নিজেদের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে শিক্ষকদের শাটডাউন কর্মসূচির ঘোষণা
ঢাকা কলেজের সামনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল -সংবাদ
সাত কলেজ নিয়ে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাদেশ জারির দাবিতে আগামী রোববার ‘শিক্ষা ভবনের’ সামনে ‘লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি’ পালনের ঘোষণা দিয়েছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
তবে সাত কলেজকে একীভূত করে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোর বিরুদ্ধে মহাসমাবেশ ও কলেজে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘শাটডাউন’ কর্মসূচিতে যাচ্ছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
তারা বলছেন, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শ্রেণী কার্যক্রম নির্বিঘেœ পরিচালনা করতে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোর সর্বস্তরে শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। এ দাবিতে বুধবার, (০৩ ডিসেম্বর ২০২৫) রাজধানীসহ বিভিন্ন সরকারি কলেজের সামনে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকরা।
লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা শিক্ষার্থীদের
বুধবার, বিকেলে ঢাকা কলেজের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আগামী রোববার রাজধানীর আব্দুল গণি রোডে শিক্ষা ভবনের সামনে ‘লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি’ পালনের ঘোষণা দেন সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আব্দুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আজকে অথবা আগামীকালের মধ্যে অধ্যাদেশ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ শেষ করে অধ্যাদেশ ঘোষণা না করলে আগামী রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত, এভাবে করে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত, অধ্যাদেশ আদায় হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা ওইখানে প্রত্যেকটি শিক্ষার্থী অবস্থান করবো।’
আব্দুর রহমান পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘রাষ্ট্রের এক মিনিট ক্ষতি হয়, সেটা আমরা চাইনি। যার ফলে আমরা রাস্তায় তেমন কোনো কর্মসূচি করিনি। সর্বশেষ যেহেতু আমাদের অভিভাবকরা সচিবালয়ে বসে থাকেন। কাজেই আমাদের কর্মসূচি হবে আমাদের অভিভাবকদের প্রাণের কাছে, হৃদয়ের কাছে শিক্ষা ভবন প্রাঙ্গণে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক শিক্ষার্থী গত ৭ নভেম্বরের মতো, যতক্ষণ পর্যন্ত অধ্যাদেশ না আসছে ততক্ষণ অবস্থান করবো। সেখানে প্রয়োজনে রান্নাবান্না হবে, তাও আমরা ওইখানেই থাকবো।’
এর আগে বেলা সোয়া ১টার দিকে দ্রুত অধ্যাদেশ জারির দাবিতে ঢাকা কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। আজিমপুর মোড় ঘুরে দুপুর ২টার পর ঢাকা কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করেন।
বিক্ষোভ-মিছিল ও সড়ক অবরোধের কারণে মিরপুর সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী যাত্রী, শিক্ষার্থী ও পথচারীরা। এরপর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরে গেলে যানবাহন চলাচল আবার শুরু হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নাঈম হাওলাদার বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তিন দফা আলোচনার পরও অধ্যাদেশের ব্যাপারে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। এতে প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থী তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন।
ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম হোসেন বলেন, ‘আমাদের এক দফা, অধ্যাদেশ। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা সরবো না।’
অন্তর্বর্তী সরকার রাজধানীর বড় সাতটি কলেজকে নিয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এ নিয়ে কলেজগুলোর স্নাতক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন।
প্রস্তাবিত ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে শিক্ষকদের মানববন্ধন
‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ এর প্রস্তাবিত কাঠামোতে সাতটি কলেজসহ সারাদেশের সরকারি কলেজে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদোন্নতির মতো মৌলিক অধিকার ক্ষু্ণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষক ও একদল শিক্ষার্থীর দাবি উপেক্ষা করে শিগগিরই এই অধ্যাদেশ জারির প্রক্রিয়া চলছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
খসড়ায় সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি’ কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী কলেজগুলোর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদানও চালু থাকবে।
এ কাঠামোর বিরোধিতা করছে কলেজগুলোর শিক্ষকদের সংগঠন ‘সাত কলেজ স্বাতন্ত্র্য রক্ষা পরিষদ’। তারা ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির প্রস্তাবিত ‘স্কুলিং পদ্ধতি’ বাতিল ও একাডেমিক ও প্রশাসনিক সব পদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের স্থায়ীভাবে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন।
শিক্ষকরা বলছেন, প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া অধ্যাদেশে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী হিসেবে বিবেচিত হলেও এসব কলেজে কর্মরত বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকরা প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নন। চূড়ান্ত অধ্যাদেশ, পাঠ্যসূচি ও প্রশাসনিক কাঠামো নির্ধারিত না হওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েই বর্তমানে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছেন। প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল বা কাঠামোর ফলে নানাবিধ সংকট তৈরি হবে।
এসব বিষয় তুলে ধরে বুধবার, সারাদেশের সব সরকারি কলেজে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকরা। আজ পরীক্ষা বন্ধসহ সাত কলেজে কর্মবিরতি এবং আগামী ৬ ডিসেম্বর শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মহাসমাবেশ করা হবে বলে ইতোমধ্যে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
২০১৭ সালে যথেষ্ট প্রস্তুতি ছাড়াই ঢাকার সাত সরকারি কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এই কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ।
এর মধ্যে ইডেন ও তিতুমীরে শুধু স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়ানো হয়; বাকি পাঁচটি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর তিন স্তরেই পাঠদান হয়। এগুলোতে শিক্ষার্থী দেড় লাখের মতো। চলতি শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তিযোগ্য আসন ১১ হাজারের মতো। সাত কলেজে মোট শিক্ষক হাজারের বেশি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
নিজেদের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে শিক্ষকদের শাটডাউন কর্মসূচির ঘোষণা
ঢাকা কলেজের সামনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল -সংবাদ
বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
সাত কলেজ নিয়ে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র অধ্যাদেশ জারির দাবিতে আগামী রোববার ‘শিক্ষা ভবনের’ সামনে ‘লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি’ পালনের ঘোষণা দিয়েছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
তবে সাত কলেজকে একীভূত করে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোর বিরুদ্ধে মহাসমাবেশ ও কলেজে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘শাটডাউন’ কর্মসূচিতে যাচ্ছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
তারা বলছেন, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শ্রেণী কার্যক্রম নির্বিঘেœ পরিচালনা করতে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোর সর্বস্তরে শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করতে হবে। এ দাবিতে বুধবার, (০৩ ডিসেম্বর ২০২৫) রাজধানীসহ বিভিন্ন সরকারি কলেজের সামনে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকরা।
লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা শিক্ষার্থীদের
বুধবার, বিকেলে ঢাকা কলেজের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আগামী রোববার রাজধানীর আব্দুল গণি রোডে শিক্ষা ভবনের সামনে ‘লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি’ পালনের ঘোষণা দেন সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর আন্দোলনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আব্দুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আজকে অথবা আগামীকালের মধ্যে অধ্যাদেশ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ শেষ করে অধ্যাদেশ ঘোষণা না করলে আগামী রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত, এভাবে করে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত, অধ্যাদেশ আদায় হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা ওইখানে প্রত্যেকটি শিক্ষার্থী অবস্থান করবো।’
আব্দুর রহমান পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘রাষ্ট্রের এক মিনিট ক্ষতি হয়, সেটা আমরা চাইনি। যার ফলে আমরা রাস্তায় তেমন কোনো কর্মসূচি করিনি। সর্বশেষ যেহেতু আমাদের অভিভাবকরা সচিবালয়ে বসে থাকেন। কাজেই আমাদের কর্মসূচি হবে আমাদের অভিভাবকদের প্রাণের কাছে, হৃদয়ের কাছে শিক্ষা ভবন প্রাঙ্গণে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক শিক্ষার্থী গত ৭ নভেম্বরের মতো, যতক্ষণ পর্যন্ত অধ্যাদেশ না আসছে ততক্ষণ অবস্থান করবো। সেখানে প্রয়োজনে রান্নাবান্না হবে, তাও আমরা ওইখানেই থাকবো।’
এর আগে বেলা সোয়া ১টার দিকে দ্রুত অধ্যাদেশ জারির দাবিতে ঢাকা কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। আজিমপুর মোড় ঘুরে দুপুর ২টার পর ঢাকা কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করেন।
বিক্ষোভ-মিছিল ও সড়ক অবরোধের কারণে মিরপুর সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী যাত্রী, শিক্ষার্থী ও পথচারীরা। এরপর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরে গেলে যানবাহন চলাচল আবার শুরু হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি নাঈম হাওলাদার বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তিন দফা আলোচনার পরও অধ্যাদেশের ব্যাপারে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। এতে প্রায় দেড় লাখ শিক্ষার্থী তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন।
ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম হোসেন বলেন, ‘আমাদের এক দফা, অধ্যাদেশ। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা সরবো না।’
অন্তর্বর্তী সরকার রাজধানীর বড় সাতটি কলেজকে নিয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এ নিয়ে কলেজগুলোর স্নাতক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন।
প্রস্তাবিত ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে শিক্ষকদের মানববন্ধন
‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ এর প্রস্তাবিত কাঠামোতে সাতটি কলেজসহ সারাদেশের সরকারি কলেজে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদোন্নতির মতো মৌলিক অধিকার ক্ষু্ণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষক ও একদল শিক্ষার্থীর দাবি উপেক্ষা করে শিগগিরই এই অধ্যাদেশ জারির প্রক্রিয়া চলছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
খসড়ায় সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি’ কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী কলেজগুলোর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদানও চালু থাকবে।
এ কাঠামোর বিরোধিতা করছে কলেজগুলোর শিক্ষকদের সংগঠন ‘সাত কলেজ স্বাতন্ত্র্য রক্ষা পরিষদ’। তারা ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির প্রস্তাবিত ‘স্কুলিং পদ্ধতি’ বাতিল ও একাডেমিক ও প্রশাসনিক সব পদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের স্থায়ীভাবে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন।
শিক্ষকরা বলছেন, প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া অধ্যাদেশে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী হিসেবে বিবেচিত হলেও এসব কলেজে কর্মরত বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকরা প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নন। চূড়ান্ত অধ্যাদেশ, পাঠ্যসূচি ও প্রশাসনিক কাঠামো নির্ধারিত না হওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েই বর্তমানে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছেন। প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল বা কাঠামোর ফলে নানাবিধ সংকট তৈরি হবে।
এসব বিষয় তুলে ধরে বুধবার, সারাদেশের সব সরকারি কলেজে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকরা। আজ পরীক্ষা বন্ধসহ সাত কলেজে কর্মবিরতি এবং আগামী ৬ ডিসেম্বর শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মহাসমাবেশ করা হবে বলে ইতোমধ্যে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
২০১৭ সালে যথেষ্ট প্রস্তুতি ছাড়াই ঢাকার সাত সরকারি কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এই কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ।
এর মধ্যে ইডেন ও তিতুমীরে শুধু স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়ানো হয়; বাকি পাঁচটি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর তিন স্তরেই পাঠদান হয়। এগুলোতে শিক্ষার্থী দেড় লাখের মতো। চলতি শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তিযোগ্য আসন ১১ হাজারের মতো। সাত কলেজে মোট শিক্ষক হাজারের বেশি।