শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজাকারদের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুর ১২টা থেকে ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ার সামনে অবস্থিত রাজাকার ঘৃণাস্তম্ভে জুতা নিক্ষেপের মাধ্যমে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় ‘নিঃশব্দ ঘৃণা’ শিরোনামে একটি গণস্বাক্ষর বোর্ডে শিক্ষার্থীরা একাত্তরের রাজাকারদের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন। স্বাক্ষর বোর্ডে বিভিন্ন স্লোগান ও বক্তব্য লিখে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেখানে লেখা হয়— ‘একাত্তরের রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’, ‘গণহত্যার সমর্থকরা কীভাবে রাজনীতি করে’, ‘রাজাকারের বাচ্চারা এ যুগের কুলাঙ্গার’, ‘রাজাকার ইতিহাসের সর্বোচ্চ নিকৃষ্ট ইতর প্রাণী’।
কর্মসূচির অন্যতম আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত চৌধুরী বলেন, ১৯৭১ সালে যারা দেশের বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতেই এই আয়োজন। তিনি জানান, পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরতার ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরাই তাদের উদ্দেশ্য, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই ইতিহাস ভুলে না যায়।
ঘৃণাস্তম্ভে জুতা নিক্ষেপ করতে আসা সুফি হাশিম নামের একজন অংশগ্রহণকারী বলেন, যারা এই দেশের মূল্যবান সম্পদসম মানুষদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে, তাদের তিনি চরম মাত্রায় ঘৃণা করেন। তার ভাষায়, পাখির মতো মানুষ হত্যা করা ব্যক্তিদের তিনি মুসলমান বলেও মনে করেন না।
আয়োজকদের আরেকজন আবু তৈয়ব হাবিলদার জানান, ২০০৭ সালে কয়েকজন সেক্টর কমান্ডারের উপস্থিতিতে এই ঘৃণাস্তম্ভটি প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং সে সময় তারা নিজেরাও এর আয়োজকদের মধ্যে ছিলেন। তিনি বলেন, তার ধারণা ছিল শিক্ষার্থীরা হয়তো রাজাকার ও এই ঘৃণাস্তম্ভের কথা ভুলে যাবে। কিন্তু সকালে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে এখানে এসে ঘৃণা প্রকাশ করতে দেখে তিনি অত্যন্ত খুশি হয়েছেন এবং নিজেও সেখানে ঘৃণা প্রকাশ করতে এসেছেন।
ঘৃণাস্তম্ভের পেছনে ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত মতিউর রহমান নিজামী, আলবদর নেতা আশরাফুজ্জামান খান, চৌধুরী মইনুদ্দীন, পূর্ব-পাকিস্তানের সামরিক প্রধান আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজীসহ আরও অনেকের ছবি সংরক্ষিত রয়েছে।