দেশের পুঁজিবাজার বেশ কিছুদিন ধরে পতনের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। রোববার নতুন সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) অধিকাংশ শেয়ার ও ইউনিটের দরপতন হয়েছে। এদিন এক্সচেঞ্জটির সবগুলো সূচক দেড় শতাংশ থেকে ২ শতাংশের বেশি কমেছে। এর মধ্যে প্রধান মূল্যসূচক প্রায় সাড়ে ৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমেছে। আর বাজারে বিক্রির চাপ বেশি থাকলেও ক্রেতা সংকট দেখা গেছে। এতে ডিএসইর সার্বিক লেনদেন প্রায় ৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইতে রোববার মোট ৩৯৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৪টির। বিপরীতে কমেছে ৩১৪টির। আর ৩৮টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। দর কমা সিকিউরিটিজগুলোর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ১৭৫টি, ‘বি’ ক্যাটাগরির ৭১টি এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৬৮টি শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে।
অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দর কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ কমে ৫ হাজার ৪৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সূচকটির এই অবস্থান গত ৯ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন। ওইদিন ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ৩৫ পয়েন্টে অবস্থান করছিল। এরপর সূচকটির আজকের পয়েন্টের নিচে আসেনি। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ২৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২১ শতাংশ কমে ১ হাজার ৬২ পয়েন্টে এবং ডিএসইর বাছাই করা ৩০ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৩০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫১ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৩৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারে কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন গুজব ঘুরপাক খাচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো মার্জিন ঋণ বিধিমালায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ না দেখার গুজব। কিছু অসাধু ব্যক্তি ও ব্রোকারেজ হাউস তাদের নিজেদের স্বার্থে মার্জিন ঋণ নিয়ে এ ধরনের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এতে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারী প্যানিক সেল দিচ্ছে, যা বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এছাড়া, পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণ, কয়েকটি ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) বন্ধের সিদ্ধান্ত এবং সাম্প্রতিক সময়ের জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর খারাপ পারফরম্যান্সের কারণও বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, ‘মার্জিন ঋণ নিয়ে একটি শ্রেণি বাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক তথ্য ছড়াচ্ছে। যারা বাজারে প্যানিক সেল দিচ্ছে এবং এসব গুজব ছড়াচ্ছে, তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। যেখানে মার্জিন ঋণ নিয়ে আইন এখনো পাশ হয়নি, সেখানে যারা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে, তারা নিঃসন্দেহে খারাপ উদ্দেশ্যে এই গুজব ছড়াচ্ছে।’
পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের এই সদস্য আরো বলেন, ‘নতুন আইন পাশ হওয়ার আগে কোন ব্রোকারেজ হাউজও যদি বিনিয়োগকারীদের মাঝে ভূল বার্তা ছড়ায়, তাহলে ওই ব্রোকারেজ হাউজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বাজারের স্বার্থে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার অনুরোধ জানান।’
এদিকে, আজ পেনিক সেলসহ বিভিন্ন কারণে বাজারে বিক্রয় আদেশ বেশি থাকলেও ক্রয় আদেশ ছিল সেই তুলনায় অনেক কম। ডিএসইতে মোট ৪৪২ কোটি ৪০ টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেন চলতি বছরের ২৫ জুনের পর সর্বনিম্ন। ওইদিন এক্সচেঞ্জটিতে ৪১৩ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছিল।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) রোববার সবগুলো মূল্যসূচকে বড় পতন হয়েছে। এ বাজারে অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দরপতন হলেও সার্বিক লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএসপিআই ১৯৫ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ২৭৪ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। আর সিএসসিএক্স সূচকটি ১১৪ পয়েন্ট কমে ৮ হাজার ৭৮৪ পয়েন্টে নেমেছে।
সিএসইতে মোট ১৭৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে এবং কমেছে ১৩৪টির। আর ১৩টির দর দিন শেষে অপরিবর্তিত ছিল। রোববার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এক্সচেঞ্জটিতে সার্বিক লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। রোববার ৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছিল।
সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
দেশের পুঁজিবাজার বেশ কিছুদিন ধরে পতনের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। রোববার নতুন সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) অধিকাংশ শেয়ার ও ইউনিটের দরপতন হয়েছে। এদিন এক্সচেঞ্জটির সবগুলো সূচক দেড় শতাংশ থেকে ২ শতাংশের বেশি কমেছে। এর মধ্যে প্রধান মূল্যসূচক প্রায় সাড়ে ৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমেছে। আর বাজারে বিক্রির চাপ বেশি থাকলেও ক্রেতা সংকট দেখা গেছে। এতে ডিএসইর সার্বিক লেনদেন প্রায় ৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইতে রোববার মোট ৩৯৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৪টির। বিপরীতে কমেছে ৩১৪টির। আর ৩৮টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। দর কমা সিকিউরিটিজগুলোর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ১৭৫টি, ‘বি’ ক্যাটাগরির ৭১টি এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৬৮টি শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে।
অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দর কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ কমে ৫ হাজার ৪৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সূচকটির এই অবস্থান গত ৯ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন। ওইদিন ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ৩৫ পয়েন্টে অবস্থান করছিল। এরপর সূচকটির আজকের পয়েন্টের নিচে আসেনি। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ২৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২১ শতাংশ কমে ১ হাজার ৬২ পয়েন্টে এবং ডিএসইর বাছাই করা ৩০ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৩০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫১ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৩৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারে কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন গুজব ঘুরপাক খাচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো মার্জিন ঋণ বিধিমালায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ না দেখার গুজব। কিছু অসাধু ব্যক্তি ও ব্রোকারেজ হাউস তাদের নিজেদের স্বার্থে মার্জিন ঋণ নিয়ে এ ধরনের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এতে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারী প্যানিক সেল দিচ্ছে, যা বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এছাড়া, পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণ, কয়েকটি ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) বন্ধের সিদ্ধান্ত এবং সাম্প্রতিক সময়ের জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর খারাপ পারফরম্যান্সের কারণও বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, ‘মার্জিন ঋণ নিয়ে একটি শ্রেণি বাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক তথ্য ছড়াচ্ছে। যারা বাজারে প্যানিক সেল দিচ্ছে এবং এসব গুজব ছড়াচ্ছে, তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। যেখানে মার্জিন ঋণ নিয়ে আইন এখনো পাশ হয়নি, সেখানে যারা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে, তারা নিঃসন্দেহে খারাপ উদ্দেশ্যে এই গুজব ছড়াচ্ছে।’
পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের এই সদস্য আরো বলেন, ‘নতুন আইন পাশ হওয়ার আগে কোন ব্রোকারেজ হাউজও যদি বিনিয়োগকারীদের মাঝে ভূল বার্তা ছড়ায়, তাহলে ওই ব্রোকারেজ হাউজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বাজারের স্বার্থে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার অনুরোধ জানান।’
এদিকে, আজ পেনিক সেলসহ বিভিন্ন কারণে বাজারে বিক্রয় আদেশ বেশি থাকলেও ক্রয় আদেশ ছিল সেই তুলনায় অনেক কম। ডিএসইতে মোট ৪৪২ কোটি ৪০ টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেন চলতি বছরের ২৫ জুনের পর সর্বনিম্ন। ওইদিন এক্সচেঞ্জটিতে ৪১৩ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছিল।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) রোববার সবগুলো মূল্যসূচকে বড় পতন হয়েছে। এ বাজারে অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দরপতন হলেও সার্বিক লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএসপিআই ১৯৫ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ২৭৪ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। আর সিএসসিএক্স সূচকটি ১১৪ পয়েন্ট কমে ৮ হাজার ৭৮৪ পয়েন্টে নেমেছে।
সিএসইতে মোট ১৭৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে এবং কমেছে ১৩৪টির। আর ১৩টির দর দিন শেষে অপরিবর্তিত ছিল। রোববার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এক্সচেঞ্জটিতে সার্বিক লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। রোববার ৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছিল।