ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন

বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

অভিযুক্তদের ক্যাম্পাস ছাড়ার নির্দেশ, তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে রাতভর মারধর ও শারীরিক নির্যাতন করে ভিডিও ধারণের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কমিটিতে একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন শিক্ষককে রাখতে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট গাজী মো. মোহসীন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

আইনজীবীরা জানিয়েছেন, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসককে ৩ দিনের মধ্যে এই কমিটি গঠন করতে হবে। পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের করা কমিটির রিপোর্টও ১০ দিনের মধ্যে দাখিল করতে বলেছেন আদালত। তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্ত দুজনকে ক্যাম্পাসের বাইরে রাখতে বলা হয়েছে। আদেশে নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত বুধবার ওই ছাত্রীকে রাতভর মারধর ও শারীরিক নির্যাতন করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে জড়িতদের হাইকোর্টে তলব করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।

ক্যাম্পাসে ফিরতে চান ইবির সেই নির্যাতিতা ছাত্রী

প্রতিবেদক, ইবি

ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদার নির্যাতনের শিকার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন ছাত্রী ক্যাম্পাসে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের নির্দেশনার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ আকুতি জানান তিনি।

জানা যায়, নির্যাতনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও একজন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

কমিটি করে পরবর্তী সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসককে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এক আইনজীবীর করা রিটের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এ আদেশের পর নিপীড়নের শিকার ছাত্রী বলেন, ‘মহামান্য আদালন যে রায় দিয়েছেন তাতে আমি ও আমার পরিবারের সবাই খুশি। তবে আমি আবারও বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যেতে চাই। সহপাঠীদের সঙ্গে ক্লাস করতে চাই। কিন্তু আমি ভয়ে আছি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে। আমার পরিবারও একই শঙ্কায় ভুগছে।

তিনি আরও বলেন, আমার মতো এমন নির্যাতনের শিকার যেনো আর কেউ না হয় সে কামনা করি। এছাড়া আমি চাই দোষীরা যেনো সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুতই বিচারের মুখোমুখি হয়।

ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের করা কমিটির প্রতিবেদনও দাখিল করতে বলেছেন আদালত। নির্যাতনে জড়িত দুই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের বাইরে রাখতে আদেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন গত বুধবার হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী গাজী মো. মহসীন ও আজগর হোসেন তুহিন। তখন তাদের লিখিত আবেদন দিতে বলেন আদালত। সে অনুসারে তারা জনস্বার্থে রিট করেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার সকালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এক নবাগত ছাত্রীকে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ আনেন।

গত শনিবার দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় তিনটা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর। ভুক্তভোগী ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। র‌্যাগিংয়ের সময় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীরা তাকে মারধর করে তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখে বলে অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ওই নবীন শিক্ষার্থী।

‘ক্যাম্পাস’ : আরও খবর

সম্প্রতি