বাংলাদেশের বিজয় দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ‘নগ্ন হস্তক্ষেপ’ ও বাংলাদেশকে ‘কলঙ্কিত’ করার অভিযোগ তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী তার কুশপুতুল দাহ করেছেন।
‘আধিপত্যবাদ বিরোধী’ ব্যানারে মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে ডাকসু ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
কুশপুতুল দাহের সময় শিক্ষার্থীরা ‘কসাই মোদীর গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’, ‘কসাই মোদীর দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘বাংলাদেশ-বাংলাদেশ, জিন্দাবাদ-জিন্দাবাদ’, ‘দিল্লি না, ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দেবে জনগণ’, ‘আজকের এইদিনে, আবরারকে মনে পড়ে’, ‘জানি জানি সবাই জানি, শাহবাগীরা হিন্দুস্তানি’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
কর্মসূচির অন্যতম সংগঠক রিয়াদ জুবাহ বলেন, মানুষের মতামত উপেক্ষা করে ভারতের সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনকারী এবং তাদের নিষ্পেষণের সঙ্গে যুক্ত নরেন্দ্র মোদীকে বাংলাদেশে আনা হয়েছিল, যার বিরুদ্ধে দেশের জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেন, এই প্রতিবাদের জেরে তৎকালীন সরকার ভারতের স্বার্থ রক্ষায় দেশের মানুষের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে এবং প্রকাশ্য দিবালোকে নিরীহ মানুষ হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ১৭ বছর ধরে দেশে যে অপশাসন চলেছে, তার পেছনেও ভারতের মদদ রয়েছে। এ কারণেই বাংলাদেশের জনগণ ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
কুশপুতুল দাহের পাশাপাশি মধুর ক্যান্টিনের পাশে পদদলিত করার উদ্দেশ্যে নরেন্দ্র মোদীর একটি স্টিকার টানানো হয়।
গোলাম আযমের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ
এর আগে দুপুর ১টার দিকে ডাকসু ভবনের সামনে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত গোলাম আযমের ছবিতে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করেন একদল শিক্ষার্থী।
এ সময় তারা ‘রাজাকারের চামড়া, তুলে নেব আমরা’, ‘রাজাকারের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘পাকিস্তানের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’সহ নানা স্লোগান দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪–২৫ সেশনের শিক্ষার্থী হিশাম আনোয়ার বলেন, তারা রাজাকারদের ঘৃণা করেন এবং বিভিন্ন অপশক্তি রাজাকারদের প্রাসঙ্গিক করে তোলার চেষ্টা করছে। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল গোলাম আযম ও নিজামীরা, আর তাদের উত্তরসূরীরা এখন সেই মুক্তিযুদ্ধকে ভারতের ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করছে।
তিনি আরও বলেন, চলতি বছর ইসলামী ছাত্রশিবির গোলাম আযমদের ‘এদেশের সূর্যসন্তান’ হিসেবে উপস্থাপন করে কর্মসূচি করেছে, যা তারা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন।
এই প্রেক্ষাপটেই বিজয় দিবসে গোলাম আযমের ছবিতে জুতা নিক্ষেপের কর্মসূচি পালন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।