alt

ডাকসু নির্বাচন: প্রচারণা শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার

প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের প্রচারণা মঙ্গলবার সকাল দশটা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু। প্রতিদিন রাত দশটা পর্যন্ত এ প্রচারণা চলবে। আর শেষ হবে ভোটের দিনের চব্বিশ ঘণ্টা আগে।

সোমবার,(২৫ আগস্ট ২০২৫) ডাকসু মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ২১ প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

নির্বাচনী প্রচারণায় সুশৃঙ্খলা রক্ষায় সুনির্দিষ্ট ‘আচরণ বিধিমালা’ প্রণয়ন করেছে নির্বাচন কমিশন। এ বিধিমালার ব্যত্যয় ঘটলে চূড়ান্ত শাস্তি হিসেবে প্রার্থিতা বাতিলসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারও হতে পারেন।

ডাকসু নির্বাচনের আচরণবিধি

সংক্ষিপ্ত আকারে আচরণবিধি তুলে ধরা হলো।

নির্বাচনে যানবাহন ব্যবহার: কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ধরনের যানবাহন, মোটরসাইকেল, রিকশা, ঘোড়ার গাড়ি, হাতি, ব্যান্ড পার্টি ইত্যাদি নিয়ে কোনোরূপ শোভাযাত্রা, শোডাউন বা মিছিল করতে পারবে না। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে বা ভোটকেন্দ্র হতে ভোটারদের আনা-নেয়ার জন্য কোনো প্রকার যানবাহন [(ক) অনুচ্ছেদে উল্লেখিত] ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনের দিন শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার সুবিধার্থে শুধুমাত্র চিফ রিটার্নিং অফিসার/রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক অনুমোদিত যানবাহন (স্টিকারযুক্ত গাড়ি/যানবাহন) নির্বাচনী এলাকায় চলাচল করতে পারবে। স্টিকার সংযুক্ত যানবাহন চলাচলের বিষয়টি প্রক্টর অফিস তত্ত্বাবধান করবে। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে আসতে বাইসাইকেল ও রিকশা ব্যবহার করতে পারবে।

প্রচার

নির্বাচনী প্রচারের ক্ষেত্রে সব প্রার্থী সমান অধিকার পাবেন। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিনের ২৪ ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত প্রচার করতে পারবেন। প্রতিদিন প্রচারের সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে রাত ১০টার পরে কোনো ধরনের প্রচারকার্যে মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

অনলাইন/সামাজিক মাধ্যমে প্রচার

অনলাইন/সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালানো যাবে আইনসিদ্ধ ইতিবাচক পদ্ধতিতে। দেশের প্রচলিত আইনে নিষিদ্ধ কোনো কর্ম করা যাবে না। ব্যক্তিগত আক্রমণ, চরিত্র হনন, গুজব ও অসত্য তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

সভা, সমাবেশ ও শোভাযাত্রা

কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো সভা/সমাবেশ/শোভাযাত্রা করতে চাইলে দিন, সময় ও স্থান উল্লেখপূর্বক চিফ রিটার্নিং অফিসার/সংশ্লিষ্ট হলের অফিসারের নিকট হতে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। এইরূপ অনুমতি লিখিত আবেদন প্রাপ্তির সময়ের ক্রমানুসারে দেয়া হবে। সভা/সমাবেশ/শোভাযাত্রা করার অনুমতি অন্তত ২৪ ঘণ্টা পূর্বে গ্রহণ করতে হবে। একজন প্রার্থী বা একটি প্যানেলের পক্ষে প্রতিটি হলে ১টি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩টি প্রজেকশন মিটিং করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় কোনো মঞ্চ তৈরি করা যাবে না। পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে এমন কোনো স্থানে (যেমন-শ্রেণীকক্ষ, পাঠকক্ষ, পরীক্ষার হল ইত্যাদি) সভা/সমাবেশ বা নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না। শ্রেণীকক্ষের ভেতরে ও করিডোরে মিছিল করা যাবে না। কোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে (যেমন-মসজিদ, মন্দির, গির্জা ইত্যাদি) কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না।

পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ও দেয়াল লিখন: সাদা-কালো পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ছাপানো ও বিলি করা যাবে। প্রার্থী নিজের সাদাকালো ছবি ব্যতীত অন্য কারও ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করতে পারবে না। ক্যাম্পাস ও হল এলাকায় অবস্থিত কোনো প্রকার স্থাপনা, দেয়াল, যানবাহন বা অন্য কোনো দণ্ডায়মান বস্তুতে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগানো যাবে না। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল-এর ক্ষতি করা যাবে না।

আলোকসজ্জা ও স্থাপনা (স্থায়ী/অস্থায়ী)

কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো ছাত্র সংগঠন, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী গেইট, তোরণ, ঘের নির্মাণ, ক্যাম্প, ও আলোকসজ্জা করতে পারবে না। তবে প্যান্ডেল, শামিয়ানা ও মঞ্চ অস্থায়ীভাবে স্থাপন করা যাবে।

# অনুদান, খাদ্য পরিবেশন ও উপঢৌকন প্রদান এবং পোশাকে প্রচারণামূলক বক্তব্য: কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো ছাত্র সংগঠন, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী- নির্বাচনকে লক্ষ্য করে বা কেন্দ্র করে বছরব্যাপী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো শিক্ষার্থী/সংগঠন/কোনো প্রতিষ্ঠানে চাঁদা, অনুদান, আর্থিক লেনদেন ইত্যাদি করতে পারবে না। নির্বাচনী প্রচার চলাকালে ও নির্বাচনের দিন ভোটারদের পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন করা, উপঢৌকন বা বকশিশ ইত্যাদি দেয়া যাবে না। নির্বাচনী প্রচারণার জন্য কোনো প্রার্থীর ছবি বা তার পক্ষে প্রচারণামূলক কোনো বক্তব্য বা ছবি বা প্রতীকের চিহ্ন সংবলিত কোনো ধরনের পোশাক ব্যবহার করা যাবে না।

উস্কানিমূলক বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান এবং উচ্ছৃঙ্খল আচরণ: উচ্ছৃঙ্খল, শৃঙ্খলা বিনষ্টকারী কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ ও শান্তি বিনষ্টকারী আচরণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

# ছেলে শিক্ষার্থীদের ছাত্রী হলে প্রবেশ এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের ছাত্র হলে প্রবেশ:

নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে ছেলে প্রার্থী/শিক্ষার্থীরা মেয়েদের হলে ও মেয়ে প্রার্থী/শিক্ষার্থীরা ছেলেদের হলে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি নিয়ে শুধুমাত্র প্রজেকশন সভার জন্য প্রবেশ করতে পারবে।

বিস্ফোরক, দেশি অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র বহন: নির্বাচনী প্রচারণা ও নির্বাচন চলাকালে বিস্ফোরক, দেশি অস্ত্র (লাঠিসোঁটা, রড, হকিস্টিক, ছুরি-কাঁচি ইত্যাদি) ও আগ্নেয়াস্ত্র বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

# ছাত্রলীগের গেস্টরুমের আদলে এখন ?মুড়িপার্টি কালচার চলছে: আবিদুল ইসলাম

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের গেস্টরুমের জায়গায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে হলে এখন মুড়িপার্টি কালচার চলছে জানিয়ে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেলের ভিপি (সহ-সভাপতি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম বলেন, আগে ছাত্রলীগ করতো গেস্টরুম-গণরুম কালচার। এখন হলে হলে মুড়িপার্টির কালচার চলছে। সেখানে গুপ্ত সংগঠনের প্যানেল সদস্যদের নাম মুখস্থ করানো হচ্ছে।

সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এ অভিযোগ করেন তিনি।

আবিদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির নারীদের নিয়ে কুৎসা রটাচ্ছে বলে অভিযোগ করে, ৫ আগস্ট পরবর্তী নারীদের নিয়ে এমন কাজ না করার আহ্বান জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে উদ্দেশ করে এ সময় তিনি বলেন, যদি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে চান তাহলে অবশ্যই এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

# ঢাবির রাজনৈতিক অর্জন বেশি, অ্যাকাডেমিক অর্জন কম: সাদিক কায়েম

ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের ভিপি (সহ-সভাপতি) প্রার্থী আবু সাদিক কায়েম বলেছেন, স্বাধীনতার পাঁচ দশক পার হওয়ার পরও আমরা দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক অর্জন যেভাবে আছে, সেদিক বিবেচনায় অ্যাকাডেমিক অর্জনের দিকে আমরা ফোকাস দিতে পারিনি।

সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে সাংবাদিকদের মতবিনিময়কালে সাদিক কায়েম বলেন, আমরা যদি শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেট নিয়ে বিজয়ী হতে পারি তাহলে আমাদের এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা একটা অ্যাকাডেমিক ইউনিভার্সিটি বানাবো ইনশাআল্লাহ।

ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস উদযাপন

ছবি

রাকসু জিএসের সঙ্গে বাকবিতন্ডা, রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ চাইলেন রাকসুর প্রতিনিধিরা

ছবি

‘সোহ্রাওয়ার্দীতে গাঁজা বেঁচতে নিষেধ করায় ছাত্রদল নেতা সাম্যকে হত্যা’: ডিবি

ছবি

সৈয়দপুরে আর্মি ইউনিভার্সিটিতে মেট্রোরেল বিষয়ক সেমিনার

ছবি

জকসু নির্বাচন ২২ ডিসেম্বর

ছবি

রাকসুর প্রথম অধিবেশনে ১২ দফা কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

জকসু নির্বাচন ২২ ডিসেম্বর

ছবি

কোটা আন্দোলনে হামলায় ঢাবির আরও ২৭৫ শিক্ষার্থী অভিযুক্ত

ছবি

৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা যৌক্তিক সময়ে নেওয়ার দাবি উত্তীর্ণদের

ছবি

জকসুতে এমফিল বাদ: আমাদের মাইনাস করার মাস্টারপ্ল্যান, বলছে ছাত্রদল

ছবি

বিএনপির বিরুদ্ধে ডাকসুর শিবিরের তিন নেতার বিবৃতি

ছবি

ইবিতে জুলাইবিরোধী ৩০ শিক্ষক-কর্মকর্তা বরখাস্ত

ছবি

সিটি ইউনিভার্সিটিতে সংবাদ সম্মেলন: শাস্তি, ক্ষতিপূরণ ও জড়িতদের ছাত্রত্ব বাতিলের দাবি

ছবি

জবি ছাত্রদলের মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

রাবি: দুই প্রশিক্ষকের উপস্থিতিতে ডুবেছেন সায়মা, তদন্তে পাওয়া গেছে অন্যান্য ‘গাফিলতি’

ছবি

‘বৈষম্য’ বাতিলের দাবীতে লাগাতার কর্মবিরতিতে রাবির স্কুল শিক্ষকরা

ছবি

জকসু নির্বাচন: পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠন

ছবি

রাবি: সায়মার মৃত্যুর ‘সুষ্ঠু বিচার’ দাবিতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরা, বিক্ষোভ

ছবি

চবির শহীদ আবদুর রব হলে সমৃদ্ধ কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন

ছবি

রাবি শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে আমরণ অনশন, তদন্তে কমিটি

ছবি

রাবি: সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি

রাবি: শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে আমরণ অনশন, তদন্তে কমিটি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ পদ থেকে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের নিয়োগ বাতিল

ছাত্র সংসদ এখন থেকে জাতীয় ছাত্রশক্তি

ছবি

বুয়েটের শ্রীশান্তের বিরুদ্ধে মামলায় ধর্মানুভূতিতে আঘাতের ধারা

ছবি

পুলিশের বলা ‘ত্রিভুজ প্রেমের গল্প’ নিয়ে প্রশ্ন জোবায়েদের শিক্ষকের

ছবি

ছাত্রীদের নিয়ে বাজে মন্তব্য: বুয়েটছাত্র শ্রীশান্ত কারাগারে

ছবি

রাবি: সভাপতির অপসরণসহ চার দাবিতে চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ‘শাটডাউন’

ছবি

রাকসুর গেজেট প্রকাশ, শপথ ‘২৬ অক্টোবর’

ছবি

ব্রিটিশ কাউন্সিল পুরস্কার পেলেন ইংরেজি মাধ্যমের ৪২ শিক্ষার্থী

ছবি

তিস্তা প্রকল্পের দাবিতে রাবিতে ‘তিস্তা বাঁচাও আন্দোলন’ কর্মসূচী

ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হবে ২৭ অক্টোবর

ছবি

রাতে উত্তাল বুয়েট: ধর্ষণের অভিযোগে এক শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার

ছবি

জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যাকাণ্ড: নেপথ্যে ‘ত্রিভুজ প্রেম’

ছবি

পছন্দের কথা জানতে পেরেই জবি শিক্ষার্থীকে খুন: পুলিশ

ছবি

পুলিশের ধারণা ছাত্রীর প্রেমিকের সন্দেহে জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ খুন

tab

ডাকসু নির্বাচন: প্রচারণা শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার

প্রতিনিধি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের প্রচারণা মঙ্গলবার সকাল দশটা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু। প্রতিদিন রাত দশটা পর্যন্ত এ প্রচারণা চলবে। আর শেষ হবে ভোটের দিনের চব্বিশ ঘণ্টা আগে।

সোমবার,(২৫ আগস্ট ২০২৫) ডাকসু মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ২১ প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

নির্বাচনী প্রচারণায় সুশৃঙ্খলা রক্ষায় সুনির্দিষ্ট ‘আচরণ বিধিমালা’ প্রণয়ন করেছে নির্বাচন কমিশন। এ বিধিমালার ব্যত্যয় ঘটলে চূড়ান্ত শাস্তি হিসেবে প্রার্থিতা বাতিলসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারও হতে পারেন।

ডাকসু নির্বাচনের আচরণবিধি

সংক্ষিপ্ত আকারে আচরণবিধি তুলে ধরা হলো।

নির্বাচনে যানবাহন ব্যবহার: কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ধরনের যানবাহন, মোটরসাইকেল, রিকশা, ঘোড়ার গাড়ি, হাতি, ব্যান্ড পার্টি ইত্যাদি নিয়ে কোনোরূপ শোভাযাত্রা, শোডাউন বা মিছিল করতে পারবে না। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে বা ভোটকেন্দ্র হতে ভোটারদের আনা-নেয়ার জন্য কোনো প্রকার যানবাহন [(ক) অনুচ্ছেদে উল্লেখিত] ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনের দিন শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার সুবিধার্থে শুধুমাত্র চিফ রিটার্নিং অফিসার/রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক অনুমোদিত যানবাহন (স্টিকারযুক্ত গাড়ি/যানবাহন) নির্বাচনী এলাকায় চলাচল করতে পারবে। স্টিকার সংযুক্ত যানবাহন চলাচলের বিষয়টি প্রক্টর অফিস তত্ত্বাবধান করবে। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে আসতে বাইসাইকেল ও রিকশা ব্যবহার করতে পারবে।

প্রচার

নির্বাচনী প্রচারের ক্ষেত্রে সব প্রার্থী সমান অধিকার পাবেন। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিনের ২৪ ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত প্রচার করতে পারবেন। প্রতিদিন প্রচারের সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে রাত ১০টার পরে কোনো ধরনের প্রচারকার্যে মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

অনলাইন/সামাজিক মাধ্যমে প্রচার

অনলাইন/সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালানো যাবে আইনসিদ্ধ ইতিবাচক পদ্ধতিতে। দেশের প্রচলিত আইনে নিষিদ্ধ কোনো কর্ম করা যাবে না। ব্যক্তিগত আক্রমণ, চরিত্র হনন, গুজব ও অসত্য তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

সভা, সমাবেশ ও শোভাযাত্রা

কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো সভা/সমাবেশ/শোভাযাত্রা করতে চাইলে দিন, সময় ও স্থান উল্লেখপূর্বক চিফ রিটার্নিং অফিসার/সংশ্লিষ্ট হলের অফিসারের নিকট হতে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। এইরূপ অনুমতি লিখিত আবেদন প্রাপ্তির সময়ের ক্রমানুসারে দেয়া হবে। সভা/সমাবেশ/শোভাযাত্রা করার অনুমতি অন্তত ২৪ ঘণ্টা পূর্বে গ্রহণ করতে হবে। একজন প্রার্থী বা একটি প্যানেলের পক্ষে প্রতিটি হলে ১টি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩টি প্রজেকশন মিটিং করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় কোনো মঞ্চ তৈরি করা যাবে না। পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে এমন কোনো স্থানে (যেমন-শ্রেণীকক্ষ, পাঠকক্ষ, পরীক্ষার হল ইত্যাদি) সভা/সমাবেশ বা নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না। শ্রেণীকক্ষের ভেতরে ও করিডোরে মিছিল করা যাবে না। কোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে (যেমন-মসজিদ, মন্দির, গির্জা ইত্যাদি) কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না।

পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ও দেয়াল লিখন: সাদা-কালো পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ছাপানো ও বিলি করা যাবে। প্রার্থী নিজের সাদাকালো ছবি ব্যতীত অন্য কারও ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করতে পারবে না। ক্যাম্পাস ও হল এলাকায় অবস্থিত কোনো প্রকার স্থাপনা, দেয়াল, যানবাহন বা অন্য কোনো দণ্ডায়মান বস্তুতে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগানো যাবে না। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল-এর ক্ষতি করা যাবে না।

আলোকসজ্জা ও স্থাপনা (স্থায়ী/অস্থায়ী)

কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো ছাত্র সংগঠন, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী গেইট, তোরণ, ঘের নির্মাণ, ক্যাম্প, ও আলোকসজ্জা করতে পারবে না। তবে প্যান্ডেল, শামিয়ানা ও মঞ্চ অস্থায়ীভাবে স্থাপন করা যাবে।

# অনুদান, খাদ্য পরিবেশন ও উপঢৌকন প্রদান এবং পোশাকে প্রচারণামূলক বক্তব্য: কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো ছাত্র সংগঠন, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী- নির্বাচনকে লক্ষ্য করে বা কেন্দ্র করে বছরব্যাপী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো শিক্ষার্থী/সংগঠন/কোনো প্রতিষ্ঠানে চাঁদা, অনুদান, আর্থিক লেনদেন ইত্যাদি করতে পারবে না। নির্বাচনী প্রচার চলাকালে ও নির্বাচনের দিন ভোটারদের পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন করা, উপঢৌকন বা বকশিশ ইত্যাদি দেয়া যাবে না। নির্বাচনী প্রচারণার জন্য কোনো প্রার্থীর ছবি বা তার পক্ষে প্রচারণামূলক কোনো বক্তব্য বা ছবি বা প্রতীকের চিহ্ন সংবলিত কোনো ধরনের পোশাক ব্যবহার করা যাবে না।

উস্কানিমূলক বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান এবং উচ্ছৃঙ্খল আচরণ: উচ্ছৃঙ্খল, শৃঙ্খলা বিনষ্টকারী কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ ও শান্তি বিনষ্টকারী আচরণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

# ছেলে শিক্ষার্থীদের ছাত্রী হলে প্রবেশ এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের ছাত্র হলে প্রবেশ:

নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে ছেলে প্রার্থী/শিক্ষার্থীরা মেয়েদের হলে ও মেয়ে প্রার্থী/শিক্ষার্থীরা ছেলেদের হলে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি নিয়ে শুধুমাত্র প্রজেকশন সভার জন্য প্রবেশ করতে পারবে।

বিস্ফোরক, দেশি অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র বহন: নির্বাচনী প্রচারণা ও নির্বাচন চলাকালে বিস্ফোরক, দেশি অস্ত্র (লাঠিসোঁটা, রড, হকিস্টিক, ছুরি-কাঁচি ইত্যাদি) ও আগ্নেয়াস্ত্র বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

# ছাত্রলীগের গেস্টরুমের আদলে এখন ?মুড়িপার্টি কালচার চলছে: আবিদুল ইসলাম

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের গেস্টরুমের জায়গায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে হলে এখন মুড়িপার্টি কালচার চলছে জানিয়ে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেলের ভিপি (সহ-সভাপতি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম বলেন, আগে ছাত্রলীগ করতো গেস্টরুম-গণরুম কালচার। এখন হলে হলে মুড়িপার্টির কালচার চলছে। সেখানে গুপ্ত সংগঠনের প্যানেল সদস্যদের নাম মুখস্থ করানো হচ্ছে।

সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এ অভিযোগ করেন তিনি।

আবিদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির নারীদের নিয়ে কুৎসা রটাচ্ছে বলে অভিযোগ করে, ৫ আগস্ট পরবর্তী নারীদের নিয়ে এমন কাজ না করার আহ্বান জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে উদ্দেশ করে এ সময় তিনি বলেন, যদি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে চান তাহলে অবশ্যই এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

# ঢাবির রাজনৈতিক অর্জন বেশি, অ্যাকাডেমিক অর্জন কম: সাদিক কায়েম

ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের ভিপি (সহ-সভাপতি) প্রার্থী আবু সাদিক কায়েম বলেছেন, স্বাধীনতার পাঁচ দশক পার হওয়ার পরও আমরা দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক অর্জন যেভাবে আছে, সেদিক বিবেচনায় অ্যাকাডেমিক অর্জনের দিকে আমরা ফোকাস দিতে পারিনি।

সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে সাংবাদিকদের মতবিনিময়কালে সাদিক কায়েম বলেন, আমরা যদি শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেট নিয়ে বিজয়ী হতে পারি তাহলে আমাদের এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা একটা অ্যাকাডেমিক ইউনিভার্সিটি বানাবো ইনশাআল্লাহ।

back to top