ঢাকার মোহাম্মদপুরে ক্রমাগত চুরি, ছিনতাই, ও সহিংসতার ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে একদল এলাকাবাসী থানায় গিয়ে পুলিশকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে কোনো পরিবর্তন না এলে থানায় অবস্থানের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা। শনিবার বিকেলে প্রায় ৬০ জনের একটি দল মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে পুলিশের এডিসি ও ওসির কাছে পাঁচ দফা দাবি পেশ করে।
থানায় উপস্থিত আন্দোলনকারীদের একজন পারভেজ হাসান সুমন জানান, "গত ৫ অগাস্টের পর পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় মোহাম্মদপুরে ছিনতাইকারী ও কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচার বেড়ে গেছে। আমরা আমাদের নিরাপত্তার দাবিতে থানায় গিয়ে এডিসি ও ওসির কাছে আমাদের দাবি তুলে ধরেছি।" স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ এলাকায় তৎপর না থাকায় চুরি, ডাকাতি, ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা পুলিশের কাছ থেকে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ আশা করছেন।
স্থানীয়দের পাঁচ দফা দাবি
মোহাম্মদপুরবাসী থানার কাছে মোট পাঁচটি দাবি পেশ করেছেন, যা হলো:
1. ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ছিনতাই ও ডাকাতি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা: এই সময়ের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে থানায় অবস্থান নেবেন এলাকাবাসী।
2. অপরাধপ্রবণ এলাকায় পুলিশের টহল বৃদ্ধি: সন্ত্রাসপ্রবণ এলাকাগুলোতে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো ও স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টহল কার্যক্রম বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
3. গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিত: আটককৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ও দ্রুত আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
4. কিশোর গ্যাং, নিষিদ্ধ সংগঠনের অপতৎপরতা বন্ধ করা: কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচার ও সহিংসতার পাশাপাশি ছাত্রলীগের মতো নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর অপতৎপরতা রোধ করতে হবে।
5. জনসাধারণের নিরাপত্তা ও হয়রানি বন্ধ নিশ্চিত করা: এলাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি যেকোনো ধরনের হয়রানি বন্ধে পুলিশের কার্যকর ভূমিকা দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
পুলিশের প্রতিক্রিয়া
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ জিয়াউল হক এই দাবিগুলোকে অত্যন্ত যৌক্তিক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, "মোহাম্মদপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা স্থানীয়দের সহায়তা চেয়েছি। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে এবং টহল কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে।" তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনার জন্য রবিবার একটি বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন এবং প্রতিটি দাবির সঙ্গে পুলিশ একমত বলেও আশ্বস্ত করেন।
অপরাধ বৃদ্ধির সাম্প্রতিক পরিস্থিতি
গত ৫ অগাস্ট সরকার পরিবর্তনের পর মোহাম্মদপুরসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ প্রবণতা বাড়তে থাকে। পুলিশের উপস্থিতি হ্রাস পাওয়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যায় এবং ছিনতাইকারী ও কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু ছিনতাই ও ডাকাতির ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যা এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা অন্য জায়গায় বাড়ি ভাড়া খুঁজছেন, কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে এখানে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
শুক্রবার রাতে মোহাম্মদপুরের বসিলায় একটি মিনি সুপারশপে অস্ত্রধারীদের ডাকাতির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। একই রাতে ঢাকা উদ্যান এলাকায় গণ ছিনতাইয়ের ঘটনাও ভাইরাল হয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে মোহাম্মদপুরে ছিনতাই, কুপিয়ে হত্যাসহ বেশ কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
থানা থেকে জানানো হয়েছে, এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মোহাম্মদপুরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪
ঢাকার মোহাম্মদপুরে ক্রমাগত চুরি, ছিনতাই, ও সহিংসতার ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে একদল এলাকাবাসী থানায় গিয়ে পুলিশকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে কোনো পরিবর্তন না এলে থানায় অবস্থানের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা। শনিবার বিকেলে প্রায় ৬০ জনের একটি দল মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে পুলিশের এডিসি ও ওসির কাছে পাঁচ দফা দাবি পেশ করে।
থানায় উপস্থিত আন্দোলনকারীদের একজন পারভেজ হাসান সুমন জানান, "গত ৫ অগাস্টের পর পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় মোহাম্মদপুরে ছিনতাইকারী ও কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচার বেড়ে গেছে। আমরা আমাদের নিরাপত্তার দাবিতে থানায় গিয়ে এডিসি ও ওসির কাছে আমাদের দাবি তুলে ধরেছি।" স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ এলাকায় তৎপর না থাকায় চুরি, ডাকাতি, ও ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা পুলিশের কাছ থেকে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ আশা করছেন।
স্থানীয়দের পাঁচ দফা দাবি
মোহাম্মদপুরবাসী থানার কাছে মোট পাঁচটি দাবি পেশ করেছেন, যা হলো:
1. ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ছিনতাই ও ডাকাতি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা: এই সময়ের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে থানায় অবস্থান নেবেন এলাকাবাসী।
2. অপরাধপ্রবণ এলাকায় পুলিশের টহল বৃদ্ধি: সন্ত্রাসপ্রবণ এলাকাগুলোতে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো ও স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টহল কার্যক্রম বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
3. গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিত: আটককৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ও দ্রুত আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
4. কিশোর গ্যাং, নিষিদ্ধ সংগঠনের অপতৎপরতা বন্ধ করা: কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচার ও সহিংসতার পাশাপাশি ছাত্রলীগের মতো নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর অপতৎপরতা রোধ করতে হবে।
5. জনসাধারণের নিরাপত্তা ও হয়রানি বন্ধ নিশ্চিত করা: এলাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি যেকোনো ধরনের হয়রানি বন্ধে পুলিশের কার্যকর ভূমিকা দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
পুলিশের প্রতিক্রিয়া
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ জিয়াউল হক এই দাবিগুলোকে অত্যন্ত যৌক্তিক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, "মোহাম্মদপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা স্থানীয়দের সহায়তা চেয়েছি। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে এবং টহল কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে।" তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনার জন্য রবিবার একটি বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন এবং প্রতিটি দাবির সঙ্গে পুলিশ একমত বলেও আশ্বস্ত করেন।
অপরাধ বৃদ্ধির সাম্প্রতিক পরিস্থিতি
গত ৫ অগাস্ট সরকার পরিবর্তনের পর মোহাম্মদপুরসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ প্রবণতা বাড়তে থাকে। পুলিশের উপস্থিতি হ্রাস পাওয়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যায় এবং ছিনতাইকারী ও কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু ছিনতাই ও ডাকাতির ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যা এলাকাবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা অন্য জায়গায় বাড়ি ভাড়া খুঁজছেন, কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে এখানে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
শুক্রবার রাতে মোহাম্মদপুরের বসিলায় একটি মিনি সুপারশপে অস্ত্রধারীদের ডাকাতির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। একই রাতে ঢাকা উদ্যান এলাকায় গণ ছিনতাইয়ের ঘটনাও ভাইরাল হয়েছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে মোহাম্মদপুরে ছিনতাই, কুপিয়ে হত্যাসহ বেশ কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
থানা থেকে জানানো হয়েছে, এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মোহাম্মদপুরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।