সোমবার দুপুর ২টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে জানাজা সম্পন্ন হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা মো. জুবায়েদ হোসেনের। এরপর দাফনের উদ্দেশ্যে মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ জানায়, হত্যাকারীর বিচার দাবি করে -জবি প্রতিনিধি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় মাহির রহমান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে কয়েকস্থানে পুলিশের অভিযানের পর সোমবার,(২০ অক্টোবর ২০২৫) ভোরে মাহিরের মা তাকে বংশাল থানায় নিয়ে সোপর্দ করে। নিহত জোবায়েদের পরিবারের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মাহিরকে শনাক্ত করা হয়।
বন্ধু মাহির ও ছাত্রী বর্ষাসহ গ্রেপ্তার তিন
জবিতে দুইদিনের
শোক ঘোষণা
পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার ভোরে মাহিরের মা নিজেই ছেলেকে নিয়ে বংশাল থানায় হাজির হন এবং তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। এই ঘটনায় সোমবার রাত পর্যন্ত ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৮), তার বন্ধু মাহির রহমান (১৮) ও অজ্ঞাত (১৯) সহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল রোববার বিকেলে রাজধানীর আরমানিটোলায় টিউশনিতে গিয়ে খুন হন পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও জবি ছাত্রদল আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন। আরমানিটোলার পানির পাম্প গলির ‘রওশন ভিলা’ নামের বাড়ির সিঁড়ি থেকে রক্তমাখা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় সিসিটিভি ফুটেজে দুইজন তরুণকে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে, তবে তাদের মুখ স্পষ্ট নয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ বলছে, ওই ছাত্রীর প্রেমঘটিত কারণেই খুন হয়েছেন জোবায়েদ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা জানিয়েছেন, বর্ষা ও তার বন্ধু মাহির রহমানের প্রেমের জেরে খুন হয়েছেন জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন। সোমবার সকালে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম প্রাথমিকভাবে বর্ষাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এসব তথ্য জানান।
বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্ষার সঙ্গে মাহির রহমানের ৯ বছরের সম্পর্ক ছিল। মাহির রহমান বোরহানুদ্দীন কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে। আর বর্ষা পড়তো ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজে সেকেন্ড ইয়ারে। পাশাপাশি বাড়িতে তাদের বেড়ে ওঠা ছোট থেকে। তাদের মধ্যে ছিল দীর্ঘ সম্পর্ক। চতুর্থ শ্রেণি থেকে একে অপরকে পছন্দ করতো। কিন্তু সম্প্রতি তাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন ঘটে। কিছুদিন আগে তাদের সম্পর্কের ভাঙন হয় এবং বর্ষা তার বন্ধু মাহির রহমানকে জানায়, সে জোবায়েদকে পছন্দ করে। এটা জানার পর রাগে ক্ষোভে মাহির রহমান তার বন্ধুকে নিয়ে জোবায়েদকে হত্যা করেছে।
ওসি বলেন, সম্প্রতি বর্ষা মাহিরকে জানায়, সে জোবায়েদকে পছন্দ করে। কিন্তু জোবায়েদকে সে তার পছন্দের কথা এখনও জানায়নি। জোবায়েদের সঙ্গে বর্ষার কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের মধ্যে এ ধরনের কোনো মেসেজও পাওয়া যায়নি। কিন্তু বর্ষার কথার ওপর ভিত্তি করে রাগে ক্ষোভে মাহির তার বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে জোবায়েদকে খুন করে।
ওসি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে বর্ষার সঙ্গে জোবায়েদের বন্ধু সৈকতের পরিচয় হয় ফেইসবুকে। এছাড়া অন্য কোনো মাধ্যমে তাদের কথা হতো না বা অন্য কোনো সম্পর্কও ছিল না। যেহেতু সৈকত জোবায়েদের বন্ধু ছিল এজন্য জোবায়েদের মৃত্যুর খবর দিয়ে সৈকতকে মেসেজ করে বর্ষা।
ওসি বলেন, বর্ষার মধ্যে কোনো হতাশা বা কান্নার কোনো ছাপ পাওয়া যায়নি। তার মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদে কোনো নার্ভাসনেসও পাওয়া যায়নি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বর্ষাকে চিন্তামুক্ত দেখা গেছে। আমরা আরও বিস্তর তদন্ত করবো।
জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত বলেন, ‘আমরা পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করতে চেয়েছি। শিক্ষার্থী বর্ষা, তার বাবা-মা, বর্ষার বন্ধু মাহির রহমান এবং মাহিরের বন্ধু নাফিসকে। কিন্তু বংশাল থানার ওসি মামলা নিতে রাজি হননি।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ওসি বলেছেন এতজনের নাম দেয়া ঠিক হবে না। বর্ষার বাবা-মায়ের নাম দিলে মামলাটা নাকি হালকা হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা তাদের নাম দিতে চাই। আমরা ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তারা যাদের নাম দিতে চান, আমরা সেই নামেই মামলা নেব। শুধু পরামর্শ দিয়েছি যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।’
এ বিষয়ে ডিএমপি’র লালবাগ বিভাগের ডিসি মল্লিক আহসান সামি বলেন, মামলা এখনও হয়নি। ভিকটিম পরিবার লাশ দাফন করে আসার পর মামলা গ্রহণ করা হবে। তবে মামলায় কারও নাম বাদ দেয়ার কথা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়নি। এরকম কোনো অভিযোগও নেই। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মাহির, বর্ষা ও অজ্ঞাত একজন গ্রেপ্তার রয়েছে।
জবি শিক্ষার্থীদের অবরোধ ও বিক্ষোভ:
হত্যার প্রতিবাদে গতকাল রোববার রাতে জবি শিক্ষার্থীরা বংশাল থানার সামনে অবস্থান নিয়ে দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। তারা তাঁতিবাজার মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করে এবং কিছু সময়ের জন্য আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায়। সোমবার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে জোবায়েদের জানাযা সম্পন্ন হয়েছে। এরপর দাফনের উদ্দেশে মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় নিয়ে যাওয়া হয়। হোমনা উপজেলার কলাগাছিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে কলাগাছিয়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।
শোক ঘোষণা ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান স্থগিত:
বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ এবং আগামীকাল দুইদিন ব্যাপী শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এই দুইদিনের সকল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। একইসাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আগামীকালের সকল অনুষ্ঠানও স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ-রফিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের নিকট এসব তথ্য নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইচ উদদীন।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার (আজ) ও বুধবার (আগামীকাল) আমরা শোকদিবস ঘোষণা করছি। শোক দিবসে আমাদের পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং সবধরনের পরীক্ষা স্থগিত থাকবে, তবে ক্লাস চলবে। মঙ্গলবার (আজ) আমরা সবাই কালো ব্যাজ ধারণ করবো এবং একটি শোকসভা করবো। বাদ জোহর মসজিদে তার রুহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করবো। ২১ তারিখে (আগামীকাল) আমরা যদি কাক্সিক্ষত অগ্রগতি প্রত্যক্ষ না করি তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ করবো এবং সেখান থেকে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি দিবো।’
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার দুপুর ২টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে জানাজা সম্পন্ন হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা মো. জুবায়েদ হোসেনের। এরপর দাফনের উদ্দেশ্যে মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ জানায়, হত্যাকারীর বিচার দাবি করে -জবি প্রতিনিধি
সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন হত্যার ঘটনায় মাহির রহমান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে কয়েকস্থানে পুলিশের অভিযানের পর সোমবার,(২০ অক্টোবর ২০২৫) ভোরে মাহিরের মা তাকে বংশাল থানায় নিয়ে সোপর্দ করে। নিহত জোবায়েদের পরিবারের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মাহিরকে শনাক্ত করা হয়।
বন্ধু মাহির ও ছাত্রী বর্ষাসহ গ্রেপ্তার তিন
জবিতে দুইদিনের
শোক ঘোষণা
পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার ভোরে মাহিরের মা নিজেই ছেলেকে নিয়ে বংশাল থানায় হাজির হন এবং তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। এই ঘটনায় সোমবার রাত পর্যন্ত ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৮), তার বন্ধু মাহির রহমান (১৮) ও অজ্ঞাত (১৯) সহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল রোববার বিকেলে রাজধানীর আরমানিটোলায় টিউশনিতে গিয়ে খুন হন পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও জবি ছাত্রদল আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন। আরমানিটোলার পানির পাম্প গলির ‘রওশন ভিলা’ নামের বাড়ির সিঁড়ি থেকে রক্তমাখা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় সিসিটিভি ফুটেজে দুইজন তরুণকে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে, তবে তাদের মুখ স্পষ্ট নয়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ বলছে, ওই ছাত্রীর প্রেমঘটিত কারণেই খুন হয়েছেন জোবায়েদ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা জানিয়েছেন, বর্ষা ও তার বন্ধু মাহির রহমানের প্রেমের জেরে খুন হয়েছেন জবি শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন। সোমবার সকালে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম প্রাথমিকভাবে বর্ষাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এসব তথ্য জানান।
বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্ষার সঙ্গে মাহির রহমানের ৯ বছরের সম্পর্ক ছিল। মাহির রহমান বোরহানুদ্দীন কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে। আর বর্ষা পড়তো ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজে সেকেন্ড ইয়ারে। পাশাপাশি বাড়িতে তাদের বেড়ে ওঠা ছোট থেকে। তাদের মধ্যে ছিল দীর্ঘ সম্পর্ক। চতুর্থ শ্রেণি থেকে একে অপরকে পছন্দ করতো। কিন্তু সম্প্রতি তাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন ঘটে। কিছুদিন আগে তাদের সম্পর্কের ভাঙন হয় এবং বর্ষা তার বন্ধু মাহির রহমানকে জানায়, সে জোবায়েদকে পছন্দ করে। এটা জানার পর রাগে ক্ষোভে মাহির রহমান তার বন্ধুকে নিয়ে জোবায়েদকে হত্যা করেছে।
ওসি বলেন, সম্প্রতি বর্ষা মাহিরকে জানায়, সে জোবায়েদকে পছন্দ করে। কিন্তু জোবায়েদকে সে তার পছন্দের কথা এখনও জানায়নি। জোবায়েদের সঙ্গে বর্ষার কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের মধ্যে এ ধরনের কোনো মেসেজও পাওয়া যায়নি। কিন্তু বর্ষার কথার ওপর ভিত্তি করে রাগে ক্ষোভে মাহির তার বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে জোবায়েদকে খুন করে।
ওসি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে বর্ষার সঙ্গে জোবায়েদের বন্ধু সৈকতের পরিচয় হয় ফেইসবুকে। এছাড়া অন্য কোনো মাধ্যমে তাদের কথা হতো না বা অন্য কোনো সম্পর্কও ছিল না। যেহেতু সৈকত জোবায়েদের বন্ধু ছিল এজন্য জোবায়েদের মৃত্যুর খবর দিয়ে সৈকতকে মেসেজ করে বর্ষা।
ওসি বলেন, বর্ষার মধ্যে কোনো হতাশা বা কান্নার কোনো ছাপ পাওয়া যায়নি। তার মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদে কোনো নার্ভাসনেসও পাওয়া যায়নি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বর্ষাকে চিন্তামুক্ত দেখা গেছে। আমরা আরও বিস্তর তদন্ত করবো।
জোবায়েদের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত বলেন, ‘আমরা পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করতে চেয়েছি। শিক্ষার্থী বর্ষা, তার বাবা-মা, বর্ষার বন্ধু মাহির রহমান এবং মাহিরের বন্ধু নাফিসকে। কিন্তু বংশাল থানার ওসি মামলা নিতে রাজি হননি।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ওসি বলেছেন এতজনের নাম দেয়া ঠিক হবে না। বর্ষার বাবা-মায়ের নাম দিলে মামলাটা নাকি হালকা হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা তাদের নাম দিতে চাই। আমরা ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তারা যাদের নাম দিতে চান, আমরা সেই নামেই মামলা নেব। শুধু পরামর্শ দিয়েছি যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।’
এ বিষয়ে ডিএমপি’র লালবাগ বিভাগের ডিসি মল্লিক আহসান সামি বলেন, মামলা এখনও হয়নি। ভিকটিম পরিবার লাশ দাফন করে আসার পর মামলা গ্রহণ করা হবে। তবে মামলায় কারও নাম বাদ দেয়ার কথা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়নি। এরকম কোনো অভিযোগও নেই। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মাহির, বর্ষা ও অজ্ঞাত একজন গ্রেপ্তার রয়েছে।
জবি শিক্ষার্থীদের অবরোধ ও বিক্ষোভ:
হত্যার প্রতিবাদে গতকাল রোববার রাতে জবি শিক্ষার্থীরা বংশাল থানার সামনে অবস্থান নিয়ে দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। তারা তাঁতিবাজার মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করে এবং কিছু সময়ের জন্য আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানায়। সোমবার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে জোবায়েদের জানাযা সম্পন্ন হয়েছে। এরপর দাফনের উদ্দেশে মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় নিয়ে যাওয়া হয়। হোমনা উপজেলার কলাগাছিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে কলাগাছিয়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।
শোক ঘোষণা ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান স্থগিত:
বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ এবং আগামীকাল দুইদিন ব্যাপী শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এই দুইদিনের সকল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। একইসাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আগামীকালের সকল অনুষ্ঠানও স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ-রফিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের নিকট এসব তথ্য নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইচ উদদীন।
গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার (আজ) ও বুধবার (আগামীকাল) আমরা শোকদিবস ঘোষণা করছি। শোক দিবসে আমাদের পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং সবধরনের পরীক্ষা স্থগিত থাকবে, তবে ক্লাস চলবে। মঙ্গলবার (আজ) আমরা সবাই কালো ব্যাজ ধারণ করবো এবং একটি শোকসভা করবো। বাদ জোহর মসজিদে তার রুহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করবো। ২১ তারিখে (আগামীকাল) আমরা যদি কাক্সিক্ষত অগ্রগতি প্রত্যক্ষ না করি তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ করবো এবং সেখান থেকে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি দিবো।’