আর্থিক সংকটাপন্ন ইসলামিক শরিয়াভিত্তিক পাঁচ বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করে আর্থিক সংকটাপন্ন ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করে একটি ব্যাংক করা হচ্ছে। এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। নতুন ব্যাংকের জন্য দুটি নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। একটি হলো ‘ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক’, অপরটি হলো ‘সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক’।
নতুন ব্যাংকের জন্য ‘ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক’, ও ‘সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক’ নামে দুটি নাম প্রস্তাব করা হয়েছে
প্রথমে এটা রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংক হবে, পরে বেসরকারি খাতে দেয়া হবে
ব্যাংকগুলোর কেউ চাকরি ও আমানত হারাবেন না
বৃহস্পতিবার, (০৯ অক্টোবর ২০২৫) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে এ সিদ্ধান্ত জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রেস সচিব জানান, ব্যাংকগুলো একীভূত করার ফলে কেউ চাকরি হারাবেন না এবং কোনো আমানতকারীও তার আমানত হারাবেন না। প্রাথমিকভাবে এটি রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক হবে। পরে পর্যায়ক্রমে মালিকানা বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করা হবে। শফিকুল বলেন, ‘আমরা আশা করছি, পাঁচ বছরের মধ্যে ব্যাংকটি বেসরকারি খাতে দেওয়া হবে।’
যে পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করে একটি নতুন ব্যাংক হবে সেগুলো হচ্ছে- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। আইসিবি ব্যাংক এই তালিকায় থাকলেও শেয়ার মালিকানা বিষয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান থাকার কারণে সেটিকে এই প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবিত ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা, আর পরিশোধিত মূলধন থাকবে আনুমানিক ৩৫ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত নতুন ব্যাংকের মূলধন বিষয়ে প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী বেইল ইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের ১৫ হাজার কোটি টাকার আমানত মূলধনে রূপান্তর করা যেতে পারে। বাকি ২০ হাজার কোটি টাকা সরকার মূলধন হিসেবে দেবে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ উদ্যোগ ইসলামি ব্যাংকখাতের দীর্ঘদিনের অনিয়ম-দুর্নীতি মোকাবিলা করে গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনবে। একীভূত হওয়ার পর বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদ ও এমডির পদ শূন্য হবে এবং শেয়ার শূন্য ঘোষণা করা হবে। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আমানতকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নতুন ব্যাংকের অধীনে সব সম্পদ ও দায়ভার স্থানান্তরিত হওয়ার পরই ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে।
জানা গেছে, পাঁচ ব্যাংকের ঋণের ৪৮ থেকে ৯৮ শতাংশ পর্যন্তই খেলাপি। একীভূতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা, যার মধ্যে সরকার দেবে ২০ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকের মধ্যে চারটি দীর্ঘদিন ধরে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এছাড়া এক্সিম ব্যাংক ছিল নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের অধীনে।
চলতি মাসের শুরুতে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনটি ব্যাংক (ফার্স্ট সিকিউরিটি, ইউনিয়ন ও গ্লোবাল) একীভূত হতে সম্মতি দেয়। তবে এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক সময় চাইলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর সুযোগ দেয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, এই একীভূতকরণের মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠন করে ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা আনা সম্ভব হবে। নির্দিষ্ট সময় পর নতুন ব্যাংকের শেয়ার বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হবে এবং বড় অঙ্কের আমানতকারীদের শেয়ার নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে। ছোট আমানতকারীরা চাইলে তাদের টাকা তুলতে পারবেন, এতে কোনো বাধা থাকবে না।
উল্লেখ্য, পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের একীভূত কার্যক্রম বাস্তবায়নে গত ৮ সেপ্টেম্বর আট সদস্যের একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. কবির আহাম্মদকে আহ্বায়ক করে গঠিত এ কমিটিতে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
আর্থিক সংকটাপন্ন ইসলামিক শরিয়াভিত্তিক পাঁচ বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করে আর্থিক সংকটাপন্ন ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করে একটি ব্যাংক করা হচ্ছে। এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। নতুন ব্যাংকের জন্য দুটি নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। একটি হলো ‘ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক’, অপরটি হলো ‘সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক’।
নতুন ব্যাংকের জন্য ‘ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক’, ও ‘সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক’ নামে দুটি নাম প্রস্তাব করা হয়েছে
প্রথমে এটা রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংক হবে, পরে বেসরকারি খাতে দেয়া হবে
ব্যাংকগুলোর কেউ চাকরি ও আমানত হারাবেন না
বৃহস্পতিবার, (০৯ অক্টোবর ২০২৫) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে এ সিদ্ধান্ত জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রেস সচিব জানান, ব্যাংকগুলো একীভূত করার ফলে কেউ চাকরি হারাবেন না এবং কোনো আমানতকারীও তার আমানত হারাবেন না। প্রাথমিকভাবে এটি রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক হবে। পরে পর্যায়ক্রমে মালিকানা বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করা হবে। শফিকুল বলেন, ‘আমরা আশা করছি, পাঁচ বছরের মধ্যে ব্যাংকটি বেসরকারি খাতে দেওয়া হবে।’
যে পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করে একটি নতুন ব্যাংক হবে সেগুলো হচ্ছে- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। আইসিবি ব্যাংক এই তালিকায় থাকলেও শেয়ার মালিকানা বিষয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান থাকার কারণে সেটিকে এই প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবিত ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা, আর পরিশোধিত মূলধন থাকবে আনুমানিক ৩৫ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত নতুন ব্যাংকের মূলধন বিষয়ে প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী বেইল ইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের ১৫ হাজার কোটি টাকার আমানত মূলধনে রূপান্তর করা যেতে পারে। বাকি ২০ হাজার কোটি টাকা সরকার মূলধন হিসেবে দেবে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ উদ্যোগ ইসলামি ব্যাংকখাতের দীর্ঘদিনের অনিয়ম-দুর্নীতি মোকাবিলা করে গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনবে। একীভূত হওয়ার পর বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদ ও এমডির পদ শূন্য হবে এবং শেয়ার শূন্য ঘোষণা করা হবে। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আমানতকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নতুন ব্যাংকের অধীনে সব সম্পদ ও দায়ভার স্থানান্তরিত হওয়ার পরই ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে।
জানা গেছে, পাঁচ ব্যাংকের ঋণের ৪৮ থেকে ৯৮ শতাংশ পর্যন্তই খেলাপি। একীভূতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা, যার মধ্যে সরকার দেবে ২০ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকের মধ্যে চারটি দীর্ঘদিন ধরে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এছাড়া এক্সিম ব্যাংক ছিল নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের অধীনে।
চলতি মাসের শুরুতে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনটি ব্যাংক (ফার্স্ট সিকিউরিটি, ইউনিয়ন ও গ্লোবাল) একীভূত হতে সম্মতি দেয়। তবে এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক সময় চাইলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর সুযোগ দেয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, এই একীভূতকরণের মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠন করে ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা আনা সম্ভব হবে। নির্দিষ্ট সময় পর নতুন ব্যাংকের শেয়ার বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হবে এবং বড় অঙ্কের আমানতকারীদের শেয়ার নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে। ছোট আমানতকারীরা চাইলে তাদের টাকা তুলতে পারবেন, এতে কোনো বাধা থাকবে না।
উল্লেখ্য, পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের একীভূত কার্যক্রম বাস্তবায়নে গত ৮ সেপ্টেম্বর আট সদস্যের একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. কবির আহাম্মদকে আহ্বায়ক করে গঠিত এ কমিটিতে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।