্কারগুলি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। ব্যাংকিং খাতের সংস্কার নিয়ে কাজ চলছে। এসব ব্যাংকে ফরেনসিক অডিট চলছে। এসব ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে আরও জানা যাবে। তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা প্রদান করা হবে। প্রত্যেক আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। দরকার হলে তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে সামনে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।’
ব্যাংকখাতের চলমান তারল্য সংকট সমাধানে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর কিছু ব্যাংকে তারল্য সংকটের সমাধান হয়েছে।’
এদিকে ট্রেজারি বিল-বন্ডে সাম্প্রতিক সময়ে মুনাফা বেশি হওয়ায় ব্যাংকগুলো এ খাতে বেশি বিনিয়োগ করেছে। তবে মুনাফার এ আকর্ষণ আর বেশি দিন থাকবে না বলে ব্যাংকগুলোকে মনে করিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মোঃ হাবিবুর রহমান। তিনি আরও বলেন, ‘এরইমধ্যে বিল-বন্ডে সুদের হার কমতে শুরু করেছে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক এমন কার্যকরি নীতি গ্রহণ করবে যাতে ব্যাংকগুলো এ খাত থেকে বেশি মুনাফা করতে না পারে।’
বিতরণ করা মোট ঋণের ৩০ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এটি ব্যাংক খাতের গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে
মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রশাসনিক দুর্বলতা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়া নজরদারির অভাবে ব্যাংকিং খাত দুর্বল হয়ে পড়েছে বলেও মনে করছে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। সোমবার চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের প্রকাশিত মুদ্রানীতিতে খেলাপি ঋণ ও ব্যাংক খাত নিয়ে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে। সবশেষ প্রকাশিত সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের তথ্য বলছে, বতর্মানে বিতরণ করা মোট ঋণের সাড়ে ১২ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।
এদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর তার আমলের প্রথম মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত সময়ের এ মুদ্রানীতিতে চড়তে থাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার ১০ শতাংশ রাখা ঘোষণা দেওয়া হয়।
প্রকাশিত মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ব্যাংকিং খাতে এত পরিমাণে খেলাপি ঋণ গভীর উদ্বেগের কারণে হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া অনেক ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগছে। এসব ব্যাংকে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমেছে এবং ঋণ আদায়ের গতিও তেমন নেই। তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে প্রথমে আন্তঃব্যাংক ও পরে সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
সবশেষ হালনাগাদ সেপ্টেম্বর প্রান্তিক পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত তথ্য বলছে, ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা। এটি বিতরণ করা ঋণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিক জুন শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। তখন দেশের ব্যাংকগুলো থেকে বিতরণ করা ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ ছিল খেলাপি। তবে বিপুল এ খেলাপি ঋণ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ শ্রেণিবিভাগ ও আদায়ের জন্য আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলনের সঙ্গে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ বিস্তৃত ব্যবস্থা’ চালু করার কথা মুদ্রানীতিতে তুলে ধরেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ‘সুশাসন উন্নত করতে আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কঠোর নিয়মকানুন প্রয়োগ করতেও প্রস্তুত। দেশের ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা এবং জনসাধারণের আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য নিয়ন্ত্রক তদারকি জোরদার করা এবং এই সংস্কারগুলি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। ব্যাংকিং খাতের সংস্কার নিয়ে কাজ চলছে। এসব ব্যাংকে ফরেনসিক অডিট চলছে। এসব ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে আরও জানা যাবে। তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা প্রদান করা হবে। প্রত্যেক আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। দরকার হলে তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে সামনে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।’
ব্যাংকখাতের চলমান তারল্য সংকট সমাধানে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর কিছু ব্যাংকে তারল্য সংকটের সমাধান হয়েছে।’
এদিকে ট্রেজারি বিল-বন্ডে সাম্প্রতিক সময়ে মুনাফা বেশি হওয়ায় ব্যাংকগুলো এ খাতে বেশি বিনিয়োগ করেছে। তবে মুনাফার এ আকর্ষণ আর বেশি দিন থাকবে না বলে ব্যাংকগুলোকে মনে করিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মোঃ হাবিবুর রহমান। তিনি আরও বলেন, ‘এরইমধ্যে বিল-বন্ডে সুদের হার কমতে শুরু করেছে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক এমন কার্যকরি নীতি গ্রহণ করবে যাতে ব্যাংকগুলো এ খাত থেকে বেশি মুনাফা করতে না পারে।’