শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সড়কে আঁকা যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত জামায়াত নেতাদের ছবি মুছে দিয়েছে হল প্রশাসন। মুছে ফেলা ছবিগুলোর মধ্যে ছিল গোলাম আজম, মতিউর রহমান নিজামী ও কাদের মোল্লার প্রতিকৃতি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে হল প্রশাসন ছবিগুলো মুছে দিয়েছে। তবে হল প্রশাসনের দাবি, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার রাতে জগন্নাথ হলের রবীন্দ্রভবন ও অক্টোবর স্মৃতি ভবন সংলগ্ন সড়কে ছবিগুলো আঁকা হয়। পরদিন রোববার সকাল প্রায় ১০টার দিকে সেগুলো মুছে ফেলা হয়।
হল সংসদের ভিপি পল্লব বর্মণ জানান, মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত আবাসিক হলগুলোর একটি হলো জগন্নাথ হল। ১৪ ডিসেম্বর এই হল থেকেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়েছিল। সেই দিনটির স্মরণে ‘তুলির আঁচড়ে দ্রোহ’ শিরোনামে একটি কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ওই কর্মসূচির অংশ হিসেবেই শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিবাদ ও দ্রোহের প্রকাশ হিসেবে ছবিগুলো এঁকেছিল বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, হল প্রশাসন নিরাপত্তার বিষয় সামনে এনে ছবিগুলো মুছে দিয়েছে, যা তারা মেনে নেন না। এই সিদ্ধান্তের জন্য হল প্রশাসনকে জবাবদিহির আওতায় আনার কথাও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক দেবাশীষ পাল বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছবিগুলো এঁকেছিল। তাদের অনুমতি ছিল মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি প্রদর্শনের জন্য। কিন্তু এসব ছবি আঁকার বিষয়টি পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নজরে আসে। তিনি জানান, শিক্ষার্থীরাই হয়তো বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছিল। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ছবিগুলো মুছে ফেলার নির্দেশ দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন এমন নির্দেশ দিয়েছে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে কোনো কারণ জানানো হয়নি।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ জানান, তারা শুধু জানতে চেয়েছিলেন ছবিগুলো কী বিষয়ে আঁকা হয়েছে, কিন্তু সেগুলো মুছে ফেলার কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি।