দুর্গাপূজার ছুটি শেষে প্রাণ ফিরেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে টুকিটাকি চত্বর, আমতলা ও পরিবহন মার্কেট এলাকা। তবে শুধু ক্লাস নয় — বইতে শুরু করেছে রাকসু নির্বাচনের হাওয়া।
সকাল থেকেই প্রার্থীরা নবোদ্যমে নামেন প্রচারণায়। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনের সামনে, হলের পড়ার জায়গায় ও টুকিটাকি চত্বরে ভোটারদের হাতে তুলে দেন নিজেদের ইশতেহার ও ব্যালট নম্বরের লিফলেট। বৃষ্টির কারণে কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও শিক্ষার্থীদের মাঝে ধীরে ধীরে উষ্ণতা ফিরে আসছে নির্বাচনী মাঠে।
ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও সর্বজনীন প্যানেলসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা ইতিমধ্যে প্রচার শুরু করেছেন। তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী এখনও ক্যাম্পাসে ফিরেননি, তাই প্রচারণা পুরোপুরি জমে উঠতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে।
‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, “তারিখ পরিবর্তন ও পোষ্যকোটা ইস্যুতে অনিশ্চয়তা থাকলেও আমরা আশাবাদী। শিক্ষার্থীরা রাকসু চায়, এ নিয়ে তাদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।”
‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী নাফিউল জীবন বলেন, “অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি জরুরি ছিল। দুর্গাপূজার পর ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল যথাযথ। আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি।”
‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের প্রার্থী সামসাদ জাহান বলেন, “রাকসু শিক্ষার্থীদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান। কেউ চাইলে এটি বন্ধ রাখতে পারবে না—শিক্ষার্থীরাই এটি আদায় করে নেবে।”
*পোষ্যকোটা, আন্দোলনের ছায়া*
পোষ্যকোটা ও শিক্ষক–কর্মচারীদের আন্দোলন নিয়ে রয়ে গেছে নির্বাচনী শঙ্কা। নির্বাচনের তারিখ ইতোমধ্যে ছয়বার পরিবর্তন হয়েছে। বেশ কয়েকবার পরিবর্তনের কবর ২৫ সেপ্টেম্বর ভোটের কথা ছিল। তবে পোষ্যকোটা নিয়ে বিতর্ক ও শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের আন্দোলনে পরে তা পিছিয়ে ১৬ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়।
তবে আন্দোলনের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কায় অনেকেই নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ফুয়াদ রাতুল বলেন, “শিক্ষকদের কর্মবিরতি ফের শুরু হলে পরিস্থিতি জটিল হবে। শিক্ষার্থীদের বিচারের দাবি বাস্তবায়ন করা যুক্তিযুক্ত নয়।”
‘রাকসু ফর রেডিক্যাল চেঞ্জ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মেহেদী মারুফ বলেন, “শিক্ষক–কর্মচারীদের কর্মবিরতি ফের শুরু হতে পারে—এটা রাকসুর জন্য বড় শঙ্কা। এখনো আমরা আকাশে ‘কালো মেঘের ছায়া’ দেখতে পাচ্ছি।”
*নির্বাচনে প্রস্তুত প্রশাসন*
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ. নজরুল ইসলাম বলেন, “রাকসু নির্বাচনের প্রচারণা ৫ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। ১৬ অক্টোবর ভোটগ্রহণের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন। কর্মবিরতি না হলে নির্বাচনে কোনো বাধা নেই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ–উপাচার্য অধ্যাপক মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, “শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী কমিটি কাজ করছে, বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। রাকসু নির্বাচনে এখন আর কোনো শঙ্কা নেই।”
পোষ্যকোটা আন্দোলনের নেতা মোক্তার হোসেন বলেন, “আমরা চাই সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর রাকসু নির্বাচন হোক। প্রশাসনের আন্তরিকতা থাকলে কোনো বাধা আসবে না।”
গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১০টি শর্তে পোষ্যকোটা পুনর্বহালের ঘোষণা দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। ২০ সেপ্টেম্বর জুবেরী ভবনে শিক্ষক–কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। পরে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ও কর্মকর্তা–কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে যান। এরপর নির্বাচন কমিশন ২২ সেপ্টেম্বর জরুরি সভা করে নির্বাচন পিছিয়ে ১৬ অক্টোবরের নতুন তারিখ ঘোষণা করে।
বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫
দুর্গাপূজার ছুটি শেষে প্রাণ ফিরেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে টুকিটাকি চত্বর, আমতলা ও পরিবহন মার্কেট এলাকা। তবে শুধু ক্লাস নয় — বইতে শুরু করেছে রাকসু নির্বাচনের হাওয়া।
সকাল থেকেই প্রার্থীরা নবোদ্যমে নামেন প্রচারণায়। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনের সামনে, হলের পড়ার জায়গায় ও টুকিটাকি চত্বরে ভোটারদের হাতে তুলে দেন নিজেদের ইশতেহার ও ব্যালট নম্বরের লিফলেট। বৃষ্টির কারণে কিছুটা বিঘ্ন ঘটলেও শিক্ষার্থীদের মাঝে ধীরে ধীরে উষ্ণতা ফিরে আসছে নির্বাচনী মাঠে।
ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও সর্বজনীন প্যানেলসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা ইতিমধ্যে প্রচার শুরু করেছেন। তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী এখনও ক্যাম্পাসে ফিরেননি, তাই প্রচারণা পুরোপুরি জমে উঠতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে।
‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, “তারিখ পরিবর্তন ও পোষ্যকোটা ইস্যুতে অনিশ্চয়তা থাকলেও আমরা আশাবাদী। শিক্ষার্থীরা রাকসু চায়, এ নিয়ে তাদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।”
‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী নাফিউল জীবন বলেন, “অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি জরুরি ছিল। দুর্গাপূজার পর ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল যথাযথ। আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি।”
‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের প্রার্থী সামসাদ জাহান বলেন, “রাকসু শিক্ষার্থীদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান। কেউ চাইলে এটি বন্ধ রাখতে পারবে না—শিক্ষার্থীরাই এটি আদায় করে নেবে।”
*পোষ্যকোটা, আন্দোলনের ছায়া*
পোষ্যকোটা ও শিক্ষক–কর্মচারীদের আন্দোলন নিয়ে রয়ে গেছে নির্বাচনী শঙ্কা। নির্বাচনের তারিখ ইতোমধ্যে ছয়বার পরিবর্তন হয়েছে। বেশ কয়েকবার পরিবর্তনের কবর ২৫ সেপ্টেম্বর ভোটের কথা ছিল। তবে পোষ্যকোটা নিয়ে বিতর্ক ও শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের আন্দোলনে পরে তা পিছিয়ে ১৬ অক্টোবর নির্ধারণ করা হয়।
তবে আন্দোলনের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কায় অনেকেই নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ফুয়াদ রাতুল বলেন, “শিক্ষকদের কর্মবিরতি ফের শুরু হলে পরিস্থিতি জটিল হবে। শিক্ষার্থীদের বিচারের দাবি বাস্তবায়ন করা যুক্তিযুক্ত নয়।”
‘রাকসু ফর রেডিক্যাল চেঞ্জ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মেহেদী মারুফ বলেন, “শিক্ষক–কর্মচারীদের কর্মবিরতি ফের শুরু হতে পারে—এটা রাকসুর জন্য বড় শঙ্কা। এখনো আমরা আকাশে ‘কালো মেঘের ছায়া’ দেখতে পাচ্ছি।”
*নির্বাচনে প্রস্তুত প্রশাসন*
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ. নজরুল ইসলাম বলেন, “রাকসু নির্বাচনের প্রচারণা ৫ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। ১৬ অক্টোবর ভোটগ্রহণের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন। কর্মবিরতি না হলে নির্বাচনে কোনো বাধা নেই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ–উপাচার্য অধ্যাপক মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, “শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী কমিটি কাজ করছে, বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। রাকসু নির্বাচনে এখন আর কোনো শঙ্কা নেই।”
পোষ্যকোটা আন্দোলনের নেতা মোক্তার হোসেন বলেন, “আমরা চাই সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর রাকসু নির্বাচন হোক। প্রশাসনের আন্তরিকতা থাকলে কোনো বাধা আসবে না।”
গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১০টি শর্তে পোষ্যকোটা পুনর্বহালের ঘোষণা দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। ২০ সেপ্টেম্বর জুবেরী ভবনে শিক্ষক–কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। পরে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ও কর্মকর্তা–কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে যান। এরপর নির্বাচন কমিশন ২২ সেপ্টেম্বর জরুরি সভা করে নির্বাচন পিছিয়ে ১৬ অক্টোবরের নতুন তারিখ ঘোষণা করে।