জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৮ বছর পর নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে ভিসি পেয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গত ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার নিয়োগের আদেশ জারি হওয়ার পরদিন ভিসি হিসেবে যোগদান করেন সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সপ্তম উপাচার্য।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়টির দায়িত্ব পালন করেন তাদের সবাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে ভিসি নিয়োগের জন্য সবসময় সরব ছিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে দায়িত্ব নেয়া ভিসি অধ্যাপক মো. রেজাউল করিমের সামনে রয়েছে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ। নতুন ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত শেষ করা, সেশনজট নিরসন, হল উদ্ধার, লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে উপাচার্যের।
জবির নতুন ক্যাম্পাস
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আবাসিক হলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মাসব্যাপী আন্দোলনের মুখে কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত জানায় সরকার। তবে এখন ২০২৪ সালে এসেও নানা অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে থমকে ছিল কাজ। জবি উপাচার্যের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দ্রুত শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুন ক্যাম্পাসের কাজ শেষ করা।
হল সংকট নিরসন
জবির হল সংকট নিরসন করা ভিসির অন্যতম চ্যালেঞ্জ। পুরান ঢাকায় বেদখল হয়ে যাওয়া হল গুলো দ্রুত ফিরিয়ে এনে ছাত্রদের আবাসন সংকট কাটাতে হবে। জবির শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি হলো আবাসন সমস্যা।
লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির অবসান
গত কিছুদিন আগে হয়ে যাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের অন্যতম চাওয়া ছিল ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস। ভিসির সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস গঠন করা। এছাড়া গত সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অধিকাংশই দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া। তাদের সাথে কাজ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সাদা দলের সাবেক এই সহ সভাপতিকে।
জকসু নির্বাচন
লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার পরপরই দিতে হবে ছাত্র সংসদ নির্বাচন। জবি শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে ছাত্র সংসদের কোনো বিধান যুক্ত নেই। সাবেক ভিসি মীজানুর রহমানের মেয়াদকালে জকসু নির্বাচনের গঠনতন্ত্র প্রণয়নের কমিটি গঠন হলেও এই উদ্যোগটি আলোর মুখ দেখেনি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সামসুল আরেফিন বলেন, নতুন ক্যাম্পাসের কার্য পরিচালনা নির্বিঘœ করতে জরুরি ভিত্তিতে অস্থায়ী টিনশেট করে হলেও ২-৩ হাজার শিক্ষার্থীর থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে বালু চুরি যাওয়া, অবৈধ সুবিধাবাদীরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারেপাশে ভিড়তে পারবে না। টিএসসিকে ঢেলে সাজাতে আশেপাশে জায়গা অধিগ্রহন নিয়ে সুন্দর ভবন করতে হবে। সঙ্গে ফুটঅভার ব্রিজ যুক্ত করতে হবে। প্রয়োজনে নতুন ভবনের সঙ্গে ব্রিজ যুক্ত করতে হবে। তাও না হলে গরিবের ঐটুকু জায়গাতেই জরুরি ভিত্তিতে টিএসসি ভবন হোক। আওয়ামী লীগের আমলে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ব্যতীত সকল অবৈধ নিয়োগ বাতিল করতে হবে। কোন অবৈধ নিয়োগ থাকা যাবে না। দখল হয়ে যাওয়া হল উদ্ধার করতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নাইম হোসাইন শাওন বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে ৭৩-এর অধ্যাদেশে অন্তর্ভুক্ত করা, আইন সংশোধন করে প্রো-ভিসি পদ সৃষ্টি করা, দ্রুত সময়ের মধ্যে জকসু চালু করা, গুচ্ছ থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া, ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসন নিশ্চিত করতে দৃশ্যমান উদ্যোগ নেয়া, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস দ্রুত বাস্তবায়ন করা, ক্যাম্পাসে দলীয় ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে ভিসিকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, নতুন ভিসি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের কার্যকরী কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। কিন্তু সাদাদল তার নাম মন্ত্রণালয়ে উপাচার্য হিসেবে প্রস্তাব করেনি। প্রফেসর রেজাউল করিম শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবনায় উপাচার্য হয়েছেন। স্যারের যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততা; শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পছন্দের মূল বিষয় ছিল। আশা করি, স্যারের সঠিক নেতৃত্ব বিশ্ববিদ্যালয়কে লক্ষ্যে পৌঁছাতে নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে।
দায়িত্ব নেয়ার পর নতুন ভিসি অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম বলেন, আমি সবার সহযোগিতায় এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমি আশা করি, সবাই দল-মত নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাকে সহযোগিতা করবেন।
শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৮ বছর পর নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে ভিসি পেয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গত ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার নিয়োগের আদেশ জারি হওয়ার পরদিন ভিসি হিসেবে যোগদান করেন সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সপ্তম উপাচার্য।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়টির দায়িত্ব পালন করেন তাদের সবাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে ভিসি নিয়োগের জন্য সবসময় সরব ছিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে দায়িত্ব নেয়া ভিসি অধ্যাপক মো. রেজাউল করিমের সামনে রয়েছে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ। নতুন ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত শেষ করা, সেশনজট নিরসন, হল উদ্ধার, লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে উপাচার্যের।
জবির নতুন ক্যাম্পাস
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আবাসিক হলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মাসব্যাপী আন্দোলনের মুখে কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত জানায় সরকার। তবে এখন ২০২৪ সালে এসেও নানা অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে থমকে ছিল কাজ। জবি উপাচার্যের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দ্রুত শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নতুন ক্যাম্পাসের কাজ শেষ করা।
হল সংকট নিরসন
জবির হল সংকট নিরসন করা ভিসির অন্যতম চ্যালেঞ্জ। পুরান ঢাকায় বেদখল হয়ে যাওয়া হল গুলো দ্রুত ফিরিয়ে এনে ছাত্রদের আবাসন সংকট কাটাতে হবে। জবির শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি হলো আবাসন সমস্যা।
লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির অবসান
গত কিছুদিন আগে হয়ে যাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের অন্যতম চাওয়া ছিল ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস। ভিসির সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ক্যাম্পাস গঠন করা। এছাড়া গত সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অধিকাংশই দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া। তাদের সাথে কাজ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে সাদা দলের সাবেক এই সহ সভাপতিকে।
জকসু নির্বাচন
লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার পরপরই দিতে হবে ছাত্র সংসদ নির্বাচন। জবি শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে ছাত্র সংসদের কোনো বিধান যুক্ত নেই। সাবেক ভিসি মীজানুর রহমানের মেয়াদকালে জকসু নির্বাচনের গঠনতন্ত্র প্রণয়নের কমিটি গঠন হলেও এই উদ্যোগটি আলোর মুখ দেখেনি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সামসুল আরেফিন বলেন, নতুন ক্যাম্পাসের কার্য পরিচালনা নির্বিঘœ করতে জরুরি ভিত্তিতে অস্থায়ী টিনশেট করে হলেও ২-৩ হাজার শিক্ষার্থীর থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে বালু চুরি যাওয়া, অবৈধ সুবিধাবাদীরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারেপাশে ভিড়তে পারবে না। টিএসসিকে ঢেলে সাজাতে আশেপাশে জায়গা অধিগ্রহন নিয়ে সুন্দর ভবন করতে হবে। সঙ্গে ফুটঅভার ব্রিজ যুক্ত করতে হবে। প্রয়োজনে নতুন ভবনের সঙ্গে ব্রিজ যুক্ত করতে হবে। তাও না হলে গরিবের ঐটুকু জায়গাতেই জরুরি ভিত্তিতে টিএসসি ভবন হোক। আওয়ামী লীগের আমলে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ব্যতীত সকল অবৈধ নিয়োগ বাতিল করতে হবে। কোন অবৈধ নিয়োগ থাকা যাবে না। দখল হয়ে যাওয়া হল উদ্ধার করতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নাইম হোসাইন শাওন বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে ৭৩-এর অধ্যাদেশে অন্তর্ভুক্ত করা, আইন সংশোধন করে প্রো-ভিসি পদ সৃষ্টি করা, দ্রুত সময়ের মধ্যে জকসু চালু করা, গুচ্ছ থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া, ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসন নিশ্চিত করতে দৃশ্যমান উদ্যোগ নেয়া, দ্বিতীয় ক্যাম্পাস দ্রুত বাস্তবায়ন করা, ক্যাম্পাসে দলীয় ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে ভিসিকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, নতুন ভিসি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের কার্যকরী কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। কিন্তু সাদাদল তার নাম মন্ত্রণালয়ে উপাচার্য হিসেবে প্রস্তাব করেনি। প্রফেসর রেজাউল করিম শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবনায় উপাচার্য হয়েছেন। স্যারের যোগ্যতা, দক্ষতা ও সততা; শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পছন্দের মূল বিষয় ছিল। আশা করি, স্যারের সঠিক নেতৃত্ব বিশ্ববিদ্যালয়কে লক্ষ্যে পৌঁছাতে নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে।
দায়িত্ব নেয়ার পর নতুন ভিসি অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম বলেন, আমি সবার সহযোগিতায় এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমি আশা করি, সবাই দল-মত নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাকে সহযোগিতা করবেন।