প্রজাপতি সংরক্ষণ এবং গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৫তম প্রজাপতি মেলা। ‘উড়লো আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’-এ স্লোগানকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের আয়োজনে শুক্রবার,(০৫ ডিসেম্বর ২০২৫) মেলার উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান। বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলা এ মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের দর্শনার্থীরা ভিড় জমান।
মেলায় দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্যে ছিল শিশু-কিশোরদের জন্য প্রজাপতি বিষয়ক ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, প্রজাপতির আলোকচিত্র প্রদর্শনী, আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা, ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী, প্রজাপতির হাট দর্শন, প্রজাপতির আদলে ঘুড়ি উড়ানো, প্রজাপতি চেনা প্রতিযোগিতা এবং গল্পভিত্তিক পাপেট শো। এছাড়া সাদা জালের ভেতরে বাহারি রঙের ফুলের টব এবং বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতি রেখে একটি আকর্ষণীয় পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়।
দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। রাজধানীর উত্তরা থেকে দুই সন্তান নিয়ে আসা নাহিদা আক্তার বলেন, ‘মেলার খবর বিভিন্ন মাধ্যমে জেনে সন্তানদের নিয়ে চলে এসেছি। ঢাকায় চিত্তবিনোদনের সুযোগ কম, তাই প্রজাপতি দর্শন, পাপেট শো, গান এবং ছবি আঁকা দেখে আমরা সবাই আনন্দিত।’
মেলায় প্রকৃতি সংরক্ষণে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বন্যপ্রাণী বিশারদ ড. আলী রেজা খানকে ‘বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। ‘বাটারফ্লাই ইয়াং এনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড’ পান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী নুরে আফসারী এবং শাহরিয়ার রাব্বি তন্ময়। আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হন সৈয়দ আব্বাস, মাহমুদুল বারি এবং প্রিন্স পাল জয়। এছাড়া মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পান মো. আহসান হাবীব (একুশে টেলিভিশন), মো. মিজানুর রহমান (দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন) এবং মাহ আলম (বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা)।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ‘প্রজাপতিসহ সব প্রাণীর প্রতি আমাদের মানবিক আচরণ করতে হবে।
এসব প্রাণী আমাদের ওপর নির্ভরশীল, তাই সংরক্ষণে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। কীটনাশকের বিকল্প হিসেবে টেকসই উন্নয়নের উপাদান ব্যবহার করে প্রাণীদের রক্ষা করতে হবে।’ তিনি মানুষের মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং বিভাজনের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রব, মেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. মনোয়ার হোসেন, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, জাকসু ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু, জিএস মো. মাজহারুল ইসলামসহ অন্যরা। এছাড়া প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি, মৌসুমী ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক কাজী রাজিউদ্দীন আহমেদ চপল, সাউথইস্ট ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাসুম উদ্দীন খান, বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসাইন চৌধুরী এবং আইইউসিএনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইসতিয়াক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মানছুরুল হক।
এ মেলা প্রজাপতি সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রকৃতি প্রেমীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রজাপতি সংরক্ষণ এবং গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৫তম প্রজাপতি মেলা। ‘উড়লো আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’-এ স্লোগানকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের আয়োজনে শুক্রবার,(০৫ ডিসেম্বর ২০২৫) মেলার উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান। বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলা এ মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের দর্শনার্থীরা ভিড় জমান।
মেলায় দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্যে ছিল শিশু-কিশোরদের জন্য প্রজাপতি বিষয়ক ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, প্রজাপতির আলোকচিত্র প্রদর্শনী, আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা, ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী, প্রজাপতির হাট দর্শন, প্রজাপতির আদলে ঘুড়ি উড়ানো, প্রজাপতি চেনা প্রতিযোগিতা এবং গল্পভিত্তিক পাপেট শো। এছাড়া সাদা জালের ভেতরে বাহারি রঙের ফুলের টব এবং বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতি রেখে একটি আকর্ষণীয় পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়।
দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। রাজধানীর উত্তরা থেকে দুই সন্তান নিয়ে আসা নাহিদা আক্তার বলেন, ‘মেলার খবর বিভিন্ন মাধ্যমে জেনে সন্তানদের নিয়ে চলে এসেছি। ঢাকায় চিত্তবিনোদনের সুযোগ কম, তাই প্রজাপতি দর্শন, পাপেট শো, গান এবং ছবি আঁকা দেখে আমরা সবাই আনন্দিত।’
মেলায় প্রকৃতি সংরক্ষণে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বন্যপ্রাণী বিশারদ ড. আলী রেজা খানকে ‘বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। ‘বাটারফ্লাই ইয়াং এনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড’ পান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী নুরে আফসারী এবং শাহরিয়ার রাব্বি তন্ময়। আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হন সৈয়দ আব্বাস, মাহমুদুল বারি এবং প্রিন্স পাল জয়। এছাড়া মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পান মো. আহসান হাবীব (একুশে টেলিভিশন), মো. মিজানুর রহমান (দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন) এবং মাহ আলম (বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা)।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ‘প্রজাপতিসহ সব প্রাণীর প্রতি আমাদের মানবিক আচরণ করতে হবে।
এসব প্রাণী আমাদের ওপর নির্ভরশীল, তাই সংরক্ষণে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। কীটনাশকের বিকল্প হিসেবে টেকসই উন্নয়নের উপাদান ব্যবহার করে প্রাণীদের রক্ষা করতে হবে।’ তিনি মানুষের মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং বিভাজনের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রব, মেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. মনোয়ার হোসেন, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার, জাকসু ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু, জিএস মো. মাজহারুল ইসলামসহ অন্যরা। এছাড়া প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি, মৌসুমী ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক কাজী রাজিউদ্দীন আহমেদ চপল, সাউথইস্ট ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাসুম উদ্দীন খান, বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসাইন চৌধুরী এবং আইইউসিএনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইসতিয়াক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মানছুরুল হক।
এ মেলা প্রজাপতি সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রকৃতি প্রেমীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।