সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ‘স্কুলিং কাঠামো’ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ। তিতুমীর কলেজের ‘স্বতন্ত্রতা’ বজায় রাখার দাবি তুলে তারা বলেন, প্রস্তাবিত কাঠামো বহাল থাকলে ‘ঢাকা অচল’ করে দেয়া হবে।
শনিবার,(০৬ ডিসেম্বর ২০২৫) দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে এ অবস্থানের কথা জানায় শিক্ষার্থীরা।
২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার বলেন, ‘গুরুত্ব সহকারে একটি কথা উল্লেখ করছি। আমরা সবাই সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি চাই। আমরা কেউই তার বিরোধিতা করছি না। আমরা বিরোধিতা করছি স্কুলিং কাঠামোর।’
রাজধানীর সাতটি কলেজের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বজায় রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই চাই, তিতুমীরসহ বাকি ছয়টি কলেজকে স্বতন্ত্র অবস্থায় রেখে আপনারা নতুন কাঠামো প্রণয়ন করে ২০২৪-২৫ সেশনকে দ্রুত থেকে দ্রুততর সময়ের মধ্যে শ্রেণীকক্ষে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।’
সানজিদা আক্তার পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন, যার মধ্যে আছে: ‘নিঃশর্তভাবে তিতুমীর কলেজের স্বতন্ত্রতা রক্ষা করতে হবে। তিতুমীর কলেজের কোনো বিভাগ বিলুপ্ত করা যাবে না। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সংখ্যা হ্রাস করা যাবে না। তিতুমীর কলেজের একাডেমিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রস্তাবিত খসড়া অধ্যাদেশটি বাতিল করতে হবে এবং নিরপেক্ষ এবং বাস্তব জ্ঞান সম্পন্ন শিক্ষাবিদ ও অংশীজনদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রূপরেখা তৈরি করতে হবে’।
রাজধানীর সাত সরকারি কলেজ হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজ।
এই সাত কলেজ নিয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের কার্যক্রম চলছে। কিন্তু এর কাঠামো নিয়ে কলেজগুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কয়েকটি অংশ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন।
অধ্যাদেশের খসড়ার সমালোচনা করে শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার বলেন, ‘খসড়ায় উল্লেখ ছিল রাজধানী স্বনামধন্য সাতটি কলেজের স্বতন্ত্র অবস্থা বিলীন করে দিয়ে এক একটি কলেজকে একটি একটি করে স্কুল তৈরি করে দেয়া হবে এবং কলেজগুলোর বিভাগ সংখ্যা হ্রাস করা হবে। এবং ধর্মীয় শিক্ষা তুলে নেয়া হবে। অর্থাৎ কলেজগুলোকে করা হবে হাইব্রিড সিস্টেমের কলেজ।’
এই খসড়ার বিরুদ্ধে তিতুমীরসহ অন্য ছয়টি কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানায় উল্লেখ করে সানজিদা বলেন, ‘তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ অক্টোবর (গত) শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় আমরা কৃতিত্বের সঙ্গে প্রমাণ করে এসেছি আমরা স্কুলিং কাঠামো মেনে নিব না এবং এই স্কুলিং কাঠামোর বিরুদ্ধে সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থী অবস্থান করছে। এতে করে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির খসড়াটি আটকে যায়। পরে শিক্ষার্থী কর্তৃক প্রত্যেকটি কলেজের স্বতন্ত্র রক্ষার, বিভাগ সংখ্যা না কমানোর, এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা না কমানোর দাবিগুলো মেনে নেয়ার আশ্বাস প্রদান করা হয়।’
ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র প্রস্তাবিত কাঠামোতে সাতটি কলেজসহ সারাদেশের সরকারি কলেজে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদোন্নতির মতো মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্য হওয়ার শঙ্কায় আছেন।
তবে শিক্ষার্থীদের একাংশ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টির আইনি কাঠামোর বিষয়ে দ্রুত অধ্যাদেশ জারির দাবি জানিয়ে আসছে। উচ্চ মাধ্যমিক ও অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের মতোই প্রস্তাবিত কাঠামোর বিরোধিতা করে আসছে। তাদের আশঙ্কা ‘স্কুলিং’ কাঠামোতে কলেজগুলোর স্বতন্ত্রতা বজায় থাকবে না। গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি’ বা ‘স্কুলিং’ কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের কথা বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী কলেজগুলো উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদানও চালু থাকবে।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশ অনুযায়ী, শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা সাতটি কলেজের দেড় হাজার পদ এ ক্যাডারে বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। পদ খালি থাকার শর্তে পদোন্নতি পাওয়া শিক্ষা ক্যাডারে দেড় হাজার পদ একেবার বের হয়ে গেলে পদোন্নতি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন শিক্ষকরা।
সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের অন্য অংশ ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির বিরোধিতা করে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরের দাবি জানিয়ে আসছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ‘স্কুলিং কাঠামো’ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ। তিতুমীর কলেজের ‘স্বতন্ত্রতা’ বজায় রাখার দাবি তুলে তারা বলেন, প্রস্তাবিত কাঠামো বহাল থাকলে ‘ঢাকা অচল’ করে দেয়া হবে।
শনিবার,(০৬ ডিসেম্বর ২০২৫) দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে এ অবস্থানের কথা জানায় শিক্ষার্থীরা।
২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার বলেন, ‘গুরুত্ব সহকারে একটি কথা উল্লেখ করছি। আমরা সবাই সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি চাই। আমরা কেউই তার বিরোধিতা করছি না। আমরা বিরোধিতা করছি স্কুলিং কাঠামোর।’
রাজধানীর সাতটি কলেজের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বজায় রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই চাই, তিতুমীরসহ বাকি ছয়টি কলেজকে স্বতন্ত্র অবস্থায় রেখে আপনারা নতুন কাঠামো প্রণয়ন করে ২০২৪-২৫ সেশনকে দ্রুত থেকে দ্রুততর সময়ের মধ্যে শ্রেণীকক্ষে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।’
সানজিদা আক্তার পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন, যার মধ্যে আছে: ‘নিঃশর্তভাবে তিতুমীর কলেজের স্বতন্ত্রতা রক্ষা করতে হবে। তিতুমীর কলেজের কোনো বিভাগ বিলুপ্ত করা যাবে না। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী সংখ্যা হ্রাস করা যাবে না। তিতুমীর কলেজের একাডেমিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রস্তাবিত খসড়া অধ্যাদেশটি বাতিল করতে হবে এবং নিরপেক্ষ এবং বাস্তব জ্ঞান সম্পন্ন শিক্ষাবিদ ও অংশীজনদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রূপরেখা তৈরি করতে হবে’।
রাজধানীর সাত সরকারি কলেজ হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজ।
এই সাত কলেজ নিয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি গঠনের কার্যক্রম চলছে। কিন্তু এর কাঠামো নিয়ে কলেজগুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কয়েকটি অংশ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন।
অধ্যাদেশের খসড়ার সমালোচনা করে শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার বলেন, ‘খসড়ায় উল্লেখ ছিল রাজধানী স্বনামধন্য সাতটি কলেজের স্বতন্ত্র অবস্থা বিলীন করে দিয়ে এক একটি কলেজকে একটি একটি করে স্কুল তৈরি করে দেয়া হবে এবং কলেজগুলোর বিভাগ সংখ্যা হ্রাস করা হবে। এবং ধর্মীয় শিক্ষা তুলে নেয়া হবে। অর্থাৎ কলেজগুলোকে করা হবে হাইব্রিড সিস্টেমের কলেজ।’
এই খসড়ার বিরুদ্ধে তিতুমীরসহ অন্য ছয়টি কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানায় উল্লেখ করে সানজিদা বলেন, ‘তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ অক্টোবর (গত) শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় আমরা কৃতিত্বের সঙ্গে প্রমাণ করে এসেছি আমরা স্কুলিং কাঠামো মেনে নিব না এবং এই স্কুলিং কাঠামোর বিরুদ্ধে সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থী অবস্থান করছে। এতে করে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির খসড়াটি আটকে যায়। পরে শিক্ষার্থী কর্তৃক প্রত্যেকটি কলেজের স্বতন্ত্র রক্ষার, বিভাগ সংখ্যা না কমানোর, এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা না কমানোর দাবিগুলো মেনে নেয়ার আশ্বাস প্রদান করা হয়।’
ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র প্রস্তাবিত কাঠামোতে সাতটি কলেজসহ সারাদেশের সরকারি কলেজে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদোন্নতির মতো মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্য হওয়ার শঙ্কায় আছেন।
তবে শিক্ষার্থীদের একাংশ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টির আইনি কাঠামোর বিষয়ে দ্রুত অধ্যাদেশ জারির দাবি জানিয়ে আসছে। উচ্চ মাধ্যমিক ও অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের মতোই প্রস্তাবিত কাঠামোর বিরোধিতা করে আসছে। তাদের আশঙ্কা ‘স্কুলিং’ কাঠামোতে কলেজগুলোর স্বতন্ত্রতা বজায় থাকবে না। গত ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি’ বা ‘স্কুলিং’ কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের কথা বলা হয়েছে। সেই অনুযায়ী কলেজগুলো উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদানও চালু থাকবে।
প্রস্তাবিত অধ্যাদেশ অনুযায়ী, শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা সাতটি কলেজের দেড় হাজার পদ এ ক্যাডারে বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। পদ খালি থাকার শর্তে পদোন্নতি পাওয়া শিক্ষা ক্যাডারে দেড় হাজার পদ একেবার বের হয়ে গেলে পদোন্নতি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন শিক্ষকরা।
সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের অন্য অংশ ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির বিরোধিতা করে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরের দাবি জানিয়ে আসছে।