alt

ডিমের দাম বাড়লো ডজনে ১০ টাকা, বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা বেড়েছে। এছাড়া আগের মতোই চড়া রয়েছে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। আর ব্যবসায়ীদের ঘোষিত বাড়তি দামের ভোজ্যতেল বাজারে বিক্রি হতে দেখা যায়নি। গত দুই সপ্তাহ ধরে সরবরাহ কমে যাওয়ায় রুই, কাতলা, চিংড়ি, ট্যাংরা থেকে শুরু করে ছোট মাছ সব কিছুর দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত। এদিকে গত কয়েক মাস যাবৎ মধ্য ও নিম্নবিত্তদের জন্য গরু ও মুরগির বাজারেও স্বস্তির দেখা নেই। সবকিছুর দাম এখন ক্রেতার নাগালের বাইরে।

অধিকাংশ মাছের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ৪০-৫০ টাকা

সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে আগের দামেই

ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১০-১৫ টাকা

খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে সব ধরনের সবজি ও মাছের দাম তুলনামূলক বেশি। এ কারণে ডিমের চাহিদা বেড়েছে। তাই দাম কিছুটা বাড়তি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, শুক্রবার,(১৭ অক্টোবর ২০২৫) ঢাকার বাজারে ফার্মের মুরগির এক ডজন (১২টি) বাদামি ডিম ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই দাম সপ্তাহখানেক আগে ১০ টাকা কম ছিল অর্থাৎ ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অবশ্য ফার্মের মুরগির সাদা ডিমের দাম ডজনে ৫ টাকা কম রয়েছে।

গত সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ছয় টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো। তাতে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে হতো ১৯৫ টাকা। কিন্তু দাম বাড়ার বিষয়ে এখনও অনুমোদন দেয়নি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীদের ঘোষিত নতুন দরের সয়াবিন বাজারে আসেনি। প্রতি লিটার ১৮৯ টাকার মধ্যেই বিক্রি হয়েছে।

চালের দামেও কোনো পরিবর্তন নেই। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের মধ্যে ডায়মন্ড, মঞ্জুর ও সাগর ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৮০ টাকা, রসিদ ৭২ টাকা ও মোজাম্মেল মিনিকেট ৮৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।

দুই সপ্তাহ আগে বৃষ্টির কারণে হঠাৎ কাঁচামরিচের দাম অনেকটা বেড়েছিল। তখন খুচরা দোকানে এক কেজি মরিচের দাম ৪০০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এখন সেই দাম কমেছে। শুক্রবার বাজারে প্রতি কেজি মরিচ ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাড়া-মহল্লায় এ দাম আরও কিছুটা বেশি।

মরিচের দাম কমলেও চড়া রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম। এখন মূলত সবজি নিয়েই সাধারণ ক্রেতাদের উদ্বেগ বেশি। কারণ, বেশির ভাগ সবজি ৬০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কিছু সবজির দাম শতক ছাড়িয়েছে। সাধারণত বছরের এ সময়ে শীতের আগাম কিছু সবজি বাজারে আসে। কিন্তু এ বছর সেটি হয়নি। এর কারণও অবশ্য বৃষ্টি।

সবজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বেগুন ও টমেটোর। এর মধ্যে ১০০ টাকার নিচে কোনো বেগুন কেনা যায় না। আকার ও ধরনভেদে প্রতি কেজি বেগুন ১০০-১৮০ টাকায় বিক্রি

হয়েছে। দেশে এখন টমেটো উৎপাদন হয় না; ভারত থেকে আমদানি করা টমেটো বাজারে পাওয়া যায়। এগুলোর দাম বেশি; কেজি ১২০-১৪০ টাকা।

করলা, কাঁকরোল, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, লতি এই সবজিগুলোর দাম ৮০-১০০ টাকা। আর পটোল, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, লাউয়ের কেজি ৬০-৮০ টাকা। তবে সবজির মান খুব ভালো অর্থাৎ টাটকা হলে অনেক বিক্রেতা আরও বেশি দাম রাখেন। অবশ্য ৪০ টাকায় এক কেজি মিষ্টিকুমড়া ও ৩০ টাকায় পেঁপে কিনে কেউ কেউ সান্তনা নিতে পারেন। কারণ, এগুলোর দামই একটু কম রয়েছে। কম রয়েছে আলুর দামও। এক কেজি কেনা যায় ২০-২২ টাকায়। পেঁয়াজের ৭৫-৮০ টাকায় স্থিতিশীল আছে।

ইলিশ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর থেকেই রাজধানীর বাজারে দেখা দিয়েছে মাছের টানাপোড়েন। গত দুই সপ্তাহ ধরে সরবরাহ কমে যাওয়ায় রুই, কাতলা, চিংড়ি, ট্যাংরা থেকে শুরু করে ছোট মাছ সব কিছুর দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত। এ দিকে গত কয়েক মাস যাবৎ মধ্য-নিম্নবিত্তদের জন্য গরু-মুরগির বাজারেও স্বস্তির দেখা নেই। সবকিছুর দাম এখন ক্রেতার নাগালের বাইরে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার বাজারে ইলিশ বিক্রেতাদের দেখা মেলেনি। অন্যদিকে কাচকি, ট্যাংরা, চিংড়ি, বাতাসি, পাবদা- সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে আগের তুলনায়। কাচকি মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫০০-৬০০ টাকায়, ট্যাংরা, কাজলি, চিংড়ি ও বাতাসি মাছ বিক্রি হয়েছে ৮০০-১০০০ টাকায়।

চাষের রুই ও কাতলা মাছ আকারভেদে বিক্রি হয়েছে ৩৫০-৪৫০ টাকায়, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকায়। পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ও সিলভার কার্প ২২০-২৬০ টাকায়। ছোট আকারের তেলাপিয়া ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ৪-২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা ও বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ। এতে শুধু ইলিশ নয়, নদীতে জেলেরা অন্য মাছ ধরতেও বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন যার কারণে বাজারে মাছের আমদানি কমে গিয়ে সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে।

বিক্রেতারা বলছেন, ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় বাজারে মাছের সরবরাহ কমে গেছে। ফলে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অন্য মাছের দাম কিছুটা বাড়ছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। তারপরও মাছের বাজারে এখন আগের চেয়ে ৩০-৪০ টাকা কেজিতে বেশি দিতে হচ্ছে। মাঝারি আকারের ভালো মাছ কিনতে গেলে ১,০০০ টাকার নিচে ঘরে ফেরা সম্ভব হচ্ছে না।

মাছের পাশাপাশি মুরগির দামও বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা। ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬৫-১৭০ টাকা। সোনালি মুরগি ২৯০-৩০০, আর দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭৫০-৮০০ টাকায়, খাসি ১১০০-১২০০ টাকায়, আর বকরি ৯০০-১০০০ টাকায়। দাম অপরিবর্তিত থাকলেও ক্রেতারা বলছেন, অন্য পণ্যদ্রব্যের সঙ্গে মিলিয়ে এখন এসবও ‘বিলাসিতা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ছবি

মোংলা বন্দরের মাধ্যমে শতভাগ রিকন্ডিশন গাড়ি আমদানির পরিকল্পনা

ছবি

দেশের ব্যবসার পরিবেশে তেমন উন্নতি হয়নি: বিবিএক্স জরিপ

ছবি

প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড, ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

ছবি

অক্টোবরের ১৫ দিনে রেমিট্যান্স সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা

ছবি

যেসব কারণে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে আইএমএফ

ছবি

কাঁচা পাট রপ্তানিতে সরকারি অনুমতির বাধ্যবাধকতা শিথিল চায় নেপাল

ছবি

পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতের কোম্পানি বাড়াতে সেমিনার করবে বিজিএমইএ

ছবি

দেশে আন্তর্জাতিক মানের সবুজ কারখানা ২৬৮টি

ছবি

বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিলেন মেজর জেনারেল মোয়াজ্জেম

ছবি

ওসিরিস গ্রুপের সঙ্গে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু এশিয়া গ্রুপের

ছবি

কর জাল সম্প্রসারণে ১২ নতুন কাস্টম অফিস, ৩৫৯৭ লোকবল নেবে এনবিআর

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত ট্যারিফ, শিপিং ব্যয় বাড়ার প্রভাব পড়বে ভোক্তাদের ওপর

ছবি

ভারত থেকে ঢুকছে জাল টাকা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্ক বার্তা

ছবি

গ্রাহক আস্থায় ব্যাংকের তুলনায় অনেক পিছিয়ে বিমা খাত

ছবি

১ ও ২ টাকার মুদ্রা না নেয়ার চেষ্টা আইনের লঙ্ঘন: বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

আইসিসিবিতে বসেছে ৩ দিনব্যাপী ইন্টেরিয়র-ফার্নিচার-সাইনেজ এক্সপো

ছবি

স্বর্ণের দাম বাড়ছেই

ভবিষ্যৎ নীতিতে খাদ্য অধিকারকে অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান

ছবি

কঠিন শর্তে আইএমএফ-এর অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

ছবি

চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৪.৯ শতাংশ: আইএমএফ

ছবি

ব্যাংক থেকে আরও ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার কিনলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে ৫৬ সেবায় বাড়তি ট্যারিফ কার্যকর

ছবি

সঞ্চয়পত্রের সুদহার আরও কমাতে যাচ্ছে সরকার

ছবি

এনবিআরের কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগে নতুন ১২ দপ্তর

ছবি

ডিজিটাল লেনদেন ব্যবসায় আসছে রবি ও বাংলালিংক

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে মধ্যরাত থেকে বর্ধিত ট্যারিফ চালু, গড়ে ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি

ছবি

সরকার ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায়নি: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

মোবাইল ব্যাংক থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠাতে হাজারে খরচ হবে সাড়ে ৮ টাকা

ছবি

ভেজাল ও নকলকারীদের বিরুদ্ধে বিএসটিআইকে আরও কঠোর হতে হবে, বিশ্ব মান দিবসে বক্তারা

ছবি

ঢাকায় ৫ দিনব্যাপী ফার্নিচার মেলা শুরু

ছবি

কৃষি ও এসএমই ঋণ বাড়াতে নিরাপত্তা সঞ্চিতিতে ছাড় পেল ব্যাংকগুলো

ছবি

শিল্প আমদানিকারকদের নতুন সুবিধা দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

বাংলাদেশে সংস্কার অগ্রগতি যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ আগ্রহ বাড়াবে: অর্থ উপদেষ্টা

শেরপুরে দুধের বাজারে ঘণ্টায় লাখ লাখ টাকার দুধ বিক্রি

ছবি

‘প্রযুক্তির মাধ্যমেই টেকসই প্রবৃদ্ধি’র ব্যাখ্যা দিয়ে অর্থনীতিতে নোবেল জয় তিন গবেষকের

ছবি

দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মর্যাদা পেল কক্সবাজার বিমানবন্দর

tab

ডিমের দাম বাড়লো ডজনে ১০ টাকা, বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা বেড়েছে। এছাড়া আগের মতোই চড়া রয়েছে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। আর ব্যবসায়ীদের ঘোষিত বাড়তি দামের ভোজ্যতেল বাজারে বিক্রি হতে দেখা যায়নি। গত দুই সপ্তাহ ধরে সরবরাহ কমে যাওয়ায় রুই, কাতলা, চিংড়ি, ট্যাংরা থেকে শুরু করে ছোট মাছ সব কিছুর দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত। এদিকে গত কয়েক মাস যাবৎ মধ্য ও নিম্নবিত্তদের জন্য গরু ও মুরগির বাজারেও স্বস্তির দেখা নেই। সবকিছুর দাম এখন ক্রেতার নাগালের বাইরে।

অধিকাংশ মাছের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ৪০-৫০ টাকা

সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে আগের দামেই

ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১০-১৫ টাকা

খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে সব ধরনের সবজি ও মাছের দাম তুলনামূলক বেশি। এ কারণে ডিমের চাহিদা বেড়েছে। তাই দাম কিছুটা বাড়তি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, শুক্রবার,(১৭ অক্টোবর ২০২৫) ঢাকার বাজারে ফার্মের মুরগির এক ডজন (১২টি) বাদামি ডিম ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই দাম সপ্তাহখানেক আগে ১০ টাকা কম ছিল অর্থাৎ ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অবশ্য ফার্মের মুরগির সাদা ডিমের দাম ডজনে ৫ টাকা কম রয়েছে।

গত সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ছয় টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো। তাতে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে হতো ১৯৫ টাকা। কিন্তু দাম বাড়ার বিষয়ে এখনও অনুমোদন দেয়নি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এমন পরিস্থিতিতে শুক্রবার বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীদের ঘোষিত নতুন দরের সয়াবিন বাজারে আসেনি। প্রতি লিটার ১৮৯ টাকার মধ্যেই বিক্রি হয়েছে।

চালের দামেও কোনো পরিবর্তন নেই। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের মধ্যে ডায়মন্ড, মঞ্জুর ও সাগর ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৮০ টাকা, রসিদ ৭২ টাকা ও মোজাম্মেল মিনিকেট ৮৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।

দুই সপ্তাহ আগে বৃষ্টির কারণে হঠাৎ কাঁচামরিচের দাম অনেকটা বেড়েছিল। তখন খুচরা দোকানে এক কেজি মরিচের দাম ৪০০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এখন সেই দাম কমেছে। শুক্রবার বাজারে প্রতি কেজি মরিচ ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাড়া-মহল্লায় এ দাম আরও কিছুটা বেশি।

মরিচের দাম কমলেও চড়া রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম। এখন মূলত সবজি নিয়েই সাধারণ ক্রেতাদের উদ্বেগ বেশি। কারণ, বেশির ভাগ সবজি ৬০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কিছু সবজির দাম শতক ছাড়িয়েছে। সাধারণত বছরের এ সময়ে শীতের আগাম কিছু সবজি বাজারে আসে। কিন্তু এ বছর সেটি হয়নি। এর কারণও অবশ্য বৃষ্টি।

সবজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বেগুন ও টমেটোর। এর মধ্যে ১০০ টাকার নিচে কোনো বেগুন কেনা যায় না। আকার ও ধরনভেদে প্রতি কেজি বেগুন ১০০-১৮০ টাকায় বিক্রি

হয়েছে। দেশে এখন টমেটো উৎপাদন হয় না; ভারত থেকে আমদানি করা টমেটো বাজারে পাওয়া যায়। এগুলোর দাম বেশি; কেজি ১২০-১৪০ টাকা।

করলা, কাঁকরোল, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, লতি এই সবজিগুলোর দাম ৮০-১০০ টাকা। আর পটোল, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, লাউয়ের কেজি ৬০-৮০ টাকা। তবে সবজির মান খুব ভালো অর্থাৎ টাটকা হলে অনেক বিক্রেতা আরও বেশি দাম রাখেন। অবশ্য ৪০ টাকায় এক কেজি মিষ্টিকুমড়া ও ৩০ টাকায় পেঁপে কিনে কেউ কেউ সান্তনা নিতে পারেন। কারণ, এগুলোর দামই একটু কম রয়েছে। কম রয়েছে আলুর দামও। এক কেজি কেনা যায় ২০-২২ টাকায়। পেঁয়াজের ৭৫-৮০ টাকায় স্থিতিশীল আছে।

ইলিশ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর থেকেই রাজধানীর বাজারে দেখা দিয়েছে মাছের টানাপোড়েন। গত দুই সপ্তাহ ধরে সরবরাহ কমে যাওয়ায় রুই, কাতলা, চিংড়ি, ট্যাংরা থেকে শুরু করে ছোট মাছ সব কিছুর দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৪০-৫০ টাকা পর্যন্ত। এ দিকে গত কয়েক মাস যাবৎ মধ্য-নিম্নবিত্তদের জন্য গরু-মুরগির বাজারেও স্বস্তির দেখা নেই। সবকিছুর দাম এখন ক্রেতার নাগালের বাইরে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার বাজারে ইলিশ বিক্রেতাদের দেখা মেলেনি। অন্যদিকে কাচকি, ট্যাংরা, চিংড়ি, বাতাসি, পাবদা- সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে আগের তুলনায়। কাচকি মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫০০-৬০০ টাকায়, ট্যাংরা, কাজলি, চিংড়ি ও বাতাসি মাছ বিক্রি হয়েছে ৮০০-১০০০ টাকায়।

চাষের রুই ও কাতলা মাছ আকারভেদে বিক্রি হয়েছে ৩৫০-৪৫০ টাকায়, পাবদা ৪০০-৪৫০ টাকায়। পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ও সিলভার কার্প ২২০-২৬০ টাকায়। ছোট আকারের তেলাপিয়া ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ৪-২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা ও বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ। এতে শুধু ইলিশ নয়, নদীতে জেলেরা অন্য মাছ ধরতেও বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন যার কারণে বাজারে মাছের আমদানি কমে গিয়ে সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে।

বিক্রেতারা বলছেন, ইলিশ ধরা বন্ধ থাকায় বাজারে মাছের সরবরাহ কমে গেছে। ফলে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অন্য মাছের দাম কিছুটা বাড়ছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। তারপরও মাছের বাজারে এখন আগের চেয়ে ৩০-৪০ টাকা কেজিতে বেশি দিতে হচ্ছে। মাঝারি আকারের ভালো মাছ কিনতে গেলে ১,০০০ টাকার নিচে ঘরে ফেরা সম্ভব হচ্ছে না।

মাছের পাশাপাশি মুরগির দামও বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা। ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬৫-১৭০ টাকা। সোনালি মুরগি ২৯০-৩০০, আর দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৭৫০-৮০০ টাকায়, খাসি ১১০০-১২০০ টাকায়, আর বকরি ৯০০-১০০০ টাকায়। দাম অপরিবর্তিত থাকলেও ক্রেতারা বলছেন, অন্য পণ্যদ্রব্যের সঙ্গে মিলিয়ে এখন এসবও ‘বিলাসিতা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

back to top