চাকসু নির্বাচনে ভোটদান
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ব্যাপক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনির উদ্দিন জানিয়েছেন, প্রায় ৭০ শতাংশ ভোটার এই নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। বুধবার,(১৫ অক্টোবর ২০২৫) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে এই ভোটগ্রহণ। মোট ভোটার ছিলেন ২৭ হাজার ৫১৬ জন। কেন্দ্রগুলোতে দিনভর ছিল শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভীড় ও উৎসবমুখর পরিবেশ। তবে ভোটগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে উঠে আসে একের পর এক অনিয়ম, কারচুপি ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ।
প্রশাসনের ভাষ্যে ‘সুষ্ঠু’, বিরোধী প্যানেলগুলোর চোখে ‘প্রহসন’
উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, ‘আজ শিক্ষার্থীদের আনন্দের দিন। দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার পর চাকসু নির্বাচন হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস দেখে আমাদের সব কষ্ট সার্থক মনে হচ্ছে।’
তবে এই আনন্দঘন পরিবেশের মাঝেই অভিযোগের পাহাড় তুলে ধরেছে একাধিক ছাত্রসংগঠন ও প্যানেল। ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, রেভ্যুলেশন ফর স্টেট অব হিউম্যানিটি এবং বামধারার বৈচিত্র্যের ঐক্যসহ অন্তত চারটি প্যানেল প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে।
পদে পদে অনিয়মের
অভিযোগ ছাত্রদলের
ভিপি পদপ্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন চাকসু হবে অনন্য উদাহরণ। কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখেছি প্রতিটি ধাপে অনিয়ম, কারচুপি ও প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা।’
তিনি অভিযোগ করেন, ভোটকেন্দ্রের আশপাশে স্লিপ বিতরণ, প্রার্থীদের প্রচার, বহিরাগতদের উপস্থিতি এবং সইবিহীন ব্যালট- এসবই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
বহিরাগতদের উপস্থিতি ও সহিংসতা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনসহ কয়েকটি কেন্দ্রে বহিরাগতদের উপস্থিতির অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান তৌফিক বলেন, ‘আমরা দেখেছি বহিরাগতরা কেন্দ্রের দিকে দৌঁড়ে আসছে। প্রশাসন তা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।’
ছাত্রশিবিরের ভিপি প্রার্থী ইব্রাহীম হোসেনও বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘনের পরও ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এমনকি হাতের কালি পর্যন্ত মুছে গেছে, যা অমোচনীয় হওয়ার কথা।’
ভোট চুরি ও প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগ
আইন বিভাগের ছাত্রী মিফতাহুল জান্নাত অভিযোগ করেন, তার ভোট অন্য একজন দিয়ে ফেলেছে। ভোটার নম্বর মিলে যাওয়ার অজুহাতে তাকে ভোট দিতে দেয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ভোটকেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বলেন, ‘দুইজনের নাম ও চেহারার মিল ছিল, তাই বিভ্রান্তি হয়েছে।’
বিজনেস অনুষদেও সইবিহীন ব্যালট পেপার বিতরণের অভিযোগ উঠে। কয়েকজন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা স্বীকার করেন, ‘ভুলবশত কয়েকটি ব্যালটে সই পড়েনি।’
প্যানেলের নির্বাচন বর্জন ও পুনরায় ভোটের দাবি
বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্ট সমর্থিত ‘রেভ্যুলেশন ফর স্টেট অব হিউম্যানিটি’ প্যানেল কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট বর্জন ও পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে বুধবার,(১৫ অক্টোবর ২০২৫) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে।
তাদের ভিপি প্রার্থী কেফায়েত উল্লাহ বলেন, ‘ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে ব্যালটে কারচুপি হয়েছে। ছাত্রশিবির ও ছাত্রী সংস্থা নিয়ম ভেঙেছে। কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার থেকেছে।’
ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তা, তদন্তের দাবি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে এবং ভোট গণনা চলছে। তবে ছাত্রদলসহ কয়েকটি প্যানেল ফলাফল মেনে নাও নিতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে।
তৌফিক বলেন, ‘যেখানে অনিয়ম, পক্ষপাত ও বহিরাগত হস্তক্ষেপ- সেখানে ফলাফল মেনে নেয়া মানে অন্যায়কে বৈধতা দেয়া।’
চাকসু নির্বাচনে ভোটদান
বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ব্যাপক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনির উদ্দিন জানিয়েছেন, প্রায় ৭০ শতাংশ ভোটার এই নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। বুধবার,(১৫ অক্টোবর ২০২৫) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে এই ভোটগ্রহণ। মোট ভোটার ছিলেন ২৭ হাজার ৫১৬ জন। কেন্দ্রগুলোতে দিনভর ছিল শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভীড় ও উৎসবমুখর পরিবেশ। তবে ভোটগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে উঠে আসে একের পর এক অনিয়ম, কারচুপি ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ।
প্রশাসনের ভাষ্যে ‘সুষ্ঠু’, বিরোধী প্যানেলগুলোর চোখে ‘প্রহসন’
উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, ‘আজ শিক্ষার্থীদের আনন্দের দিন। দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার পর চাকসু নির্বাচন হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস দেখে আমাদের সব কষ্ট সার্থক মনে হচ্ছে।’
তবে এই আনন্দঘন পরিবেশের মাঝেই অভিযোগের পাহাড় তুলে ধরেছে একাধিক ছাত্রসংগঠন ও প্যানেল। ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, রেভ্যুলেশন ফর স্টেট অব হিউম্যানিটি এবং বামধারার বৈচিত্র্যের ঐক্যসহ অন্তত চারটি প্যানেল প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে।
পদে পদে অনিয়মের
অভিযোগ ছাত্রদলের
ভিপি পদপ্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন চাকসু হবে অনন্য উদাহরণ। কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখেছি প্রতিটি ধাপে অনিয়ম, কারচুপি ও প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তা।’
তিনি অভিযোগ করেন, ভোটকেন্দ্রের আশপাশে স্লিপ বিতরণ, প্রার্থীদের প্রচার, বহিরাগতদের উপস্থিতি এবং সইবিহীন ব্যালট- এসবই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
বহিরাগতদের উপস্থিতি ও সহিংসতা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনসহ কয়েকটি কেন্দ্রে বহিরাগতদের উপস্থিতির অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান তৌফিক বলেন, ‘আমরা দেখেছি বহিরাগতরা কেন্দ্রের দিকে দৌঁড়ে আসছে। প্রশাসন তা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।’
ছাত্রশিবিরের ভিপি প্রার্থী ইব্রাহীম হোসেনও বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘনের পরও ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এমনকি হাতের কালি পর্যন্ত মুছে গেছে, যা অমোচনীয় হওয়ার কথা।’
ভোট চুরি ও প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগ
আইন বিভাগের ছাত্রী মিফতাহুল জান্নাত অভিযোগ করেন, তার ভোট অন্য একজন দিয়ে ফেলেছে। ভোটার নম্বর মিলে যাওয়ার অজুহাতে তাকে ভোট দিতে দেয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ভোটকেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বলেন, ‘দুইজনের নাম ও চেহারার মিল ছিল, তাই বিভ্রান্তি হয়েছে।’
বিজনেস অনুষদেও সইবিহীন ব্যালট পেপার বিতরণের অভিযোগ উঠে। কয়েকজন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা স্বীকার করেন, ‘ভুলবশত কয়েকটি ব্যালটে সই পড়েনি।’
প্যানেলের নির্বাচন বর্জন ও পুনরায় ভোটের দাবি
বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্ট সমর্থিত ‘রেভ্যুলেশন ফর স্টেট অব হিউম্যানিটি’ প্যানেল কারচুপির অভিযোগ এনে ভোট বর্জন ও পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে বুধবার,(১৫ অক্টোবর ২০২৫) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে।
তাদের ভিপি প্রার্থী কেফায়েত উল্লাহ বলেন, ‘ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে ব্যালটে কারচুপি হয়েছে। ছাত্রশিবির ও ছাত্রী সংস্থা নিয়ম ভেঙেছে। কিন্তু প্রশাসন নির্বিকার থেকেছে।’
ফলাফল নিয়ে অনিশ্চয়তা, তদন্তের দাবি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে এবং ভোট গণনা চলছে। তবে ছাত্রদলসহ কয়েকটি প্যানেল ফলাফল মেনে নাও নিতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে।
তৌফিক বলেন, ‘যেখানে অনিয়ম, পক্ষপাত ও বহিরাগত হস্তক্ষেপ- সেখানে ফলাফল মেনে নেয়া মানে অন্যায়কে বৈধতা দেয়া।’