image
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

চবিতে বুদ্ধিজীবী হত্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের ব্যাখ্যায় আরেক বিতর্কে প্রশাসন

মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, চবি

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে উপ-উপাচার্যের বিতর্কিত মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দেয়া বিবৃতিতে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হককে মুক্তিযুদ্ধের ‘নেতৃত্বদানকারী’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেইসবুক আইডিতে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে সোহরাওয়ার্দী ও ফজলুল হক সম্পর্কে এমন তথ্য দেয়া হয়, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের আট-নয় বছর আগেই মারা গেছেন।

এর আগে গত রোববার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যলয় আয়োজিত ‘মুক্তচিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ‘পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যার বিষয়টি ‘অবান্তর’ বলে মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। এ সময় অধ্যাপক শামীম বলেন, ‘যে সময় পাকিস্তানি সৈন্যরা আমাদের দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা করছে, সে সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে, আমি মনে করি এটি রীতিমত অবান্তর। কারণ, ওই সময় তারা তাদের জীবন শঙ্কায় ছিলেন।’

অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের এ বক্তব্য ‘ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে’ গত রোববার রাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরপর গতকাল সোমবার দুপুরে ‘সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সব ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে শামীম উদ্দিন খানকে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগের দাবি জানান। পরে বিজয় দিবস উপলক্ষে রাত সাড়ে ১০টায় সব ফটকের তালা খুলে দেয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে শামীম উদ্দিনের বক্তব্যের ব্যাখ্যায় চবি প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) বক্তব্যের শুরুতেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং সব শহীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। তিনি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে শহীদদের মাগফেরাত কামনা করেন। ‘বিশেষ করে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম.এ.জি ওসমানীসহ সব শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।’

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন ব্রিটিশ শাসনামলে অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও হন তিনি। ১৯৬৩ সালের ৫ ডিসেম্বর লেবাননের বৈরুত শহরে মৃত্যু হয় তার। অন্যদিকে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ছিলেন অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী। পরবর্তী সময়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ফজলুল হকের জন্ম ১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর; তৎকালীন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বরিশাল জেলার সাতুরিয়া গ্রামে। ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আট-নয় বছর আগে মারা যাওয়া দুই তাকে যুদ্ধের ‘নেতৃত্বদানকারী’ হিসেবে মূল্যায়ন করায় অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা করছেন।

‘ক্যাম্পাস’ : আরও খবর

সম্প্রতি