জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও বিতর্কমুক্ত করতে প্রতিটি কেন্দ্রে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট গণনাসহ একাধিক দাবি জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয় নিয়েও নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে শিক্ষকদের এই সংগঠনটি।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় শিক্ষক সমিতির লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি ও বক্তব্য উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দীন বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে কাঙ্ক্ষিত মান ও পর্যায়ে উন্নীত করতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত শক্তির কোনো বিকল্প নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কল্যাণ ও গণতান্ত্রিক চর্চা বিকাশে জকসু নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি স্বচ্ছ, সুন্দর ও স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচনের মধ্য দিয়েই শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব বিকশিত হবে।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন থেকে কিছু অভিজ্ঞতা ও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সেসব অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন কোনো ধরনের ত্রুটি বা বিতর্কের সুযোগ না থাকে, সে বিষয়ে শিক্ষক সমিতি সচেতন।
আসন্ন জকসু নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ম্যানুয়ালি ভোট গণনার ব্যবস্থা গ্রহণ, সিসিটিভির আওতায় ভোটকেন্দ্র আনা এবং মনিটরের মাধ্যমে সরাসরি ভোট গণনা সম্প্রচারের দাবি জানান তিনি। পাশাপাশি ভোটারদের সুবিধার্থে আলাদা এন্ট্রি ও এক্সিট গেট নিশ্চিত করা, ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় অপ্রয়োজনীয় জটলা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক ভূমিকা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, অমোচনীয় কালি ব্যবহারের কার্যকারিতা নিয়ে যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচনী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের নেতিবাচক প্রচারণা পরিহার এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের নির্মোহ ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দীন সম্প্রতি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তারেক বিন আতিকের বিরুদ্ধে কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রসঙ্গও তোলেন। তিনি বলেন, ওই সংবাদের কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা লিখিতভাবে বিভাগীয় চেয়ারম্যানকে জানিয়েছেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ইতোমধ্যে ওই শিক্ষক মিথ্যা সংবাদ প্রচারকারী গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছেন। শিক্ষক সমিতি এ ধরনের মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তাঁর আশঙ্কা, এ ধরনের সংবাদ আসন্ন জকসু নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে।
বক্তব্যের শেষে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, সত্য ও সঠিক তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করে শিক্ষক সমিতি।
সংবাদ সম্মেলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. মোশাররাফ হোসেনসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
রাজনীতি: এলডিপির এককভাবে নির্বাচনের ঘোষণা