image

এবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক বন্ধের আহ্বান জানালেন রাকসু জিএস আম্মার

মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রতিনিধি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার। শিক্ষক নেটওয়ার্কের ‘ক্যাম্পাসে ছাত্রপ্রতিনিধিদের এখতিয়ারবহির্ভূত তৎপরতা বন্ধ হোক’ শিরোনামে দেওয়া বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই আহ্বান জানান। শিক্ষক নেটওয়ার্কের ফেইসবুক পেইজে দেওয়া ওই বিবৃতির মন্তব্যে সালাহউদ্দিন লিখেন, ‘শিক্ষক নেটওয়ার্ক বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি’। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

রাকসু জিএসের এমন মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মাসুদ রেজা তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘কে বন্ধ করবে? দুঃসাহস কার? শিক্ষক নেটওয়ার্কের জন্ম ২০২৪ সালের আগস্টের পরে নয়, নেটওয়ার্কের জন্ম ২০১৪ সালে। আওয়ামীরাও নেটওয়ার্কের কার্যক্রম বন্ধ করতে পারেনি। এই নেটওয়ার্ক তার নাম-পরিচয় লুকিয়ে নিজেদের কার্যক্রম কখনো পরিচালনা করেনি। জুলাইয়ের গণ-আন্দোলনে শিক্ষক নেটওয়ার্কের সক্রিয়তার কথা গোটা দেশবাসীর জানা আছে!’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক মাহাইর ইসলাম ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘কোথাকার কোন ধইঞ্চা শিক্ষক নেটওয়ার্ক নিয়ে কথা বললো, আর নেটওয়ার্কের লোকজন তার প্রতিউত্তরে নিজেদেরকে ডিফেন্ড করা শুরু করলো! আজব, এসবের আদৌ কোন প্রয়োজন আছে? শিক্ষক নেটওয়ার্কের লোকজনের কয়েকবছরের ত্যাগ ও তিতিক্ষার কাছে ওর মতো কয়েকশো ধইঞ্চাকে বহুবার বিক্রি করা যাবে! আপনারা কেন এই ধইঞ্চাকে আমলে নিচ্ছেন!’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের নামে ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যের জন্য সালাহউদ্দিন আম্মারকে ক্ষমা চাইতে হবে উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল লিখেছেন, ‘ইতরদের স্মৃতিশক্তি খুবই দুর্বল হয়। এরা ভুলে গেছে ১ আগস্ট গ্রেফতার আতঙ্কে কর্মসূচি পালনের মুরোদ ছিল না। সেদিন এই শিক্ষক নেটওয়ার্কের মৌনমিছিলকেই রাজশাহীর কর্মসূচি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সাদা পোষাকের পুলিশ শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের জন্য ধস্তাধস্তি করলে, এই শিক্ষকরাই ঢাল হয়ে দাঁড়ায়। সেই সাহসিকতার মোমেন্টাম রাজশাহীসহ সারাদেশের আন্দোলনকে আবার চাঙ্গা করে। এদের না আছে শ্রদ্ধা, পরমতসহিষ্ণুতা; না আছে সম্মানবোধ। কতগুলো আধিপত্যকামী, ফ্যাসিস্ট জুলাইয়ের হর্তাকর্তা সেজে বসে আছে।’

এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘কমেন্ট করেছি। তারা (শিক্ষক নেটওয়ার্ক) আমার কাজকে যদি অতৎপরতা হিসেবে দেখে তাহলে আমিও তাদের বিবৃতি সন্দেহের চোখে দেখি। তারা আমাকে একটি আহ্বান জানিয়েছে, আমিও তাদের আহ্বান জানিয়েছি। তারা এটাকে স্বাধীনতা হিসেবে দেখলে আমিও আমার স্বাধীনতা প্রকাশ করছি।’

রোববার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত ছাত্রপ্রতিনিধিদের এখতিয়ারবহির্ভূত কার্যক্রমের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। সংগঠনটি এ ধরনের তৎপরতা অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়জন ডিনকে পদত্যাগে বাধ্য করতে রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মারের তৎপরতার পটভূমিতে শিক্ষক নেটওয়ার্কের এ বিবৃতি আসে। রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মারের নেতৃত্বে নানা ধরনের মবপ্রবণতা, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের হয়রানিমূলক তৎপরতার কথা বিবৃতিতে তুলে ধরে শিক্ষক নেটওয়ার্ক। রাকসুর নেতাদের এ ধরনের আচরণ সরাসরি বিদ্যায়তনিক স্বাধীনতার ওপর হামলা বলেও মনে করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এর ‘স্পাইরাল ইফেক্ট’ সারা দেশের অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহেও পড়েছে বলে তাদের মত।

‘ক্যাম্পাস’ : আরও খবর

সম্প্রতি